আমেরিকায় গণতন্ত্রের ঘাটতি : বাতির নিচে অন্ধকার by আবু এন এম ওয়াহিদ
আমেরিকায় সাম্প্রতিক শুরু হওয়া 'অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট' আন্দোলনের সর্বশেষ গতি-প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করছিলাম। ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে গিয়ে ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পোস্ট করা একটি সচিত্র সংবাদ বিবরণী নজরে পড়ল। চেয়ে দেখি, পায়ে বুট ও হাতে গ্লাভস পরা এক যুবক হাত দুখানি ঊর্ধ্বমুখী করে হুইল চেয়ারে চুপচাপ বসে আছে এবং একজন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে চেয়ার সামনের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদভাষ্য অনুযায়ী, এই শীতের মধ্যে রাজধানী শহর ওয়াশিংটন ডিসির রাজপথে ছেলেটি ৯ দিন ধরে অনশন ধর্মঘট পালন করছে। মার্কিন সরকার এবং কংগ্রেসের কাছ থেকে সে তার দাবি আদায়ের জন্য লড়ছে। 'অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট' আন্দোলনের সঙ্গে তার কোনো রকম পরোক্ষ যোগসূত্র থাকলে থাকতেও পারে, তবে তার মূল বক্তব্য ও দাবি-দাওয়া সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন। সে বলছে না 'উই আর নাইনটি নাইন পারসেন্ট', সে ওয়াল স্ট্রিটের লুটপাটের প্রতিবাদে আগ্রহী নয়, আমেরিকার আয়বৈষম্য ও সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধেও তার কোনো বক্তব্য নেই, সে নিজের জন্য কর্মসংস্থান চায় না, পরাক্রমশালী করপোরেট আমেরিকাকেও সে সাইজ করতে উৎসাহী নয়। তার দাবি অন্যত্র। সে স্রেফ তার শহরের অসংখ্য গণমানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে রাস্তায় নেমেছে। ছেলেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী শহর ওয়াশিংটন ডিসি বা ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার চায়।
পাঠকরা প্রশ্ন করতে পারেন, এ কেমন কথা? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খোদ রাজধানী শহরের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার নেই, এর মানে কী? এটা তো রীতিমতো অবিশ্বাস্য কথা! আপনারা জেনে অবাক হবেন, অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনাটা আসলেই সত্য। ওয়াশিংটন ডিসির নাগরিকরা সাংবিধানিকভাবে শত শত বছর ধরে পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ১৭৭৬ সালে আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের পর প্রথম মাত্র ১৩টি অঙ্গরাজ্য মিলে ফেডারেল রাষ্ট্র হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যাত্রা শুরু। এরপর বিভিন্ন সময় অন্যান্য অঙ্গরাজ্য ফেডারেল ইউনিয়নের সঙ্গে এসে সংযুক্ত হয়। বর্তমানে হাওয়াই এবং আলাস্কাসহ ৫০টি স্বশাসিত অঙ্গরাজ্য নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রাষ্ট্রব্যবস্থা। সংবিধান অনুযায়ী দেশের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি বা ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া কোনো অঙ্গরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত নয়। আমেরিকার ফাউন্ডিং ফাদাররা পরিকল্পিত উপায়ে শুরু থেকেই দেশের রাজধানী শহরকে সব অঙ্গরাজ্যের বাইরের একটি স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে আলাদা করে গড়ে তুলতে শুরু করেন। এটা আমেরিকার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত দেশের রাজধানীর জন্য নির্ধারিত একটি বিশেষ অঞ্চল। ওয়াশিংটন ডিসির আয়তন ৬৮.৩ বর্গমাইল বা ১৭৬.৯ বর্গকিলোমিটার এবং এর আকৃতি সামন্তরিক ক্ষেত্রবিশিষ্ট একটি চতুর্ভুজের মতো, সহজ কথায়_'ডায়মন্ড শেইপ'। ডিসির ভৌগোলিক সীমারেখা এ রকম_দক্ষিণ-পশ্চিমে ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য, উত্তর-পশ্চিম, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্য এবং দক্ষিণে পোটোম্যাক রিভার। ওয়াশিংটন ডিসির জনসংখ্যা প্রায় ছয় লাখ। ২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ায়োমিং অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যা থেকে বেশি। পাঠকদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, ওয়ায়োমিংয়ের লোকসংখ্যা মাত্র পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার ৩০০। ঐতিহাসিকভাবে ওয়াশিংটন ডিসির জনসংখ্যার বেশির ভাগই কৃষ্ণবর্ণ, অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত এবং গরিব। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তারা সব সময়ই ডেমোক্রেটদেরই ভোট দিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান তাদের এ ভোটাধিকার দিয়েছে স্বাধীনতার অনেক পরে_মাত্র ১৭ জুন, ১৯৬০ সালে সংবিধানের ত্রয়োবিংশ সংশোধনীর মাধ্যমে। অঙ্গরাজ্যগুলো এই সংশোধনীতে অনুস্বাক্ষর করে পরের বছর মার্চ মাসের ২৯ তারিখ এবং ওয়াশিংটন ডিসির অধিবাসীরা প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ১৯৬৪ সালে। এর আগে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের কোনোই গণতান্ত্রিক অধিকার সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত ছিল না।
একটি অঙ্গরাজ্যের চেয়ে বেশি লোকসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও সিনেট (ফেডারেল আইনসভার উচ্চকক্ষ) কিংবা প্রতিনিধি পরিষদের (ফেডারেল আইনসভার নিম্নকক্ষ) নির্বাচনে তারা এখনো অংশগ্রহণ করতে পারে না। এ নিয়ে ওয়াশিংটনবাসী অনেক দিন ধরেই দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, শত শত বছরেও তাদের এই ন্যায্য গণতান্ত্রিক অধিকারের কোনো হিল্লে হলো না। এর দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, ওয়াশিংটন ডিসির নাগরিকরা তাদের বিশেষ ডেমোগ্রাফিক চরিত্রের কারণে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে খুবই অবহেলিত। দ্বিতীয়ত, যেহেতু তারা ডেমোক্র্যাটদের ভোটব্যাংক, তাই তাদের স্বার্থের ব্যাপারে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল রিপাবলিকানদের কোনো আগ্রহ বা মাথাব্যথা নেই। সংবিধানের কোনো সংশোধনীর বিলে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল এবং প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের পৃথক সম্মতি না থাকলে তা পাস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
ওয়াশিংটন ডিসির ছয় লাখ লোকের কোনো প্রতিনিধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে নেই। তাই স্বভাবতই দেশের আইন তৈরি, বাজেট প্রণয়ন, যুদ্ধবিগ্রহ কিংবা অন্যান্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের মতামত প্রতিফলনের কোনো সুযোগ নেই। এসব ব্যাপারে তারা সব সময়ই ঘোর অন্ধকারে থেকে যায়। সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসে একটি আইন পাস হয়েছে, যার বদৌলতে ওয়াশিংটন ডিসির সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকে দরিদ্র নারীদের গর্ভপাত কার্যক্রমের যাবতীয় ফেডারেল ফান্ডিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওয়াশিংটনবাসী মাদকাসক্ত গরিব লোকদের জন্য নিরাপদ সুঁই (সেফ নিড্ল) সরবরাহের ফেডারেল প্রোগ্রামও বন্ধ হয়ে গেছে। এ দুটি আইনই ওয়াশিংটন ডিসির লোকজনের স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। নৈতিকভাবে এ দুটি আইনকে যে কেউ যথার্থ এবং যৌক্তিক মনে করতে পারে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য আইন হয়েছে, অথচ যারা আইন বানিয়েছে তাদের মধ্যে সেই জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই_এটা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের সবক দিয়ে বেড়ায়। এসব অজুহাতে তারা বিভিন্ন দেশে সময় সময় যুদ্ধও করেছে, অথচ নিজের দেশে খোদ রাজধানী শহরের জনগণের পূর্ণ মৌলিক অধিকার নেই। একেই বলে বাতির নিচে অন্ধকার।
লেখক : অধ্যাপক, টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি, এডিটর, জার্নাল অব ডেভেলপিং এরিয়াজ
awahid2569@gmail.com
পাঠকরা প্রশ্ন করতে পারেন, এ কেমন কথা? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খোদ রাজধানী শহরের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার নেই, এর মানে কী? এটা তো রীতিমতো অবিশ্বাস্য কথা! আপনারা জেনে অবাক হবেন, অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনাটা আসলেই সত্য। ওয়াশিংটন ডিসির নাগরিকরা সাংবিধানিকভাবে শত শত বছর ধরে পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ১৭৭৬ সালে আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের পর প্রথম মাত্র ১৩টি অঙ্গরাজ্য মিলে ফেডারেল রাষ্ট্র হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যাত্রা শুরু। এরপর বিভিন্ন সময় অন্যান্য অঙ্গরাজ্য ফেডারেল ইউনিয়নের সঙ্গে এসে সংযুক্ত হয়। বর্তমানে হাওয়াই এবং আলাস্কাসহ ৫০টি স্বশাসিত অঙ্গরাজ্য নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রাষ্ট্রব্যবস্থা। সংবিধান অনুযায়ী দেশের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি বা ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া কোনো অঙ্গরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত নয়। আমেরিকার ফাউন্ডিং ফাদাররা পরিকল্পিত উপায়ে শুরু থেকেই দেশের রাজধানী শহরকে সব অঙ্গরাজ্যের বাইরের একটি স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে আলাদা করে গড়ে তুলতে শুরু করেন। এটা আমেরিকার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত দেশের রাজধানীর জন্য নির্ধারিত একটি বিশেষ অঞ্চল। ওয়াশিংটন ডিসির আয়তন ৬৮.৩ বর্গমাইল বা ১৭৬.৯ বর্গকিলোমিটার এবং এর আকৃতি সামন্তরিক ক্ষেত্রবিশিষ্ট একটি চতুর্ভুজের মতো, সহজ কথায়_'ডায়মন্ড শেইপ'। ডিসির ভৌগোলিক সীমারেখা এ রকম_দক্ষিণ-পশ্চিমে ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য, উত্তর-পশ্চিম, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্য এবং দক্ষিণে পোটোম্যাক রিভার। ওয়াশিংটন ডিসির জনসংখ্যা প্রায় ছয় লাখ। ২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ায়োমিং অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যা থেকে বেশি। পাঠকদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, ওয়ায়োমিংয়ের লোকসংখ্যা মাত্র পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার ৩০০। ঐতিহাসিকভাবে ওয়াশিংটন ডিসির জনসংখ্যার বেশির ভাগই কৃষ্ণবর্ণ, অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত এবং গরিব। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তারা সব সময়ই ডেমোক্রেটদেরই ভোট দিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান তাদের এ ভোটাধিকার দিয়েছে স্বাধীনতার অনেক পরে_মাত্র ১৭ জুন, ১৯৬০ সালে সংবিধানের ত্রয়োবিংশ সংশোধনীর মাধ্যমে। অঙ্গরাজ্যগুলো এই সংশোধনীতে অনুস্বাক্ষর করে পরের বছর মার্চ মাসের ২৯ তারিখ এবং ওয়াশিংটন ডিসির অধিবাসীরা প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ১৯৬৪ সালে। এর আগে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের কোনোই গণতান্ত্রিক অধিকার সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত ছিল না।
একটি অঙ্গরাজ্যের চেয়ে বেশি লোকসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও সিনেট (ফেডারেল আইনসভার উচ্চকক্ষ) কিংবা প্রতিনিধি পরিষদের (ফেডারেল আইনসভার নিম্নকক্ষ) নির্বাচনে তারা এখনো অংশগ্রহণ করতে পারে না। এ নিয়ে ওয়াশিংটনবাসী অনেক দিন ধরেই দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, শত শত বছরেও তাদের এই ন্যায্য গণতান্ত্রিক অধিকারের কোনো হিল্লে হলো না। এর দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, ওয়াশিংটন ডিসির নাগরিকরা তাদের বিশেষ ডেমোগ্রাফিক চরিত্রের কারণে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে খুবই অবহেলিত। দ্বিতীয়ত, যেহেতু তারা ডেমোক্র্যাটদের ভোটব্যাংক, তাই তাদের স্বার্থের ব্যাপারে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল রিপাবলিকানদের কোনো আগ্রহ বা মাথাব্যথা নেই। সংবিধানের কোনো সংশোধনীর বিলে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল এবং প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের পৃথক সম্মতি না থাকলে তা পাস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
ওয়াশিংটন ডিসির ছয় লাখ লোকের কোনো প্রতিনিধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে নেই। তাই স্বভাবতই দেশের আইন তৈরি, বাজেট প্রণয়ন, যুদ্ধবিগ্রহ কিংবা অন্যান্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের মতামত প্রতিফলনের কোনো সুযোগ নেই। এসব ব্যাপারে তারা সব সময়ই ঘোর অন্ধকারে থেকে যায়। সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসে একটি আইন পাস হয়েছে, যার বদৌলতে ওয়াশিংটন ডিসির সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকে দরিদ্র নারীদের গর্ভপাত কার্যক্রমের যাবতীয় ফেডারেল ফান্ডিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওয়াশিংটনবাসী মাদকাসক্ত গরিব লোকদের জন্য নিরাপদ সুঁই (সেফ নিড্ল) সরবরাহের ফেডারেল প্রোগ্রামও বন্ধ হয়ে গেছে। এ দুটি আইনই ওয়াশিংটন ডিসির লোকজনের স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। নৈতিকভাবে এ দুটি আইনকে যে কেউ যথার্থ এবং যৌক্তিক মনে করতে পারে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য আইন হয়েছে, অথচ যারা আইন বানিয়েছে তাদের মধ্যে সেই জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই_এটা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের সবক দিয়ে বেড়ায়। এসব অজুহাতে তারা বিভিন্ন দেশে সময় সময় যুদ্ধও করেছে, অথচ নিজের দেশে খোদ রাজধানী শহরের জনগণের পূর্ণ মৌলিক অধিকার নেই। একেই বলে বাতির নিচে অন্ধকার।
লেখক : অধ্যাপক, টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি, এডিটর, জার্নাল অব ডেভেলপিং এরিয়াজ
awahid2569@gmail.com
No comments