নিয়োগ বাণিজ্য-বন্ধ হোক এ প্রবণতা
'বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী'। বাণিজ্যেই সমৃদ্ধি আসে। এটা ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে অত্যন্ত পুরনো প্রবাদ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, 'আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল (বৈধ) করেছেন।' কিন্তু বাণিজ্যের যে বহুমুখী ব্যবহার আজকের বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে, তা সততা ও বৈধতার সব সীমা ছাড়িয়ে অনৈতিকতা ও অবক্ষয়ের চরমে পৌঁছেছে।
অবৈধ বাণিজ্য কত রকম ও কী কী হতে পারে, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বোধ হয় কেবল বাংলাদেশেই পাওয়া সম্ভব।
বাণিজ্য বা রপ্তানির বহুমুখীকরণে দেশের অর্থনীতি উন্নত হয়। জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে বিনিয়োগ আসে বিদেশ থেকেও। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ঘটে। কিন্তু বাংলা ভাষায় বাণিজ্য শব্দটির আগে বা পরে আরেকটি শব্দ বসিয়ে যে নতুন শব্দবন্ধ তৈরি হয়েছে, তা মোটেও ইতিবাচক কোনো প্রভাব ফেলছে না। বরং তাতে রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশে বাণিজ্যের বহুমুখীকরণে নতুন কী কী বাণিজ্য সৃষ্টি হয়েছে এবং সমাজ ও দেশে তার প্রভাব কী পড়ছে, সেটাও ভেবে দেখা দরকার। তবে নির্দি্বধায় বলা যায়, এটি একটি অসুস্থ প্রবণতা, যা সমাজ ও রাষ্ট্রকাঠামোকে দূষিত করে।
বাংলাদেশে বাণিজ্য শব্দটির আগে আরেকটি শব্দ যুক্ত হয়ে যেসব শব্দবন্ধ তৈরি হয়েছে, তা নিয়োগ বাণিজ্য। নিয়োগের এই বাণিজ্যিক ব্যবহার আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে অনেক আগে থেকেই জড়িয়ে আছে। কিন্তু এমন বহুল ব্যবহার আগে দেখা যায়নি। গত কয়েক বছরে বাণিজ্যের বহুমুখী ব্যবহারের ক্ষেত্র প্রসারিত হওয়ায় নিয়োগ বাণিজ্য নামের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। দুর্নীতির এক নিকৃষ্ট রূপ এই নিয়োগ বাণিজ্য। টাকার বিনিময়ে যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে অযোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগদানকে বাণিজ্যের তকমা দেওয়া হলেও আসলে এটি চরম দুর্নীতিমূলক ব্যবস্থা। বাংলাদেশের প্রায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানেই নিয়োগ বাণিজ্য প্রচলিত প্রথা হিসেবেই দাঁড়িয়ে গেছে। এর ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মান ও দক্ষতা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী মিলিয়ে ৫৭টি পদের বেশির ভাগ পদেই বাণিজ্যিক পদ্ধতিতে ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ হয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নিয়োগ মানেই নিয়োগে অনিয়ম তথা আর্থিক লেনদেন। যোগ্যতা বা দক্ষতা কোনো বিষয় নয়। সেখানে হেড কুক পদে আবেদন করে প্রার্থী পেয়েছেন মালি পদে নিয়োগ। ওয়ার্ড সার্ভেন্ট পদে আবেদনকারী পেয়েছেন সুইপার পদে নিয়োগ। কোনো কোনো প্রার্থী ভুয়া সনদ যেমন ব্যবহার করেছেন, তেমনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হয়েছে জেলা কোটা। কারো কারো ক্ষেত্রে বয়সের সীমারেখাও উপেক্ষিত। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও অভিযোগকারীরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থেকেছেন নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে।
এ জাতীয় নিয়োগ বাণিজ্য কেবল নিয়োগপ্রাপ্তকেই সারা জীবনের জন্য অসৎ করে দেয় না, সমাজে অসততারও জন্ম দেয়। স্বজনপ্রীতি ও দলীয় লোকদের প্রাধান্য দেওয়ায় বঞ্চিত করা হয় যোগ্যদের। অযোগ্যদের নিয়োগে সেবা থেকে বঞ্চিত হয় সাধারণ মানুষ। মাঝখান থেকে কিছু অসৎ লোকের পকেট ভর্তি হয়। কাজেই দেশের মঙ্গলের জন্য এ ধরনের প্রবণতা রোধ করতে হবে। এখনই এর বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন। জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিয়োগে যে অনিয়ম হয়েছে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে, এটাই আমরা আশা করি।
বাণিজ্য বা রপ্তানির বহুমুখীকরণে দেশের অর্থনীতি উন্নত হয়। জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে বিনিয়োগ আসে বিদেশ থেকেও। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ঘটে। কিন্তু বাংলা ভাষায় বাণিজ্য শব্দটির আগে বা পরে আরেকটি শব্দ বসিয়ে যে নতুন শব্দবন্ধ তৈরি হয়েছে, তা মোটেও ইতিবাচক কোনো প্রভাব ফেলছে না। বরং তাতে রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশে বাণিজ্যের বহুমুখীকরণে নতুন কী কী বাণিজ্য সৃষ্টি হয়েছে এবং সমাজ ও দেশে তার প্রভাব কী পড়ছে, সেটাও ভেবে দেখা দরকার। তবে নির্দি্বধায় বলা যায়, এটি একটি অসুস্থ প্রবণতা, যা সমাজ ও রাষ্ট্রকাঠামোকে দূষিত করে।
বাংলাদেশে বাণিজ্য শব্দটির আগে আরেকটি শব্দ যুক্ত হয়ে যেসব শব্দবন্ধ তৈরি হয়েছে, তা নিয়োগ বাণিজ্য। নিয়োগের এই বাণিজ্যিক ব্যবহার আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে অনেক আগে থেকেই জড়িয়ে আছে। কিন্তু এমন বহুল ব্যবহার আগে দেখা যায়নি। গত কয়েক বছরে বাণিজ্যের বহুমুখী ব্যবহারের ক্ষেত্র প্রসারিত হওয়ায় নিয়োগ বাণিজ্য নামের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। দুর্নীতির এক নিকৃষ্ট রূপ এই নিয়োগ বাণিজ্য। টাকার বিনিময়ে যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে অযোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগদানকে বাণিজ্যের তকমা দেওয়া হলেও আসলে এটি চরম দুর্নীতিমূলক ব্যবস্থা। বাংলাদেশের প্রায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানেই নিয়োগ বাণিজ্য প্রচলিত প্রথা হিসেবেই দাঁড়িয়ে গেছে। এর ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মান ও দক্ষতা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী মিলিয়ে ৫৭টি পদের বেশির ভাগ পদেই বাণিজ্যিক পদ্ধতিতে ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ হয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নিয়োগ মানেই নিয়োগে অনিয়ম তথা আর্থিক লেনদেন। যোগ্যতা বা দক্ষতা কোনো বিষয় নয়। সেখানে হেড কুক পদে আবেদন করে প্রার্থী পেয়েছেন মালি পদে নিয়োগ। ওয়ার্ড সার্ভেন্ট পদে আবেদনকারী পেয়েছেন সুইপার পদে নিয়োগ। কোনো কোনো প্রার্থী ভুয়া সনদ যেমন ব্যবহার করেছেন, তেমনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হয়েছে জেলা কোটা। কারো কারো ক্ষেত্রে বয়সের সীমারেখাও উপেক্ষিত। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও অভিযোগকারীরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থেকেছেন নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে।
এ জাতীয় নিয়োগ বাণিজ্য কেবল নিয়োগপ্রাপ্তকেই সারা জীবনের জন্য অসৎ করে দেয় না, সমাজে অসততারও জন্ম দেয়। স্বজনপ্রীতি ও দলীয় লোকদের প্রাধান্য দেওয়ায় বঞ্চিত করা হয় যোগ্যদের। অযোগ্যদের নিয়োগে সেবা থেকে বঞ্চিত হয় সাধারণ মানুষ। মাঝখান থেকে কিছু অসৎ লোকের পকেট ভর্তি হয়। কাজেই দেশের মঙ্গলের জন্য এ ধরনের প্রবণতা রোধ করতে হবে। এখনই এর বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন। জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিয়োগে যে অনিয়ম হয়েছে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে, এটাই আমরা আশা করি।
No comments