রাষ্ট্র-ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের স্বপ্ন by খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ

২০০৫ সাল থেকেই বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন আগামী বাংলাদেশের রূপকল্প নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে। দৃষ্টিভঙ্গি এক না হলেও সবারই দৃষ্টি ২০২১-২৫ সালের বাংলাদেশের দিকে। কেমন হবে তখন আর্থ-সামাজিক অবস্থা? কেমন হবে রাজনৈতিক অবস্থা? দারিদ্র্য কমবে কি? দুর্নীতি সহনশীল পর্যায়ে নেমে আসবে কি?


সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ অতীতের বিষয়ে পরিণত হবে কি? গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মোটামুটি স্থিতিশীল পর্যায়ে পেঁৗছাবে কি? ইত্যাকার প্রশ্নগুলোকে ঘিরে আলোচনা-পর্যালোচনা। আশা-নিরাশা নিয়ে স্বপ্নের জাল বোনা। আশাবাদীদের কথা_ স্বপ্ন দেখতে দোষ কি? হতাশাবাদীদের প্রশ্ন, ভবিষৎ প্রক্ষেপণের ভিত্তি অর্থাৎ বর্তমান পটভূমিটা কী?
স্বপ্নের আসরগুলো বেশ জমে উঠেছে। এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠল_ ২০২১-২৫ সাল কেন? ২০১৫-২০ হতে দোষ কোথায়? স্বপ্নদ্রষ্টাদের কাছ থেকে জবাবও পাওয়া গেল। ১৯৭১ সালের শেষে এসে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হবে। পঞ্চাশ বর্ষপূর্তি একটি জাতির জীবনে একটি মাইলফলক_ বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনকারী একটি নবীন রাষ্ট্রের জীবনে। সে কারণেই চরম দুর্দিনেও জাতি স্বপ্ন দেখতে চায়। রোমাঞ্চ জাগে সুখ কল্পনায়।
বিভিন্ন সংগঠনকে কেন্দ্র করে স্বপ্নের কর্মশালা পরিচালনার নেপথ্যে ছিল বেশ কয়েকটি নাগরিক গোষ্ঠী। এর মধ্যে কয়েকটি কর্মশালা সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেলে বহুল প্রচারিত। অনেকগুলোই আবার তেমন প্রচারণা পায়নি। সর্বাধিক প্রচার পেয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ আয়োজিত নাগরিক কমিটির 'বাংলাদেশ রূপকল্প' আলোচনাচক্র। তাদের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ব্যাপক প্রচারে অংশ নিয়েছে চ্যানেল আই, প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার। আরেকটি আলোচনাচক্র চলছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, যুব অর্থনীতিবিদ সমিতি এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদ গঠিত একটি সমন্বিত মঞ্চে। এ মঞ্চের মিডিয়া পার্টনার ছিল এটিএন চ্যানেল। আরও একটি নাগরিক উদ্যোগ গড়ে উঠেছে আইনজীবী, শিল্পপতি, পেশাজীবীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে। এদের মিডিয়া পার্টনার নেই। অপর উল্লেখযোগ্য উজ্জীবনমূলক আলোচনাচক্রটি পরিচালিত হচ্ছে 'সুজন_সুশাসনের জন্য নাগরিক' নামক একটি সামাজিক আন্দোলনের উদ্যোগে। এদেরও নির্দিষ্ট মিডিয়া পার্টনার নেই, তবে ভালো প্রচার পেয়েছে।
আরও কিছু সংগঠন একই ধরনের পৃথক উদ্যোগ নিচ্ছে বা নিতে যাচ্ছে বলে জানা যায়। কিন্তু এরই মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার কারণে স্বপ্ন আলোচনা একটুখানি থমকে গেছে। কেউ তো দুঃস্বপ্ন দেখতে চায় না। তাই তারা অপেক্ষাকৃত সুসময়ের জন্য অপেক্ষা করছে। অর্ধশতাব্দীর বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখা যে থেমে থাকবে না, এমন বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে। অনেকে কর্মসূচি প্রণয়ন করে বসে আছেন সুসময়ের জন্য। আবার অনেকে অপেক্ষা করছেন সহায়ক পরিবেশে কর্মসূচি প্রণয়নের জন্য। নিশ্চিত করেই বলা যায়, এ উদ্যোগ বা উন্মাদনা সামনের দিনগুলোতে চলমান থাকবে।
অনুসন্ধান করে দেখা যাক স্বপ্ন বিনির্মাণের এসব আলোচনাচক্রে থাকছেন কারা। মিডিয়া থেকেই জানা যায়, সিপিডির নাগরিক কমিটি গঠিত হয়েছিল ঢাকার হোটেল শেরাটনে (বর্তমাসে রূপসী বাংলা হোটেল) একটি বড় ধরনের নাগরিক সমাবেশে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, মিডিয়া, শিল্প-বাণিজ্য, এনজিওসহ সমাজের সব কর্ম-অঙ্গনের কৃতী মানুষ যোগ দিয়েছিলেন সে অনুষ্ঠানে। অরাজনৈতিক, অবিতর্কিত, মেধাবী ও প্রশংসিত বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে 'নাগরিক কমিটি' গঠিত হয়েছিল। কমিটির প্রতিটি সদস্য নিজ নিজ কর্ম-অঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য সুপরিচিত। অনেকে বিদেশেও। তারা ঢাকার বাইরে প্রথম পর্যায়ে বিভাগীয় সদরে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে জেলা শহরগুলোতে সুধী সমাবেশ করেছেন। যে অঞ্চলে সভা করেছেন, ওই অঞ্চলের মত-পথ নির্বিশেষে বিশিষ্ট নাগরিকরা উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দিয়েছেন, যা সরাসরি প্রচার করেছে চ্যানেল আই। সবকিছু উন্মুক্ত, খোলামেলা_ রাখঢাক নেই। সব অঞ্চলের বিভিন্ন পেশা ও কর্মপরিমণ্ডলের বিপুলসংখ্যক নাগরিক এই মঞ্চে কথা বলেছেন। মতামতের মিল-অমিল ছিল। কিন্তু মনোমালিন্য ছিল না কোন অনুষ্ঠানে। নাগরিক মঞ্চ যেন গণতন্ত্র মঞ্চ হয়ে উঠল। এই বিপুলসংখ্যক সমাবেশের মতামত এবং সুপারিশমালা প্রকাশিত হয়েছিল প্রথম আলো পত্রিকায়। পাঠকরা নিশ্চয়ই বিস্ময়-আনন্দে অভিভূত হয়ে পাঠ করেছেন যে, অঞ্চলের ভিন্নতা থাকলেও সর্বত্র মতামত ছিল প্রায় অভিন্ন। কে বলে দেশের মানুষ বিভক্ত। মতামতের মাত্রায় বৈচিত্র্য ছিল বৈকি, কিন্তু বিভক্তির এতটুকু চিহ্ন কোনো সভাতেই ছিল না। প্রতিটি সভায় উচ্চকণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঘৃণা, নির্বাচনে কালো টাকার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ, নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে সমর্থন করার অঙ্গীকার, নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন, গণতান্ত্রিক কৃষ্টির বিকাশ এবং দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, যুব অর্থনীতিবিদ সমিতি এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের সমন্বয়ে গঠিত নাগরিক মঞ্চটিতে রয়েছেন প্রবীণ ও নবীন অর্থনীতিবিদ, পেশাজীবী এবং উন্নয়নকর্মীরা। এই মঞ্চটি সমাবেশ করেছে এবং করে চলেছে দেশের একেবারে প্রত্যন্ত পল্লী অঞ্চলে। শহর অঞ্চলের মানুষের মতামত সম্পর্কে তাদের সম্যক ধারণা রয়েছে। তারা জানতে চাইছেন, দূর পল্লী অঞ্চলের সাধারণ মানুষের ধ্যান-ধারণার সঙ্গে শহুরে মানুষের ধ্যান-ধারণার মিল-অমিল কতখানি ও কোন ধরনের। তারা বিস্ময় ও আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন, বাংলাদেশের শহর আর পল্লী এলাকার নাগরিক সমাজের চিন্তা-চেতনায় বিভেদরেখা টানাই যায় না_ উপলব্ধির প্রকাশে গ্রামীণ সমাজ অধিক ঋজু ও প্রো-অ্যাকটিভ। অমিল খুঁজলে তা পাওয়া যাবে ভাষা ও প্রকাশ ভঙ্গিতে। অর্থনীতি মঞ্চের এটাই বড় শিক্ষা। গ্রামীণ দৈনন্দিন অর্থনৈতিক বিষয়ে গ্রামীণ নাগরিকদের ধারণা বাস্তবতামুখী। তাদের দূরদৃষ্টি ও প্রজ্ঞা শহুরে নাগরিকদের বিস্ময় জাগাতে পারে। তাদের দুর্বলতা হলো_ তারা সংগঠিত নন, অনেকটা বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করেন এবং মতবিনিময়ের মঞ্চও তেমন গড়ে ওঠেনি গ্রামীণ সমাজে; যেটুকু আছে তা গণ্ডিবদ্ধ, বিচ্ছিন্ন এবং বৃহত্তর সংহতি বিনির্মাণে অপর্যাপ্ত। সাংগঠনিক অপ্রতুলতা তাদের অর্থনীতিতে মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বিচ্ছিন্নতার কারণে উৎপাদক হয়েও তারা নামমাত্র উৎপাদন মূল্য পায়। সুসংগঠিত মধ্যস্বত্বভোগীরা পণ্য সংগ্রহ ও শহরে বিক্রয় প্রক্রিয়া নিজেদের কব্জায় রেখেছে। এরাই গ্রামীণ উৎপাদনকারীদের সংহতি ও সংগঠন প্রক্রিয়ায় শক্তিশালী অন্তরায়। অর্থনীতি মঞ্চের গ্রামীণ নাগরিক সমাবেশগুলোতে যে ধারণা ও মতামত প্রতিফলিত হয়েছিল, সেগুলোর সারসংক্ষেপ উল্লেখ করছি। (ক) 'আপনারা কন দ্যাশ আমাগো। আমরা দেহি, দ্যাশের মালিক সরকারি দল, এমপি সাব আর তার দলবল। হ্যাগো কতা হুনতে অয়_ না হুনলে ভিটাছাড়া করে, নয় বড় জুলুম চালায়। হ্যার ব্যবস্থা কী?' (খ) 'এলেকশনে ভোট দেই একজনারে_ হেই ভোট জিনে নিয়া যায় আরেকজনের বাস্কে। হের কী ব্যবস্থা আছে?' (গ) 'গ্রাম দ্যাশে হিন্দু অইলে বড় বিপদ। ভোট দেওনই যায় না। ভোটের কাছে যাইতেই দ্যায় না। হের কী ব্যবস্থা করবা?' (ঘ) 'কেউ কিছু করব না, তা অইলে নিজেরডা নিজেরই দ্যাখতে অইব। সামনের এলেকশনে ভোট দিয়া বাড়ি গ্যালে চলব না। চিড়ামুড়ি নিয়া আইতে অইব। ভোটের অফিস আটকাইয়া রাখতে অইব_ য্যান জিনে না ঢোকে! ভোট গুইন্যা আমাগো শুনাইব। আমাগো সামনে সই করব, এক কপি আমাগো দিব, তারপর অপিস ছাড়তে দিব। যেমন কুকুর, তেমন মুগুর।' (ঙ) 'আপনারা অর্থনীতি করেন। আমরা এত খাঁটি, ফলনও আল্লা দেয়_ কিন্তু অবস্থা ফেরে না। এর কী ব্যবস্থা আছে?' (চ) 'দ্যাশে দুর্নীতি ভরতি_ আমরাও বুঝি। সরকার দুই-একটা দুর্নীতি ধরে না ক্যান?' (ছ) 'দুর্নীতি ঠেকাইতে গ্যালে হ্যারা গুলি্ল করে, জানে শ্যাষ করে। যে মারে হ্যার বিচার হয় না। যে মরে তার পরিবার থাকে ভয়ে।' (জ) 'কতা-বারতা কইয়া কোনো লাভ অইব না। যার কাজ তারই করন লাগব। আমাগো কনসাট ভাইদের মতন একাট্টা অইতে পারলে, কিছু করন যাইব। খালি বাতচিত কইর‌্যা লাভ নাই।'
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যে নাগরিক আলোচনা হয়েছিল, তাতে অংশ নিয়েছিলেন সমাজের সর্বক্ষেত্রের প্রথিতযশা সুধীজনরা। গোষ্ঠী বিচারে এরা সুপ্রতিষ্ঠিত জ্ঞানী-গুণীজন। শিল্পপতি-ব্যবসায়ী নেতাদের উপস্থিতিও লক্ষণীয়। তবে সবাই অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। দু'একজন রাজনীতির অঙ্গনে সুপরিচিত হলেও তাদের সবারই 'সুশীল সমাজ' পরিচিতি মুখ্য। তাদের আলোচনার ভিত্তিতে অধ্যাপক ড. রেজা কিবরিয়া একটি সংক্ষিপ্তসার তৈরি করেছিলেন এবং বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত একটি বৃহৎ নাগরিক সমাবেশে উপস্থাপন করেছিলেন। এ আলোচনা প্রচার মাধ্যমে বেশ গুরুত্ব পেয়েছিল। 'বাংলাদেশ-ভিশন ২০২১' শিরোনামে পরিচালিত এ আলোচনাচক্রে উত্থাপিত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয়, উচ্চশিক্ষিত সুধী সমাজ এবং গ্রামীণ অশিক্ষিত নাগরিক সমাজের মধ্যে দেশের সমস্যা চিহ্নিতকরণে তেমন পার্থক্য নেই। সমস্যা সমাধানে উচ্চশিক্ষিত সুধী সমাজের বক্তব্য যেখানে পরোক্ষ, পরিশীলিত এবং দ্বিধাগ্রস্ত; সেখানে অশিক্ষিত গ্রামীণ মানুষের বক্তব্য অনেকটাই ঋজু, প্রত্যক্ষ, বাস্তবমুখী এবং দ্বিধাহীন। নগর সমাজের আলোচনা থেকে যে কথাগুলো জোরেশোরে উচ্চারিত হয়েছিল, অতি সংক্ষেপে তা উপস্থাপন করছি। (ক) ক্ষমতাসীনরা সবকিছু দলীয়করণ করে ফেলেছেন, ফলে রাষ্ট্রীয় ইনস্টিটিউশনগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। (খ) সুশাসন ছাড়া মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। (গ) সর্বগ্রাসী দুর্নীতি অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করেছে এবং দেশের রাজনীতিকে বিষিয়ে তুলেছে। (ঘ) কালো টাকা গণতান্ত্রিক কাঠামোকে গ্রাস করেছে। (ঙ) পেশিশক্তি ও কালো টাকা নির্বাচনকে অর্থহীন করে তুলেছে। (চ) প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশের অর্থনৈতিক উদ্যোক্তারা সাহসিকতা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। (ছ) সন্ত্রাস-দুর্নীতি-কালো টাকা-পেশিশক্তির বিরুদ্ধে জনগণ দৃঢ়ভাবে একাট্টা হতে না পারলে, গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনরুদ্ধার করা যাবে না এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। (জ) সর্ববৃহৎ দু'একটি দুর্নীতির বিচার এখনই শুরু হওয়া উচিত।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তৃণমূলে আলোচনা তথা আন্দোলন পরিচালনা করছে 'সুশাসনের জন্য নাগরিক' সংক্ষেপে 'সুজন' নামক উজ্জীবক সংস্থা। মানববন্ধন, আলোচনা ও অনুশীলনের মাধ্যমে কাজ করে চলেছে সুজন_ শহরে ও গ্রামে। এরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর গবেষণা করেছে। ইন্টারনেটে ভোটার তালিকাবিষয়ক তথ্যাবলি তুলে ধরেছে। নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। কর্মশালার মাধ্যমে তারা প্রায়ই সুধীজনের মতামত গ্রহণ করে থাকে। সুজনের আলোচনায়ও জোরেশোরে উচ্চারিত হয়েছে : (ক) কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া নির্বাচন স্বচ্ছ হবে না। (খ) দুর্নীতি-কালো টাকা-সন্ত্রাস গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বড় প্রতিবন্ধকতা। (গ) স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় না। (ঘ) জনগণের ঐক্য এবং সক্রিয়তাই সুশাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পারে।
বিভিন্ন মঞ্চে, বিভিন্ন নেতৃত্বে, বিভিন্ন স্থানে, বিভিন্ন সমাবেশে উচ্চারিত কথাগুলো একটি মোড়কে উপস্থাপন করলাম মিলিয়ে দেখার সুবিধার জন্য। এ থেকে বোঝা যাবে মানুষের মন ও মতের অভিন্নতা। বোঝা যাবে বাংলাদেশের বৃহত্তর সমাজের ঐকতান। সমাজ বিভক্ত নয়_ দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসীরা সমাজকে পেশি ও অর্থশক্তি দিয়ে বিভক্ত করে রেখেছে। শুভশক্তির সম্মিলিত সমন্বয় প্রয়াস সংহতির মাধ্যমে সামাজিক শক্তির পুনরুত্থান ও বিকাশ সাধনে সক্ষম হবে।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ : ব্যাংকার ও কলাম লেখক
 

No comments

Powered by Blogger.