এবার চুলের বাঁধনে রোমের প্রাচীন নকশা
নারীর চুল বাঁধায় রয়েছে নানা কলাকৌশল। আধুনিক নারীদের কাছে নিত্যনতুন নকশার পাশাপাশি পুরোনো কেশবিন্যাসেরও বিশেষ কদর রয়েছে। এবার তাঁরা প্রাচীন রোমের কুমারীদের (ভেস্টাল ভার্জিন) আদলে প্রথমবারের মতো চুল বাঁধার কৌশল খুঁজে পেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোর শহরের নবীন প্রত্নতত্ত্ববিদ ও চুলের নকশাকার জ্যানেট স্টিফেন্স দীর্ঘদিন গবেষণার পর ভেস্টাল ভার্জিনদের আদলে চুল বাঁধার কৌশল পেয়েছেন। তিনি বলেন, সম্রাটের স্ত্রীর পাশাপাশি ভেস্টাল ভার্জিনরাই ছিলেন রোমান যুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নারী। তাঁরা আগুন রক্ষাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। বয়ঃসন্ধির আগেই (৬ থেকে ১০ বছর বয়সে) তাঁদের বাছাই করা হতো। তাঁদের বিনুনি করা চুল ছিল শুদ্ধতার প্রতীক। ওই বিনুনিকে চুল বাঁধার সবচেয়ে পুরোনো ধরন হিসেবে প্রাচীন বইপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।সিয়াটলে অবস্থিত আমেরিকান আর্কিওলজিক্যাল ইনস্টিটিউটের বার্ষিক সভায় সম্প্রতি নিজের কাজের বিবরণ তুলে ধরেন জ্যানেট। সাত বছরব্যাপী কাজের পর রোমান আর্কিওলজি সাময়িকীতে রোমান সাম্রাজ্যের কেশবিন্যাস নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
জ্যানেট জানান, প্রাচীন চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্যে ভেস্টাল ভার্জিনদের শরীর ও চুলের বেশির ভাগ অংশ পোশাকে আচ্ছাদিত অবস্থায় রয়েছে। ফলে তাঁদের অনুরূপ কেশবিন্যাস করা কঠিন হয়ে পড়ে। ওই বিনুনিতে রয়েছে বয়নশিল্পের মতো সূক্ষ্ম কারুকাজ। এ ক্ষেত্রে পুরো নকশাটিকে প্রথমে দুই ভাগে ভাগ করে প্রতিটি অংশে ছয়টি করে বিনুনি করা হয়। এ ছাড়া, একজোড়া ছোট বিনুনি কানের ওপর দিয়ে মাথার ওপরে রাখা হয়। অপর বিনুনিগুলো দড়ির মতো পাকিয়ে ঘাড়ের দিকে নিয়ে বেঁধে রাখা হয়। মুখমণ্ডলের আশপাশের অবশিষ্ট চুল দিয়ে সপ্তম বিনুনিটি তৈরি করা হয়। এরপর প্রথম ছয়টি বিনুনি মাথার পেছন দিকে নিয়ে জোড়ায় জোড়ায় বেঁধে রাখা হয়।
গোটা প্রক্রিয়াটিতে প্রায় ৪০ মিনিট সময় লাগে। ভেস্টাল ভার্জিনদের এ রকম বিনুনি সম্ভবত ক্রীতদাসরা তৈরি করে দিত। তবে দুই বা ততোধিক ক্রীতদাস মিলে ১০ মিনিটেরও কম সময়ে বিনুনি করে দিতে পারত। ভেস্টাল ভার্জিনদের মতো কেশবিন্যাসের জন্য কোমরসমান লম্বা চুল থাকা প্রয়োজন। তবে এর চেয়ে ছোট চুল থাকলে হয়তো বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হতো। লাইভ সায়েন্স।
No comments