প্রাথমিক শিক্ষা- শিক্ষার মানের দিকেও নজর দিন by শান্ত নূরুননবী
প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে ২০১৩ সালের শুরুটা দৃশ্যমানভাবে শুভ। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী প্রথম দিনেই নতুন বই হাতে পেল। দিনটাকে ‘বই উৎসব’ হিসেবে পালন করা হলো সারা দেশে। গ্রামের স্কুলগামী ছেলেমেয়েদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল দেখার মতো।
রংপুর জেলার যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিভা প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে, সেগুলোতে বই উৎসবের সঙ্গে প্রথম শ্রেণীর ‘শিশু বরণ’ উৎসবও একই দিনে অনুষ্ঠিত হলো।
প্রতিভার রংপুর অঞ্চলের সমন্বয়কারী নুরুজ্জামানের আমন্ত্রণে ছুটলাম বদরগঞ্জের মধুপুর ইউনিয়নের একটি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে। এই বিদ্যালয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই সব শিশুর ভর্তি-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বছরের প্রথম দিনে সারিবদ্ধভাবে মাঠে দাঁড়িয়ে শিশুরা পরম আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিল নতুন বইয়ের জন্য। যোগ্য নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠার অদম্য স্পৃহা ওদের চোখেমুখে। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বদরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ইউইও), শতাধিক অভিভাবক, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং গ্রামবাসী। ইউএনও একজন একজন করে শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিচ্ছেন আর প্রধান শিক্ষক পরম মমতায় ‘শিশু বরণ’ লেখা রঙিন কাগজের ক্যাপ পরিয়ে দিচ্ছেন প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া স্বপ্নময় শিশুদের মাথায়। এই দৃশ্য দেখেই মনটা ভরে উঠল।
আপেল নামের একজন দিনমজুর। ভাগে পাওয়া এক শতকের কম জমিতে একটা ঘর তুলে পরিবার নিয়ে থাকেন। তাঁর পক্ষে মেয়ের লেখাপড়ার জন্য খরচ করা সম্ভব হয় না। কাজ না পেলে মেয়েটার মুখে সাদা ভাত তুলে দেওয়ার চিন্তাতেই অস্থির হয়ে ধারের জন্য ছুটে বেড়াতে হয়। আপেলের সঙ্গে কথা বলার সময় আরও অনেকেই আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে পড়লেন। একজন মা ভিড় ঠেলে সামনে এলেন। নাম বুলবুলি। স্বামী শাহাজাদা কৃষিশ্রমিক। দিন আনেন দিন খান। তাঁর মেয়ের নাম জাকিয়া। শারীরিক প্রতিবন্ধী। বয়স ১৩। কিন্তু ওর শরীর, বুদ্ধি সব পাঁচ বছরেই আটকে আছে। মেয়ের চিকিৎসায় জমাজমি শেষ করে এখন গৃহস্থ কৃষকের বাড়ি বাড়ি কাজ করে সংসারের ক্ষুধা মেটান। স্বামীও দিনমজুর। কিন্তু সব সময় কাজ পান না। এই মেয়েটাকে পাশের গ্রামের ময়নাকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চেয়েছিলেন কয়েক বছর আগে। তারা প্রতিবন্ধী শিশু ভর্তি করায় না। নিজ গ্রামের রেজিস্টার্ড স্কুলেও নিতে চায়নি প্রথমে। কিন্তু বদরগঞ্জের সমাজসেবা অফিসের তৎপরতায় মেয়েটি গত বছর এখানে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিল। সেও এবার পাস করেনি। স্বাভাবিক শিশুদের নম্বর বেশি করে দিয়ে পাস করালেও শিক্ষকেরা এই প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে পাস করিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি নেননি। বুলবুলি জানতে চাইলেন, ‘এই ছইলটার কী হইবে? ছইলটার তো বিয়েও দিবের পারমো না, আবার মরি ফেলাবারও পারমো না।’ আরেক মা মোর্শেদা তাঁর ভূমিহীন স্বামী ও চার সন্তান নিয়ে বাপের চার শতক জমির এক কোনায় অন্য তিন ভাইয়ের সঙ্গেই একটা ঘর তুলে থাকেন। স্বামীর মজুরির টাকায় দিন চলে না। মোর্শেদা একটা এনজিও থেকে ধাত্রীর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। মাসে ১০০ টাকা আয় করেন। বড় মেয়েটা (১৪) শহরের এক বাড়ির কাজের মেয়ে। ছেলেটা জন্ম থেকেই ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন। কিন্তু এই ছেলেকে পড়াতে চান তিনি। কিন্তু কীভাবে এটা সম্ভব, মোর্শেদা জানেন না।
সব মা-বাবাই যেকোনো মূল্যে সন্তানকে শিক্ষিত করে তুলতে চান। কিন্তু গ্রামের অনেক মা-বাবার সামনে কঠিন বাস্তবতা বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সরকারও চায় প্রত্যেক শিশুই শিক্ষা গ্রহণ করুক। তবু একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে। জিপিও-৫ পাওয়ার উৎসব লেগে গেছে। এক শ্রেণী থেকে পরের শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হচ্ছে অনায়াসে। শতভাগ ভর্তি যেমন প্রায় নিশ্চিত, তেমনি শতভাগ পাস নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শিক্ষক থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত। তবে নিরক্ষর দিনমজুর আপেলও জানেন, এই পাসের কোনো মূল্য নেই। তবে দরিদ্র হওয়ায় আপেল উপবৃত্তির টাকা পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না। শিক্ষক চান তাঁর স্কুলকে সফল প্রমাণ করতে। শিক্ষা কর্মকর্তাদের কড়া নির্দেশ রেজাল্ট ভালো হতে হবে। পরীক্ষকদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা, ছোটখাটো ভুল এড়িয়ে যান। নম্বর দিন। সবাইকে যেকোনো মূল্যে পাস করা শিক্ষিত হিসেবে দেখতে চায় সরকার।
বাংলাদেশে শিক্ষার সত্যিই উন্নতি হয়েছে। দেশের নামকরা স্কুল-কলেজগুলো সরকারের নির্দেশের তোয়াক্কাই করছে না। রংপুরের একটি নামী স্কুলের অধ্যক্ষ বলতে পারছেন, ‘আমাদের এখানে ভর্তি ফি বেশি জেনেও কেন আপনারা এখানে বাচ্চা ভর্তি করাতে চান?।’ সেই প্রতিষ্ঠানে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে শিক্ষকেরা প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। প্রাইভেটের আয়ের টাকার একটা অংশ কর্তৃপক্ষকে সানন্দেই দিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষকেরা। আবার পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কোচিংয়েও মোটা অঙ্কের ফি নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, গরিব এলাকায় মানুষ চাঁদা দিয়ে স্কুলঘর তৈরি করে দিচ্ছে। চর, হাওর, উপকূলীয় ও পাহাড়ি অঞ্চলে খুব অল্প পয়সা সম্মানী নিয়ে শিক্ষকতা করছেন কয়েক হাজার নারী শিক্ষক সেভ দ্য চিলড্রেনের মতো এনজিওর প্রশিক্ষণ নিয়ে।
বৈচিত্র্যের শেষ নেই এ দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে। মাদ্রাসায় এক রকম চলছে, কিন্ডারগার্টেনে আরেক রকম। সরকারিতে এক রকম, বেসরকারিতে আরেক। কওমি ও ইংরেজি মাধ্যমের রকমফেরের অন্ত নেই। তবু আমরা খুশি। ভর্তির হার বেড়েছে। জেন্ডার-সমতা নিশ্চিত হয়েছে। পাসের হার এতটাই বেড়েছে যে বাংলাদেশের শিক্ষার অগ্রগতিতে অনেক দেশই ঈর্ষান্বিত। কিন্তু এই অকেজো শতভাগ পাস করা শিক্ষিত দিয়ে আমরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারব তো?
অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের সঙ্গে আমি একমত। জিপিএ পদ্ধতি তুলে দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করতে হবে। নম্বর কম পেলেই গরিব বাচ্চাদের উপবৃত্তি বন্ধ করা ঠিক নীতি নয়। শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব সমস্যার দিকে নজর দিতে হবে। শিক্ষাতেই তো সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করতে হবে। শিক্ষার মান না বাড়লে, সংখ্যাগত সাফল্য আমাদের ভোগান্তি বাড়াবে।
শান্ত নূরুননবী: উন্নয়নকর্মী।
shantonabi@gmail.com
প্রতিভার রংপুর অঞ্চলের সমন্বয়কারী নুরুজ্জামানের আমন্ত্রণে ছুটলাম বদরগঞ্জের মধুপুর ইউনিয়নের একটি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে। এই বিদ্যালয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই সব শিশুর ভর্তি-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বছরের প্রথম দিনে সারিবদ্ধভাবে মাঠে দাঁড়িয়ে শিশুরা পরম আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিল নতুন বইয়ের জন্য। যোগ্য নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠার অদম্য স্পৃহা ওদের চোখেমুখে। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বদরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ইউইও), শতাধিক অভিভাবক, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং গ্রামবাসী। ইউএনও একজন একজন করে শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিচ্ছেন আর প্রধান শিক্ষক পরম মমতায় ‘শিশু বরণ’ লেখা রঙিন কাগজের ক্যাপ পরিয়ে দিচ্ছেন প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া স্বপ্নময় শিশুদের মাথায়। এই দৃশ্য দেখেই মনটা ভরে উঠল।
আপেল নামের একজন দিনমজুর। ভাগে পাওয়া এক শতকের কম জমিতে একটা ঘর তুলে পরিবার নিয়ে থাকেন। তাঁর পক্ষে মেয়ের লেখাপড়ার জন্য খরচ করা সম্ভব হয় না। কাজ না পেলে মেয়েটার মুখে সাদা ভাত তুলে দেওয়ার চিন্তাতেই অস্থির হয়ে ধারের জন্য ছুটে বেড়াতে হয়। আপেলের সঙ্গে কথা বলার সময় আরও অনেকেই আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে পড়লেন। একজন মা ভিড় ঠেলে সামনে এলেন। নাম বুলবুলি। স্বামী শাহাজাদা কৃষিশ্রমিক। দিন আনেন দিন খান। তাঁর মেয়ের নাম জাকিয়া। শারীরিক প্রতিবন্ধী। বয়স ১৩। কিন্তু ওর শরীর, বুদ্ধি সব পাঁচ বছরেই আটকে আছে। মেয়ের চিকিৎসায় জমাজমি শেষ করে এখন গৃহস্থ কৃষকের বাড়ি বাড়ি কাজ করে সংসারের ক্ষুধা মেটান। স্বামীও দিনমজুর। কিন্তু সব সময় কাজ পান না। এই মেয়েটাকে পাশের গ্রামের ময়নাকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চেয়েছিলেন কয়েক বছর আগে। তারা প্রতিবন্ধী শিশু ভর্তি করায় না। নিজ গ্রামের রেজিস্টার্ড স্কুলেও নিতে চায়নি প্রথমে। কিন্তু বদরগঞ্জের সমাজসেবা অফিসের তৎপরতায় মেয়েটি গত বছর এখানে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিল। সেও এবার পাস করেনি। স্বাভাবিক শিশুদের নম্বর বেশি করে দিয়ে পাস করালেও শিক্ষকেরা এই প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে পাস করিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি নেননি। বুলবুলি জানতে চাইলেন, ‘এই ছইলটার কী হইবে? ছইলটার তো বিয়েও দিবের পারমো না, আবার মরি ফেলাবারও পারমো না।’ আরেক মা মোর্শেদা তাঁর ভূমিহীন স্বামী ও চার সন্তান নিয়ে বাপের চার শতক জমির এক কোনায় অন্য তিন ভাইয়ের সঙ্গেই একটা ঘর তুলে থাকেন। স্বামীর মজুরির টাকায় দিন চলে না। মোর্শেদা একটা এনজিও থেকে ধাত্রীর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। মাসে ১০০ টাকা আয় করেন। বড় মেয়েটা (১৪) শহরের এক বাড়ির কাজের মেয়ে। ছেলেটা জন্ম থেকেই ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন। কিন্তু এই ছেলেকে পড়াতে চান তিনি। কিন্তু কীভাবে এটা সম্ভব, মোর্শেদা জানেন না।
সব মা-বাবাই যেকোনো মূল্যে সন্তানকে শিক্ষিত করে তুলতে চান। কিন্তু গ্রামের অনেক মা-বাবার সামনে কঠিন বাস্তবতা বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সরকারও চায় প্রত্যেক শিশুই শিক্ষা গ্রহণ করুক। তবু একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে। জিপিও-৫ পাওয়ার উৎসব লেগে গেছে। এক শ্রেণী থেকে পরের শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হচ্ছে অনায়াসে। শতভাগ ভর্তি যেমন প্রায় নিশ্চিত, তেমনি শতভাগ পাস নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শিক্ষক থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত। তবে নিরক্ষর দিনমজুর আপেলও জানেন, এই পাসের কোনো মূল্য নেই। তবে দরিদ্র হওয়ায় আপেল উপবৃত্তির টাকা পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না। শিক্ষক চান তাঁর স্কুলকে সফল প্রমাণ করতে। শিক্ষা কর্মকর্তাদের কড়া নির্দেশ রেজাল্ট ভালো হতে হবে। পরীক্ষকদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা, ছোটখাটো ভুল এড়িয়ে যান। নম্বর দিন। সবাইকে যেকোনো মূল্যে পাস করা শিক্ষিত হিসেবে দেখতে চায় সরকার।
বাংলাদেশে শিক্ষার সত্যিই উন্নতি হয়েছে। দেশের নামকরা স্কুল-কলেজগুলো সরকারের নির্দেশের তোয়াক্কাই করছে না। রংপুরের একটি নামী স্কুলের অধ্যক্ষ বলতে পারছেন, ‘আমাদের এখানে ভর্তি ফি বেশি জেনেও কেন আপনারা এখানে বাচ্চা ভর্তি করাতে চান?।’ সেই প্রতিষ্ঠানে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে শিক্ষকেরা প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। প্রাইভেটের আয়ের টাকার একটা অংশ কর্তৃপক্ষকে সানন্দেই দিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষকেরা। আবার পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কোচিংয়েও মোটা অঙ্কের ফি নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, গরিব এলাকায় মানুষ চাঁদা দিয়ে স্কুলঘর তৈরি করে দিচ্ছে। চর, হাওর, উপকূলীয় ও পাহাড়ি অঞ্চলে খুব অল্প পয়সা সম্মানী নিয়ে শিক্ষকতা করছেন কয়েক হাজার নারী শিক্ষক সেভ দ্য চিলড্রেনের মতো এনজিওর প্রশিক্ষণ নিয়ে।
বৈচিত্র্যের শেষ নেই এ দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে। মাদ্রাসায় এক রকম চলছে, কিন্ডারগার্টেনে আরেক রকম। সরকারিতে এক রকম, বেসরকারিতে আরেক। কওমি ও ইংরেজি মাধ্যমের রকমফেরের অন্ত নেই। তবু আমরা খুশি। ভর্তির হার বেড়েছে। জেন্ডার-সমতা নিশ্চিত হয়েছে। পাসের হার এতটাই বেড়েছে যে বাংলাদেশের শিক্ষার অগ্রগতিতে অনেক দেশই ঈর্ষান্বিত। কিন্তু এই অকেজো শতভাগ পাস করা শিক্ষিত দিয়ে আমরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারব তো?
অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের সঙ্গে আমি একমত। জিপিএ পদ্ধতি তুলে দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করতে হবে। নম্বর কম পেলেই গরিব বাচ্চাদের উপবৃত্তি বন্ধ করা ঠিক নীতি নয়। শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব সমস্যার দিকে নজর দিতে হবে। শিক্ষাতেই তো সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করতে হবে। শিক্ষার মান না বাড়লে, সংখ্যাগত সাফল্য আমাদের ভোগান্তি বাড়াবে।
শান্ত নূরুননবী: উন্নয়নকর্মী।
shantonabi@gmail.com
No comments