প্রতিষ্ঠান অকার্যকর হলে দুর্নীতি কমবে না-দুদক আইনের সংশোধনী
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতি নির্মূল ও প্রতিরোধে আরও কার্যকর সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু গত দুই বছরে এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি।
সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের যে খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে, তাতে সংস্থাটির হাত-পা বেঁধে ফেলার সব ব্যবস্থা পাকাপাকি করা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রণীত দুদকের আইনে অনেক অসংগতি আছে—এই অভিযোগে সরকার সেটি অনুমোদন করেনি। এই প্রেক্ষাপটে গত বছর এ-সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া সংসদে পেশ করা হলে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সেই খসড়ায় দুদকের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছিল এবং বলা হয়েছিল, সংস্থাটিকে সরকারের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। সমালোচনার মুখে সেটি প্রত্যাহার করা হয় এবং আইনটি চূড়ান্ত করার উদ্দেশ্যে একটি কমিটিও করে দেয় সরকার। সেই কমিটির সুপারিশক্রমে আইনে কিছু সংশোধনী আনা হলেও সংস্থাটির ওপর সরকারের কর্তৃত্ব অক্ষুণ্ন রয়েছে। এতে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানই কেবল ব্যাহত হবে না, দুদকও ‘ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দারে’ পরিণত হবে। যদিও মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত সর্বশেষ খসড়ায় সরকারের কাছে জবাবদিহির বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে। খসড়া আইনের প্রধান আপত্তির বিষয় হলো, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান। দুদক চাইলেই কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে পারবে না। সরকারের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু বেসরকারি ব্যক্তিদের বেলায় কোনো বাধা নেই। এটি সংবিধান ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।
এ ছাড়া অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানকে তথ্য দিতে বাধ্য করা যাবে না বলে আইনে যে বিধান রাখা হয়েছে, তাও গ্রহণযোগ্য নয়। অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে এ ধরনের বিধিনিষেধ চলতে পারে না। সরকার দুর্নীতি বন্ধ করতে চাইলে দুদককে এমন সুরক্ষা দিতে হবে, যাতে তারা যেকোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্ত অনায়াসে পেতে পারে। সরকারি অর্থায়নের অজুহাত তুলে স্বশাসিত শব্দটি ছেঁটে ফেলারও কোনো যুক্তি নেই। এর আগে দুদকের চেয়ারম্যান স্বয়ং সংস্থাটিকে নখদন্তহীন বাঘের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে সেটি শুধু নখদন্তহীন নয়, পুরোপুরি কাগুজে বাঘে পরিণত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুদক যদি বাড়াবাড়ি করে থাকে, তার প্রতিকার নিশ্চয়ই সংস্থাটিকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানানো নয়। অতএব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া খসড়া আইনটি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। সরকার যদি সত্যিই দুর্নীতি কমাতে চায়, তাহলে দুদককে স্বাধীন ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উপযোগী আইনই প্রণয়ন করতে হবে।
এ ছাড়া অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানকে তথ্য দিতে বাধ্য করা যাবে না বলে আইনে যে বিধান রাখা হয়েছে, তাও গ্রহণযোগ্য নয়। অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে এ ধরনের বিধিনিষেধ চলতে পারে না। সরকার দুর্নীতি বন্ধ করতে চাইলে দুদককে এমন সুরক্ষা দিতে হবে, যাতে তারা যেকোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্ত অনায়াসে পেতে পারে। সরকারি অর্থায়নের অজুহাত তুলে স্বশাসিত শব্দটি ছেঁটে ফেলারও কোনো যুক্তি নেই। এর আগে দুদকের চেয়ারম্যান স্বয়ং সংস্থাটিকে নখদন্তহীন বাঘের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে সেটি শুধু নখদন্তহীন নয়, পুরোপুরি কাগুজে বাঘে পরিণত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুদক যদি বাড়াবাড়ি করে থাকে, তার প্রতিকার নিশ্চয়ই সংস্থাটিকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানানো নয়। অতএব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া খসড়া আইনটি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। সরকার যদি সত্যিই দুর্নীতি কমাতে চায়, তাহলে দুদককে স্বাধীন ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উপযোগী আইনই প্রণয়ন করতে হবে।
No comments