ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ৭০ দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫০
নেপালের
রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে এর আগেও বহু বিমান দুর্ঘটনার
কবলে পড়েছে। পাহাড়ঘেরা এই বিমানবন্দরটি কাঠমান্ডু উপত্যকায় এবং শহরের
কেন্দ্র থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে। একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে এই
বিমানবন্দরটির নিরাপত্তা নিয়ে প্রায়ই আলোচনা হয়। সেখান থেকে প্রথমবারের মতো
আন্তর্জাতিক কোনো বিমান অবতরণের পর এ পর্যন্ত ৭০টিরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এসব দুর্ঘটনায় ৬৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বিমানের পাশাপাশি সেখানে
হেলিকপ্টারও বিধ্বস্ত হয়েছে। শুধু একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ১৭ বছরে নেপালে
কমপক্ষে ২৩টি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৪৮ জন।
এ শতাব্দীতে সেখানে প্রথম দুর্ঘটনার কবলে পড়ে রয়েল নেপাল এয়ারলাইন্সের
ডিএইচসি-৬ এর ‘টুইন অটার-৩০০’ বিমান। বাড়া এলাকায় সিমরা বিমানবন্দরের কাছে
ওই বিমানটি বিধ্বস্ত হয় ২০০০ সালের ২৭শে জুলাই। এতে নিহত হন কমপক্ষে ১০ জন।
সর্বশেষ গতকাল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ৭১ জন আরোহী নিয়ে
বিধ্বস্ত হয় কাঠমান্ডুর কাছে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে একটি
ফুটবল মাঠে। এতে আগুন ধরে ওই বিমানের কমপক্ষে ৫০ জন আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত
হয়েছেন অনেকে। তাদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি বিধ্বস্ত হয় তারা এয়ারের ভাইকিং এয়ার
ডিএইচসি-৬ টুইন অটার-৪০০ বিমান। এ বিমানটি মাইগাদির রূপসীতে বিধ্বস্ত হয়।
এতে নিহত হন কমপক্ষে ২৩ জন। ২০১৪ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি বিধ্বস্ত হয় নেপাল
এয়ারলাইন্সের ডিএইচসি-৬ টুইট অটার-৩০০ বিমান। আর্গাখাঞ্চির কাছে এ বিমানটি
বিধ্বস্ত হলে নিহত হন কমপক্ষে ১৮ জন। ২০১২ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর সীতা
এয়ারের ডোরনিয়ার ২২৮-২০২ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এটিও কাঠমান্ডুর কাছে ত্রিভুবন
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন ১৯ জন। ২০১৪ সালের
১৪ই মে মুস্তাঙ্গ এলাকায় জমসম বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হয় অগ্নি এয়ারের
ডোরনিয়ার ২২৮-২১২ বিমান। এতে নিহত হন ১৫ জন। ২০১১ সালের ১৮ই অক্টোবর
বাগলুংয়ে ধোরপাতানে বিধ্বস্ত হয় নেপালি আর্মির পিলাটাস বিএন-২টি টারবাইন
আইল্যান্ডার। এতে নিহত হন ৬ জন। ২০১১ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর বিধ্বস্ত হয়
বুদ্ধ এয়ারের বিচক্রাফট ১৯০০ডি বিমান। এটিও বিধ্বস্ত হয় ত্রিভুবন
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে। এতে নিহত হয়েছেন ১৯ জন। ২০১০ সালের ১৫ই
ডিসেম্বর বিধ্বস্ত হয় তারা এয়ারের ডিএইচসি-৬ টুইন অটার-৩১০। ওখালডুঙ্গায়
শিচাউর গ্রামে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন ২২ জন। ২০১০ সালের ২৪শে আগস্ট
বিধ্বস্ত হয় অগ্নি এয়ারের ডোরনিয়ার ২২৮-১০১ বিমান। মাকাওয়ানপুরের শিখরপুরে
বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন ১৪ জন। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ডিএইচসি-৬ বিমান বিধ্বস্ত
হয় সোলুখুমবুতে। সেখানে নিহত হয়েছেন ১৮ জন। এ ঘটনা ঘটে ২০০৮ সালের ৮ই
অক্টোবর। এর আগে ২০০৬ সালের ২১শে জুন ইয়েতি এয়ারলাইন্সের আরেকটি বিমান
বিধ্বস্ত হয় জুমলা বিমানবন্দরের কাছে। এতে নিহত হন ৯ জন। ২০০৪ সালের ২৫শে
মে সোলুখুমবুর কাছে লুকলায় বিধ্বস্ত হয় ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি বিমান। এতে
নিহত হন ৩ জন। সাংগ্রিলা এয়ারের একটি বিমান ২০০২ সালের ২২শে আগস্ট
বিধ্বস্ত হয় পোখরায়। সেখানে নিহত হন ১৮ জন। সুরখেত বিমানবন্দরের কাছে ২০০২
সালের ১৭ই জুলাই বিধ্বস্ত হয় স্কাইলাইন এয়ারওয়েজের একটি বিমান। এতে নিহত হন
৪ জন। আর শতাব্দীর শুরুতে প্রথম বিমান দুর্ঘটনা ঘটে সিমরা বিমানবন্দরে।
No comments