দীপু মনির অশ্রুসিক্ত সন্ধ্যা by আনোয়ারুল করিম
দীর্ঘদিন পর অন্যরকম আবহে এক সন্ধ্যা কাটালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মঙ্গলবার নিজ মন্ত্রণালয়ে একটি অনুষ্ঠানে তিনি ফেললেন চোখের পানি। বীরাঙ্গনাদের নিয়ে আয়োজিত তথ্যচিত্রের মোড়ক উন্মোচনের এই অনুষ্ঠানে অশ্রু সম্বরণ করা সম্ভব হলো না তার।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কাছে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের নিয়ে ওই তথ্যচিত্র নির্মিত হয়।
আলোকচিত্র সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের তথ্যচিত্রটি নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতা করে মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অণুবিভাগ।
এটির মোড়ক উন্মোচনকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বীরাঙ্গনাদের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। তাদের যন্ত্রণা মৃত্যুর চেয়েও বেশি।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকালীন বীরাঙ্গনাদের এই ইতিহাস যতটা তথ্যভিত্তিক সংগৃহীত হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি।’
বীরাঙ্গনাদের নিয়ে এই তথ্যচিত্র নির্মাণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততাকে একটি ইতিহাস সংরক্ষণের উপায় হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।
বক্তব্যের পর তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ম্যারিটাইম সেলের সম্মেলনকক্ষে এসময় মন্ত্রণালয়ের সচিব থেকে শুরু করে সহকারী সচিব পদ মর্যাদার প্রায় শ’খানেক কর্মকর্তার সবাই উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যচিত্রটি দু’টি বড় পর্দায় প্রদর্শিত হয়। স্বাভাবিকভাবেই এ সময় কক্ষের আলো নেভানো ছিল। তথ্যচিত্রটি শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আবছা আলোয় দেখা যায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী চশমা খুলে চোখ মুছছেন। ১৫ মিনিটের চিত্রটি প্রদর্শনের মধ্যে বেশ কয়েকবারই এভাবে তিনি চোখ মোছেন।
তথ্যচিত্র নির্মাতা কাজল বলেন, ‘২০০৫ সালে এ ধরনের একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের ইচ্ছার কথা তিনি তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেত্রী দীপু মনিকে জানান। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিষয়টি নিয়ে আবারও কথা বলেন। এভাবেই এ কাজের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত হয়।’
তথ্যচিত্রটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসচিব মফিদুল হক, পররাষ্ট্রসচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস, অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
No comments