আনোয়ারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র
সর্বনাশা এই উদ্যোগ থেকে সরে আসা প্রয়ো আমাদের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্তাব্যক্তিরা কি কোনো ভিন গ্রহ থেকে আসা মানুষ? তাঁরা সহজ কাজটি সহজে না করে কেন তাকে এত কঠিন করে চলেছেন? তাঁদের এমন অবাস্তব, অযৌক্তিক ও নিষ্ঠুর পদক্ষেপের আসল উদ্দেশ্য কী- সেটিই আজকে ভাবনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কয়লাভিত্তিক বিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যাপারে সরকারেরই গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিভাগের আপত্তি রয়েছে। এখানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে কর্ণফুলী নদীর মৃত্যু যেমন ত্বরান্বিত হবে, তেমনি বিমানবন্দর, নৌবন্দরের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যাবে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত পারকি থেকেও ভ্রমণপিপাসুরা বঞ্চিত হবে। এসব কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরও এখন পর্যন্ত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাড়পত্র দেয়নি। উচ্চ আদালত থেকেও সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, আনোয়ারায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না? ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় তিন হাজার ২০০ একর জায়গাজুড়ে ১৩২০ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে স্থানীয় ৪০ হাজার মানুষকে উচ্ছেদ করতে হবে। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, আতঙ্কিত স্থানীয় অধিবাসীরা ইতিমধ্যেই এক জোট হয়ে গেছে। তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে চলেছে। তাদের একটাই কথা, 'আমাদের মেরে ফেললেও আমরা এক ইঞ্চি জমি হাতছাড়া করব না।' তা সত্ত্বেও পিডিবি কেন এ রকম মরিয়া হয়ে উঠেছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। অথচ পার্শ্ববর্তী বাঁশখালী উপজেলায় সরকারের হাজার হাজার একর খাসজমি রয়েছে। সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে না, কাউকে উচ্ছেদ করারও প্রয়োজন হবে না।
কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চিমনির উচ্চতা হবে ৯০২ ফুট। অথচ সিভিল এভিয়েশন ও আইকা বিধি অনুযায়ী, বিমানবন্দরের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৫০০ ফুটের বেশি উচ্চতার কোনো স্থাপনা থাকতে পারবে না। আর প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের দূরত্ব মাত্র এক হাজার ১৬০ ফুট বা এক কিলোমিটারের সামান্য বেশি। কাজেই এখানে বিমান ওঠানামা হয়ে উঠবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যদি একটি দুর্ঘটনাও ঘটে এবং যাত্রীরা মারা যায়, তার দায়দায়িত্ব কে নেবে? অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরের জন্যও এটি হবে এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কারণ, কর্ণফুলী নেভিগেশন চ্যানেল অত্যন্ত আঁকাবাঁকা এবং তিনটি শার্প ব্লেন্ড রয়েছে। অনেক সাবধানতার সঙ্গে জাহাজ চালাতে হয়। তার পরও প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনিতেই শীতকালে কুয়াশার মধ্যে জাহাজ চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। যখন বিদ্যুৎকেন্দ্রে দৈনিক ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পোড়ানো হবে, তখন সেই ধোঁয়ায় পার্শ্ববর্তী এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে যাবে। দৃষ্টিসীমা অনেক কমে যাবে। শীতকালে ধোঁয়া মিশে কুয়াশা এত ঘন হবে যে এই চ্যানেলে জাহাজ চালানোটাই অসম্ভব হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে বন্দরের অপমৃত্যু প্রায় অবধারিত হয়ে পড়বে। অব্যাহত পরিবেশ দূষণের কারণে কর্ণফুলী নদী আজ মৃতপ্রায়। আনোয়ারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হলে সেই মৃত্যুটাই নিশ্চিত হবে। তার পরও কেন এখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের এই অপচেষ্টা? এর আগেও কর্ণফুলী সার কারখানা, সিইউএফএল, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী, কোস্টগার্ড, রাডার স্টেশন, কোরিয়ান ইপিজেড, ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট বা ড্যাপ-১ ও ড্যাপ-২ এবং পর্যটনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় অধিবাসীরা অভিযোগ করেছে, অধিগ্রহণ করা সেসব জমির জন্য তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণের খবরে তারা রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। তা ছাড়া প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত তিন হাজার ২০০ একর জমির মধ্যে রয়েছে ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শতাধিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। রয়েছে ২০টি কবরস্থান ও সাতটি মাজার। এগুলোও কি উচ্ছেদ করা হবে?
জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকারের কাছে আমরা জনবান্ধব পদক্ষেপ আশা করি। আনোয়ারার মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কোনোভাবেই আমরা জনবান্ধব পদক্ষেপ বলে মেনে নিতে পারছি না। পরিস্থিতির গুরুত্ব এবং পরিণতির কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে পিডিবিকে নিবৃত্ত করা প্রয়োজন।
কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চিমনির উচ্চতা হবে ৯০২ ফুট। অথচ সিভিল এভিয়েশন ও আইকা বিধি অনুযায়ী, বিমানবন্দরের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৫০০ ফুটের বেশি উচ্চতার কোনো স্থাপনা থাকতে পারবে না। আর প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের দূরত্ব মাত্র এক হাজার ১৬০ ফুট বা এক কিলোমিটারের সামান্য বেশি। কাজেই এখানে বিমান ওঠানামা হয়ে উঠবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যদি একটি দুর্ঘটনাও ঘটে এবং যাত্রীরা মারা যায়, তার দায়দায়িত্ব কে নেবে? অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরের জন্যও এটি হবে এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কারণ, কর্ণফুলী নেভিগেশন চ্যানেল অত্যন্ত আঁকাবাঁকা এবং তিনটি শার্প ব্লেন্ড রয়েছে। অনেক সাবধানতার সঙ্গে জাহাজ চালাতে হয়। তার পরও প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনিতেই শীতকালে কুয়াশার মধ্যে জাহাজ চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। যখন বিদ্যুৎকেন্দ্রে দৈনিক ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পোড়ানো হবে, তখন সেই ধোঁয়ায় পার্শ্ববর্তী এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে যাবে। দৃষ্টিসীমা অনেক কমে যাবে। শীতকালে ধোঁয়া মিশে কুয়াশা এত ঘন হবে যে এই চ্যানেলে জাহাজ চালানোটাই অসম্ভব হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে বন্দরের অপমৃত্যু প্রায় অবধারিত হয়ে পড়বে। অব্যাহত পরিবেশ দূষণের কারণে কর্ণফুলী নদী আজ মৃতপ্রায়। আনোয়ারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হলে সেই মৃত্যুটাই নিশ্চিত হবে। তার পরও কেন এখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের এই অপচেষ্টা? এর আগেও কর্ণফুলী সার কারখানা, সিইউএফএল, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী, কোস্টগার্ড, রাডার স্টেশন, কোরিয়ান ইপিজেড, ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট বা ড্যাপ-১ ও ড্যাপ-২ এবং পর্যটনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় অধিবাসীরা অভিযোগ করেছে, অধিগ্রহণ করা সেসব জমির জন্য তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণের খবরে তারা রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। তা ছাড়া প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত তিন হাজার ২০০ একর জমির মধ্যে রয়েছে ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শতাধিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। রয়েছে ২০টি কবরস্থান ও সাতটি মাজার। এগুলোও কি উচ্ছেদ করা হবে?
জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকারের কাছে আমরা জনবান্ধব পদক্ষেপ আশা করি। আনোয়ারার মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কোনোভাবেই আমরা জনবান্ধব পদক্ষেপ বলে মেনে নিতে পারছি না। পরিস্থিতির গুরুত্ব এবং পরিণতির কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে পিডিবিকে নিবৃত্ত করা প্রয়োজন।
No comments