সাংবাদিক দম্পতি হত্যা-মামলার বাদী রুনির ভাইকে হুমকি

নিহত সাংবাদিক দম্পতি হত্যা মামলার বাদী নওশের আলমকে মুঠোফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি তদন্তকারীদের বিষয়টি জানিয়েছেন। নওশের নিহত মেহেরুন রুনির ভাই। এদিকে, গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের মুখপাত্র ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম দাবি করেছেন, তদন্তে অগ্রগতি হচ্ছে। তবে শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করবে না।


নিশ্চিত না হয়ে তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে কোনো তথ্যও প্রকাশ করা হবে না। ঘটনার পাঁচ দিন পর গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক অনির্ধারিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গত রোববার মামলার বাদী নওশেরকে ফোন করে এক ব্যক্তি বলেন, ‘ওদের যা অবস্থা হয়েছে তোরও হবে’। বিষয়টি লিখিতভাবে তদন্তকারীদের জানান নওশের। তদন্তকারী একটি সংস্থা খোঁজ নিয়ে দেখেছে, সিলেট থেকে ফোনটি এসেছে।
গতকালও নিহত দম্পতির ফ্ল্যাটে গিয়েছিল পুলিশ। সেখানে তাঁদের কয়েকজন স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।
পুলিশের ব্রিফিং: মনিরুল ইসলাম বলেন, সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সাগর সরওয়ার-মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে মহানগর পুলিশের সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করা হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাবের একাধিক টিম কাজ করছে। প্রযুক্তিগত এবং প্রথাগত তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ মূলত ব্যক্তিগত, পারিবারিক, আর্থিক লেনদেন, পেশাগত বিরোধসহ অন্তত ছয়টি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত করছে। এ ছাড়াও চুরি বা ডাকাতির জন্য এ ঘটনা ঘটেছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের বিভিন্ন কলাকৌশল রয়েছে। তদন্তের স্বার্থেই এ কৌশলগুলো এখনই বলা যাচ্ছে না।
জিজ্ঞাসাবাদ-প্রক্রিয়া সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত দম্পতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গেই কথা বলা হচ্ছে। তদন্তে সহায়ক তথ্য সংগ্রহের জন্য কথা বলা হচ্ছে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গেও। তবে এটা জিজ্ঞাসাবাদ নয়, বরং সাক্ষাৎকার বলা যায়। এ ছাড়া ঘটনার দিন পুলিশের পক্ষ থেকে তথ্য দিতে একটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া হয়েছিল। এই মোবাইল নম্বরে অনেকেই তথ্য দিয়েছেন। সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। কোনো তথ্যকেই ছোট করে দেখা হচ্ছে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, হত্যাকারী বা ইন্ধনদাতা সম্পর্কে নিশ্চিত হলে সে যত বড় প্রভাবশালীই হোক, তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। আসামিকে আসামি হিসেবেই দেখা হবে।
মনিরুল বলেন, মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর হওয়ায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। শতভাগের এক ভাগ কম নিশ্চিত হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে পুলিশ কোনো তথ্যও প্রকাশ করবে না। এতে মামলার তদন্ত বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
ডিবি বা পুলিশ ছাড়া অন্য কোনো সংস্থা কাউকে গ্রেপ্তার করেছে কি না, জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, এ মামলায় গ্রেপ্তারের এখতিয়ার শুধু তদন্ত কর্মকর্তার।
শতভাগ নিশ্চয়তার সংজ্ঞাটা কী—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসামিরা যখন এখানে দাঁড়িয়ে গণমাধ্যমের সামনে খুনের বর্ণনা দেবে, তখনই আমরা শতভাগ নিশ্চিত বলে ধরে নেব।’

No comments

Powered by Blogger.