হরতাল ডেকে প্রতিরোধের মুখে জামায়াত ॥ গণধোলাই!
বৃহস্পতিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামে অর্ধ দিবস হরতালসহ সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াতÑশিবির। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল ও যুদ্ধাপরাধের মামলায় আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের অনুমতি না পেয়ে হরতাল ডেকেছে।
বিএনপি সমর্থন দিয়েছে এ হরতালে জামায়াতের প্যাডে যার নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখ করে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে সে গা ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ তাকে খুঁজে না পেয়ে অনুমতি দিতে পারেনি। রাজধানীর পান্থপথ, কমলাপুর এলাকাসহ বিভিন্নস্থানে শিবির মিছিল বের করলে পুলিশ-জনতার প্রতিরোধের মুখে ধাওয়া ও গণধোলাই খেয়েছে। শেরেবাংলা নগর এলাকায় মজুদ করা ৪০ হাজার চকোলেট বোমা ও ৫শ’ আতশবাজি উদ্ধারসহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে। রাজধানীর দোয়েল চত্বরে, মগবাজার ওয়্যারলেসসহ বিভিন্নস্থানে বিআরটিসিসহ গাড়িতে আগুন, ভাংচুর চালিয়েছে জামায়াতÑশিবির। রাজধানীর বিভিন্নস্থানে র্যাব-পুলিশসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর জানিয়েছেন কঠোভাবে জামায়াত-শিবিরকে মোকাবেলা করা হবে। বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় জামায়াতের কর্মকা-কে সমালোচনা করে বলেছেন, জামায়াত হচ্ছে পরজীবী, অন্যের ওপর খাওয়া এই জামায়াতÑশিবিরের দুষ্কৃত কর্মের প্রতিরোধ করা হবে। এরা যতই প্রতিরোধ করুক না কেন সরকার যুদ্ধাপরাধীর বিচার করে তাদের শাস্তি দিতে সক্ষম হবে।রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করার পর গণধোলাই দেয়া হয়েছে জামায়াতÑশিবিরকে। বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় বের হওয়া মিছিলটি পান্থপথ থেকে কারওয়ান বাজারের দিকে যাচ্ছিল। মিছিল থেকে যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধ ও বৃহস্পতিবারের হরতালের সমর্থনে সেøাগান দেয় তারা। মিছিলটি যাওয়ার পথে বাধাপ্রাপ্ত হয়। পুলিশ, ছাত্রলীগের কর্মী ও সাধারণ জনতা তাদের ধাওয়া দেয়। ধাওয়ার মুখে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দিগি¦দিক হারা হয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা। পান্থপথ ছাড়াও বুধবার শিবিরকর্মীরা রাজধানীর কমলাপুর এলাকায় এক পুলিশ কর্মকর্তার গাড়িতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে প্রতিরোধ করে তাদের গণধোলাই দেয়। এ সময় জনতার বাধার মুখে ধাওয়া খেলে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে গণধোলাই দেয়া হয়েছে। কমলাপুরে হরতালের সমর্থনে মিছিল করার সময় দুই শিবির কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
মগবাজারে বাসে আগুন ॥ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে একটি যাত্রীবাহী বাস জ্বালিয়ে দিয়েছে হরতাল সমর্থনকারীরা। অন্যদিকে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মগবাজার মোড়ে মতিঝিল-বনানী রুটের একটি বাস হরতাল সমর্থনকারীরা আটক করে। তারা দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বাস থেকে যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পর তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তেজগাঁও ফায়ার সার্ভিস থেকে একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় বংশালের হাজী আব্দুল্লাহ সরদার লেনের ৬৮/১ ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় ককটেল বিস্ফোরণে রুবেল (৩২) নামে এক যুবক গুরুতর আহত হন। তার দুই হাত ঝলসে গেছে। বংশাল থানার ইন্সপেক্টর হাসান জানান, ধারণা করা হচ্ছে ককটেল তৈরির সময় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তাকে পুলিশ নিরাপত্তা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হরতালের ঘোষণা ॥ বৃহস্পতিবারের সারাদেশে হরতালের ঘোষণা দিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। বুধবার এক বিবৃতিতে এই হরতালের ঘোষণা দেন তিনি। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল, জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান ও সাবেক আমিরসহ বিরোধী দলের সব আটক নেতাকর্মীর মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা করে জামায়াতে ইসলামী। ঢাকায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের সডকে সমাবেশ করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়। কিন্তু সরকার অনুমতি না দিয়ে যারা আবেদন করেছে তাদের উল্টো গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ করেন রফিকুল ইসলাম। বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের এহেন অন্যায় ও অগণতান্ত্রিক আচরণের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরে খুন, ধর্ষণ লুটপাটের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রথম রায়ে গত ২১ জানুয়ারি জামায়াতের সাবেক রুকন আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ দেয়। জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম, বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ আট নেতা ও বিএনপির দুই নেতারও একই ধরনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে।
একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই এই বিচারের বিরোধিতা করে আসছে। গত কয়েক মাস ধরে জামায়াতÑশিবিরের নেতাকর্মীরা সারাদেশে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুরসহ বিভিন্নভাবে সহিংসতায় জড়াচ্ছে।
এ কারণে সরকারের শরিক দলগুলোসহ বিভিন্ন মহল থেকে জামায়াতে ইসলামীর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের জোরালো দাবি করে আসছে। এই দাবিতে সিপিবি, বাসদসহ কয়েকটি বাম দল হরতালও করেছে। সর্বশেষ গত সোমবার ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে ব্যাপক হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে।
সমাবেশের আবেদনকারীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি ॥ ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলাম বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররম এলাকায় সমাবেশের অনুমতি চেয়ে যার নামে আবেদন করা হয়েছিল আমরা তার খোঁজ করে পাইনি। সমাবেশের অনুমতি চেয়ে প্যাডে যে ঠিকানা ও ফোন নম্বর দেয়া রয়েছে সেখানেও কাউকে পাওয়া যায়নি। বুধবার ছিল জামায়াতের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচীর ঘোষণা। এ ধরনের আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর সঙ্গে কথা বলে নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখে এ কারণে তাদের কর্মসূচীর বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত জানানো সম্ভব হয়নি। সোমবারের সন্ত্রাসের তা-বের পর থেকে জনগণের নিরাপত্তায় রাজধানীতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সকাল থেকেই বায়তুল মোকাররম ও পল্টন এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয় পুলিশ ও র্যাব। জামায়াতের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সাঁজোয়া যান ও জলকামানসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় বায়তুল মোকাররম এলাকায়। বায়তুল মোকাররম সংলগ্ন সডকগুলোতে যান চলাচলও স্বাভাবিকের তুলনায় কম ছিল।
বিএনপি কার্যালয়ের উল্টা দিকে বোমার বিস্ফোরণ ॥ রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অদূরে জোনাকী সিনেমা হলের উল্টো দিকের রাস্তায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৫টার দিকে জোনাকী সিনেমা হলের উল্টোদিকের রাস্তায় হঠাৎ বোমার শব্দ শোনা যায়। পর পর দু’টি হাত বোমা নিক্ষেপ করা হলে বিকট আওয়াজে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এতে কেউ আহত হয়নি। এ সময় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
নিক্ষেপ করা একটি বোমা অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে উদ্ধার করা নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কে বা কারা পরপর ৪টি বোমা ছুড়ে মারে। এতে দুটি বোমা বিস্ফোরিত হলেও অন্য ২টি বোমা বিস্ফোরিত হয়নি। কমলাপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপোর সামনে অতীশ দীপঙ্কর সড়ক থেকে ২টি বোমা উদ্ধার করেছে।
দোয়েল চত্বরে আগুন ও বোমা বিস্ফোরণ ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিং পুলের কাছে দোয়েল চত্বর এলাকায় জনতা ব্যাংকের কর্মচারী বহনের একটি দোতলা বাসে আগুন দিয়েছে জামায়াতÑশিবির। এ সময় তারা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। বুধবার বেলা পৌনে ২টায় রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা বিআরটিসির বাসটিতে আগুন দেয় তারা। অগ্নি নির্বাপক কর্মীরা পৌঁছানোর আগেই বাসের চালক ও সহকারী সুইমিং পুল থেকে পানি এনে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এ কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারেনি। এ সময় দোয়েল চত্বর এলাকায় হাতবোমা ফাটানো হলে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। গত দুদিন ধরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কর্মীরা ক্যাম্পাস এলাকায় ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
ঝটিকা মিছিল ॥ বুধবার রাজধানীর মহাখালী, বিজয়নগর, কমলাপুরে মিছিল করেছে শিবির। দুপুরের দিকে কাকরাইল মোড়ে শিবির কর্মীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশী তৎপরতার মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় বিজয়নগর মোড় এলাকা থেকে শিবির সন্দেহে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। বিকেলে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি ঝটিকা মিছিল বের করে শিবির কর্মীরা। মিছিল শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েকশ’ শিবির কর্মী যোগ দেয়। পরে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ার আগেই তারা এলাকা ত্যাগ করে। শিবিরের মিছিলে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন শিবির মহানগর উত্তরের সভাপতি রাকিব রাশেদ, আহমেদ ফয়সাল রাজ, ফৌরদৌস, আশিকসহ কয়েকশ’ শিবিরকর্মী। দুপুর ২ টার দিকে কমলাপুর অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপোর সামনে ১০/১৫ শিবিরকর্মী রাস্তায় লাঠিসোটা নিয়ে প্রাইভেটকার ভাংচুর করে। হামলাকারীরা অন্তত ১০/১৫টি গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় কে বা কারা কয়েকটি বোমা ছুড়ে মারে।
৪০ হাজার চকোলেট উদ্ধার ॥ বুধবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকা থেকে পুলিশ ৪০ হাজার চকোলেট বোমা, ৫শ’ আতশবাজি উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। হরতালে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এসব চকোলেট বোমা ও আতশবাজি মজুদ করা হয় বলে পুলিশ জানায়। গ্রেফতারকৃত দুজন হচ্ছে, সাইফুল ইসলাম (৩০) ও গাড়ি চালক আনোয়ার হোসেন (৪২)। পুলিশ ধারণা করছে, আতঙ্ক ছড়াতে চকোলেট বোমাগুলো গোপনে পুরান ঢাকার একটি দোকানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মিরপুর-১ নম্বর থেকে রোকেয়া সরণি দিয়ে একটি পিকআপ ভ্যান ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছিল। পিকআপ ভ্যানটি শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশের সন্দেহ হয়। তারা পিকআপ ভ্যানটি থামিয়ে তল্লাশি করলে-এতে ৪০ হাজার চকোলেট বোমা ও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৫০১ পিস বারুদ (ফায়ার ওয়ার্কস) দেখতে পায়। চকোলেট বোমাগুলো মিরপুর-১ নম্বর গোলচক্কর থেকে জনৈক রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে আনা হচ্ছিল। ঘটনার পর চকোলেট বোমাগুলোর বাহক সাইফুল ইসলাম ও পিকআপ ভ্যানের চালক আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে। পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলীর ফিরোজের দোকানে এই চকোলেট বোমাগুলো পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। চকোলেট বোমাগুলো একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির মাধ্যমে যশোর সীমান্ত এলাকা থেকে ঢাকায় আনা হয়। চকোলেট বোমাগুলো ভারতের তৈরি। উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকের মূল্য প্রায় ৮ লাখ টাকা। শের-ই-বাংলা নগর থানায় এএসআই আবু জাফর বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক উপাদানগুলো আইন ১৯০৮-এর ৪ (খ/৫/৬) ধারা অনুযায়ী মামলা করেছেন।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে অর্ধ দিবস হরতাল ॥ সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি এবং বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) কমিটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগরীতে অর্ধ দিবস হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার এ দুই মহানগরী ছাড়া সারাদেশে সকাল- সন্ধ্যা হরতাল পালন করবে দলটি। বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতির আনুষ্ঠানিক অনুরোধের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরীতে ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) কর্তৃপক্ষের অনুরোধের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় অর্ধ দিবস হরতাল পালন করার ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
এর আগে বুধবার দুপুরে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের অনুমতি না পাওয়া ও যুদ্ধাপরাধের মামলায় আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার বার্ষিক ভোজের সময় নির্ধারিত থাকায় ঢাকায় হরতাল প্রত্যাহারে জামায়াতে ইসলামীকে আহ্বান জানায় সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি। বুধবার দুপুরে সমিতির এক নম্বর হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
সাংবাদিক সম্মেলনে জয়নুল আবেদীন বলেন, ৩১ জানুয়ারি আমাদের বার্ষিক ভোজের নির্ধারিত সময় ছিল। ইতোমধ্যে আমাদের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে শুধু আইনজীবীরা নয়, দেশের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিসহ বর্তমান বিচারপতিরা উপস্থিত থাকবেন। তাই এ অনুষ্ঠান পরিবর্তন করাও সম্ভব নয়। এজন্য অন্তত ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীকে হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী, সহ সভাপতি কেএম সাইফুদ্দিন ও মোঃ মোস্তফা ও অর্থ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ মুনীর শরীফ।
পরে বুধবার রাতে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন জনকণ্ঠকে জানান, বৃহস্পতিবার সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির বার্ষিক ভোজ অনুষ্ঠান ঘোষিত সময় অনুযায়ীই হবে। আমাদের অনুরোধে জামায়াত ঢাকায় হরতাল অর্ধদিবস করার সিন্ধান্ত দিয়েছে।
No comments