রাষ্ট্রপতির কাছে নামের তালিকা, ইসি গঠন আজই হতে পারে-আলী ইমাম বা কাজী রকিব নতুন সিইসি
মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার অথবা সাবেক সচিব কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ পরবর্তী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হচ্ছেন। অনুসন্ধান কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁদের নাম প্রস্তাব করেছে। একই সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আটজনের নামও প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত দুজনের মধ্য থেকে একজনকে সিইসি নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। আর আটজনের মধ্য থেকে অনধিক চারজনকে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। আজই এ নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে বঙ্গভবন ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সূত্রগুলো।
অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের কাছে এই ১০ জনের নামের তালিকা দেন।
নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যাঁদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তাঁরা হলেন: অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু হাফিজ, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ হাদিস উদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাভেদ আলী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ফজলুল করিম, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শাহনেওয়াজ, বেসরকারি সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন সোনিয়া মুর্শিদ এবং অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব শাহ মো. মনসুরুল হক।
রাষ্ট্রপতির কাছে নাম জমা দেওয়ার পর অনুসন্ধান কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী মন্ত্রিপরিষদের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, এই নামগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি একজনকে সিইসি ও অনধিক চারজনকে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন। সুপারিশ করা নামের তালিকা করা হয়েছে আদ্যাক্ষর অনুযায়ী।
সিইসি হিসেবে প্রস্তাবিত দুজনের মধ্যে আলী ইমাম মজুমদারের সম্ভাবনা বেশি বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। আর যেহেতু এবার একজন নারী কমিশনার নিয়োগ করা হবে, সে জন্য শারমীন মুর্শিদের কমিশনার হওয়া অনেকটা নিশ্চিত।
কবে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হবে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়োগের বিষয়টি পুরোপুরি রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। তবে আমার ধারণা, খুব তাড়াতাড়িই এই নিয়োগ হবে।’
সিইসি হিসেবে প্রস্তাবিত দুজনের মধ্যে আলী ইমাম মজুমদার ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মন্ত্রিপরিষদ ও মুখ্য সচিব ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালের ২৮ নভেম্বর অবসরে যান। আর সাবেক সিএসপি কর্মকর্তা কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ সর্বশেষ সংসদ সচিবালয়ের সচিব হিসেবে ২০০৩ সালে অবসরে যান। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শিক্ষা ছাড়াও কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন।
নাম প্রস্তাবের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আলী ইমাম মজুমদার তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কমিশনার হিসেবে প্রস্তাবিত আটজনের মধ্যে আবু হাফিজ, আবদুল মোবারক ও শাহ মো. মনসুরুল হক প্রশাসন ক্যাডারের ১৯৭৩ ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। অন্যদের মধ্যে জাভেদ আলী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক ছিলেন। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে থাকা তাঁর মেয়াদ শেষ হয় ২০১০ সালে। আর মোহাম্মদ হাদিস উদ্দিন বিগত বিএনপির শেষ সময়ে আইজিপি হন। পরে তিনি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক (সচিব) হন।
কমিটির শেষ বৈঠক: নাম জমা দেওয়ার আগে অনুসন্ধান কমিটি বিকেল সাড়ে পাঁচটায় সুপ্রিম কোর্ট ভবনের জাজেস লাউঞ্জে শেষ বৈঠক করে সুপারিশ চূড়ান্ত করে। পরে কমিটির সদস্যরা বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে তালিকা জমা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিটির প্রধান আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, তিন সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক আহমেদ আতাউল হাকিম।
No comments