সবাই যখন অতিদরিদ্র by একরামুল হক শামীম
কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, 'হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে ক'রেছো মহান'। নিজ জীবনের সংগ্রাম তার এই কবিতাকে প্রভাবিত করেছে। 'দারিদ্র্য' কাজী নজরুল ইসলামকে মহান করলেও কেউ যখন এই সময়ে এসে নিজেকে অতিদরিদ্র ঘোষণা করে তখন বুঝতে হবে সেখানে কোনো একটা ঝামেলা রয়েছে।
এখানে নিজেকে অতিদরিদ্র ঘোষণা করে অতিমহান হওয়ার কোনো বিষয় নিঃসন্দেহে জড়িত নেই। স্বার্থসিদ্ধির জন্য কখনও কখনও ধনী প্রভাবশালীরা নিজেকে ঘোষণা করে অতিদরিদ্র শ্রমিক হিসেবে। এমন ঘটনাই ঘটেছে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে। সেখানে চলছে অতিদরিদ্রদের কর্মসৃজন কর্মসূচি। এরই মধ্যে এই কর্মসূচি নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়ম অনুযায়ী এই কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিকদের হতে হবে অতিদরিদ্র। কিন্তু প্রভাবশালীদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ক্ষমতা কোথায় প্রকৃত অতিদরিদ্রদের? ধনাঢ্য ব্যক্তিরা যখন অতিদরিদ্র হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করে অর্থ আদায় করে নেয় তখন অতিদরিদ্রদের হা-হুতাশ করা ছাড়া আর কীই-বা করার রয়েছে। গফরগাঁওয়ের প্রকল্পে শ্রমিকের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাকর্মীর।
গফরগাঁওয়ের কর্মসৃজন প্রকল্পের অনিয়ম ও লুটপাট নিয়ে এরই মধ্যে সমকালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। সেখানে উঠে এসেছে নানা ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রসঙ্গ। প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইউনিয়নগুলোর ট্যাগ কর্মকর্তার সহযোগিতায় চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এ কর্মসূচির বেশিরভাগ টাকা বিভিন্ন কৌশলে লুটপাট করছেন। নিয়ম না মেনে এক প্রকল্পের ওপর আরেক প্রকল্প দেখানো হচ্ছে, বিল করার নামে ঘুষ দাবি করা হচ্ছে, কম শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে বেশি শ্রমিকের নামে টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রভাবশালীদের নাম শ্রমিক হিসেবে যুক্ত করে দেওয়ার বিষয়টি তো রয়েছেই। ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল এই প্রকল্প। কথা ছিল ৪০ দিনে কাজ শেষ হবে। তাতে ১৫টি ইউনিয়নের ৫ হাজার ১৬৪ জন অতিদরিদ্র শ্রমিক কাজ করবেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কাজের বিনিময়ে তারা ১৭৫ টাকা করে মজুরি পাবেন। কিন্তু এসব নিয়ম যেন কেবল কাগজে-কলমে থেকে গেছে। নিয়মনীতি ভাঙা সেখানে পরিণত হয়েছে নিয়মে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ২৫ লাখ টাকা দিয়ে নিজের বাড়ি তৈরি করেছেন। অথচ তার স্ত্রী নিজেকে অতিদরিদ্র শ্রমিক হিসেবে নামভুক্ত করে প্রকল্পের টাকা তুলছেন! এরকম যদি হয় তাহলে সেই প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তা। দেখা গেছে, কাজের সময় বেশিরভাগ শ্রমিক অনুপস্থিত ছিল। অথচ তাদের নামে ঠিকই অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন, সেই টাকা কে পেয়েছে কিংবা টাকার ভাগ কে কে পেয়েছে? ২৫ দিন কাজ চলার পরই প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সে বিষয়ে জানেন না! অথচ ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতেই এই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
যাদের কাছে কাজ সম্পাদনের দায়িত্ব থাকে তারাই যদি অনিয়ম- দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকল্প বন্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশে এ রকম পরিস্থিতিই বেশি তৈরি হচ্ছে। গফরগাঁওয়ের বিষয়টিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুরু থেকেই সতর্ক ভূমিকায় থাকতে পারতেন। জানি না এখন তিনি কোনো ভূমিকা নেবেন কি-না!
গফরগাঁওয়ের কর্মসৃজন প্রকল্পের অনিয়ম ও লুটপাট নিয়ে এরই মধ্যে সমকালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। সেখানে উঠে এসেছে নানা ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রসঙ্গ। প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইউনিয়নগুলোর ট্যাগ কর্মকর্তার সহযোগিতায় চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এ কর্মসূচির বেশিরভাগ টাকা বিভিন্ন কৌশলে লুটপাট করছেন। নিয়ম না মেনে এক প্রকল্পের ওপর আরেক প্রকল্প দেখানো হচ্ছে, বিল করার নামে ঘুষ দাবি করা হচ্ছে, কম শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে বেশি শ্রমিকের নামে টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রভাবশালীদের নাম শ্রমিক হিসেবে যুক্ত করে দেওয়ার বিষয়টি তো রয়েছেই। ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল এই প্রকল্প। কথা ছিল ৪০ দিনে কাজ শেষ হবে। তাতে ১৫টি ইউনিয়নের ৫ হাজার ১৬৪ জন অতিদরিদ্র শ্রমিক কাজ করবেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কাজের বিনিময়ে তারা ১৭৫ টাকা করে মজুরি পাবেন। কিন্তু এসব নিয়ম যেন কেবল কাগজে-কলমে থেকে গেছে। নিয়মনীতি ভাঙা সেখানে পরিণত হয়েছে নিয়মে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ২৫ লাখ টাকা দিয়ে নিজের বাড়ি তৈরি করেছেন। অথচ তার স্ত্রী নিজেকে অতিদরিদ্র শ্রমিক হিসেবে নামভুক্ত করে প্রকল্পের টাকা তুলছেন! এরকম যদি হয় তাহলে সেই প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তা। দেখা গেছে, কাজের সময় বেশিরভাগ শ্রমিক অনুপস্থিত ছিল। অথচ তাদের নামে ঠিকই অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন, সেই টাকা কে পেয়েছে কিংবা টাকার ভাগ কে কে পেয়েছে? ২৫ দিন কাজ চলার পরই প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সে বিষয়ে জানেন না! অথচ ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতেই এই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
যাদের কাছে কাজ সম্পাদনের দায়িত্ব থাকে তারাই যদি অনিয়ম- দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকল্প বন্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশে এ রকম পরিস্থিতিই বেশি তৈরি হচ্ছে। গফরগাঁওয়ের বিষয়টিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুরু থেকেই সতর্ক ভূমিকায় থাকতে পারতেন। জানি না এখন তিনি কোনো ভূমিকা নেবেন কি-না!
No comments