বিদ্যুৎ-সংকটে জনজীবন বিপর্যস্ত by অরুণ কর্মকার
মোকাররম হোসেন মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা। প্রথম আলোর কার্যালয়ে ফোন করে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বললেন, ‘ভাই, আমরা যে প্রকৃতির গরম আর সরকারের মেগাওয়াটের জ্বালায় অতিষ্ঠ, সে খবর তো অনেক দিন দেখতে পাচ্ছি না।’ গরম তো বোঝা গেল, কিন্তু মেগাওয়াটের জ্বালা বলতে কী বোঝাতে চাইছেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন লোডশেডিংকেই মেগাওয়াটের জ্বালা বলি।
কারণ, সরকার হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানোর হিসাব দেখায়। এদিকে আমরা মরি লোডশেডিংয়ে।’
কামরাঙ্গীরচরের রহমতবাগ থেকে ইলিয়াস আহমদ জানান, সাত শতাধিক ক্ষুদ্রশিল্প ও ৩০টি বড় কারখানাসহ ওই এলাকার প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের দৈনিক সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা ৪০ মেগাওয়াট। কিন্তু বর্তমানে সর্বোচ্চ সরবরাহ করা হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট। ফলে প্রতি ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে মানুষ অতিষ্ঠ। ব্যবসায়ীদের বিপুল অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের কষ্ট অবর্ণনীয়।
আমাদের আদালত প্রতিবেদক জানান, লোডশেডিংয়ে ঢাকার আদালতপাড়ায় বিচারিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। অসহনীয় গরমে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিচারকেরা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছেন না। পুরান ঢাকায় রয়েছে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম, মুখ্য বিচারিক হাকিম, জেলা জজ এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতসহ শতাধিক আদালত। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
শুধু ঢাকা নয়, লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা সারা দেশে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ঢাকায় এখনো লোডশেডিং করা হচ্ছে এক ঘণ্টা অন্তর। অন্যান্য শহর-নগরের অবস্থাও প্রায় একই। আর গ্রামগঞ্জে লোডশেডিংয়ের কোনো ধরাবাঁধা সময় নেই। একটানা কয়েক ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকতে পারে, আবার কয়েক ঘণ্টা কিংবা দিনভর বিদ্যুৎ না-ও থাকতে পারে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) সূত্রগুলো জানায়, সারা দেশে তাদের সমিতিগুলো চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ পাচ্ছে।
বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের বৃষ্টিহীন দুর্বিষহ গরমে বিদ্যুতের এই পরিস্থিতি জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। পাশাপাশি দেশের উৎপাদন খাতেও নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি করেছে। সরকার তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালালেই এই অবস্থা সহনীয় পর্যায়ে আনা সম্ভব।
উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে: বাস্তব পরিস্থিতি যা-ই হোক, গত তিন বছর বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট। এর আগে কখনো তিন বছরে বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা এতটা বাড়েনি। এই বাড়তি ক্ষমতার মধ্যে প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াটই তেলচালিত কেন্দ্রের। কিন্তু অর্থের অভাবে তেলচালিত কেন্দ্রগুলো কম চালানোর সরকারি সিদ্ধান্ত বর্তমান বিপর্যয়কর অবস্থা সৃষ্টি করেছে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র জানায়, বর্তমানে ২৩টি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিদিন গড়ে চার ঘণ্টা করে চালানো হচ্ছে। ফলে চাহিদার কাছাকাছি পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা থাকলেও কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখায় লোডশেডিং অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
অথচ তেলচালিত কেন্দ্রগুলো স্থাপনের লক্ষ্য ছিল বিদ্যুতের চলমান ঘাটতি পূরণ করা। এই লক্ষ্যেই স্বল্পস্থায়ী (তিন ও পাঁচ বছরের জন্য) এসব কেন্দ্র থেকে অনেক বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের চতুর্থ বছরে এসে গরম এবং সেচ মৌসুমের সর্বোচ্চ চাহিদার সময় তেলচালিত কেন্দ্র কম চালানোর সিদ্ধান্ত সারা দেশে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
বিতরণকারী সংস্থাগুলো (ডিপিডিসি, ডেসকো, আরইবি, ওজোপাডিকো প্রভৃতি) থেকে জানা গেছে, তারা চাহিদার তুলনায় কখনো অর্ধেক, কখনো তার চেয়ে কিছু বেশি বিদ্যুৎ পান। ফলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর লোডশেডিং করা ছাড়া উপায় থাকে না।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কয়েকটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। প্রতিটি বিতরণ লাইনে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
ব্যবধান কত?: বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি পুরোনো কেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা কিছু কমেছে। সরকারি হিসাবে এর পরিমাণ ৫০০ মেগাওয়াটের কম নয়। এই বাড়া-কমা মিলে দেশে এখন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদনক্ষমতা প্রায় সাত হাজার মেগাওয়াট। আর সর্বোচ্চ চাহিদা সাড়ে সাত হাজার মেগাওয়াট।
ফলে সর্বোচ্চ উৎপাদনক্ষমতা কাজে লাগালে সারা দিনে দুই-একবার লোডশেডিং করলেই চলে। কিন্তু তাতে সরকারের ভর্তুকি বেড়ে যাবে। তেলচালিত কেন্দ্রগুলো স্থাপনের পর বর্তমান পর্যায়ে এসে সরকার বলছে, তার এই ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কয়েকজন গ্রাহক প্রথম আলোর কাছে জানতে চান, তাহলে কি এগুলো করা হয়েছিল ব্যবসায়ীদের হাতে কিছু টাকা তুলে দেওয়ার জন্য?
ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর মালিক-ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, তাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র না চালানো হলেও চুক্তি অনুযায়ী ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ হিসাবে তাঁরা যে টাকা প্রতি মাসে পান, সেটাই তাঁদের ব্যবসার জন্য যথেষ্ট। বরং সরকার তাঁদের পূর্ণ ক্ষমতায় কেন্দ্র চালাতে বললে সমস্যা। কারণ প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই সমস্যা আছে। যে কারণে পূর্ণ ক্ষমতায় কেন্দ্র চালাতে না পেরে তাঁরা জরিমানা দিতে বাধ্য হতেন। তেলচালিত কেন্দ্রগুলো কম চালানোর সরকারি সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের সেই ঝুঁকি থেকেও বাঁচিয়েছে। বরং এতে দুর্ভোগ বেড়েছে গ্রাহকদের।
পিডিবির সূত্র জানায়, বর্তমানে ছয় হাজার ২০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে তারা উৎপাদন করছে পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ হাজার ২০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। এখন তারা প্রতিদিন তেল কিনছে প্রায় ১৫ কোটি টাকার। তবে প্রতিদিন ১৮ কোটি টাকার তেল কিনলে ছয় হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব। তাতে লোডশেডিং সহনীয় রাখা যায়।
তবে চাহিদা সম্পর্কে পিডিবি যে হিসাব দেয়, তা বাস্তবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। পিডিবি বলছে, বর্তমানে সর্বোচ্চ চাহিদা ছয় হাজার ২০০ মেগাওয়াট। কিন্তু বিতরণকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে পাওয়া হিসাবে দেখা যায়, চাহিদা আরও বেশি। যেমন বর্তমানে আরইবির সর্বোচ্চ চাহিদা তিন হাজার ৪০০ মেগাওয়াট; ডিপিডিসির চাহিদা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট; ডেসকোর ৭০০ মেগাওয়াট; পিডিবির এক হাজার মেগাওয়াট; ওজোপাডিকোর ৬০০। মোট সাত হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। এই হিসাবে বর্তমানে চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে ব্যবধান দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি।
কামরাঙ্গীরচরের রহমতবাগ থেকে ইলিয়াস আহমদ জানান, সাত শতাধিক ক্ষুদ্রশিল্প ও ৩০টি বড় কারখানাসহ ওই এলাকার প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের দৈনিক সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা ৪০ মেগাওয়াট। কিন্তু বর্তমানে সর্বোচ্চ সরবরাহ করা হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট। ফলে প্রতি ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে মানুষ অতিষ্ঠ। ব্যবসায়ীদের বিপুল অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের কষ্ট অবর্ণনীয়।
আমাদের আদালত প্রতিবেদক জানান, লোডশেডিংয়ে ঢাকার আদালতপাড়ায় বিচারিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। অসহনীয় গরমে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিচারকেরা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছেন না। পুরান ঢাকায় রয়েছে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম, মুখ্য বিচারিক হাকিম, জেলা জজ এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতসহ শতাধিক আদালত। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
শুধু ঢাকা নয়, লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা সারা দেশে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ঢাকায় এখনো লোডশেডিং করা হচ্ছে এক ঘণ্টা অন্তর। অন্যান্য শহর-নগরের অবস্থাও প্রায় একই। আর গ্রামগঞ্জে লোডশেডিংয়ের কোনো ধরাবাঁধা সময় নেই। একটানা কয়েক ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকতে পারে, আবার কয়েক ঘণ্টা কিংবা দিনভর বিদ্যুৎ না-ও থাকতে পারে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) সূত্রগুলো জানায়, সারা দেশে তাদের সমিতিগুলো চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ পাচ্ছে।
বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের বৃষ্টিহীন দুর্বিষহ গরমে বিদ্যুতের এই পরিস্থিতি জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। পাশাপাশি দেশের উৎপাদন খাতেও নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি করেছে। সরকার তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালালেই এই অবস্থা সহনীয় পর্যায়ে আনা সম্ভব।
উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে: বাস্তব পরিস্থিতি যা-ই হোক, গত তিন বছর বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট। এর আগে কখনো তিন বছরে বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা এতটা বাড়েনি। এই বাড়তি ক্ষমতার মধ্যে প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াটই তেলচালিত কেন্দ্রের। কিন্তু অর্থের অভাবে তেলচালিত কেন্দ্রগুলো কম চালানোর সরকারি সিদ্ধান্ত বর্তমান বিপর্যয়কর অবস্থা সৃষ্টি করেছে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র জানায়, বর্তমানে ২৩টি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিদিন গড়ে চার ঘণ্টা করে চালানো হচ্ছে। ফলে চাহিদার কাছাকাছি পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা থাকলেও কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখায় লোডশেডিং অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
অথচ তেলচালিত কেন্দ্রগুলো স্থাপনের লক্ষ্য ছিল বিদ্যুতের চলমান ঘাটতি পূরণ করা। এই লক্ষ্যেই স্বল্পস্থায়ী (তিন ও পাঁচ বছরের জন্য) এসব কেন্দ্র থেকে অনেক বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের চতুর্থ বছরে এসে গরম এবং সেচ মৌসুমের সর্বোচ্চ চাহিদার সময় তেলচালিত কেন্দ্র কম চালানোর সিদ্ধান্ত সারা দেশে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
বিতরণকারী সংস্থাগুলো (ডিপিডিসি, ডেসকো, আরইবি, ওজোপাডিকো প্রভৃতি) থেকে জানা গেছে, তারা চাহিদার তুলনায় কখনো অর্ধেক, কখনো তার চেয়ে কিছু বেশি বিদ্যুৎ পান। ফলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর লোডশেডিং করা ছাড়া উপায় থাকে না।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কয়েকটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। প্রতিটি বিতরণ লাইনে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
ব্যবধান কত?: বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি পুরোনো কেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা কিছু কমেছে। সরকারি হিসাবে এর পরিমাণ ৫০০ মেগাওয়াটের কম নয়। এই বাড়া-কমা মিলে দেশে এখন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদনক্ষমতা প্রায় সাত হাজার মেগাওয়াট। আর সর্বোচ্চ চাহিদা সাড়ে সাত হাজার মেগাওয়াট।
ফলে সর্বোচ্চ উৎপাদনক্ষমতা কাজে লাগালে সারা দিনে দুই-একবার লোডশেডিং করলেই চলে। কিন্তু তাতে সরকারের ভর্তুকি বেড়ে যাবে। তেলচালিত কেন্দ্রগুলো স্থাপনের পর বর্তমান পর্যায়ে এসে সরকার বলছে, তার এই ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কয়েকজন গ্রাহক প্রথম আলোর কাছে জানতে চান, তাহলে কি এগুলো করা হয়েছিল ব্যবসায়ীদের হাতে কিছু টাকা তুলে দেওয়ার জন্য?
ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর মালিক-ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, তাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র না চালানো হলেও চুক্তি অনুযায়ী ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ হিসাবে তাঁরা যে টাকা প্রতি মাসে পান, সেটাই তাঁদের ব্যবসার জন্য যথেষ্ট। বরং সরকার তাঁদের পূর্ণ ক্ষমতায় কেন্দ্র চালাতে বললে সমস্যা। কারণ প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই সমস্যা আছে। যে কারণে পূর্ণ ক্ষমতায় কেন্দ্র চালাতে না পেরে তাঁরা জরিমানা দিতে বাধ্য হতেন। তেলচালিত কেন্দ্রগুলো কম চালানোর সরকারি সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের সেই ঝুঁকি থেকেও বাঁচিয়েছে। বরং এতে দুর্ভোগ বেড়েছে গ্রাহকদের।
পিডিবির সূত্র জানায়, বর্তমানে ছয় হাজার ২০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে তারা উৎপাদন করছে পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ হাজার ২০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। এখন তারা প্রতিদিন তেল কিনছে প্রায় ১৫ কোটি টাকার। তবে প্রতিদিন ১৮ কোটি টাকার তেল কিনলে ছয় হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব। তাতে লোডশেডিং সহনীয় রাখা যায়।
তবে চাহিদা সম্পর্কে পিডিবি যে হিসাব দেয়, তা বাস্তবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। পিডিবি বলছে, বর্তমানে সর্বোচ্চ চাহিদা ছয় হাজার ২০০ মেগাওয়াট। কিন্তু বিতরণকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে পাওয়া হিসাবে দেখা যায়, চাহিদা আরও বেশি। যেমন বর্তমানে আরইবির সর্বোচ্চ চাহিদা তিন হাজার ৪০০ মেগাওয়াট; ডিপিডিসির চাহিদা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট; ডেসকোর ৭০০ মেগাওয়াট; পিডিবির এক হাজার মেগাওয়াট; ওজোপাডিকোর ৬০০। মোট সাত হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। এই হিসাবে বর্তমানে চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে ব্যবধান দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি।
No comments