ইজতেমা বিশ্বমানবতার কল্যাণ ও শান্তির প্রেরণা-আখেরি মোনাজাত

দ্বিতীয় দফা আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আজ শেষ হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। শুরুর পর থেকে গত বছরের আগ পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমা একবারেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। গত বছর প্রথমবারের মতো দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের ৪৬তম ইজতেমাও দুটি পর্বে বিভক্ত। ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে ইজতেমার প্রথম পর্ব।


এ পর্বে ঢাকার অদূরে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে দেশের ৩২ জেলার মুসল্লিদের সঙ্গে বিদেশ থেকে আসা মুসল্লিসহ কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান সমবেত হয়েছিলেন। ১৫ জানুয়ারি প্রথম দফা আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে প্রথম পর্ব। প্রথম দফার আখেরি মোনাজাতে বিশ্বের সব মুসলমানের শান্তি, সমৃদ্ধি ও ইসলাম ধর্মের মূল আদর্শ বজায় রাখতে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন সমবেত মুসল্লিরা। আজকের দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতেও এর ব্যতিক্রম হবে না।
শুক্রবার আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। প্রথম দিন জুমার নামাজ আদায় করতে সেখানে আশপাশের এলাকা থেকে বহু মুসল্লি যোগ দেওয়ায় ইজতেমা প্রাঙ্গণ কানায় কানায় ভরে যায় এবং মূল ময়দান ছাড়িয়ে আশপাশের এলাকায় বিস্তৃত হয় জামাত। জুমার নামাজের সময় টঙ্গী চৌরাস্তা ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও সমবেত হয়েছিলেন মুসল্লিরা। আশা করা যায়, আজকের আখেরি মোনাজাতে সারা দেশ থেকে আরও অনেক মুসল্লি যোগ দেবেন।
১৯৬৬ সালে তুরাগ নদের তীরে ইজতেমা স্থানান্তরিত হওয়ার পর থেকে পর্যায়ক্রমে এই সমাবেশে দেশ-বিদেশের মুসলমানদের অংশগ্রহণ এবং এর আকার বৃদ্ধি ইসলামের বিশ্বভ্রাতৃত্বের অনন্য দিকটি তুলে ধরছে। প্রতিবছরই অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বোঝা যায়, বিশ্বব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে ইজতেমার গুরুত্ব বাড়ছে।
প্রতিবছর তুরাগ নদের তীরে এই ইজতেমায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাবেশ ঘটায় স্বাভাবিক কারণেই সমাবেশস্থলে মুসল্লিদের কিছু সমস্যা ও দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। এবারও সে ধরনের সমস্যা হয়েছে, বিশেষ করে পর্যাপ্ত খাওয়ার পানি, খাবারের আয়োজন ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার ক্ষেত্রে সমস্যা লক্ষ করা গেছে। এর আকার ও কলেবর যেহেতু প্রতিবছর বেড়েই চলেছে, তাই ইজতেমার ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করার কোনো বিকল্প নেই। এবারের সমস্যাগুলো বিবেচনায় নিয়েই উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে আজ অংশ নেওয়া লাখো মুসলমান সৃষ্টিকর্তার কাছে বিশ্বমানবতার শান্তি, সম্প্রীতি ও কল্যাণ কামনা এবং অন্তরের পরিশুদ্ধিলাভের জন্য প্রার্থনা করবেন। বিশ্ব ইজতেমার এই সমাবেশ মানবতার শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে, সে প্রত্যাশাই রইল।

No comments

Powered by Blogger.