ফুটপাথ : পরিণত হয়েছে বাজারে by শেখ মোশাররফ সেন্টু
শহরের বাসিন্দাদের হেঁটে চলাচলের সুবিধার
জন্য তৈরি করা হয় ফুটপাথ। কিন্তু রাজধানী ঢাকার বেশিরভাগ ফুটপাথই সাধারণের
চলাচলের পরিবর্তে হকার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসাস্থলে পরিণত হয়েছে।
সকাল থেকেই ফুটপাথসমূহ হকারদের দখলে যেতে থাকে। কর্মব্যসত্ম মানুষের
হাঁটার রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে সেখানে জমে ওঠে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের
বাজার। বিক্রেতাদের হাঁকডাকে জমজমাট হতে শুরু করে ব্যবসা। বেলা বাড়ার
সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থকে কেনাবেচা। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই কেনাবেচা। লেনদেন
হয় বিপুল পরিমাণ অর্থের।
স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট পস্ন্যানিং (ঝঞচ) রিপোর্ট অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রোপলিটন সিটিতে প্রায় ৩৮৮ কিলোমিটার ফুটপাথ রয়েছে। কিন্তু এই ফুটপাথের প্রায় ৪০ ভাগ অর্থাৎ ১৫৫ কিলোমিটার ব্যবসায়ী, হকার এবং নির্মাণ শিল্পের ব্যবসায়ীদের দখলে।
ফুটপাতে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার বেচা কেচা করা হয়। বিভিন্ন গর্মেন্টস পণ্য, ফলমূল, রান্নাঘরের, টুকিটাকি, পস্নাস্টিকের জিনিসপত্র, বই, মোবাইলের বিভিন্ন উপকরণ, সাজসজ্জার উপকরণ, জুতা ইত্যাদিসহ সব ধরনের নিত্য ব্যবহার্য পণ্যই ফুটপাথে পাওয়া যায়। এছাড়া চা, পান, সিগারেটের দোকান, পিঠার দোকান এমনকি ছোট ছোট খাবার হোটেলও ফুটপাথ জুড়ে ব্যবসা করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবির মাজার, নীলৰেত, পল্টন, গুলিসত্মান, মতিঝিল, গাউসিয়া মার্কেটের সামনে, ফার্মগেট, বায়তুল মোকাররম, নিউমার্কেট, খিলগাঁও, মালিবাগ, মৌচাক, মিরপুর-১, ১০, ফকিরেরপুল, রামপুরা, আজমপুর, সদরঘাট, মহাখালী, বসুন্ধরা মার্কেটের সামনেসহ ঢাকার বেশিরভাগ ফুটপাথই সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থায়ী বাজারে পরিণত হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ফুটপাথও ভ্রাম্যমাণ হকারদের দখলে। তবে শুধু হকাররাই নয়, নয়াবাজার, ইস্কাটন, বংশাল, ধোলাইখাল, মগবাজার, নয়াবাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় দোকানের মালিকরাও তাদের দোকানের সামনের অংশ মালামাল রেখে ফুটপাথ দখল করে ব্যবসা করছে।
ফুটপাথে যে পণ্য পাওয়া যায়, সেগুলো বেশিরভাগই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত। নতুন, পুরনো সব ধরনের পণ্যই ফুটপাথে বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন গার্মেন্টসের রিজেক্ট পণ্য, পুরনো পণ্য সাধারণত ফুটপাথেই বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া পুরনো ঢাকা, কালিগঞ্জসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা ছোট ছোট কারখানা ও গার্মেন্টসের নতুন পণ্যও ফুটপাথে বিক্রি হয়। আবার হাতে বানানো বিভিন্ন পণ্যের অন্যতম বাজার ফুটপাথ। ছোট ছোট কারখানা ও গার্মেন্টস, ৰুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশে ফুটপাথের ব্যবসায়ী ও হকাররা গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের কেনাকাটার জন্য ফুটপাথের দোকানগুলো গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কারণ ফুটপাতের দোকানগুলোর পণ্যের দাম সাধারণত বড় বড় মার্কেটের তুলনায় কম হয়। কোন পণ্যের দাম বড় মার্কেটে ১০০ টাকা হলে অর্ধেক দামে ঐ একই পণ্য হয়ত ফুটপাথেই পাওয়া যায়। এজন্য নির্দিষ্ট আয়ের মানুষজন কম দামে পণ্য কেনার জন্য ফুটপাণের দোকানগুলোয় ভিড় করে। এছাড়া গৃহিণীরাও তাদের সংসারের টুকিটাকি জিনিসপত্রের জন্য ফুটপাথের দোকানের ওপর নির্ভর করে। কারণ একই দাম কম। কম দামের কারণ সম্পর্কে একজন হকার বলেন, 'আমরা লাভ কম করে বেশি পরিমাণে পণ্য বিক্রি করার চেষ্টা করি।'
ফুটপাথে লেনদেনের পরিমাণ কত সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্ন হকার সমিতির নেতাদের মতে, ঢাকা শহরে প্রায় ২-৩ লাখের মতো ৰুদ্র ব্যবসায়ী বা হকার ফুটপাথের ওপর ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছে। নিরৰর, অর্ধ শিৰিত বেকারত্ব দূর করতে ফুটপাতগুলো গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ঢাকা শহরের ফুটপাথগুলোতে হকার এবং ৰুদ্র ব্যবসায়ীদের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এর প্রধান কারণ ফুটপাথে ব্যবসা করতে পুঁজি কম লাগে। অল্প পরিমাণ টাকা দিয়েই ফুটপাথে ব্যবসা বা হকারী শুরম্ন করা যায়। এখানে অগ্রিম ভাড়া, দোকান সাজসজ্জার মতো বাড়তি কোন খরচ নেই। এছাড়া পরিচিতজনের মাধ্যমে অনেকে বাকিতে পণ্য এনে ঐ পণ্য বিক্রি করে পণ্যমূল্যে পরিশোধ করে। ফুটপাতের দোকানদার বা হকাররা অনেকেই সিজনাল ব্যবসায়ী। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে। আবার অনেকে আছেন যারা দিনে বা রাতে অন্যান্য কাজ করে রাতে বা দিনে ফুটপাথে দোকানদারি করছে। সংসারের জন্য বাড়তি কিছু আয় করতেই তারা এই ব্যবসায় জড়িত হন। ফুটপাথে ব্যবসায়ীরা ৰুদ্র ব্যবসায়ী। এদের পুঁজির পরিমাণ খুবই কম। পুঁজির জন্য এরা সাধারণত চড়া সুদের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা সমিতি থেকে অর্থ নিয়ে ব্যবসা করেন। স্থায়ী কোন দোকান বা জায়গা না থাকায় এরা ব্যাংক থেকে কোন ঋণসুবিধা পায় না।
শীতকাল হচ্ছে সবচেয়ে ভাল সময় ফুটপাথের দোকানদার বা হকারদের জন্য। কারণ এই সময় আবহাওয়া ভাল থাকে গ্রীষ্ম বা বর্ষার সময়ে বৃষ্টি, ঝড় ইত্যাদির কারণে ৰতির সম্মুখীন হতে হয়। বৃষ্টিতে ভিজে বা ঝড়ো বাতাসের কারণে বিভিন্ন পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। আবার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও ফুটপাথের ব্যবসায়ীরা ৰতিগ্রসত্ম হয়। হরতাল, ধর্মঘট, ভাংচুরের মতো ধ্বংসত্মক কার্যক্রম থেকে রাজনৈতিক দলগুলো বেরিয়ে আসবে এই আশা সকল হকার ও ফুটপাথ ব্যবসায়ীদের। ফুটপাথে ব্যবসায়ীরা বা হকাররা তাদের ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালানোর জন্য আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রদান করে থাকে। 'লাইনম্যান'-এর মাধ্যমে মাসোহারা সংগ্রহ করা হয় এবং তিনিই তা যথাযথ স্থানে পেঁৗছে দেন। এছাড়া রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের আয়ের একটি পথ হচ্ছে ফুটপাথ। যখন যে দল ৰমতায় সেই দলের স্থানীয় ক্যাডাররাই এই ফুটপাতগুলোর মালিকানা লাভ করে। ভাড়া, কে বসবে, কোথায় বসবে তা এই ক্যাডাররাই নিয়ন্ত্রণ করে। রাজনৈতিক সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে এগুলোর দখল এবং নিয়ন্ত্রণও পরিবর্তিত হয়।
বেশিরভাগ ফুটপাথই হকার, ৰুদ্র ব্যবসায়ীদের দখলে থাকায় পথচারীদের পৰে ফুটপাথ ব্যবহার করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ছে। অনেক সময় হকারদের কারণে ফুটপাথের বদলে মূল রাসত্মা ব্যবহার করতে হয়। ফলে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। পথচারীদের চলাচলের সুবিধার জন্য ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ফুটপাথ থেকে হকারদের উচ্ছেদ করা হয়। সে সময় ঢাকার ১৮টি স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয় হকারদের জন্য। কিন্তু অতি অল্প সংখ্যক হকারকেই সেখানে জায়গা দেয়া সম্ভব হয়। ফলে বিপুল সংখ্যক হকার বেকার হয়ে পড়ে। তাই রাজনৈতিক সরকার ৰমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই পুরনো রূপ ফিরে পায় ফুটপাথগুলো। বেঁচে থাকার তাগিদে রাসত্মার ফুটপাতগুলো দখল করে চলে হকারদের এই ব্যবসা। এজন্য ঢাকার ফুটপাথগুলো পথচারীদের হাঁটার জায়গার পরিবর্তে হয়ে উঠেছে এক একটি বাজার।
স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট পস্ন্যানিং (ঝঞচ) রিপোর্ট অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রোপলিটন সিটিতে প্রায় ৩৮৮ কিলোমিটার ফুটপাথ রয়েছে। কিন্তু এই ফুটপাথের প্রায় ৪০ ভাগ অর্থাৎ ১৫৫ কিলোমিটার ব্যবসায়ী, হকার এবং নির্মাণ শিল্পের ব্যবসায়ীদের দখলে।
ফুটপাতে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার বেচা কেচা করা হয়। বিভিন্ন গর্মেন্টস পণ্য, ফলমূল, রান্নাঘরের, টুকিটাকি, পস্নাস্টিকের জিনিসপত্র, বই, মোবাইলের বিভিন্ন উপকরণ, সাজসজ্জার উপকরণ, জুতা ইত্যাদিসহ সব ধরনের নিত্য ব্যবহার্য পণ্যই ফুটপাথে পাওয়া যায়। এছাড়া চা, পান, সিগারেটের দোকান, পিঠার দোকান এমনকি ছোট ছোট খাবার হোটেলও ফুটপাথ জুড়ে ব্যবসা করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবির মাজার, নীলৰেত, পল্টন, গুলিসত্মান, মতিঝিল, গাউসিয়া মার্কেটের সামনে, ফার্মগেট, বায়তুল মোকাররম, নিউমার্কেট, খিলগাঁও, মালিবাগ, মৌচাক, মিরপুর-১, ১০, ফকিরেরপুল, রামপুরা, আজমপুর, সদরঘাট, মহাখালী, বসুন্ধরা মার্কেটের সামনেসহ ঢাকার বেশিরভাগ ফুটপাথই সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থায়ী বাজারে পরিণত হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ফুটপাথও ভ্রাম্যমাণ হকারদের দখলে। তবে শুধু হকাররাই নয়, নয়াবাজার, ইস্কাটন, বংশাল, ধোলাইখাল, মগবাজার, নয়াবাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় দোকানের মালিকরাও তাদের দোকানের সামনের অংশ মালামাল রেখে ফুটপাথ দখল করে ব্যবসা করছে।
ফুটপাথে যে পণ্য পাওয়া যায়, সেগুলো বেশিরভাগই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত। নতুন, পুরনো সব ধরনের পণ্যই ফুটপাথে বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন গার্মেন্টসের রিজেক্ট পণ্য, পুরনো পণ্য সাধারণত ফুটপাথেই বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া পুরনো ঢাকা, কালিগঞ্জসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা ছোট ছোট কারখানা ও গার্মেন্টসের নতুন পণ্যও ফুটপাথে বিক্রি হয়। আবার হাতে বানানো বিভিন্ন পণ্যের অন্যতম বাজার ফুটপাথ। ছোট ছোট কারখানা ও গার্মেন্টস, ৰুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশে ফুটপাথের ব্যবসায়ী ও হকাররা গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের কেনাকাটার জন্য ফুটপাথের দোকানগুলো গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কারণ ফুটপাতের দোকানগুলোর পণ্যের দাম সাধারণত বড় বড় মার্কেটের তুলনায় কম হয়। কোন পণ্যের দাম বড় মার্কেটে ১০০ টাকা হলে অর্ধেক দামে ঐ একই পণ্য হয়ত ফুটপাথেই পাওয়া যায়। এজন্য নির্দিষ্ট আয়ের মানুষজন কম দামে পণ্য কেনার জন্য ফুটপাণের দোকানগুলোয় ভিড় করে। এছাড়া গৃহিণীরাও তাদের সংসারের টুকিটাকি জিনিসপত্রের জন্য ফুটপাথের দোকানের ওপর নির্ভর করে। কারণ একই দাম কম। কম দামের কারণ সম্পর্কে একজন হকার বলেন, 'আমরা লাভ কম করে বেশি পরিমাণে পণ্য বিক্রি করার চেষ্টা করি।'
ফুটপাথে লেনদেনের পরিমাণ কত সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্ন হকার সমিতির নেতাদের মতে, ঢাকা শহরে প্রায় ২-৩ লাখের মতো ৰুদ্র ব্যবসায়ী বা হকার ফুটপাথের ওপর ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছে। নিরৰর, অর্ধ শিৰিত বেকারত্ব দূর করতে ফুটপাতগুলো গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ঢাকা শহরের ফুটপাথগুলোতে হকার এবং ৰুদ্র ব্যবসায়ীদের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এর প্রধান কারণ ফুটপাথে ব্যবসা করতে পুঁজি কম লাগে। অল্প পরিমাণ টাকা দিয়েই ফুটপাথে ব্যবসা বা হকারী শুরম্ন করা যায়। এখানে অগ্রিম ভাড়া, দোকান সাজসজ্জার মতো বাড়তি কোন খরচ নেই। এছাড়া পরিচিতজনের মাধ্যমে অনেকে বাকিতে পণ্য এনে ঐ পণ্য বিক্রি করে পণ্যমূল্যে পরিশোধ করে। ফুটপাতের দোকানদার বা হকাররা অনেকেই সিজনাল ব্যবসায়ী। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে। আবার অনেকে আছেন যারা দিনে বা রাতে অন্যান্য কাজ করে রাতে বা দিনে ফুটপাথে দোকানদারি করছে। সংসারের জন্য বাড়তি কিছু আয় করতেই তারা এই ব্যবসায় জড়িত হন। ফুটপাথে ব্যবসায়ীরা ৰুদ্র ব্যবসায়ী। এদের পুঁজির পরিমাণ খুবই কম। পুঁজির জন্য এরা সাধারণত চড়া সুদের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা সমিতি থেকে অর্থ নিয়ে ব্যবসা করেন। স্থায়ী কোন দোকান বা জায়গা না থাকায় এরা ব্যাংক থেকে কোন ঋণসুবিধা পায় না।
শীতকাল হচ্ছে সবচেয়ে ভাল সময় ফুটপাথের দোকানদার বা হকারদের জন্য। কারণ এই সময় আবহাওয়া ভাল থাকে গ্রীষ্ম বা বর্ষার সময়ে বৃষ্টি, ঝড় ইত্যাদির কারণে ৰতির সম্মুখীন হতে হয়। বৃষ্টিতে ভিজে বা ঝড়ো বাতাসের কারণে বিভিন্ন পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। আবার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও ফুটপাথের ব্যবসায়ীরা ৰতিগ্রসত্ম হয়। হরতাল, ধর্মঘট, ভাংচুরের মতো ধ্বংসত্মক কার্যক্রম থেকে রাজনৈতিক দলগুলো বেরিয়ে আসবে এই আশা সকল হকার ও ফুটপাথ ব্যবসায়ীদের। ফুটপাথে ব্যবসায়ীরা বা হকাররা তাদের ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালানোর জন্য আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রদান করে থাকে। 'লাইনম্যান'-এর মাধ্যমে মাসোহারা সংগ্রহ করা হয় এবং তিনিই তা যথাযথ স্থানে পেঁৗছে দেন। এছাড়া রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের আয়ের একটি পথ হচ্ছে ফুটপাথ। যখন যে দল ৰমতায় সেই দলের স্থানীয় ক্যাডাররাই এই ফুটপাতগুলোর মালিকানা লাভ করে। ভাড়া, কে বসবে, কোথায় বসবে তা এই ক্যাডাররাই নিয়ন্ত্রণ করে। রাজনৈতিক সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে এগুলোর দখল এবং নিয়ন্ত্রণও পরিবর্তিত হয়।
বেশিরভাগ ফুটপাথই হকার, ৰুদ্র ব্যবসায়ীদের দখলে থাকায় পথচারীদের পৰে ফুটপাথ ব্যবহার করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ছে। অনেক সময় হকারদের কারণে ফুটপাথের বদলে মূল রাসত্মা ব্যবহার করতে হয়। ফলে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। পথচারীদের চলাচলের সুবিধার জন্য ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ফুটপাথ থেকে হকারদের উচ্ছেদ করা হয়। সে সময় ঢাকার ১৮টি স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয় হকারদের জন্য। কিন্তু অতি অল্প সংখ্যক হকারকেই সেখানে জায়গা দেয়া সম্ভব হয়। ফলে বিপুল সংখ্যক হকার বেকার হয়ে পড়ে। তাই রাজনৈতিক সরকার ৰমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই পুরনো রূপ ফিরে পায় ফুটপাথগুলো। বেঁচে থাকার তাগিদে রাসত্মার ফুটপাতগুলো দখল করে চলে হকারদের এই ব্যবসা। এজন্য ঢাকার ফুটপাথগুলো পথচারীদের হাঁটার জায়গার পরিবর্তে হয়ে উঠেছে এক একটি বাজার।
No comments