সাত মাসে দূরপাল্লার বাসভাড়া ১০০ থেকে ১৪০ টাকা বেড়েছে by আনোয়ার হোসেন
সাত মাসের ব্যবধানে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া ১০০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এই সময়ে জ্বালানির দাম বেড়েছে লিটারপ্রতি ১৫ টাকা। অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া বাড়ার ফলে যাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠেছে। বিভিন্ন কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে বিভিন্ন কোম্পানির বাসে ৪৩০ টাকা এবং ঢাকা-সিলেট পথে ৪৪০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। গত বছরের মে মাসের আগে এই দুই পথেই ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা।
পরে এক দফায় ভাড়া ৩৫০ ও ৪০০ টাকা করা হয়। সম্প্রতি ভাড়া আরও বাড়িয়ে ৪৩০ ও ৪৪০ টাকা করা হয়।
একইভাবে ঢাকা-উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় চলাচলকারী বাসেও ১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
জ্বালানির দাম বাড়ার পর গত বছরের মে মাসে ব্যয় বিশ্লেষণ করে সরকার দূরপাল্লার পথে বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়। এরপর গত বছরের সেপ্টেম্বরে এবং চলতি জানুয়ারিতে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির পর আবার ভাড়া বাড়ে। মূলত গত বছরের মে মাসের পর থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে ভাড়া বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে চালকসহ ৫১ আসনের বাসের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা ৩৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে সরকার। সর্বশেষ ২ জানুয়ারি এই ভাড়ার হার নির্ধারণ করা হয়। অভিযোগ আছে, ব্যয় বিশ্লেষণের নামে এই ভাড়ার হার নির্ধারণে যাত্রীস্বার্থ প্রাধান্য পায়নি।
এই হিসাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পথে সাত মাসের ব্যবধানে ভাড়া বেড়েছে ৪৩ থেকে ৪৭ শতাংশ। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল পথের ভাড়া বেড়েছে গড়ে ৩০ শতাংশ করে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সাধারণত জ্বালানি তেলের দাম এক টাকা বাড়ালে ভাড়া এক পয়সা বাড়িয়ে থাকে। সে হিসাবে ১৫ টাকার জন্য ১৫ পয়সা বাড়ে। কিন্তু বাসমালিকেরা চাপ দিয়ে খুচরা যন্ত্রাংশের দাম বাড়াকে এর সঙ্গে জুড়ে দিয়ে তা ভাড়ার সঙ্গে যোগ করতে বাধ্য করেন। এতে কাটা পড়ছে যাত্রীর পকেট।
গত বছরের মে মাস থেকে চলতি জানুয়ারি পর্যন্ত সরকার ৪২ পয়সা ভাড়া বাড়িয়েছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ২৪২ কিলোমিটার। সে হিসাবে ভাড়া বাড়ার কথা ১০১ টাকা ৬৪ পয়সা। কিন্তু বাস্তবে বাড়ানো হয়েছে ১৩০ টাকা।
ঢাকা থেকে বগুড়ার দূরত্ব ১৯১ কিলোমিটার। মে মাস থেকে কিলোমিটারে ৪২ পয়সা বাড়ানোর কারণে ভাড়া বাড়ার কথা ৮০ টাকা ২২ পয়সা। কিন্তু মালিকেরা ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন ১০০ টাকা করে।
জানতে চাইলে সোহাগ পরিবহনের স্বত্বাধিকারী ফারুক তালুকদার বলেন, এ সময় অন্যান্য ব্যয় বেড়েছে বলে ভাড়া বেড়েছে। ব্যয়ের বেশ কিছু খাত বিশ্লেষণ করে সরকার ভাড়া নির্ধারণ করেছে। বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। তিনি দাবি করেন, বাড়তি ভাড়ার সঙ্গে ফেরি বা সেতুর টোল যুক্ত হয়েছে।
মানুষের নাভিশ্বাস: গত শুক্রবার বিকেলে ফকিরেরপুলে ইউনিক পরিবহনের টিকিট বিক্রির কাউন্টারের সামনে কথা হয় ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ও মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে। ক্ষোভের সঙ্গে তাঁরা বলেন, কয়েক মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রামের পথে ১৩০ টাকা ভাড়া বেড়ে ৪৩০ টাকা হয়ে গেছে। দুই মাস আগেও এই পথে ভাড়া ছিল ৩৮০ টাকা। যেন দেখার কেউ নেই।
ইউনিক পরিবহন ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট পথে চলাচলকারী হানিফ, সোহাগ, সৌদিয়া, ডলফিন, ঈগলসহ প্রায় সব পরিবহনেই একই হারে ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।
ইউনিক পরিবহনের টিকিট বিক্রি ব্যবস্থাপক ফোরকান আলম বলেন, ‘এক বছরের ব্যবধানে তিনবার তেলের দাম বেড়েছে। মালিক যেভাবে বলে, সেভাবেই ভাড়া আদায় করছি।’ ফোরকান ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে বিআরটিএর কোনো তালিকা দেখাতে পারেননি।
উত্তরবঙ্গের পথে এস আর পরিবহনে ঢাকা থেকে বগুড়ার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা। গত বছরের মে মাসের আগে এই পথে ভাড়া ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। ঢাকায় জনতা ব্যাংকের একটি শাখার কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, চোখের সামনে হু হু করে ভাড়া বেড়েছে।
তৈরি পোশাক কারখানার কর্মী জুলমত আলী বলেন, শ্যামলী পরিবহনে গত বছর কুষ্টিয়ায় যেতেন ২৮০ বা ২৯০ টাকায়। গত শুক্রবার তিনি টিকিট কেটেছেন ৩৮০ টাকায়।
হানিফ পরিবহনে দিনাজপুরের ভাড়া ৫২০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। আড়ংয়ের কর্মী টমাস কিসকো বলেন, গত নভেম্বরের দিকেও তিনি ৪০০ টাকায় গেছেন। তিনি বলেন, প্রতি সপ্তাহে মনে হয় একবার করে ভাড়া বাড়ছে। তাঁর মতো স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য এটা একটা বোঝা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জানতে চাইলে শ্যামলী পরিবহনের স্বত্বাধিকারী রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, সাধারণ মানুষের জায়গা থেকে দেখলে মনে হয় অল্প সময়ের ব্যবধানে অনেক টাকা ভাড়া বেড়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, জ্বালানি ও খুচরা যন্ত্রাংশের দাম বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকার সাত মাসে কিলোমিটারপ্রতি ২০ পয়সা ভাড়া বাড়িয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকারি হারের বেশি আদায় করছেন না মালিকেরা।
ব্যয় বিশ্লেষণের নামে মালিকস্বার্থ সংরক্ষণ: বাসের বার্ষিক ব্যয় বিশ্লেষণ করে ভাড়া নির্ধারণ করে বিআরটিএ। তবে ব্যয় বিশ্লেষণের কমিটিতে সরকারি প্রতিনিধির বাইরে মালিক-শ্রমিকদের প্রতিনিধিও থাকেন।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, কমিটির বৈঠকে মালিক-শ্রমিকদের সুপারিশই বেশি গুরুত্ব পায়। এরপর ভাড়া চূড়ান্ত করার বৈঠকে যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে নৌপরিবহনমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খানও উপস্থিত থাকেন। দূরপাল্লার পথে ও রাজধানীতে শাজাহান খানের পরিবারের বাস ব্যবসা রয়েছে।
২ জানুয়ারির ভাড়া বাড়ার সময় ২০টি ব্যয়ের খাত চিহ্নিত করে সব খরচ ধরা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ব্যয় খাতের মধ্যে বাসের ক্রয়মূল্যও বেশি ধরা হয়েছে। এ ছাড়া মালিকের ব্যাংকঋণের সুদ তাঁর মুনাফা থেকে না ধরে গ্রাহকের ওপর চাপানো হয়েছে। শ্রমিকের মজুরি, গ্যারেজ ভাড়া, শ্রমিকের বোনাস ইত্যাদি বাড়িয়ে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া একটি বাসের বয়সসীমা ১০ বছর ধরে ভাড়া ঠিক করা হয়েছে। অথচ ১০ বছরের পুরোনো বাসও রাস্তায় চলাচল করছে। একইভাবে বাসের গড় বোঝাই (প্রতি যাত্রায় যাত্রীসংখ্যা) ৭০ শতাংশ ধরা হয়েছে। আদতে আরও বেশি যাত্রী বোঝাই হয়ে থাকে। এতসব ফাঁক-ফোকর রেখে ভাড়ার যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা বেশি বলে অভিযোগ জানিয়েছে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ব্যয় বিশ্লেষণের মধ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। এর মাধ্যমে যাত্রীস্বার্থ নয়, মালিকস্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়েছে।
একইভাবে ঢাকা-উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় চলাচলকারী বাসেও ১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
জ্বালানির দাম বাড়ার পর গত বছরের মে মাসে ব্যয় বিশ্লেষণ করে সরকার দূরপাল্লার পথে বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়। এরপর গত বছরের সেপ্টেম্বরে এবং চলতি জানুয়ারিতে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির পর আবার ভাড়া বাড়ে। মূলত গত বছরের মে মাসের পর থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে ভাড়া বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে চালকসহ ৫১ আসনের বাসের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা ৩৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে সরকার। সর্বশেষ ২ জানুয়ারি এই ভাড়ার হার নির্ধারণ করা হয়। অভিযোগ আছে, ব্যয় বিশ্লেষণের নামে এই ভাড়ার হার নির্ধারণে যাত্রীস্বার্থ প্রাধান্য পায়নি।
এই হিসাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পথে সাত মাসের ব্যবধানে ভাড়া বেড়েছে ৪৩ থেকে ৪৭ শতাংশ। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল পথের ভাড়া বেড়েছে গড়ে ৩০ শতাংশ করে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সাধারণত জ্বালানি তেলের দাম এক টাকা বাড়ালে ভাড়া এক পয়সা বাড়িয়ে থাকে। সে হিসাবে ১৫ টাকার জন্য ১৫ পয়সা বাড়ে। কিন্তু বাসমালিকেরা চাপ দিয়ে খুচরা যন্ত্রাংশের দাম বাড়াকে এর সঙ্গে জুড়ে দিয়ে তা ভাড়ার সঙ্গে যোগ করতে বাধ্য করেন। এতে কাটা পড়ছে যাত্রীর পকেট।
গত বছরের মে মাস থেকে চলতি জানুয়ারি পর্যন্ত সরকার ৪২ পয়সা ভাড়া বাড়িয়েছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ২৪২ কিলোমিটার। সে হিসাবে ভাড়া বাড়ার কথা ১০১ টাকা ৬৪ পয়সা। কিন্তু বাস্তবে বাড়ানো হয়েছে ১৩০ টাকা।
ঢাকা থেকে বগুড়ার দূরত্ব ১৯১ কিলোমিটার। মে মাস থেকে কিলোমিটারে ৪২ পয়সা বাড়ানোর কারণে ভাড়া বাড়ার কথা ৮০ টাকা ২২ পয়সা। কিন্তু মালিকেরা ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন ১০০ টাকা করে।
জানতে চাইলে সোহাগ পরিবহনের স্বত্বাধিকারী ফারুক তালুকদার বলেন, এ সময় অন্যান্য ব্যয় বেড়েছে বলে ভাড়া বেড়েছে। ব্যয়ের বেশ কিছু খাত বিশ্লেষণ করে সরকার ভাড়া নির্ধারণ করেছে। বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। তিনি দাবি করেন, বাড়তি ভাড়ার সঙ্গে ফেরি বা সেতুর টোল যুক্ত হয়েছে।
মানুষের নাভিশ্বাস: গত শুক্রবার বিকেলে ফকিরেরপুলে ইউনিক পরিবহনের টিকিট বিক্রির কাউন্টারের সামনে কথা হয় ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ও মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে। ক্ষোভের সঙ্গে তাঁরা বলেন, কয়েক মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রামের পথে ১৩০ টাকা ভাড়া বেড়ে ৪৩০ টাকা হয়ে গেছে। দুই মাস আগেও এই পথে ভাড়া ছিল ৩৮০ টাকা। যেন দেখার কেউ নেই।
ইউনিক পরিবহন ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট পথে চলাচলকারী হানিফ, সোহাগ, সৌদিয়া, ডলফিন, ঈগলসহ প্রায় সব পরিবহনেই একই হারে ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।
ইউনিক পরিবহনের টিকিট বিক্রি ব্যবস্থাপক ফোরকান আলম বলেন, ‘এক বছরের ব্যবধানে তিনবার তেলের দাম বেড়েছে। মালিক যেভাবে বলে, সেভাবেই ভাড়া আদায় করছি।’ ফোরকান ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে বিআরটিএর কোনো তালিকা দেখাতে পারেননি।
উত্তরবঙ্গের পথে এস আর পরিবহনে ঢাকা থেকে বগুড়ার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা। গত বছরের মে মাসের আগে এই পথে ভাড়া ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। ঢাকায় জনতা ব্যাংকের একটি শাখার কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, চোখের সামনে হু হু করে ভাড়া বেড়েছে।
তৈরি পোশাক কারখানার কর্মী জুলমত আলী বলেন, শ্যামলী পরিবহনে গত বছর কুষ্টিয়ায় যেতেন ২৮০ বা ২৯০ টাকায়। গত শুক্রবার তিনি টিকিট কেটেছেন ৩৮০ টাকায়।
হানিফ পরিবহনে দিনাজপুরের ভাড়া ৫২০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। আড়ংয়ের কর্মী টমাস কিসকো বলেন, গত নভেম্বরের দিকেও তিনি ৪০০ টাকায় গেছেন। তিনি বলেন, প্রতি সপ্তাহে মনে হয় একবার করে ভাড়া বাড়ছে। তাঁর মতো স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য এটা একটা বোঝা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জানতে চাইলে শ্যামলী পরিবহনের স্বত্বাধিকারী রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, সাধারণ মানুষের জায়গা থেকে দেখলে মনে হয় অল্প সময়ের ব্যবধানে অনেক টাকা ভাড়া বেড়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, জ্বালানি ও খুচরা যন্ত্রাংশের দাম বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকার সাত মাসে কিলোমিটারপ্রতি ২০ পয়সা ভাড়া বাড়িয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকারি হারের বেশি আদায় করছেন না মালিকেরা।
ব্যয় বিশ্লেষণের নামে মালিকস্বার্থ সংরক্ষণ: বাসের বার্ষিক ব্যয় বিশ্লেষণ করে ভাড়া নির্ধারণ করে বিআরটিএ। তবে ব্যয় বিশ্লেষণের কমিটিতে সরকারি প্রতিনিধির বাইরে মালিক-শ্রমিকদের প্রতিনিধিও থাকেন।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, কমিটির বৈঠকে মালিক-শ্রমিকদের সুপারিশই বেশি গুরুত্ব পায়। এরপর ভাড়া চূড়ান্ত করার বৈঠকে যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে নৌপরিবহনমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খানও উপস্থিত থাকেন। দূরপাল্লার পথে ও রাজধানীতে শাজাহান খানের পরিবারের বাস ব্যবসা রয়েছে।
২ জানুয়ারির ভাড়া বাড়ার সময় ২০টি ব্যয়ের খাত চিহ্নিত করে সব খরচ ধরা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ব্যয় খাতের মধ্যে বাসের ক্রয়মূল্যও বেশি ধরা হয়েছে। এ ছাড়া মালিকের ব্যাংকঋণের সুদ তাঁর মুনাফা থেকে না ধরে গ্রাহকের ওপর চাপানো হয়েছে। শ্রমিকের মজুরি, গ্যারেজ ভাড়া, শ্রমিকের বোনাস ইত্যাদি বাড়িয়ে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া একটি বাসের বয়সসীমা ১০ বছর ধরে ভাড়া ঠিক করা হয়েছে। অথচ ১০ বছরের পুরোনো বাসও রাস্তায় চলাচল করছে। একইভাবে বাসের গড় বোঝাই (প্রতি যাত্রায় যাত্রীসংখ্যা) ৭০ শতাংশ ধরা হয়েছে। আদতে আরও বেশি যাত্রী বোঝাই হয়ে থাকে। এতসব ফাঁক-ফোকর রেখে ভাড়ার যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা বেশি বলে অভিযোগ জানিয়েছে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ব্যয় বিশ্লেষণের মধ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। এর মাধ্যমে যাত্রীস্বার্থ নয়, মালিকস্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়েছে।
No comments