ইতিহাসের দায় দ্রুত মেটানোই মঙ্গল by মো. শরিফুল ইসলাম খান
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের বিচারের রায় হলো। পত্রিকাগুলো বলছে, ইতিহাসের দায় মেটাল বাংলাদেশ। দেশের সর্বস্তরের মানুষ মহাখুশি এই ভেবে যে, দীর্ঘ ৪১ বছর পরে হলেও একটি রায় অন্তত ঘোষিত হয়েছে।
আসামিবিহীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ট্রাইব্যুনাল-২-এর দীর্ঘ প্রত্যাশিত রায়টি যেন দেশের সর্বস্তরের মানুষের মনে স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে। যে রায়টি এখনও কার্যকর হয়নি তাতেই মানুষ এত খুশি! আর যদি এমন হয় যে, রায় হলো কিন্তু ফাঁসি হলো না বা সরকার রায় কার্যকর করতে পারল না; তখন এই আনন্দই সরকারবিরোধী জনমতে রূপ নেবে। আর মানবতাবিরোধী বাকি অপরাধীদের বিচারের রায় কবে হবে? এই সরকারের আমলেই কি শেষ হবে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের অন্যান্য বিচার? আদৌ কি এ সরকার তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারবে? এসব ভেবে স্বস্তির হৃদয় সন্দিহানে আক্রান্ত হয়। এ দুশ্চিন্তা আপামর জনসাধারণের।
বর্তমান সরকারের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা। বিচারের মন্থর গতি ও রায় বিলম্বিত হওয়ার কারণে আড়াল থেকে অনেকেই এটিকে রাজনৈতিক এজেন্ডা হিসেবে মন্তব্য ছুড়ছেন। সরকারের যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের রায়ের ধীরগতি জনমনে প্রায় শঙ্কাই সৃষ্টি করে ফেলেছিল। কেননা, এর আগে জনগণ কিছু কিছু কাজে সরকারের ধীরগতি প্রত্যক্ষ করেছে। বিগত সময়ে সরকার যেসব বিষয়ে ধীরগতির নীতি অবলম্বন করেছে, সেখানেই ব্যর্থ হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত ফল আনতে পারেনি। যেমন সিটি নির্বাচন, শেয়ার কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু প্রভৃতি। শেয়ার কুচক্রীদের শাস্তি নিশ্চিত করবে, পরিবেশ উন্নত হলে সিটি নির্বাচন দেবে, পদ্মা সেতু হবেই হবে প্রভৃতি উচ্চবাচ্য শুধু ধীরগতির কারণেই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। এমনকি গত চার বছরে এই বৃহৎ প্রকল্পগুলোর কোনো ফয়সালা তো দূরের কথা, এর আশপাশেও পেঁৗছাতে পারেনি। তবে অনেক ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্যও আছে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ জনমনে স্বস্তিও এনেছিল। যদিও এর প্রতিটি ক্ষেত্রে বরাবরের মতো সরকারের ধীরে চলো নীতি লক্ষ্য করা গেছে।
আমরা যারা সাধারণ মানুষ, সাধারণ শিক্ষার্থী এত টালবাহানা বুঝি না; রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি বা এজেন্ডা বুঝি না; মন্থরগতির নীতি বুঝি না। আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চাই। শুধু রায় দেখে খুশি হতে চাই না। রায়ের কার্যকারিতা দেখতে চাই। কেউ যেন না বলে_ 'অহন ব্যাডারে খুইজ্জা পাইলে অয়।' ইতিহাসের দায় বাংলাদেশের মানুষ তখনই মেটাতে পারবে, যখন দেশের ১৬ কোটি মানুষ এই মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর দেখতে পাবে।
ইতিমধ্যেই শহর-গ্রাম সর্বত্র জাতীয় নির্বাচনের আমেজ বইছে। রায় হতে হতে যদি নির্বাচন পর্যন্ত গড়ায়, তবে সরকারবিরোধী জনমত ত্বরান্বিত হতে সময় লাগবে না। সব মিলিয়ে সরকার যে দৃষ্টিকোণ থেকেই চিন্তা করুক না কেন; মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার যত দ্রুত সম্পন্ন করবে ততই মঙ্গল। এতে হয়তো সরকারের জনপ্রিয়তার অব্যাহত ধস কিছুটা হ্রাস পাবে। ক্ষমতার এই শেষ সময়ে এসে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মাধ্যমে কিছুটা হলেও জনগণের আস্থা অর্জন সম্ভব। অন্যথায় এর পুরোপুরি উল্টোটাই ঘটবে। তখন আর জাতি দায়মুক্ত হবে না, বরং সরকারই জাতির কাছে চিরদায়ী হয়ে থাকবে।
মো. শরিফুল ইসলাম খান : শিক্ষার্থী, ঢাবি
বর্তমান সরকারের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা। বিচারের মন্থর গতি ও রায় বিলম্বিত হওয়ার কারণে আড়াল থেকে অনেকেই এটিকে রাজনৈতিক এজেন্ডা হিসেবে মন্তব্য ছুড়ছেন। সরকারের যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের রায়ের ধীরগতি জনমনে প্রায় শঙ্কাই সৃষ্টি করে ফেলেছিল। কেননা, এর আগে জনগণ কিছু কিছু কাজে সরকারের ধীরগতি প্রত্যক্ষ করেছে। বিগত সময়ে সরকার যেসব বিষয়ে ধীরগতির নীতি অবলম্বন করেছে, সেখানেই ব্যর্থ হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত ফল আনতে পারেনি। যেমন সিটি নির্বাচন, শেয়ার কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু প্রভৃতি। শেয়ার কুচক্রীদের শাস্তি নিশ্চিত করবে, পরিবেশ উন্নত হলে সিটি নির্বাচন দেবে, পদ্মা সেতু হবেই হবে প্রভৃতি উচ্চবাচ্য শুধু ধীরগতির কারণেই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। এমনকি গত চার বছরে এই বৃহৎ প্রকল্পগুলোর কোনো ফয়সালা তো দূরের কথা, এর আশপাশেও পেঁৗছাতে পারেনি। তবে অনেক ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্যও আছে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ জনমনে স্বস্তিও এনেছিল। যদিও এর প্রতিটি ক্ষেত্রে বরাবরের মতো সরকারের ধীরে চলো নীতি লক্ষ্য করা গেছে।
আমরা যারা সাধারণ মানুষ, সাধারণ শিক্ষার্থী এত টালবাহানা বুঝি না; রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি বা এজেন্ডা বুঝি না; মন্থরগতির নীতি বুঝি না। আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চাই। শুধু রায় দেখে খুশি হতে চাই না। রায়ের কার্যকারিতা দেখতে চাই। কেউ যেন না বলে_ 'অহন ব্যাডারে খুইজ্জা পাইলে অয়।' ইতিহাসের দায় বাংলাদেশের মানুষ তখনই মেটাতে পারবে, যখন দেশের ১৬ কোটি মানুষ এই মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর দেখতে পাবে।
ইতিমধ্যেই শহর-গ্রাম সর্বত্র জাতীয় নির্বাচনের আমেজ বইছে। রায় হতে হতে যদি নির্বাচন পর্যন্ত গড়ায়, তবে সরকারবিরোধী জনমত ত্বরান্বিত হতে সময় লাগবে না। সব মিলিয়ে সরকার যে দৃষ্টিকোণ থেকেই চিন্তা করুক না কেন; মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার যত দ্রুত সম্পন্ন করবে ততই মঙ্গল। এতে হয়তো সরকারের জনপ্রিয়তার অব্যাহত ধস কিছুটা হ্রাস পাবে। ক্ষমতার এই শেষ সময়ে এসে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মাধ্যমে কিছুটা হলেও জনগণের আস্থা অর্জন সম্ভব। অন্যথায় এর পুরোপুরি উল্টোটাই ঘটবে। তখন আর জাতি দায়মুক্ত হবে না, বরং সরকারই জাতির কাছে চিরদায়ী হয়ে থাকবে।
মো. শরিফুল ইসলাম খান : শিক্ষার্থী, ঢাবি
No comments