ভারত-মেড ইন দিলি্লই হচ্ছেন দিলি্লর অধীশ্ব by পার্থ চট্টোপাধ্যায়
সাবেক স্পিকার সাংমাকে প্রণব বাবুর বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। এখন প্রথম সম্ভাব্য বাঙালি রাষ্ট্রপতির একমাত্র বিরোধী বাংলার অগি্নকন্যা বাঙালি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাকেও বোঝানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু অগি্নকন্যা দেশবাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তিনি বাঙালি সেন্টিমেন্টের মূল্য দেন না
একদিন তিনি রাষ্ট্রপতির ঘোড়া হতে চেয়েছিলেন, তাও পরজন্মে। আর কয়েকদিন পর তিনিই হতে চলেছেন বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপতি। তার নাম এতদিনে এই উপমহাদেশে সবারই জানা। তিনি প্রণব কুমার মুখোপাধ্যায়_ দিলি্লতে তিনি 'দাদা' বলেই পরিচিত।
প্রণব মুখার্জি কংগ্রেস রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি। এমপি থেকে কেন্দ্রের ডেপুটি মন্ত্রী। সেখান থেকে ইন্দিরা গান্ধীর নজরে পড়ে একেবারে রাজস্বমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান, নরসিমা রাও মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মনমোহন সিং মন্ত্রিসভার পরপর দু'বার অর্থমন্ত্রী। ইন্দিরা তাকে ক্যাবিনেটে দু'নম্বর করেছিলেন। তাকে সবচেয়ে বিশ্বাস করতেন। ইন্দিরার পর্ষদরা একজন বাঙালিকে এতটা মাথায় তোলা বরদাশত করেননি। ইন্দিরা বিদেশে গেলে প্রণবের ওপর রাজ্যপাটের ভার দিয়ে যেতেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে কৃতিত্বের জন্য প্রণব আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থমন্ত্রীর পুরস্কার পান। এতে তার শত্রু বাড়তে থাকে। সেটি প্রকাশ পায় ১৯৮৪ সালের ৩০ অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধীর অকস্মাৎ নিহত হওয়ার দিনে। সেদিন নির্বাচনী প্রচারে রাজীবকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে এসেছিলেন দুই বাঙালি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। একজন প্রণব, আরেকজন বরকত গনি খান চৌধুরী। দুই মন্ত্রীর মধ্যে প্রচণ্ড রেষারেষি ছিল। ইন্দিরার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে শোকাহত রাজীব তাড়াতাড়ি বিশেষ বিমানে দিলি্ল ফিরছেন। প্রণব ও বরকতও চলেছেন তার সঙ্গে। রাষ্ট্রপতি তখন জৈল সিং। তিনি সমস্ত প্রথা ভেঙে তড়িঘড়ি রাজীবকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে ডাকলেন। রাজীব তখন মন্ত্রিসভার সদস্য নন। প্রথা অনুসারে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করার কথা সংসদীয় দলের। হয়তো রাজীবেরই নির্দেশ ছিল সংসদীয় দলের সভাটভা নয়। তাহলে হয়তো তারা প্রণবকেই প্রধানমন্ত্রী করে বসতে পারে। সে সময় দেশজুড়ে ইন্দিরা-সহানুভূতির হাওয়া। দেশবাসীও মেনে নিয়েছিল মায়ের উত্তরাধিকারী ছেলেই হয়।
১৯৮৪ সালেই প্রণব বুঝেছিলেন যে, নেহরু পরিবারের বাইরে আর কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, কিন্তু ইন্দিরা পরিবারে তিনি ছিলেন অভিভাবকের মতো। রাজীব ব্যক্তিগতভাবে খুব ভদ্র, বিনয়ী। প্রণব আশা করেছিলেন, অর্থমন্ত্রীর চাকরিটি তার অন্তত যাবে না। রাজীবের মন্ত্রিসভায় তার স্থান হবে। শপথ গ্রহণের আগে প্রণব সেজেগুজে তার বাড়িতে অপেক্ষা করছেন রাজীবের একটা ফোনের জন্য। কিন্তু সে ফোন আর এলো না। ক্ষুব্ধ প্রণব জীবনে সেই প্রথম নিজেকে অপমানিত মনে করেছিলেন।
শুধু তা-ই নয়, প্রধানমন্ত্রী হয়ে রাজীবের ধারণা হয়েছিল, নির্বাচনের নামে প্রণব ও ইন্দিরার একান্ত সচিব সতীশ ধাওয়ান মিলে যে টাকা তুলেছিলেন এর কিছুটা ওই দু'জনের কাছে রয়ে গেছে। রাজীব দু'জনকেই বলে পাঠালেন অবিলম্বে ওই টাকার হিসাব বুঝিয়ে দিতে। প্রণব জানালেন, ইন্দিরা জীবিত থাকতেই তিনি সেসব টাকার হিসাব বুঝিয়ে দিয়েছেন। রাজীব বিশ্বাস করলেন না। তিনি সাদা পোশাকের পুলিশ দিয়ে প্রণবের আকবর রোডের বাড়ি ঘিরে ফেললেন। কিন্তু রাজীব কিছুতেই প্রণব বাবুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণ করতে পারলেন না ।
এর কিছুদিন পর আরেকজন বিদ্রোহী কংগ্রেসি কর্নাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গুন্ডু রাওয়ের সঙ্গে প্রণব একটি নতুন দল গড়েন_ সমাজবাদী কংগ্রেস। কলকাতা ইনডোর স্টেডিয়ামে তড়িঘড়ি করে দলের সম্মেলনও হয়ে যায়। হাজার দশেক অনুগামীও জড়ো করে ফেলেন প্রণব-গুন্ডু রাও। সে সময় তাদের অর্থবলও ছিল। কিন্তু সাংগঠনিক ত্রুটির ফলে ১৯৮৪ সালের নির্বাচনে প্রণবের নতুন দলের ভরাডুবি হয়। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে কংগ্রেসের পক্ষে রাজীব গান্ধী মন্ত্রিসভা গঠন করেন এবং প্রণব কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত (১৯৮৬)। প্রণব ততদিনে বুঝতে পারেন, রাগের মাথায় তিনি যা করেছেন ভুল করেছেন। তিনি রাজীব গান্ধীর সঙ্গে আবার 'জনসংযোগ' শুরু করে দেন। রাজীবও দেখেন, প্রণবকে ফিরিয়ে নিলে তারই লাভ। প্রণবকে কংগ্রেসে ফিরিয়ে নিয়ে তিনি তাকে নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির মুখপাত্র করে দেন। সে-ই প্রণবের পুনর্বাসন। নতুন জমিতে আবার পুরনো ভাঙা ঘর তোলা।
এরপর ইতিহাস প্রণবের হাতে তার বরমাল্য তুলে দেয়। ১৯৯১ সালে রাজীব নিহত হন। ওই বছরই সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেসের আবার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন। কারণ ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি বলে ক্ষমতা থেকে সরেছিল।
কংগ্রেসে ফিরে এসে প্রণবের প্রথম কাজ হয় নেহরু পরিবারের কাছে তার বিশ্বস্ততা প্রমাণ করা। রাজীবের মৃত্যুর পর সোনিয়া ও তার ছেলে রাহুলকে তিনি নৈতিক বল ও সাহস জোগান। ১৯৯১ সালে কংগ্রেস মন্ত্রিসভা গঠন করলে প্রণব প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার হননি। নরসিমা রাওকেই সমর্থন করেছেন। তিনি পররাষ্ট্র দফতর ও প্রতিরক্ষা দফতর পেয়েই সন্তুষ্ট থাকলেন।
১৯৯৬ সালে পরাজয়ের পর ২০০৪ সালে কংগ্রেস আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে (ইউপিএ ওয়ান)। কংগ্রেস সাংসদরা প্রথমে সোনিয়া গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেন। কিন্তু সোনিয়া এই দায়িত্বভার নিতে তৈরি ছিলেন না। তা ছাড়া ভারতীয় সংবিধানে একজন বিদেশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন কি-না তা নিয়েও অস্পষ্টতা ছিল। সোনিয়া রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সব অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে ড. মনমোহন সিংকে প্রধানমন্ত্রী করে সবার জন্যই বিস্ময় সৃষ্টি করেন। মনমোহন সিং রাজনীতির লোক নন। তিনি মেধাবী অ্যাকাডেমিক, ভারত সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টার চাকরি করতেন। প্রণব বাবু যখন অর্থমন্ত্রী ও যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান তখন মনমোহন তাদের অধীন কর্মচারী ছিলেন। সেই সূত্রে মনমোহন এখনও প্রণব বাবুকে স্যার বলেন ও যথেষ্ট শ্রদ্ধা করেন।
মনমোহন সিং নির্বিরোধ শান্তিপ্রিয় মানুষ। ১৯৯১ সালে নরসিমা রাও তাকে রাজনীতিতে টেনে আনেন। তাকে অর্থমন্ত্রী করেন। ড. সিংও কোনো নির্বাচনে লড়েননি। তিনি রাজ্যসভা থেকে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন।
আশ্চর্য সংযম প্রণব বাবুর। তিনি বুঝেছিলেন, সোনিয়া তাকে কখনও প্রধানমন্ত্রী করবেন না। কারণ সোনিয়ার চোখ রাহুল গান্ধীর দিকে। মেয়ে প্রিয়াঙ্কা কিছুতেই রাজনীতিতে এলো না। রাহুলকে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই জ্ঞান করে আসছেন। প্রণব বাবু এটা বুঝেছিলেন বলে তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন, রাহুলই ভাবী প্রধানমন্ত্রী_ কবে হবে এটাই শুধু দেখার। এটা শুধু সময়ের ব্যাপার। রাহুল নিজেও বিশ্বাস করেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্যই জন্মেছেন। ছোটবেলা থেকে রাজকুমারের মতো তিনি মানুষ হয়েছেন। রাহুল ব্রিগেড বলে একটি অলিখিত ব্রিগেডও তৈরি হয়েছে।
২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সোনিয়া যখন প্রণব বাবুকে প্রধানমন্ত্রী করলেন না তখন থেকেই প্রণব বাবু তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক করে নিয়েছিলেন। রাজীবের মৃত্যুর পর সোনিয়াকে রাজনীতিতে আনার ব্যাপারে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু সোনিয়া প্রণব বাবুর মতো ঝানু রাজনীতিবিদকে প্রধানমন্ত্রী করে ঝুঁকি নিতে চাননি। এর চেয়ে অরাজনৈতিক মনমোহন তার কাছে অনেক নিরাপদ ছিলেন।
প্রণব বাবুর একটা গুণ_ তার ডান হাত কী করে বাঁ হাতও জানে না। অসাধারণ মন্ত্রগুপ্তি তার। তার কোনো পরামর্শদাতা নেই। ব্যক্তিগত ইয়ার বন্ধু নেই। নিয়মিত কবিতার বই পড়লেও ব্যক্তিগত জীবনে রসকষহীন চাণক্য_ যিনি রাত ২টা পর্যন্ত জাগেন, ভোর ৬টায় উঠে পড়েন। একদিকে সেক্যুলার। মুসলিমদের মন জয় করে নিজের বীরভূমের পরিবর্তে ভিন্ন জেলা মুর্শিদাবাদ থেকে পরপর দু'বার বিপুল ভোটে লোকসভায় জয়ী হন, অন্যদিকে নিয়মিত পূজা পাঠ করেন। দুর্গাপূজা করেন নিজ গ্রামে এবং তিনিই এ সময়ে তিনি নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ।
তবে সে অর্থে প্রণব বাবুর পশ্চিমবঙ্গে কোনো রাজনৈতিক জমি তৈরি হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে জন্ম হলেও তিনি 'মেড ইন দিলি্ল'। তিনি ইন্দিরা গান্ধীর আবিষ্কার।
প্রণব মুখার্জির বাবা কামদা বাবু একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী দৃঢ়চেতা পুরুষ ছিলেন। ড. বিধান চন্দ্র রায় তাকে বিধান পরিষদের সদস্য করেছিলেন। প্রণব বাবু ও তার দাদা দু'জনেই ছাত্রজীবনে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন ছিলেন এবং তাদের ছাত্র সংগঠনের সদস্য ছিলেন। ইতিহাসে এমএ পাস করে প্রণব বাবু কিছুদিন গ্রামের স্কুলে মাস্টারি করেন। তারপর হাওড়া জেলার একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। তিনি খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন না, কিন্তু অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী ছিলেন। ভালো পড়াতে পারতেন আর ইতিহাস ও অর্থনীতি এ দুটি বিষয়ে তার আগ্রহ ছিল। প্রণব বাবু এই লেখককে একদা বলেছিলেন একসময় তার স্মৃতিশক্তি এত প্রখর ছিল যে, পূর্ব পাকিস্তানের আইনসভার সব সদস্যের নাম তার কণ্ঠস্থ ছিল।
প্রণব বাবুর রাজনীতির প্রতি আগ্রহ দেখে তার বাবা তাকে তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস নেতা অতুল্য ঘোষের হাতে সঁপে দিয়ে বলেন_ আপনাকে দিলাম। আপনি ওকে তালিম দিয়ে মানুষ করুন।
প্রণব বাবু তার কিছুকাল পরে বিদ্রোহী অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়, স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীল বীড়ার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কংগ্রেস ছেড়ে বাংলা কংগ্রেসে যোগ দেন। পরে আবার কংগ্রেসে ফেরেন। অতুল্য ঘোষ তাকে রাজ্যসভার সদস্য করে দিলি্ল পাঠান। তখন তার বয়স ত্রিশের কোঠায়। সেটি ষাটের দশক। তারপর থেকে প্রণব বাবুর স্থায়ী ঠিকানা দিলি্ল; কখনও গ্রেটার কৈলাস, কখনও তালকাটরা গার্ডেন, কখনও আকবর রোড। কলকাতায়ও তার ফ্ল্যাট আছে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি থেকে দূরে সরে থাকায় প্রণব বাবু জ্যোতি বসু কিংবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো পশ্চিমবঙ্গের নেতা হতে পারেননি। একসময় তিনি পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের সভাপতিও ছিলেন, কিন্তু দিলি্ল সামলে পশ্চিমবঙ্গের 'লড়াকু নেতা' হতে পারেননি। তা ছাড়া আঞ্চলিক নেতা হতে গেলে যেমন জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িকতার পক্ষ নিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে লোক খেপাতে হয়, মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হয়, প্রণব বাবু তা করতে পারেননি। তিনি মাঝে মধ্যে কলকাতায় এসে অতিথি আবাসে অতিথি হয়ে থেকে আবার চলে গেছেন।
প্রণব বাবু দিলি্লতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সে জন্য বাকি জীবন দিলি্লতেই কাটাতে চেয়েছিলেন। তবে অবসরপ্রাপ্ত রাজনীতিক হিসেবে নয়_ অবসর অথচ রাজসম্মান একাধারে এই যুগ্ম মোক্ষ লাভের জন্য রায়সানা হিলই তার উপযুক্ত বারানসি। কিন্তু সোনিয়া গান্ধী তাকে ছাড়তে চাননি। কারণ তিনি জানেন কংগ্রেস রাজনীতিতে একমাত্র মুশকিল আসান তিনিই। দক্ষ, বিশ্বস্ত, গোটা দুনিয়া তার নখদর্পণে আর সব দলের মানুষের কাছে তিনি স্বচ্ছন্দ অথচ প্রয়োজনে যে কোনো ধরনের কাজে তিনি পটু। এক অদ্বিতীয় 'দ্বিতীয় ব্যক্তি'। সবাই প্রণবকে প্রকাশ্যে সমর্থন করছেন। বিজেপি ও এনডিএ শিবির ইতিমধ্যেই দ্বিধাবিভক্ত। সাংবাদিকরাও 'দাদা'র পক্ষে লেখালেখি শুরু করেছিলেন। কলকাতার একজন প্রবীণ সাংবাদিক তো আরেক ধাপ এগিয়ে সরাসরি সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে বসেছেন, কেন প্রণবকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেওয়া উচিত। আবদুল কালাম সসম্মানে জানিয়েছেন, তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে নেই। উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি আর প্রমোশন চাইছেন না। তিনি উপ-রাষ্ট্রপতি থেকে যেতেই রাজি। সাবেক স্পিকার সাংমাকে প্রণব বাবুর বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। এখন প্রথম সম্ভাব্য বাঙালি রাষ্ট্রপতির একমাত্র বিরোধী বাংলার অগি্নকন্যা বাঙালি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাকেও বোঝানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু অগি্নকন্যা দেশবাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তিনি বাঙালি সেন্টিমেন্টের মূল্য দেন না।
ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায় : ভারতীয় সাংবাদিক
No comments