জাতীয় কীর্তি ধ্বংস ক্ষমার অযোগ্য-পুড়ে ইট হচ্ছে ইতিহাস
যা ছিল হাজার বছর আগের মানবীয় কীর্তি, যা ছিল পৌরাণিক উপাখ্যানের ভীমের জাঙ্গাল, এখন তা ইটভাটার খোরাক। বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ইটভাটার মাটি জোগানো হচ্ছে ভীমের জাঙ্গাল নামে পরিচিত উঁচু টিলা কেটে। জায়গাটি ব্যক্তিমালিকানাধীন; তবে পুরাকীর্তি হওয়ায় এর ক্ষতিসাধন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ দুই মাস ধরে মাটিকাটা শ্রমিক নিয়োগ করে মালিক মহাশয় টিলাটি প্রায় সমান করে ফেললেন, কেউ বাধা দিল না।
এর দায় কার? ভীমের জাঙ্গাল আড়াই হাজার বছর পুরোনো উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন জনপদ পুণ্ড্রনগরের অংশ। সমতল থেকে ৩০-৩২ ফুট উঁচু এবং ৬০-৭০ ফুট চওড়া এই জাঙ্গাল বা বাঁধ সিরাজগঞ্জের সীমানা থেকে শুরু হয়ে বগুড়া শহরের মধ্য দিয়ে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট অবধি চলে গেছে। ব্রিটিশ আমলের ইংরেজ ঐতিহাসিক উইলিয়াম হান্টার একে ইতালির রিং ফোর্টগুলোর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। অনেকের কাছে এটি বঙ্গদেশীয় ‘চীনের প্রাচীর’। বলা হয়, বরেন্দ্র অঞ্চলের নিম্নবর্গীয় কৈবর্ত বিদ্রোহ জয়ী হলে নিম্নবর্গের কৈবর্ত রাজা ভীম প্রায় ৪০ মাইল দীর্ঘ এই জাঙ্গাল তৈরি করেছিলেন। কেবল ভীমের জাঙ্গালই নয়, সমগ্র পুণ্ড্রবর্ধনের অনেক প্রত্নসম্পদই যুগের পর যুগ ধরে লুটপাট ও অবহেলায় ধ্বংস হয়ে আসছে। নিজ ঐতিহ্যের প্রতি এমন বিরূপতা উন্নত দেশগুলোতে কল্পনাই করা যায় না।
গত রোববারের প্রথম আলোয় প্রকাশিত সচিত্র খবরে দেখা যায়, ভীমের জাঙ্গালের একটি অংশ কেটে সমান করা হচ্ছে। দুই মাস ধরে এই কাজ চললেও স্থানীয় প্রশাসন, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর—কারোরই টনক নড়েনি। অবশেষে প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নড়েচড়ে বসেছেন, কিন্তু জাঙ্গালটি রক্ষার স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কার্যত, ভীমের জাঙ্গালের বেশির ভাগই কেটে সমান করে চাষাবাদ, সড়ক, বাড়িঘর, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি বানানো হয়েছে। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধেও এই জাঙ্গালের একটি অংশ দখলের অভিযোগ রয়েছে। ব্যক্তিই বলি বা সংস্থাই বলি, এই মহামূল্যবান প্রত্নকীর্তির ধ্বংসসাধন সম্ভব হয়েছে মূলত সরকারি অবহেলায়।
আমরা সরকারের প্রত্নসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে আহ্বান জানাই, সমগ্র মহাস্থান অঞ্চল, যা ইউনেসকোর বৈশ্বিক ঐতিহ্যের অংশ, যা উপমহাদেশে বাংলার প্রাচীন গৌরবের প্রতীক, তা রক্ষায় মহাপরিকল্পনা হাতে নিন। ভীমের জাঙ্গালসহ অবশিষ্ট প্রত্নকীর্তি রক্ষায় কঠোর হোন, নইলে জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতি এমন অবমাননা ইতিহাস ক্ষমা করবে না।
গত রোববারের প্রথম আলোয় প্রকাশিত সচিত্র খবরে দেখা যায়, ভীমের জাঙ্গালের একটি অংশ কেটে সমান করা হচ্ছে। দুই মাস ধরে এই কাজ চললেও স্থানীয় প্রশাসন, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর—কারোরই টনক নড়েনি। অবশেষে প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নড়েচড়ে বসেছেন, কিন্তু জাঙ্গালটি রক্ষার স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কার্যত, ভীমের জাঙ্গালের বেশির ভাগই কেটে সমান করে চাষাবাদ, সড়ক, বাড়িঘর, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি বানানো হয়েছে। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধেও এই জাঙ্গালের একটি অংশ দখলের অভিযোগ রয়েছে। ব্যক্তিই বলি বা সংস্থাই বলি, এই মহামূল্যবান প্রত্নকীর্তির ধ্বংসসাধন সম্ভব হয়েছে মূলত সরকারি অবহেলায়।
আমরা সরকারের প্রত্নসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে আহ্বান জানাই, সমগ্র মহাস্থান অঞ্চল, যা ইউনেসকোর বৈশ্বিক ঐতিহ্যের অংশ, যা উপমহাদেশে বাংলার প্রাচীন গৌরবের প্রতীক, তা রক্ষায় মহাপরিকল্পনা হাতে নিন। ভীমের জাঙ্গালসহ অবশিষ্ট প্রত্নকীর্তি রক্ষায় কঠোর হোন, নইলে জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতি এমন অবমাননা ইতিহাস ক্ষমা করবে না।
No comments