তিস্তা চুক্তি নিয়ে নতুন প্রশ্ন-বাংলাদেশের স্বার্থ যেন ক্ষুণ্ন না হয়
তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে ভারতের নতুন কৌশলের যেটুকু পূর্বাভাস আমরা পাচ্ছি, তা আমাদের হতাশাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা ও বাংলাদেশের কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবর ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অবস্থানে এখনো অনড়।
ফলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মমতার শর্ত মেনে নিয়ে প্রস্তাবিত চুক্তির খসড়ায় কিছু পরিবর্তন আনতে চায়। তার মধ্যে রয়েছে, তিস্তার গজালডোবা পয়েন্ট থেকে ৫০ শতাংশ পানি না দিয়ে ২৫ শতাংশ পানি দেওয়া। গজালডোবার পরে অন্যান্য পয়েন্ট থেকে আরো ২৫ শতাংশ যোগ করে বাংলাদেশকে তিস্তায় মোট ৫০ শতাংশ পানি দেওয়া। এটি অত্যন্ত অনিশ্চিত একটি বিষয়। তদুপরি প্রদত্ত পানি কিউসেকের হিসেবে দেওয়া হবে না। ফলে বাংলাদেশ শুষ্ক মৌসুমে কতটুকু পানি পাবে এবং তা বর্তমানের চেয়ে আদৌ কোনো উন্নত অবস্থা হবে কি না, তা সঠিকভাবে বলা যাবে না। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরগুলো যদি সত্য হয়, তাহলে ভারতের কৌশল পরিবর্তনের বিষয়টিকে আমরা মোটেও বন্ধুসুলভ আচরণ হিসেবে গণ্য করতে পারি না।
গত সেপ্টেম্বরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বহু প্রতীক্ষিত সফরের সময়ও আমরা হতাশ হয়েছিলাম। তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়াসহ উষ্ণ আতিথেয়তায় কোনো কার্পণ্য ছিল না। কারণ, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নয়াদিলি্ল সফরের পর থেকেই বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় আগমনের প্রতীক্ষায় ছিল। তিস্তার পানিবণ্টন, ছিটমহল বিনিময় এবং ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনাকাঙ্ক্ষিত বিরোধিতার মুখে বাংলাদেশের মানুষের সেসব প্রত্যাশা রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছিল। প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হতে চললেও এ ব্যাপারে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে না জানিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলে টিপাইমুখ ড্যাম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বহু আলোচনার পরও সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধ হয়নি। সব মিলিয়ে ভারতের কাছ থেকে আমরা প্রত্যাশিত সদিচ্ছা খুব কমই পাচ্ছি।
ইতিমধ্যে অভিন্ন নদীগুলোতে ভারতের একতরফা বাঁধ তৈরি বা গতিপথ পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের অধিকাংশ নদী আজ মৃতপ্রায়। এককালের প্রমত্তা পদ্মা এখন শীতকালে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। হেঁটে পারাপার করা যায়। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীরও একই অবস্থা। ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে সব বাঁধের মুখ খুলে দেওয়ায় বন্যা ও জলাবদ্ধতায় সারা দেশে ব্যাপক ফসলহানি হয়। প্রতিবেশী বাঁচল কি মরল, তা আমার দেখার বিষয় নয়_এই মনোভাব কোনো দিনও সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ হতে পারে না, বন্ধুত্বসুলভ আচরণ তো নয়ই। আন্তর্জাতিক আইনও অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহকে এভাবে বাধাগ্রস্ত করার বিষয়টি সমর্থন করে না। তাই কেবল দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ওপর অপেক্ষা করে না থেকে বাংলাদেশের উচিত, এসব ব্যাপারে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করা।
তিস্তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির ওপর। উজানে গজলডোবা বাঁধের কারণে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পানিপ্রবাহ থাকে না বললেই চলে। এর ফলে চাষাবাদ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি জীববৈচিত্র্যসহ তিস্তা ও যমুনা অববাহিকার মানুষের জীবনযাত্রাও বহুল পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ প্রক্রিয়া ক্রমেই তীব্রতা পাচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচনির্ভর কৃষিও ব্যাহত হচ্ছে। আর শুধু তিস্তার পানিবণ্টনই নয়, পর্যায়ক্রমে ৫৪টি অভিন্ন নদীর ব্যাপারেই ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্মানজনক সমাধানে আসতে হবে। এ জন্য দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও নিতে হবে।
গত সেপ্টেম্বরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বহু প্রতীক্ষিত সফরের সময়ও আমরা হতাশ হয়েছিলাম। তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়াসহ উষ্ণ আতিথেয়তায় কোনো কার্পণ্য ছিল না। কারণ, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নয়াদিলি্ল সফরের পর থেকেই বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় আগমনের প্রতীক্ষায় ছিল। তিস্তার পানিবণ্টন, ছিটমহল বিনিময় এবং ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনাকাঙ্ক্ষিত বিরোধিতার মুখে বাংলাদেশের মানুষের সেসব প্রত্যাশা রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছিল। প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হতে চললেও এ ব্যাপারে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে না জানিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলে টিপাইমুখ ড্যাম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বহু আলোচনার পরও সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধ হয়নি। সব মিলিয়ে ভারতের কাছ থেকে আমরা প্রত্যাশিত সদিচ্ছা খুব কমই পাচ্ছি।
ইতিমধ্যে অভিন্ন নদীগুলোতে ভারতের একতরফা বাঁধ তৈরি বা গতিপথ পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের অধিকাংশ নদী আজ মৃতপ্রায়। এককালের প্রমত্তা পদ্মা এখন শীতকালে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। হেঁটে পারাপার করা যায়। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীরও একই অবস্থা। ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে সব বাঁধের মুখ খুলে দেওয়ায় বন্যা ও জলাবদ্ধতায় সারা দেশে ব্যাপক ফসলহানি হয়। প্রতিবেশী বাঁচল কি মরল, তা আমার দেখার বিষয় নয়_এই মনোভাব কোনো দিনও সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ হতে পারে না, বন্ধুত্বসুলভ আচরণ তো নয়ই। আন্তর্জাতিক আইনও অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহকে এভাবে বাধাগ্রস্ত করার বিষয়টি সমর্থন করে না। তাই কেবল দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ওপর অপেক্ষা করে না থেকে বাংলাদেশের উচিত, এসব ব্যাপারে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করা।
তিস্তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির ওপর। উজানে গজলডোবা বাঁধের কারণে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পানিপ্রবাহ থাকে না বললেই চলে। এর ফলে চাষাবাদ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি জীববৈচিত্র্যসহ তিস্তা ও যমুনা অববাহিকার মানুষের জীবনযাত্রাও বহুল পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ প্রক্রিয়া ক্রমেই তীব্রতা পাচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচনির্ভর কৃষিও ব্যাহত হচ্ছে। আর শুধু তিস্তার পানিবণ্টনই নয়, পর্যায়ক্রমে ৫৪টি অভিন্ন নদীর ব্যাপারেই ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্মানজনক সমাধানে আসতে হবে। এ জন্য দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও নিতে হবে।
No comments