পবিত্র কোরআনের আলো-হজরত আদম (আ.)-এর দুই পুত্রের কলহের কাহিনী
২৫. ক্বালা রাবি্ব ইন্নী লা-আমলিকু ইল্লা নাফছী ওয়া আখী ফাফ্রুক্ব বাইনানা ওয়া বাইনাল ক্বাওমিল ফাছিক্বীন।২৬. ক্বালা ফাইন্নাহা মুহার্রামাতুন আ'লাইহিম আরবায়ী'না ছানাতান; ইয়াতীহূনা ফিল আরদ্বি; ফালা তা'ছা আ'লাল ক্বাওমিল ফাছিক্বীন।
২৭. ওয়াত্লু আ'লাইহিম নাবাআব্নাই আদামা বিল-হাক্কি; ইয্ ক্বার্রাবা ক্বুরবা-নান ফাতুক্বুবি্বলা মিন্ আহাদিহিমা ওয়ালাম ইউতাক্বাব্বাল মিনাল আখার; ক্বালা লা-আক্বতুলান্নাকা; ক্বালা ইন্নামা ইয়াতাক্বাব্বালুল্লাহু মিনাল মুত্তাক্বীনা। [সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ২৫-২৭]
অনুবাদ
২৫. (নিজ সম্প্রদায়ের এরূপ অবাধ্যতা দেখে) মুসা বললেন, হে প্রভু, তুমি তো জানো আমার নিজের এবং আমার ভাই (হারুন) ছাড়া আর কারো ওপর আমার কর্তৃত্ব চলে না। অতএব আমাদের মাঝে এবং এসব পাপিষ্ঠের মাঝে তুমি একটা মীমাংসা করে দাও।
২৬. আল্লাহ তায়ালা বললেন, ৪০ বছরের জন্য এই আবাসভূমি থেকে তাদের বঞ্চিত করে দেওয়া হলো। এই ৪০ বছর ধরে তারা উদ্ভ্রান্ত হয়ে পৃথিবীর এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াবে। অতএব তুমি এই পাপিষ্ঠ লোকদের জন্য কখনো দুঃখ করো না।
২৭. (হে নবী মুহাম্মদ) আপনি আপনার উম্মতের কাছে আদমের দুই পুত্রের কাহিনীটি ভালো করে শুনিয়ে দিন। যখন তারা দুজনই আল্লাহর নামে কোরবানি পেশ করল, তখন তাদের একজনের কোরবানি কবুল করা হলো, আরেকজনেরটা কবুল করা হলো না। (যার কোরবানি কবুল করা হলো না) সে বলল, আমি তোমাকে হত্যা করে ফেলব। (যার কোরবানি কবুল হলো) সে বলল, আল্লাহ তায়ালা তো শুধু দায়িত্বনিষ্ঠ লোকদের কাছ থেকেই কোরবানি কবুল করেন।
ব্যাখ্যা
২৫ ও ২৬ নম্বর আয়াত দুটি আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায় মুসা (আ.)-এর কওমের কাহিনী বর্ণনায় এসেছে। মুসা (আ.)-এর কওম যে তাঁর ওপর আস্থাশীল নয় এ অবস্থা বর্ণনা করে তিনি নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন আল্লাহর কাছে। আল্লাহ তায়ালা এই সমস্যার ফয়সালা দিলেন এই বলে যে আগামী ৪০ বছর পর্যন্ত এই কওম তাদের আদি পিতৃভূমিতে প্রবেশ করার অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকবে। আর এই ৪০ বছর তারা উদ্ভ্রান্তের মতো পৃথিবীর পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়াবে। এই নিরুদ্দেশ ঘুরে বেড়ানোর প্রান্তরকেই 'তীহ' প্রান্তর বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা মুসা (আ.)-কে সান্ত্বনা দিয়েছেন এই বলে যে এটাই তাদের কর্মফল এবং এ জন্য তিনি যেন কোনো রকম দুঃখবোধ না করেন।
২৭ নম্বর আয়াতে এসেছে নতুন প্রসঙ্গ। সেটা হলো, হজরত আদম (আ.)-এর দুই পুত্রের মধ্যকার কলহ-বিবাদের প্রসঙ্গ। কথিত আছে, হজরত আদম (আ.)-এর প্রতি আল্লাহর হুকুম হলো, হাবিলের সঙ্গে কাবিলের বোনকে বিয়ে দেওয়ার এবং কাবিলের সঙ্গে হাবিলের বোনকে বিয়ে দেওয়ার। কাবিলের বোন আকলিমা ছিল সুন্দরী। আর হাবিলের বোন লাবুদা ছিল কুশ্রী। সুতরাং কাবিল লাবুদাকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিল না; বরং সেও আকলিমাকেই বিয়ে করতে চাইছিল। এ অবস্থায় দুজনের মধ্যে দেখা দিল চরম বিবাদ। বিবাদ মীমাংসার জন্য হজরত আদম (আ.) তাদের বললেন, তোমরা উভয়ে আল্লাহর নামে কোরবানি করো, যার কোরবানি কবুল হবে সে-ই আকলিমাকে পাবে। নির্দেশ মোতাবেক হাবিল একটি দুম্বা কোরবানি করল এবং কাবিল কোরবানি করল গমের শীষের আঁটি। পিতা আদম (আ.) জানালেন, হাবিলের কোরবানি কবুল হয়েছে। কাবিলের কোরবানি কবুল হয়নি। এতে রাগান্বিত হয়ে কাবিল হাবিলকে হত্যা করে। এই কাহিনীটির অবতারণা করা হয়েছে এই আয়াতের মাধ্যমে এবং পরবর্তী আয়াতগুলোতে এই কাহিনীর আরো অনেক শিক্ষামূলক উপদেশ বর্ণনা করা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ
২৫. (নিজ সম্প্রদায়ের এরূপ অবাধ্যতা দেখে) মুসা বললেন, হে প্রভু, তুমি তো জানো আমার নিজের এবং আমার ভাই (হারুন) ছাড়া আর কারো ওপর আমার কর্তৃত্ব চলে না। অতএব আমাদের মাঝে এবং এসব পাপিষ্ঠের মাঝে তুমি একটা মীমাংসা করে দাও।
২৬. আল্লাহ তায়ালা বললেন, ৪০ বছরের জন্য এই আবাসভূমি থেকে তাদের বঞ্চিত করে দেওয়া হলো। এই ৪০ বছর ধরে তারা উদ্ভ্রান্ত হয়ে পৃথিবীর এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াবে। অতএব তুমি এই পাপিষ্ঠ লোকদের জন্য কখনো দুঃখ করো না।
২৭. (হে নবী মুহাম্মদ) আপনি আপনার উম্মতের কাছে আদমের দুই পুত্রের কাহিনীটি ভালো করে শুনিয়ে দিন। যখন তারা দুজনই আল্লাহর নামে কোরবানি পেশ করল, তখন তাদের একজনের কোরবানি কবুল করা হলো, আরেকজনেরটা কবুল করা হলো না। (যার কোরবানি কবুল করা হলো না) সে বলল, আমি তোমাকে হত্যা করে ফেলব। (যার কোরবানি কবুল হলো) সে বলল, আল্লাহ তায়ালা তো শুধু দায়িত্বনিষ্ঠ লোকদের কাছ থেকেই কোরবানি কবুল করেন।
ব্যাখ্যা
২৫ ও ২৬ নম্বর আয়াত দুটি আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায় মুসা (আ.)-এর কওমের কাহিনী বর্ণনায় এসেছে। মুসা (আ.)-এর কওম যে তাঁর ওপর আস্থাশীল নয় এ অবস্থা বর্ণনা করে তিনি নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন আল্লাহর কাছে। আল্লাহ তায়ালা এই সমস্যার ফয়সালা দিলেন এই বলে যে আগামী ৪০ বছর পর্যন্ত এই কওম তাদের আদি পিতৃভূমিতে প্রবেশ করার অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকবে। আর এই ৪০ বছর তারা উদ্ভ্রান্তের মতো পৃথিবীর পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়াবে। এই নিরুদ্দেশ ঘুরে বেড়ানোর প্রান্তরকেই 'তীহ' প্রান্তর বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা মুসা (আ.)-কে সান্ত্বনা দিয়েছেন এই বলে যে এটাই তাদের কর্মফল এবং এ জন্য তিনি যেন কোনো রকম দুঃখবোধ না করেন।
২৭ নম্বর আয়াতে এসেছে নতুন প্রসঙ্গ। সেটা হলো, হজরত আদম (আ.)-এর দুই পুত্রের মধ্যকার কলহ-বিবাদের প্রসঙ্গ। কথিত আছে, হজরত আদম (আ.)-এর প্রতি আল্লাহর হুকুম হলো, হাবিলের সঙ্গে কাবিলের বোনকে বিয়ে দেওয়ার এবং কাবিলের সঙ্গে হাবিলের বোনকে বিয়ে দেওয়ার। কাবিলের বোন আকলিমা ছিল সুন্দরী। আর হাবিলের বোন লাবুদা ছিল কুশ্রী। সুতরাং কাবিল লাবুদাকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিল না; বরং সেও আকলিমাকেই বিয়ে করতে চাইছিল। এ অবস্থায় দুজনের মধ্যে দেখা দিল চরম বিবাদ। বিবাদ মীমাংসার জন্য হজরত আদম (আ.) তাদের বললেন, তোমরা উভয়ে আল্লাহর নামে কোরবানি করো, যার কোরবানি কবুল হবে সে-ই আকলিমাকে পাবে। নির্দেশ মোতাবেক হাবিল একটি দুম্বা কোরবানি করল এবং কাবিল কোরবানি করল গমের শীষের আঁটি। পিতা আদম (আ.) জানালেন, হাবিলের কোরবানি কবুল হয়েছে। কাবিলের কোরবানি কবুল হয়নি। এতে রাগান্বিত হয়ে কাবিল হাবিলকে হত্যা করে। এই কাহিনীটির অবতারণা করা হয়েছে এই আয়াতের মাধ্যমে এবং পরবর্তী আয়াতগুলোতে এই কাহিনীর আরো অনেক শিক্ষামূলক উপদেশ বর্ণনা করা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments