দেশ ও দলের ভাবমূর্তির জন্য আত্মঘাতী-বেগম খালেদা জিয়ার উক্তি
জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পল্টন ময়দানে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন; বিশেষ করে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে নামার ক্ষেত্রে তাঁর এবারের বক্তব্য অনেক স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট। এ ধরনের আন্দোলনের হুমকি এত দিন পর্যন্ত শুধু বিএনপির মহাসচিবসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতার বক্তব্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
দেশের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে জাতীয় নেতা হিসেবে তাঁর যে উদ্বেগ, তা বোধগম্য। কোনো সরকার যদি দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার প্রতিকার সাধারণ মানুষ সংগত কারণে বিরোধী দলের কাছেই আশা করবে। আমাদের রাজনীতির একটা বিরাট সমস্যা হলো অপরিমিতিবোধ। এটা অবশ্য আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় বহু ক্ষেত্রে বেদনা ও পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ করে আসছি। দায়িত্বশীল অবস্থানে থাকা আমাদের নেতা-নেত্রীরা অনেক সময় নির্বিকারভাবে এমন সব উক্তি ও মন্তব্য করেন, যা আক্ষরিকভাবে গুরুত্বের সঙ্গে নিলে দারুণ বিপাকে পড়তে হয়। তাই তাঁদের ভাষণের তাল-লয়-ছন্দ কখনো কখনো ভীষণ গোলমেলে। সে কারণেই তা কখনো কখনো উপেক্ষার যোগ্য। যেমন, বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেছেন, ‘যারা ক্ষমতায় আছে তারা নয়, অন্য কেউ অন্য কোথাও বসে দেশ পরিচালনা করছে। সরকার বিদেশি শক্তির স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করছে।’
এ রকম একটি স্পর্শকাতর বক্তব্য অন্য কোনো দেশের গণতন্ত্রে ঘটলে হয়তো মস্ত হইচই পড়ে যেত। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি বলে কথা! জনগণ এ ধরনের প্রগলভতায় তাত্ক্ষণিকভাবে বিচলিত কিংবা বিপদাপন্ন না ভাবতে অভ্যস্ত। নিকট অতীতেই বেগম জিয়া বলেছিলেন, পার্বত্য চুক্তি হলে দেশের একটি অঞ্চল ভারত হয়ে যাবে। তখন সেখানে যেতে ভিসা লাগবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া ওই চুক্তি অটুট রাখতেই সতর্ক ছিলেন। এ রকম নজিরের কোনো অভাব নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভারত সফর সামনে রেখে বিরোধীদলীয় নেত্রীর ওই আক্রমণকে হালকাভাবে দেখা যায় না। তাঁর ভাষণের স্ববিরোধিতা দেখে, তাঁর আক্রমণের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দিহান হতে হয়। তাঁর কথায়, ‘টিপাইমুখ বাঁধ, ট্রানজিট ও সমুদ্রসীমা নির্ধারণের মতো বিষয়ে যদি দিল্লিতে দেশের স্বার্থ রক্ষা হয়, তাহলে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হবে। আর যদি সবকিছু বিদেশিদের হাতে দিয়ে সরকার খালি হাতে ফিরে আসে, তবে তাদের পথে পথে কাঁটা বিছিয়ে দেওয়া হবে।’
‘যদি’ দিয়ে এ ধরনের কঠোর বক্তব্যের নাহয় একটা যুক্তি থাকে। কিন্তু বিএনপির নেত্রী ইতিমধ্যে তাঁর বীতরাগ বা প্রেজুডিশ প্রকাশ করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন যখন বলেন, অন্য কেউ দেশ পরিচালনা করছে, তখন এই উক্তি বিএনপির ভারত-বিরোধিতা বলেই প্রতিভাত হবে।
আমরা বিরোধীদলীয় নেত্রীর দেশের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে যেকোনো সংগত উদ্বেগকে স্বাভাবিক মনে করি। কিন্তু তাঁর ও তাঁর সংসদ অধিবেশন বর্জনরত দলের কোনো হুজুগে কিংবা লোক খেপানোর যে সস্তা রাজনীতি, তা আমরা অগ্রহণযোগ্য ও আত্মঘাতী মনে করি। এ রকম বল্গাহীন উক্তি দেশের ও দলের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় যে বিরোধী দলের এ ধরনের বাগাড়ম্বরপূর্ণ বৈরিতা জাতীয় কূটনৈতিক অর্জনচেষ্টাকে সহায়তা দিতে পারে। এ ধরনের দায়িত্বহীনতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভুল সংকেতও পৌঁছায়। সীমান্তের বাইরে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল ধারণা থাকলে তা দূর হয় না, বরং প্রকট হয়।
এ রকম একটি স্পর্শকাতর বক্তব্য অন্য কোনো দেশের গণতন্ত্রে ঘটলে হয়তো মস্ত হইচই পড়ে যেত। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি বলে কথা! জনগণ এ ধরনের প্রগলভতায় তাত্ক্ষণিকভাবে বিচলিত কিংবা বিপদাপন্ন না ভাবতে অভ্যস্ত। নিকট অতীতেই বেগম জিয়া বলেছিলেন, পার্বত্য চুক্তি হলে দেশের একটি অঞ্চল ভারত হয়ে যাবে। তখন সেখানে যেতে ভিসা লাগবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া ওই চুক্তি অটুট রাখতেই সতর্ক ছিলেন। এ রকম নজিরের কোনো অভাব নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভারত সফর সামনে রেখে বিরোধীদলীয় নেত্রীর ওই আক্রমণকে হালকাভাবে দেখা যায় না। তাঁর ভাষণের স্ববিরোধিতা দেখে, তাঁর আক্রমণের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দিহান হতে হয়। তাঁর কথায়, ‘টিপাইমুখ বাঁধ, ট্রানজিট ও সমুদ্রসীমা নির্ধারণের মতো বিষয়ে যদি দিল্লিতে দেশের স্বার্থ রক্ষা হয়, তাহলে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হবে। আর যদি সবকিছু বিদেশিদের হাতে দিয়ে সরকার খালি হাতে ফিরে আসে, তবে তাদের পথে পথে কাঁটা বিছিয়ে দেওয়া হবে।’
‘যদি’ দিয়ে এ ধরনের কঠোর বক্তব্যের নাহয় একটা যুক্তি থাকে। কিন্তু বিএনপির নেত্রী ইতিমধ্যে তাঁর বীতরাগ বা প্রেজুডিশ প্রকাশ করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন যখন বলেন, অন্য কেউ দেশ পরিচালনা করছে, তখন এই উক্তি বিএনপির ভারত-বিরোধিতা বলেই প্রতিভাত হবে।
আমরা বিরোধীদলীয় নেত্রীর দেশের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে যেকোনো সংগত উদ্বেগকে স্বাভাবিক মনে করি। কিন্তু তাঁর ও তাঁর সংসদ অধিবেশন বর্জনরত দলের কোনো হুজুগে কিংবা লোক খেপানোর যে সস্তা রাজনীতি, তা আমরা অগ্রহণযোগ্য ও আত্মঘাতী মনে করি। এ রকম বল্গাহীন উক্তি দেশের ও দলের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় যে বিরোধী দলের এ ধরনের বাগাড়ম্বরপূর্ণ বৈরিতা জাতীয় কূটনৈতিক অর্জনচেষ্টাকে সহায়তা দিতে পারে। এ ধরনের দায়িত্বহীনতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভুল সংকেতও পৌঁছায়। সীমান্তের বাইরে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল ধারণা থাকলে তা দূর হয় না, বরং প্রকট হয়।
No comments