জিএসপি সুবিধা রাখতে সব শর্ত মেনে চলছে সরকার- ইউএসটিআরে দাখিলের জন্য প্রতিবেদন চূড়ান্ত
জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। জিএসপি সুবিধা লাভে সরকার থেকে সব প্রকার শর্তাই মেনে চলা হচ্ছে। এই সুবিধা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে ইউএসটিআরের কাছে দাখিল করার লক্ষ্যে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন। বাণিজ্য সচিব জানান, ইউএসটিআরের কাছে দাখিল করার জন্য খসড়া প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই খসড়ায় আমরা আশাবাদী যে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সন্তোষজনক একটি প্রতিবেদন ইউএসটিআরের কাছে দাখিল করতে পারব।তিনি বলেন, ইউএসটিআরের পক্ষ থেকে পোশাক শিল্প শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যা মামলা সিআইডিতে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছিল। গত ১৬ নবেম্বর এই মামলা সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। ফলে এ বিষয়ে আর কোন সমস্যা হবে না।
জিএসপি সুবিধা বাতিল হলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাবের বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, অর্থনীতির চাইতে বড় বিষয় হলো, এই সুবিধা বাতিল হলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœœ হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে এই খাতে ১৩৬টি ট্রেড ইউনিয়নকে নিবন্ধন করা হয়েছে। শুধু ৪টি ট্রেড ইউনিয়নকে মামলার কারণে রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয়নি।
বাণিজ্য সচিব বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে। সারাদেশে মোট ৭ হাজার এক শ’টি নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে।
বৈঠক শেষে এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা মনজুর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিলের কোনই কারণ নেই। দেশের শ্রম খাতের কর্মকা- দেখার জন্য আইএলও রয়েছে। আইএলও বিভিন্ন সময় প্রতিবেদনও দাখিল করছে। সে প্রতিবেদন অনুযায়ী ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা সন্তোষজনক। সে কারণে ইউএসটিআর এ বিষয়ে নতুন করে ব্যাখ্যা চাইতে পারে না।
বৈঠক সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইউএসটিআরের শুনানিতে প্রতিবেদন উপস্থাপন করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বৈঠকে একটি খসড়া প্রতিবেদন পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপনের পর চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প-সংক্রান্ত ৮টি অভিযোগের সুস্পষ্ট জবাব দেয়া হয়েছে। এ শিল্পের বর্তমান অবস্থা ও আগামীতে শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণে কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তারও একটি ধারণা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল এবং চিংড়ি শিল্প সম্পর্কে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তারও ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।
এই প্রতিবেদন তৈরি করার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র, সমাজকল্যাণ, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয় এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন ও ফায়ার সার্ভিসের মতামত নেয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ইউএসটিআরের শুনানিতে নিজস্ব মতামত তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোশাক রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।
No comments