বিলুপ্ত-প্রায় ঘানি শিল্প by আসাদুল হক খোকন
আজ থেকে প্রায় ২৩০০ বছর আগের কথা। মৌর্য শাসনামলে দীর্ঘদিনের টানা খরার ফলে দেখা দেয় তীব্র দুর্ভিক্ষ। দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় মৌর্য স্বরাট জনগণের মাঝে চালু করেন বিনামূলে খাদ্যশস্য বিতরণ ব্যবস্থা। এ খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে ছিল ধান এবং তেলবীজ- বিশেষ করে তিল ও সরিষা।
তেলবীজ থেকে তেল উৎপাদনের জন্য তখনও কোন প্রযুক্তিগত যন্ত্র বা মেশিন তৈরি হয়নি। তাই খাবারে স্বাদ আনতে বা প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিনের রান্নায় ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করা হতো বিশেষ পদ্ধতিতে হাতে তৈরি তেল দিয়েই।
এ কাজের জন্য সবার বাড়িতেই সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন মহিলাদের সময় কাটত মহা ব্যস্ততায়। অর্থাৎ গৃহকাজের সময়ের বড় একটি অংশ ব্যয় হতো প্রতিদিনের রান্নার তেল তৈরির পেছনেই।
মৌর্য শাসনামলের সেই দুর্ভিক্ষ আর মৌর্য স্বরাটের বিনামূল্যে ধান ও তেলবীজ বিতরণের ঘটনা তাদের পুরনো পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন এনে দেয়। তখন থেকেই মূলত: তেল উৎপাদনে ঘানি একটি ক্ষুদ্র শিল্প হিসেবে সমাজে স্থান করে নেয়।
পরবর্তীতে ঘাঁনিকে কেন্দ্র করে দেশের বেশ কিছু গ্রামগঞ্জে গড়ে ওঠে তেল ব্যবসা। তেল উৎপাদনকে কোন কোন পরিবার স্থায়ী পেশা হিসেবেও গ্রহণ করে নেয়।
কিন্তু তেল উৎপাদনকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করায় এসব পরিবারকে পরবর্তীতে সমাজ মর্যাদার কোন আসন দেয়নি। বরং অবজ্ঞা করে তাদের পরিবারকে ‘তেলি বা তৈলিক’ নামে ডাকা হতো।
কালের বিবর্তনে তেলি বা তৈলি নামটির বদলে তেল উৎপাদন এবং বিক্রির উপর নির্ভরশীল এসব পরিবারগুলো একসময় ‘কলু’ নামে পরিচিতি পায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে- হিন্দি শব্দ ‘কলহু’ থেকে ‘কলু’ শব্দটির উৎপত্তি। তবে শব্দের উৎপত্তি যেভাবেই হোক, কলহু বা কলু বলতে আমরা তেল উৎপাদক ও বিক্রির সঙ্গে সরাসরি জড়িত পরিবারগুলোকেই জানি।
শুরুতে নিরুপায় বা অপেক্ষাকৃত হতদরিদ্র হিন্দু পারিবারগুলো তেল উৎপাদন ও বিক্রিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে। পরে একই ধরণের কিছু সংখ্যক মুসলিম পরিবারও এ পেশায় আসেন।
প্রথমদিকে এ কাজে পরিবারের প্রায় সবাইকে দিনমান ব্যস্ত থাকতে হতো। তিল বা শরিষা সংগ্রহ, শুকানো, সেদ্ধ করা, ঢেঁকিতে মাড়াই করা এবং তা থেকে হাতে চেপে তেল তৈরি করা প্রতিটি ধাপেই ব্যয় হতো যথেষ্ট শ্রম ও সময়।
পরে তেলবীজ মাড়াই করার হস্তচালিত যন্ত্র ‘ঘানি’ আবিষ্কার হলে তাদের কষ্ট ও সময় অনেকটাই সহজসাধ্য হয়।
‘ঘানি’ বা ওয়েল ক্রাশার মেশিন মূলত: একটি গর্তযুক্ত কাঠের গুঁড়ি ও তার ভেতর ঘূর্ণায়মান একটি মজবুত কাঠের টিপুন বা দন্ড। কাঠের গর্তযুক্ত গুঁড়ির একাংশ মাটিতে শক্ত করে পুঁতে দেওয়া হয় এবং অন্য অংশটি থাকে মাটির ওপরে।
তেল মাড়াইয়ের জন্য কাঠের গুঁড়ির গর্তে তেলবীজ রেখে কাঠের দন্ডটিকে চারপাশে চক্রাকারে ঘোরানো হয়। অপেক্ষাকৃত ভারী ওজনের টিপুনটিকে ঘোরানোর জন্য ব্যবহৃত হয় একজোড়া শক্তসমর্থ বলদ।
বলদের যাতে ছুটে পালাতে না পারে তার জন্য তাদের চোখে পরিয়ে দেওয়া হয় মোটা কাপড়ের ঠুলি। দিনমান জোয়াল কাঁধে নিয়ে ভারী ওজনের টিপুনটিকে চারপাশে ঘোরানোই তাদের কাজ।
বহুল প্রচলিত ‘কলুর বলদ’ প্রবাদটি মূলত: এভাবেই এসেছে।
ঘানি থেকে তেলবীজ পিষে তেল বের করার জন্য কাঠের পাত্রের গায়ে রাখা হয় একটি ত্রিভূজ আকৃতির নালাপথ। নালা থেকে চোয়ানো তেল আহরণ করা হয় একটি পাত্রে। পরে আহরিত তেল ছেঁকে নিয়ে বিক্রয় উপযোগী করা হয়। ভোজ্যতেল উৎপাদনের সনাতন পদ্ধতির এই হস্তচালিত বা ম্যানুয়াল মেশিনের নামই ঘানি।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, এক সময় দেশের যাবতীয় পরিবারের নিত্যদিনের ভোজ্য উৎপাদনের একমাত্র উপায়ই ছিল এই ঘানি। সয়াবিন বা পামওয়েল জাতীয় তেল আমদানির আগে তাই সর্ষে বা তিলের তেলই ছিল আমাদের রান্নার একমাত্র ভরসা। আর আস্থা ছিলো ঘানিভাঙা নির্ভেজাল ও খাঁটি তেলে।
ঘানিভাঙা তেল বিক্রির পদ্ধতিও ছিলো ভিন্ন। অল্প বিস্তর নিজেদের বাড়িতে বসে আশপাশের ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হলেও বাকি তেলের বেশিরভাগই বিক্রি করতে হতো ফেরি করে। তেল বিক্রিতে কলুরা যাতে না ঠকে সে জন্য এ ফেরি করার কাজে পাঠাতো পরিবারের সব চেয়ে চতুর পুরুষটিকে।
পাকা বাঁশের তৈরি বাঁক বা ভাঁড়ের এক পাশে হাঁড়িতে করে তেল এবং অন্য পাশে রবি শস্য নিতো তেল বিক্রির বিনিময় মূল্য হিসেবে। সারাদিন গ্রাম থেকে গ্রামে এ-বাড়ি ও-বাড়ি হেঁকে-ডেকে তেল বিক্রি করে নগদ টাকা আর গৃহস্থ বাড়ি থেকে পাওয়া মৌসুমী রবি শস্য নিয়ে বাড়ি ফিরতে হতো সন্ধ্যায়।
সমাজে কলুদের সম্মান না থাকলেও খাঁটি তেলের সুনাম ছিলো ষোল আনা। ‘সর্ষে তেলে ভেজাল দিতে আমায় কেউ শেখায়নি’ ভূপেন হাজারিকার একটি গানের কথা এমনটি হলেও ভেজাল কিছুটা তখনও ছিলো।
কখনো কখনো কলুরা বেশি মুনাফা লাভের আশায় ঘানিতে সরিষা, তিল, তিশি, ড়েঢ়ি বা ভেন্না জাতীয় তেলবীজ মিশিয়ে দিতো। কিন্তু ঘ্রাণ শুকেই কোন কোন ভোজনরসিক ক্রেতা ধরে ফেলতো কলুদের চালাকি।
সর্বোপরি বাঙালির প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকায় ভোজ্য তেল বিশেষ করে সরিষা তেল ছিলো একটি অনিবার্য উপকরণ। এ কারণে দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই ঘানিকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল পরিবারভিত্তিক একটি ব্যবসা। ঘানি পরিচিতি লাভ করেছিল একটি শিল্প হিসেবেও।
খাঁটি ভোজ্য তেল উৎপাদনের একমাত্র উৎস হিসেবে ঘানির নাম গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে বহূল পরিচিত। কালের আবর্তনে আর উন্নত প্রযুক্তির কল্যাণে সনাতনী মেশিন ঘানির স্থান দখল করেছে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় তেলবীজ মাড়াই মেশিন।
মূহুর্তেই উৎপাদিত হচ্ছে বিপুল পারিমাণ ভোজ্য তেল। পূর্বে যেখানে এক লিটার তেল তৈরিতে সময় ব্যয় হতো একদিন বা কয়েক ঘন্টা। বর্তমানে সেখানে ব্যয় হয় মাত্র কয়েক মিনিট। নেই বাড়তি শ্রম ও অযাচিত ভাবনার ঝুঁকিও।
বর্তমান প্রযুক্তির কল্যাণে তেল উৎপাদনের ঐতিহ্যবাহী ঘানির নাম ভুলতে বসেছে আমাদের নতুন প্রজন্ম। তেল উৎপাদনকে যারা পারিবারিক পেশা হিসেবে নিয়েছিলো, নেই সেই কলু সম্প্রদায়। এখন ‘বিএসটিআই’ এর তত্ত্বাবধানে চলছে সকল ভোগ্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ।
কিন্তু এতোসবের পরও আমাদের দূর হয়নি দুশ্চিন্তা, সন্দেহ! এই সন্দেহটি হলো- প্রতিদিনের রান্নায় যে তেল ব্যবহার করা হচ্ছে তা খাঁটি তো? খাঁটি নামে বিজ্ঞাপিত ব্রান্ডের তেলে ভেজাল নেই তো?
এ কাজের জন্য সবার বাড়িতেই সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন মহিলাদের সময় কাটত মহা ব্যস্ততায়। অর্থাৎ গৃহকাজের সময়ের বড় একটি অংশ ব্যয় হতো প্রতিদিনের রান্নার তেল তৈরির পেছনেই।
মৌর্য শাসনামলের সেই দুর্ভিক্ষ আর মৌর্য স্বরাটের বিনামূল্যে ধান ও তেলবীজ বিতরণের ঘটনা তাদের পুরনো পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন এনে দেয়। তখন থেকেই মূলত: তেল উৎপাদনে ঘানি একটি ক্ষুদ্র শিল্প হিসেবে সমাজে স্থান করে নেয়।
পরবর্তীতে ঘাঁনিকে কেন্দ্র করে দেশের বেশ কিছু গ্রামগঞ্জে গড়ে ওঠে তেল ব্যবসা। তেল উৎপাদনকে কোন কোন পরিবার স্থায়ী পেশা হিসেবেও গ্রহণ করে নেয়।
কিন্তু তেল উৎপাদনকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করায় এসব পরিবারকে পরবর্তীতে সমাজ মর্যাদার কোন আসন দেয়নি। বরং অবজ্ঞা করে তাদের পরিবারকে ‘তেলি বা তৈলিক’ নামে ডাকা হতো।
কালের বিবর্তনে তেলি বা তৈলি নামটির বদলে তেল উৎপাদন এবং বিক্রির উপর নির্ভরশীল এসব পরিবারগুলো একসময় ‘কলু’ নামে পরিচিতি পায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে- হিন্দি শব্দ ‘কলহু’ থেকে ‘কলু’ শব্দটির উৎপত্তি। তবে শব্দের উৎপত্তি যেভাবেই হোক, কলহু বা কলু বলতে আমরা তেল উৎপাদক ও বিক্রির সঙ্গে সরাসরি জড়িত পরিবারগুলোকেই জানি।
শুরুতে নিরুপায় বা অপেক্ষাকৃত হতদরিদ্র হিন্দু পারিবারগুলো তেল উৎপাদন ও বিক্রিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে। পরে একই ধরণের কিছু সংখ্যক মুসলিম পরিবারও এ পেশায় আসেন।
প্রথমদিকে এ কাজে পরিবারের প্রায় সবাইকে দিনমান ব্যস্ত থাকতে হতো। তিল বা শরিষা সংগ্রহ, শুকানো, সেদ্ধ করা, ঢেঁকিতে মাড়াই করা এবং তা থেকে হাতে চেপে তেল তৈরি করা প্রতিটি ধাপেই ব্যয় হতো যথেষ্ট শ্রম ও সময়।
পরে তেলবীজ মাড়াই করার হস্তচালিত যন্ত্র ‘ঘানি’ আবিষ্কার হলে তাদের কষ্ট ও সময় অনেকটাই সহজসাধ্য হয়।
‘ঘানি’ বা ওয়েল ক্রাশার মেশিন মূলত: একটি গর্তযুক্ত কাঠের গুঁড়ি ও তার ভেতর ঘূর্ণায়মান একটি মজবুত কাঠের টিপুন বা দন্ড। কাঠের গর্তযুক্ত গুঁড়ির একাংশ মাটিতে শক্ত করে পুঁতে দেওয়া হয় এবং অন্য অংশটি থাকে মাটির ওপরে।
তেল মাড়াইয়ের জন্য কাঠের গুঁড়ির গর্তে তেলবীজ রেখে কাঠের দন্ডটিকে চারপাশে চক্রাকারে ঘোরানো হয়। অপেক্ষাকৃত ভারী ওজনের টিপুনটিকে ঘোরানোর জন্য ব্যবহৃত হয় একজোড়া শক্তসমর্থ বলদ।
বলদের যাতে ছুটে পালাতে না পারে তার জন্য তাদের চোখে পরিয়ে দেওয়া হয় মোটা কাপড়ের ঠুলি। দিনমান জোয়াল কাঁধে নিয়ে ভারী ওজনের টিপুনটিকে চারপাশে ঘোরানোই তাদের কাজ।
বহুল প্রচলিত ‘কলুর বলদ’ প্রবাদটি মূলত: এভাবেই এসেছে।
ঘানি থেকে তেলবীজ পিষে তেল বের করার জন্য কাঠের পাত্রের গায়ে রাখা হয় একটি ত্রিভূজ আকৃতির নালাপথ। নালা থেকে চোয়ানো তেল আহরণ করা হয় একটি পাত্রে। পরে আহরিত তেল ছেঁকে নিয়ে বিক্রয় উপযোগী করা হয়। ভোজ্যতেল উৎপাদনের সনাতন পদ্ধতির এই হস্তচালিত বা ম্যানুয়াল মেশিনের নামই ঘানি।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, এক সময় দেশের যাবতীয় পরিবারের নিত্যদিনের ভোজ্য উৎপাদনের একমাত্র উপায়ই ছিল এই ঘানি। সয়াবিন বা পামওয়েল জাতীয় তেল আমদানির আগে তাই সর্ষে বা তিলের তেলই ছিল আমাদের রান্নার একমাত্র ভরসা। আর আস্থা ছিলো ঘানিভাঙা নির্ভেজাল ও খাঁটি তেলে।
ঘানিভাঙা তেল বিক্রির পদ্ধতিও ছিলো ভিন্ন। অল্প বিস্তর নিজেদের বাড়িতে বসে আশপাশের ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হলেও বাকি তেলের বেশিরভাগই বিক্রি করতে হতো ফেরি করে। তেল বিক্রিতে কলুরা যাতে না ঠকে সে জন্য এ ফেরি করার কাজে পাঠাতো পরিবারের সব চেয়ে চতুর পুরুষটিকে।
পাকা বাঁশের তৈরি বাঁক বা ভাঁড়ের এক পাশে হাঁড়িতে করে তেল এবং অন্য পাশে রবি শস্য নিতো তেল বিক্রির বিনিময় মূল্য হিসেবে। সারাদিন গ্রাম থেকে গ্রামে এ-বাড়ি ও-বাড়ি হেঁকে-ডেকে তেল বিক্রি করে নগদ টাকা আর গৃহস্থ বাড়ি থেকে পাওয়া মৌসুমী রবি শস্য নিয়ে বাড়ি ফিরতে হতো সন্ধ্যায়।
সমাজে কলুদের সম্মান না থাকলেও খাঁটি তেলের সুনাম ছিলো ষোল আনা। ‘সর্ষে তেলে ভেজাল দিতে আমায় কেউ শেখায়নি’ ভূপেন হাজারিকার একটি গানের কথা এমনটি হলেও ভেজাল কিছুটা তখনও ছিলো।
কখনো কখনো কলুরা বেশি মুনাফা লাভের আশায় ঘানিতে সরিষা, তিল, তিশি, ড়েঢ়ি বা ভেন্না জাতীয় তেলবীজ মিশিয়ে দিতো। কিন্তু ঘ্রাণ শুকেই কোন কোন ভোজনরসিক ক্রেতা ধরে ফেলতো কলুদের চালাকি।
সর্বোপরি বাঙালির প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকায় ভোজ্য তেল বিশেষ করে সরিষা তেল ছিলো একটি অনিবার্য উপকরণ। এ কারণে দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই ঘানিকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল পরিবারভিত্তিক একটি ব্যবসা। ঘানি পরিচিতি লাভ করেছিল একটি শিল্প হিসেবেও।
খাঁটি ভোজ্য তেল উৎপাদনের একমাত্র উৎস হিসেবে ঘানির নাম গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে বহূল পরিচিত। কালের আবর্তনে আর উন্নত প্রযুক্তির কল্যাণে সনাতনী মেশিন ঘানির স্থান দখল করেছে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় তেলবীজ মাড়াই মেশিন।
মূহুর্তেই উৎপাদিত হচ্ছে বিপুল পারিমাণ ভোজ্য তেল। পূর্বে যেখানে এক লিটার তেল তৈরিতে সময় ব্যয় হতো একদিন বা কয়েক ঘন্টা। বর্তমানে সেখানে ব্যয় হয় মাত্র কয়েক মিনিট। নেই বাড়তি শ্রম ও অযাচিত ভাবনার ঝুঁকিও।
বর্তমান প্রযুক্তির কল্যাণে তেল উৎপাদনের ঐতিহ্যবাহী ঘানির নাম ভুলতে বসেছে আমাদের নতুন প্রজন্ম। তেল উৎপাদনকে যারা পারিবারিক পেশা হিসেবে নিয়েছিলো, নেই সেই কলু সম্প্রদায়। এখন ‘বিএসটিআই’ এর তত্ত্বাবধানে চলছে সকল ভোগ্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ।
কিন্তু এতোসবের পরও আমাদের দূর হয়নি দুশ্চিন্তা, সন্দেহ! এই সন্দেহটি হলো- প্রতিদিনের রান্নায় যে তেল ব্যবহার করা হচ্ছে তা খাঁটি তো? খাঁটি নামে বিজ্ঞাপিত ব্রান্ডের তেলে ভেজাল নেই তো?
No comments