কালের আয়নায়-পাপ বাপকেও রেহাই দেয় না :চিলির দৃষ্টান্ত আমাদের অনুসরণ করা উচিত by আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী

এতদিন বলা হয়েছে, পাবলো নেরুদা অসুস্থ ছিলেন। তার স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে। এখন এত দীর্ঘকাল পর সত্যের ঝাঁপি ঢাকনা খুলতে শুরু করেছে। চিলির ভয়াবহ গণনির্যাতন ও গণহত্যার নায়ক পিনোচেটের বহু দুষ্কর্মের সঙ্গে আরেকটি ভয়ানক দুষ্কর্মের অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি পাবলো নেরুদাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছেন


গত শতকের সত্তরের দশকের গোড়ায় মার্কিন সিআইএর প্রত্যক্ষ মদদ ও সহযোগিতায় পৃথিবীর দুই প্রান্তে দুই রক্তক্ষয়ী সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছিল। একটি চিলিতে এবং অন্যটি বাংলাদেশে। দুটি অভ্যুত্থানেই অসংখ্য সামরিক ও অসামরিক ব্যক্তিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চালানো হয়েছে ভয়াবহ নির্যাতন। চিলিতে অভ্যুত্থান ঘটানো হয় ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। দেশটির নির্বাচিত জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট সালভাদর আলেন্দেকে হত্যা করা হয়েছিল। তবে সেনাজান্তার নরপশু ঘাতকরা আলেন্দের স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যা করা থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল।
এর প্রায় দুই বছর পরই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে ঘটানো হয় আরও রক্তাক্ত ও ভয়াবহ সামরিক অভ্যুত্থান। এ দেশের সেনাজান্তার ঘাতকরা শুধু দেশের স্বাধীনতার স্থপতি এবং রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার স্ত্রী, পুত্র, নববিবাহিত পুত্রবধূদের ও পরিবারের অন্য সদস্যসহ দশ বছরের এবং ছয় বছরের দুই ছেলে ও মেয়েকে হত্যা করতেও দ্বিধা করেনি।
চিলিতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানোর নায়ক ছিলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান পিনোচেট। আলেন্দেকে হত্যার পরপরই তিনি ক্ষমতা দখল করেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে আগস্ট অভ্যুত্থানের অন্যতম নেপথ্য নায়ক ছিলেন তৎকালীন উপ-সেনাপ্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনি কিছুকাল মোশতাক, সায়েম প্রমুখ শিখণ্ডীদের রাষ্ট্রপতি পদে থাকার সুযোগ দিয়ে পরে নিজেই ক্ষমতা দখল করেন।
এই দুটি অভ্যুত্থানের পেছনে একই অশুভ শক্তি একই অশুভ লক্ষ্য সাধনে কাজ করেছে। তা তখনই অনেকে বুঝতে পেরেছিলেন। ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ায় আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে ন্যাম বা জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। বাংলাদেশ তখন মাত্র স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। আমন্ত্রিত হয়েছিলেন চিলির প্রেসিডেন্ট আলেন্দেও। দু'নেতারই ছিল সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ভূমিকা এবং সমাজতন্ত্রের প্রতি অনুরাগ। ফলে দেখা-সাক্ষাৎ হওয়ার আগেই দু'নেতা পরস্পরের অনুরাগী হয়ে উঠেছিলেন এবং দু'জনেই আশা করছিলেন আলজিয়ার্সের জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে দু'জনের মধ্যে প্রত্যক্ষ সাক্ষাৎ-পরিচয় ঘটবে।
বঙ্গবন্ধু সদলে (এই দলে সাংবাদিক হিসেবে আমিও ছিলাম) ৬ সেপ্টেম্বর আলজিয়ার্সে গিয়ে পেঁৗছেন। তখন চিলিতে আলেন্দেকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছে। ডানপন্থি প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোকে সামরিক বাহিনী উস্কানি দিয়ে আলেন্দেবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নামিয়েছে। তারা রাজপথে নেমে আন্দোলনের নামে ভাংচুর করছে, অরাজকতা সৃষ্টি করছে। এমনকি এক শ্রেণীর শ্রমিক সংগঠনকে নানা প্রলোভনে বশীভূত করে ধর্মঘটে নামানো হয়েছে। এগুলো ছিল আলেন্দেকে উৎখাতের জন্য পিনোচেট-জান্তার অজুহাত তৈরি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আলেন্দে আলজিয়ার্সে আসতে পারেননি। কিন্তু শীর্ষ সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের এবং বঙ্গবন্ধুর কাছেও একটি মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। তাতে দেশের পরিস্থিতির জন্য সম্মেলনে আসতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি অসীম আগ্রহে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতের দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এবার তা হলো না। সুযোগ পেলে তিনি বাংলাদেশে আসবেন এবং বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে মন্তব্য করেছিলেন, সে সুযোগ কি তিনি পাবেন?
বঙ্গবন্ধু আলজিয়ার্স থেকে ঢাকায় ফিরে আসেন ১৯৭৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। এর দু'দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর খবর আসে, চিলিতে সেনাপ্রধান পিনোচেট ক্ষমতা দখল করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট আলেন্দেকে হত্যা করা হয়েছে। খবরটি যখন আসে তখন বঙ্গবন্ধু গণভবনে দুপুরে আহার সেরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমি এবং প্রয়াত এমআর আখতার মুকুল সেদিন গণভবনে তার কাছে হাজির ছিলাম। আলেন্দে হত্যার খবর বঙ্গবন্ধু কিছু আগেই পেয়েছিলেন। মুকুলকে দেখে বললেন, 'মুকুল আমার বুকটায় হাত দিয়ে দেখো তো কোন জায়গা দিয়ে বুলেটটা যাবে? আলেন্দের পর এবার আমার পালা।' এরপর দু'বছর না যেতেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং বাংলাদেশেও এক জেনারেলের উত্থান।
জানা ইতিহাস আবার নতুন করে লিখলাম। কারণ, ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এমন সব ঘটনা অন্ধকার থেকে আলোয় উঠে আসে, যা অতীতকে একেবারে হারিয়ে যেতে দেয় না। চিলির একটি সাম্প্রতিক ঘটনাতেও তা প্রমাণিত হয়। চিলির কবি, কূটনীতিক এবং সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের এককালের পুরোধা বুদ্ধিজীবী পাবলো নেরুদার নাম জানেন না এবং তার কবিতা পড়েননি, এমন শিক্ষিত মানুষ বিশ্বে সম্ভবত এখন কমই আছে। মিসরের বিশ্ববিখ্যাত সাংবাদিক মোহাম্মদ হাইকেল যেমন ছিলেন প্রেসিডেন্ট নাসেরের অন্তরঙ্গ বন্ধু, তেমনি কবি পাবলো নেরুদাও ছিলেন প্রেসিডেন্ট আলেন্দের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহকর্মী। নেরুদা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার অনুরাগী ছিলেন এবং তার কোনো কোনো কবিতায় রবীন্দ্রনাথের কবিতার পঙ্ক্তির উদ্ধৃতি এবং ভারতবর্ষের ইতিহাস-ঐতিহ্যেরও উল্লেখ দেখা যায়। বাংলাদেশেও তার কবিতা কাব্যানুরাগীদের মধ্যে জনপ্রিয়। চিলিতে পিনোচেট ক্ষমতা দখল করেন ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর; ঠিক এর ১২ দিন পর ২৩ সেপ্টেম্বর পাবলো নেরুদার মৃত্যু হয়। তখন তার বয়স ৬৯ বছর।
তারপর ৩৮ বছর কেটে গেছে। এতদিন বলা হয়েছে, পাবলো নেরুদা অসুস্থ ছিলেন। তার স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে। এখন এত দীর্ঘকাল পর সত্যের ঝাঁপি ঢাকনা খুলতে শুরু করেছে। চিলির ভয়াবহ গণনির্যাতন ও গণহত্যার নায়ক পিনোচেটের বহু দুষ্কর্মের সঙ্গে আরেকটি ভয়ানক দুষ্কর্মের অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি পাবলো নেরুদাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছেন। এই অভিযোগ ওঠায় সারাবিশ্ব স্তম্ভিত হয়েছে। পিনোচেটের দীর্ঘ রাজত্বকালে এমনকি তারপরও তার বিরুদ্ধে মুখ ফুটে অভিযোগ জানাতে অনেকের সাহস হয়নি। কারণ, পিনোচেটের বহু কোলাবরেটর ও অনুচর তখন প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে ছিল।
কিন্তু পাপ যেমন বাপকেও ক্ষমা করে না, তেমনি পিনোচেটকেও করেনি। মানবতার শত্রু এবং গণহত্যাকারী হিসেবে পিনোচেটকে অভিযুক্ত হতে হয়েছে ও ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে। বাংলাদেশে একাত্তরের ঘাতকচক্র এবং গণহত্যার কোলাবরেটর জামায়াতিরা যেমন বলছে, তাদের বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সাক্ষ্য-প্রমাণ কই? পিনোচেটপন্থিরাও তেমনি বলা শুরু করেছিল, পিনোচেটের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও গণনির্যাতনের সাক্ষ্য-প্রমাণ কই? বাংলাদেশে রায়েরবাজারসহ অসংখ্য বধ্যভূমি যেমন জামায়াতি ঘাতকদের অপরাধের নীরব সাক্ষী, তেমনি চিলিতে হাজার হাজার গণকবর আবিষ্কৃত হওয়ায় (এখনও হচ্ছে) পিনোচেটের নামের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে নরপশু কথাটি যুক্ত হয়ে গেছে এবং তার জঘন্য অপরাধ সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে।
এসব নতুন তথ্যের একটি হলো বিশ্বখ্যাত কবি পাবলো নেরুদাকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ। নেরুদার গাড়ির ড্রাইভার ম্যানুয়েল আরায়া (গধহঁবষ অৎধুধ) অভিযোগ করেছেন, পিনোচেটের এক অনুচর (যবহপযসধহ) কবির শরীরে ইনজেকশন দ্বারা বিষ প্রয়োগ করেন এবং সেদিনই (২৩ সেপ্টেম্বর) কবির মৃত্যু হয়। এই হত্যাকাণ্ডের আসল কারণ এতদিন ধামাচাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, গুরুতর অসুস্থতার জন্য নেরুদার মৃত্যু হয়েছে। ম্যানুয়েল বলেছেন, এতদিন প্রাণের ভয়ে তিনি সত্য প্রকাশে সাহসী হননি।
এই অভিযোগ যে সঠিক হতে পারে তার প্রমাণ পাওয়া যায় চিলিতে নিযুক্ত মেক্সিকোর সাবেক রাষ্ট্রদূত (পিনোচেটের আমলের) গনজালো মার্টিনেজ কোরবালার মন্তব্যে। তিনি বলেছেন, নেরুদাকে তার মৃত্যুর আগের দিনও তিনি অত্যন্ত সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় দেখেছেন। কবির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন আরও অনেকেই একই কথা বলছেন এবং কবির মৃত্যুর আগের দিনও যে তারা তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ (রহ মড়ড়ফ যবধষঃয) দেখেছেন সেকথা প্রকাশ করেছেন।
এই অভিযোগ সম্পর্কে চিলির কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডেন্ট গুইলারমো টেইলিয়ার বলেছেন, 'পাবলো নেরুদার মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন একটি নৈতিক দায়িত্ব। আমরা দায়িত্ব পালন করতে চাই। তার মৃত্যু সম্পর্কে সন্দেহ পোষণের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এই কারণের মধ্যে দুটি অত্যন্ত জোরালো। একটি হলো, মৃত্যুর কিছুদিন আগে তিনি প্রেসিডেন্ট আলেন্দের সমর্থনে, তার হত্যার নিন্দা জানিয়ে এবং এই হত্যার জন্য সামরিক জান্তাকে দায়ী করে একটি জোরালো নিবন্ধ লিখেছিলেন। তখন অনেকেই তার জীবনের নিরাপত্তা সম্পর্কে শঙ্কাবোধ করতে শুরু করেছিলেন।
দ্বিতীয় কারণ, পাবলো নেরুদা যদিও তখন অসুস্থ ছিলেন এবং সান্টিয়াগোতে সান্টা মারিয়া ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ছিলেন; কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা গুরুতর ছিল না। অভিযোগ, চিকিৎসাধীন অবস্থায় পিনোচেটের নির্দেশে তার কোনো আজ্ঞাবাহী চিকিৎসক কবিকে চিকিৎসার নামে ইনজেকশন দিয়ে তার দেহে বিষ ঢোকায় এবং তাতে কবির মৃত্যু হয়। পিনোচেটের যে এজেন্টরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল, তারা পরবর্তীকালে ১৯৮১ সালে একই ক্লিনিকে একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ইডুয়ার্ডো ফ্রেইকেও একইভাবে ইনজেকশন দ্বারা শরীরে বিষ প্রয়োগে হত্যা করে। তারা ধরা পড়ে। গত বছর তাদের বিচারে সোপর্দ করা হয়েছে।
কবি পাবলো নেরুদাকেও পিনোচেটের নির্দেশে হত্যা করা হয়েছিল_ এই অভিযোগটি শুধু চিলিতে নয়, সারাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ সম্পর্কে বৃহস্পতিবারের গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ÔIf Confirmed, the allegation would rank as one of the dictatorships vilest murdersÕ(অভিযোগটি প্রমাণিত হলে এটা স্বৈরশাসকের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডগুলোর পর্যায়ে পড়বে)।
এই অভিযোগের গুরুত্ব অনুধাবন এবং সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সোচ্চার গণদাবির ফলে মারিও ক্যারোজা নামে এক বিচারকের হাতে এর তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগটি সঠিক বলে জানা গেলে ফ্রেইও হত্যাকাণ্ডের বিচারের মতো নেরুদা হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হতে পারে। এই বিচার শুরু হলে পিনোচেট যে একজন প্রধান আসামি হবেন এবং তার মরণোত্তর বিচারও হবে সে আভাসও প্রকাশিত খবরে পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশেও বঙ্গবন্ধু ও চার জাতীয় নেতার হত্যার বেনিফিশিয়ারি হয়েছিলেন যে জেনারেল, তার শাসনামলেও যে হত্যা ও রক্তপাত ঘটেছে, তাতেও চিলির জেনারেলকে অনুকরণ ও অনুসরণ করার অনেক তথ্যা-প্রমাণ রয়েছে। বহুকাল এসব তথ্য-প্রমাণ ডালাবন্ধ ঝাঁপিতে বন্দি ছিল। চিলির মতোই তা এখন প্রকাশ পেতে শুরু করেছে এবং দেশের উচ্চ আদালত তার অনেক সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক কাজকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে এই জেনারেল যে জড়িত ছিলেন এই অভিযোগও এখন সরব হচ্ছে এবং তার আমলে কর্নেল তাহেরকে হত্যা যে অবৈধ হত্যাকাণ্ড, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সে রায়ও দিয়েছেন। বাংলাদেশে এখন অনেকেরই দাবি, কর্নেল তাহেরের মতো জেনারেল খালেদ মোশাররফসহ আরও অনেকের হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ এবং তার প্রকৃত হোতা অথবা হোতাদের সম্পর্কেও তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত। চিলিতে নেরুদার মৃত্যুর ৩৮ বছর পর যদি সে সম্পর্কে তদন্ত হতে পারে এবং প্রয়াত জেনারেলের মরণোত্তর বিচার ও শাস্তির দাবি উঠতে পারে, তাহলে বাংলাদেশে একটি নয়, অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের হোতা বলে অভিযুক্ত প্রয়াত জেনারেলের অপরাধ সম্পর্কে তদন্ত ও মরণোত্তর বিচার হতে পারবে না কেন? বরং জাতীয় ইতিহাসকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্যই আমাদের উচিত চিলির দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা।
লন্ডন, ৩ জুন শুক্রবার, ২০১১
 

No comments

Powered by Blogger.