বাংলাদেশ পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও সম্ভাবনা by মো. তৌফিক হোসেন
সম্প্রতি পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতনে উদ্বিগ্ন অজস্র বিনিয়োগকারী। সেই সঙ্গে দেশবাসী। শুধু তা-ই নয়, পুঁজিবাজারের এই উত্থান-পতন দেশের বাইরের বিনিয়োগকারীদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁদের মনে জন্ম নিয়েছে হাজারো প্রশ্ন। কেন এই দরপতন? এটা কি মাইন্ড গেম, নাকি পুঁজিবাজার উত্থান-পতনের একটি চলমান প্রক্রিয়া? প্রতিনিয়ত বাজার পরিচালনার পেছনে অদৃশ্য শক্তি কে বা কারা?
দরপতনের পেছনে কারা দায়ী? অদূর ভবিষ্যতে দেশের পুঁজিবাজার কী রকম হবে? এই প্রক্রিয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা কী? বাংলাদেশের শেয়ারবাজার নাকি কোনো রুলস মানে না। ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট বা বিশ্লেষকরা বলে থাকেন ফান্ডামেন্টাল দেখে শেয়ার কিনতে। ফান্ডামেন্টাল বলতে ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা, ইন্ডাস্ট্রিতে কম্পানির অবস্থান, ইপিএস, নেট অ্যাসেট ভ্যালু, পিই রেশিও, ব্যবসার গ্রোথ ইত্যাদি বোঝায়। শেয়ারবাজারে এসব ভ্যালু বাছ-বিচার করে বিনিয়োগ করলে খুব বেশি মুনাফা অর্জন করা যায় না। এটা শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ভালো করেই জানে। কিন্তু মজার কথা হলো, বাজারে দেখা যায় তার ঠিক উল্টো ট্রেন্ড। পৃথিবীর কোনো শেয়ারবাজারেই এমনটি হতে দেখা যায় না।
অর্থনীতিবিদ এবং শেয়ারবাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান শেয়ারবাজারের কেউ শিখতে ও শেখাতে রাজি নয়। কম্পানিগুলোর খ্যাতি তো দূরের কথা, অনেকে এসব কম্পানির কী ব্যবসা, সেটাও জানে না। বাজারসংশ্লিষ্ট হলে মনে রাখতে হবে, ফান্ডামেন্টালেরও সীমা আছে। কোনো গাছ কি আকাশ স্পর্শ করতে পারে? এই বাজারে আকাশ ছোঁয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়। এর পরও এগুলো কিছু লোক (গ্যাম্বলার) কিনছে এবং লাখ লাখ টাকা লাভ করে বেরিয়ে যাচ্ছে। একজন সচেতন বিনিয়োগকারী হিসেবে আপনাকে মনে রাখতে হবে_১. কম্পানির পণ্য ও সেবাসংক্রান্ত বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করা। ২. দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জাতীয় রাজস্বনীতি বিবেচনা করা। ৩. সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিশ্ববাজার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা।
অনেক সময় বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখে শেয়ারমূল্যের অস্বাভাবিক ওঠানামা। যেমন_কোনো কম্পানি যদি নতুন নতুন শাখা খুলে তার বাজার সম্প্রসারিত করে, দেশি বা বিদেশি কোনো কম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করে, তাহলে ওই কম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে যেতে পারে। বিপরীতভাবে বাজারে কোনো পণ্যের চাহিদা পড়ে গেলে ভিত্তি যতই ভালো হোক, শেয়ারের দাম পড়তে থাকবে। এই পুঁজিবাজারটা যথেষ্ট সম্ভাবনাময়, যদি সঠিকভাবে এর পুনর্গঠন করা যায়। অস্বাভাবিক দরপতনের সর্বনাশা ধারা থেকে বাজারকে বের করে আনতে হলে তারল্য এবং আস্থার সংকট দূর করতে হবে।
লেখক : কলামিস্ট, ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ডিপার্টমেন্ট অব ফিন্যান্স, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি)
toufique2010@gmail.com
অর্থনীতিবিদ এবং শেয়ারবাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান শেয়ারবাজারের কেউ শিখতে ও শেখাতে রাজি নয়। কম্পানিগুলোর খ্যাতি তো দূরের কথা, অনেকে এসব কম্পানির কী ব্যবসা, সেটাও জানে না। বাজারসংশ্লিষ্ট হলে মনে রাখতে হবে, ফান্ডামেন্টালেরও সীমা আছে। কোনো গাছ কি আকাশ স্পর্শ করতে পারে? এই বাজারে আকাশ ছোঁয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়। এর পরও এগুলো কিছু লোক (গ্যাম্বলার) কিনছে এবং লাখ লাখ টাকা লাভ করে বেরিয়ে যাচ্ছে। একজন সচেতন বিনিয়োগকারী হিসেবে আপনাকে মনে রাখতে হবে_১. কম্পানির পণ্য ও সেবাসংক্রান্ত বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করা। ২. দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জাতীয় রাজস্বনীতি বিবেচনা করা। ৩. সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিশ্ববাজার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা।
অনেক সময় বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখে শেয়ারমূল্যের অস্বাভাবিক ওঠানামা। যেমন_কোনো কম্পানি যদি নতুন নতুন শাখা খুলে তার বাজার সম্প্রসারিত করে, দেশি বা বিদেশি কোনো কম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করে, তাহলে ওই কম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে যেতে পারে। বিপরীতভাবে বাজারে কোনো পণ্যের চাহিদা পড়ে গেলে ভিত্তি যতই ভালো হোক, শেয়ারের দাম পড়তে থাকবে। এই পুঁজিবাজারটা যথেষ্ট সম্ভাবনাময়, যদি সঠিকভাবে এর পুনর্গঠন করা যায়। অস্বাভাবিক দরপতনের সর্বনাশা ধারা থেকে বাজারকে বের করে আনতে হলে তারল্য এবং আস্থার সংকট দূর করতে হবে।
লেখক : কলামিস্ট, ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ডিপার্টমেন্ট অব ফিন্যান্স, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি)
toufique2010@gmail.com
No comments