প্রধানমন্ত্রী খুলনা যাচ্ছেন আজ, জনসভাসহ নানা কর্মসূচী
প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার খুলনা আসছেন। সফরসূচী অনুযায়ী তিনি সকালে খালিশপুরের বানৌজা তিতুমীরে খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত প্রথম যুদ্ধজাহাজ কমিশনিং অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন।
বিকেলে তিনি খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুলনায় আগমন উপলক্ষে বুধবার দুপুরে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে খুলনায় সাজ সাজ রব পড়েছে। তোরণ, ব্যানার আর আলোকসজ্জায় বর্ণিল সাজে খুলনা শহরকে সাজানো হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদী সুজা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক মিজানুর রহমান মিজান। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এসএম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ সম্পাদক অসিত বরণ বিশ্বাস, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমান হিরণ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এমডি বাবুল রানা, শ্যামল সিংহ রায় প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। তাই এ অঞ্চলের উন্নয়নের ব্যাপারে তিনি খুবই আন্তরিক। যা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর আন্তরিকতায় এ অঞ্চলের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়েছে। বিশেষ করে খুলনার মৃতপ্রায় শিল্পাঞ্চলে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে। আজও (বৃহস্পতিবার) অনেক উন্নয়ন কর্মকা-ের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে। এগুলো হচ্ছে- দীর্ঘ ১০ বছর যাবত বন্ধ থাকা দৌলতপুর জুট মিল পুনরায় আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর কার্যক্রম উদ্বোধন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) নতুন একাডেমিক কমপ্লেক্স ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল উদ্বোধন এবং স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার কাম সেন্ট্রাল ক্যাফেটেরিয়ার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ক্রিকেট টেস্ট ভেন্যুর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম উদ্বোধন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রী হল ও একটি ছাত্র হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘অদম্য বাংলা’ উদ্বোধন, খুলনা বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের আবাসিক ভবনের উদ্বোধন, খুলনা মেডিক্যাল কলেজের নবনির্মিত শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ছাত্রী নিবাসের উদ্বোধন এবং খুলনা শিশু হাসপাতালের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। প্রধানমন্ত্রী সময়ের স্বল্পতার কারণে জনসভাস্থলে এগুলোর প্রতীকী উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠে জনসভা শুরু হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ২টায় জনসভাস্থলে আসবেন। নেতৃবৃন্দ জনসভা সফল করতে সাংবাদিকসহ খুলনার সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা চেয়েছেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে খুলনায় সাজ সাজ রব পড়েছে। বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে খুলনা শহরকে। পাঁচ শতাধিক তোরণ নির্মাণ, শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-নেত্রীদের ছবি সংবলিত অসংখ্য প্যানাপ্লেক্স ও বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। নগরীর সড়কদ্বীপ, নির্মিত তোরণ ও রাস্তার পাশে আলোকসজ্জাও করা হয়েছে। ঐতিহাসিক খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে নৌকা আকৃতির বিরাট সভামঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নগরবাসী ও জনসভায় আগতদের দলীয় সভানেত্রীর ভাষণ ভালভাবে পৌঁছে দেয়ার জন্য জনসভাস্থলের মাইকের সঙ্গে যশোর রোডের ফেরিঘাট, সার্কিট হাউস ময়দানসংলগ্ন কে ডি ঘোষ রোড, জেলখানা ঘাট, হাজী মহসীন রোডসহ বিভিন্ন রাস্তায় মাইক সংযোজন করা হয়েছে। জনসভার প্রচারের জন্য বুধবার বিকেলে নগরীর বিশাল মোটরসাইকেল মিছিল বের করা হয়।
চট্টগ্রাম যাচ্ছেন শনিবার ॥ চট্টগ্রাম অফিস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রচার ও প্রস্তুতি চলছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। বিশাল সাইজের ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও তোরণে ছেয়ে যাচ্ছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বাজার ও সড়ক। আগামী ২৬ জানুয়ারি শনিবার প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন রাঙ্গুনিয়া হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত জনসভায়। একই দিনে তিনি উদ্বোধন করবেন রাঙ্গুনিয়ায় অবস্থিত বিজেএমসির আওতাধীন কর্ণফুলী পাটকল ও ফোরাত কার্পেট মিলের কারখানা। তাছাড়া তিনি চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য খাতে প্রায় আড়াই শ’ কোটি টাকার গুচ্ছপ্রকল্পও উদ্বোধন করবেন।
রাঙ্গুনিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাÑ তাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের। তিনি ঐ এলাকা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। প্রচারের কাজ তদারকি ও পরিচালনা করছেন তিনি। সরকারের মেয়াদের শেষ বছরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাঙ্গুনিয়ায় এ জনসভা। তাই এ জনসভাকে নির্বাচনী জনসভা হিসেবেও দেখা হচ্ছে এলাকায়। আর সে কারণেই প্রচারেও এসে পড়েছে নির্বাচনী আমেজ। উৎসবমুখর পরিবেশে রাঙ্গুনিয়ায় একটি সফল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
একই দিনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশো (আইইবি) চতুর্থ কনভেনশন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
No comments