পঞ্চম আদমশুমারি-জনসংখ্যার প্রকৃত চিত্র দেখতে চাই
বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা প্রকৃতপক্ষে কত? পঞ্চম আদমশুমারি অনুযায়ী, গত ১৫ মার্চ বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ২৩ লাখ। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) বলেছিল, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৪৪ লাখ। এতে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছিল।
এরপর গত ৩ মে জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিভাগ থেকে হিসাবটি সংশোধন করে বলা হয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৯০ লাখের কাছাকাছি। যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা ব্যুরোর আন্তর্জাতিক ডেটাবেইস থেকে জানা যায়, চলতি বছরের মাঝামাঝি বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ১৫ কোটি ৮৬ লাখের কাছাকাছি। ২০২৫ সাল নাগাদ এই সংখ্যা হবে ২০ কোটি ৪৫ লাখ। এত পার্থক্য কেন? এত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াই বা কেন? তাহলে কি এর ভেতরে কোনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র অথবা দেশীয়ভাবে লুকোচুরির প্রবণতা কাজ করেছে?
ঠিকাদারি ও উপঠিকাদারির মাধ্যমে যে শুমারি করা হয়েছে, তা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই বলছেন, তাঁদের বাড়িতে শুমারির কোনো লোক যায়নি। তাহলে কি যাঁরা শুমারি করেছেন, তাঁরা নিজেদের ঘরে বসে ইচ্ছামতো খানাপ্রতি লোকসংখ্যা বসিয়ে দিয়েছেন? কোনো দেশের জন্ম-মৃত্যুর হিসাব, লোকসংখ্যা বৃদ্ধির হার ইত্যাদি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিটি দেশের মোট জনসংখ্যার একটি চিত্র তৈরি করা হয়। বাস্তবের সঙ্গে এই ডেমোগ্রাফিক চিত্রের অসংগতি খুব কমই দেখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে সপ্তাশ্চর্যের মতো ঘটনা অনেকই ঘটে, এবারও জনসংখ্যার ক্ষেত্রে তা ঘটেছে। কথায় বলে, শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। আমরা যদি তেমন কোনো চেষ্টা করে থাকি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তা কেবল হাস্যকরই হবে। আমরা কি দেখছি না যে বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পনা বা জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের কি শোচনীয় অবস্থা! পত্রপত্রিকায় কি তা নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে না? জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে জোরদার না করে আমরা একটি কল্পিত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বানিয়ে দিলেই কি আন্তর্জাতিক মহলে তা সমাদৃত হবে? আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানকে আমরা গদিতে বসে 'অনধিকার চর্চা' বলে উড়িয়ে দিতে পারি, কিন্তু সারা পৃথিবী সেই পরিসংখ্যানকেই মূল্য দেবে। আর শুধু বিদেশি সহায়তার জন্য নয়, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই আমাদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।
উন্নত দেশগুলো তাদের জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে চিন্তিত, আর বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে তার উল্টোটা। ১৯৯৫ সালে যেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৫, সেখানে ২০০৫ সালে সেই হার দাঁড়িয়েছিল ২ দশমিক ১-এ। বর্তমান আদমশুমারিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৪ দেখানো হলেও তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে অনেকেরই মনে। শুধু জন্মগ্রহণই নয়, শিশুমৃত্যুর হার কমে যাওয়া, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিও জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে দ্রুততর করেছে। সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী শিশুমৃত্যুর হার আরো কমাতে হবে। আমরা স্বাভাবিকভাবেই চাই, মানুষ সুস্থভাবে আরো বেশি দিন বেঁচে থাকুক। সে ক্ষেত্রে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার একমাত্র পথ হচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণ। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে অতীতের সরকারগুলো সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটিকেই সবচেয়ে কম গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। কাজেই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়ে কোনো লাভ হবে না। বরং দেশ ও জাতির কল্যাণের লক্ষ্য নিয়ে আসল কাজটিতে আমাদের আরো বেশি মনোনিবেশ করতে হবে।
ঠিকাদারি ও উপঠিকাদারির মাধ্যমে যে শুমারি করা হয়েছে, তা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই বলছেন, তাঁদের বাড়িতে শুমারির কোনো লোক যায়নি। তাহলে কি যাঁরা শুমারি করেছেন, তাঁরা নিজেদের ঘরে বসে ইচ্ছামতো খানাপ্রতি লোকসংখ্যা বসিয়ে দিয়েছেন? কোনো দেশের জন্ম-মৃত্যুর হিসাব, লোকসংখ্যা বৃদ্ধির হার ইত্যাদি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিটি দেশের মোট জনসংখ্যার একটি চিত্র তৈরি করা হয়। বাস্তবের সঙ্গে এই ডেমোগ্রাফিক চিত্রের অসংগতি খুব কমই দেখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে সপ্তাশ্চর্যের মতো ঘটনা অনেকই ঘটে, এবারও জনসংখ্যার ক্ষেত্রে তা ঘটেছে। কথায় বলে, শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। আমরা যদি তেমন কোনো চেষ্টা করে থাকি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তা কেবল হাস্যকরই হবে। আমরা কি দেখছি না যে বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পনা বা জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের কি শোচনীয় অবস্থা! পত্রপত্রিকায় কি তা নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে না? জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে জোরদার না করে আমরা একটি কল্পিত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বানিয়ে দিলেই কি আন্তর্জাতিক মহলে তা সমাদৃত হবে? আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানকে আমরা গদিতে বসে 'অনধিকার চর্চা' বলে উড়িয়ে দিতে পারি, কিন্তু সারা পৃথিবী সেই পরিসংখ্যানকেই মূল্য দেবে। আর শুধু বিদেশি সহায়তার জন্য নয়, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই আমাদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।
উন্নত দেশগুলো তাদের জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে চিন্তিত, আর বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে তার উল্টোটা। ১৯৯৫ সালে যেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৫, সেখানে ২০০৫ সালে সেই হার দাঁড়িয়েছিল ২ দশমিক ১-এ। বর্তমান আদমশুমারিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৪ দেখানো হলেও তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে অনেকেরই মনে। শুধু জন্মগ্রহণই নয়, শিশুমৃত্যুর হার কমে যাওয়া, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিও জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে দ্রুততর করেছে। সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী শিশুমৃত্যুর হার আরো কমাতে হবে। আমরা স্বাভাবিকভাবেই চাই, মানুষ সুস্থভাবে আরো বেশি দিন বেঁচে থাকুক। সে ক্ষেত্রে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার একমাত্র পথ হচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণ। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে অতীতের সরকারগুলো সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটিকেই সবচেয়ে কম গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। কাজেই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়ে কোনো লাভ হবে না। বরং দেশ ও জাতির কল্যাণের লক্ষ্য নিয়ে আসল কাজটিতে আমাদের আরো বেশি মনোনিবেশ করতে হবে।
No comments