মেলবোর্ন টেস্ট-প্রথম দিন দুই দলেরই


পিটার সিডল হেলমেটটা তখনো খোলেননি। ফলে মাথায় হাত বুলিয়ে চুল এলোমেলো করে দিয়ে অভিনন্দন জানানোর যে অস্ট্রেলীয় কেতা, সেটা ঠিক অনুসরণ করতে পারলেন না ব্র্যাড হাডিন। তবে কয়েকবার পিঠ চাপড়ে দিলেন সিডলের। নিশ্চয়ই এ কথা বলছিলেন, ‘বাহ্, দারুণ খেলেছো। কালকেও চালিয়ে যেতে হবে।’ দৃশ্যটা মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দিনের সমাপ্তি ঘোষণার পর। ২ উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে প্রথম সেশন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া একসময় ছিল


৩ উইকেটে ২০৫। আগের দিনের ঝড়বৃষ্টির পরও টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটিকে তখন বাহবা জানাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু একটা ঝড় যে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের জন্যও অপেক্ষা করছে, কে জানত!
সেই লর্ডস টেস্টের পর খেলতে নামা জহির খান পরপর দুই বলে তুলে নিলেন মাইকেল ক্লার্ক আর মাইক হাসিকে। দুই ওভার পর ফিরে গেলেন অভিষেকে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে ষাটের একটা ইনিংস খেলা এড কাওয়ানও। ১৮ বল আর ৯ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া হঠাৎ করেই ৬ উইকেটে ২১৪।
নিঃসঙ্গ হয়ে পড়া হাডিনের জন্য লড়াইয়ের সঙ্গী হিসেবে বাকিদের মধ্যে সবচেয়ে ‘যোগ্য’ ছিলেন সিডল। যোগ্য এই অর্থে, প্রথম শ্রেণীর ক্যারিয়ারে তাঁর ব্যাটিং গড়ই ১৫.৫০, বাকিদের আরও দৈন্যদশা। সেই সিডলই উল্টো ‘ঢেকে’ রাখলেন হাডিনকে, খেললেন হাডিনের চেয়েও বেশি বল। দিনশেষে হাডিনের চেয়ে তাঁর রান বেশি। অস্ট্রেলিয়া আজ কদ্দুর যাবে, সেটা অনেকটাই নির্ভর করছিল ৬৩ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করা জুটিটার ওপর।
অস্ট্রেলিয়ার দিক থেকে এই টেস্টে চোখ ছিল তিনজনের ওপর—কাওয়ান, পন্টিং আর হাসি। অভিষিক্ত কাওয়ান ‘বড় দৈর্ঘ্যে’র ম্যাচে টানা পঞ্চম সেঞ্চুরিটি না পেলেও নিজেকে চিনিয়ে দিয়েছেন। অবশ্য অশ্বিনের বলে ভারতীয়দের আবেদনে আম্পায়ার কট বিহাইন্ড ঘোষণা দেওয়ার পর যেভাবে মাথা নেড়েছেন, বোঝা গেছে, সিদ্ধান্তটি পছন্দ হয়নি ২৯ বছর বয়সী এই বাঁহাতি ওপেনারের।
অবশ্য এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নয়, অস্ট্রেলীয়দের আপত্তি হাসির আউট নিয়ে। রিপ্লেতে দেখা গেছে, বল তাঁর ব্যাটে নয়, লেগেছিল জামার হাতায়। কিন্তু আম্পায়ার আঙুল তুলে দিয়েছেন। তাঁর আউটের কারণে মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দিনেই আলোচনায় চলে এল ডিআরএস নিয়ে ভারতীয়দের আপত্তির যৌক্তিকতা।
পন্টিং কিন্তু ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে ভালোমতোই বেরিয়ে এসেছেন। স্কোরবোর্ডে ‘৪৬’ থাকতেই ডেভিড ওয়ার্নার আর শন মার্শকে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এখান থেকেই কাওয়ানকে নিয়ে ১১৩ রানের জুটি গড়েন পন্টিং। শুরুতে একটু অস্বচ্ছন্দ মনে হলেও দ্রুতই ছন্দ ফিরে পেয়েছেন। ফিফটি যেমন এসেছে ৬৭ বলে। কিন্তু সেঞ্চুরির জন্য পন্টিংয়ের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে দেননি ভারতীয় তরুণ পেসার উমেশ যাদব। ৩ উইকেট নিয়ে কাল ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফলও ছিলেন তিনি। ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.