সম্ভাব্য পদ্মা সেতুর পথ ধরে-যোগাযোগ by নির্মল সেন
কোটালীপাড়া থেকে পয়সার হাট হয়ে আগৈলঝাড়া-গৌরনদী দিয়ে বরিশাল যাওয়া যায়। আবার কোটালীপাড়া থেকে পয়সার হাট হয়ে আগৈলঝাড়া-গৌরনদী দিয়ে ঢাকা যাওয়া যায়। এই সড়কের পয়সার হাট খালের ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এ এলাকার জনগণের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। সড়কের অবস্থাও বেহাল। সড়কটির কাজ শেষ হলে এ জনপদের দরিদ্র জনগণ সহজেই স্বল্প সময়ের মধ্যে বরিশাল মেডিকেল কলেজে গিয়ে
চিকিৎসাসেবা পেত। এদিকে কোটালীপাড়ার মাঝবাড়ি থেকে টুঙ্গিপাড়ার বালাডাঙ্গা পর্যন্ত সড়কটির উন্নয়ন কাজ হচ্ছে বলে শুনেছি। কিন্তু কাজ চলছে ঢিমেতালে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে বলছি, আপনাকে আমি চিনি ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে। এককালে আমিও ছাত্রলীগ করতাম। আপনি যোগাযোগমন্ত্রী হয়েছেন শুনে খুশি হয়েছি। আপনি যোগাযোগমন্ত্রী হয়ে প্রথমেই বলেছেন, পদ্মা সেতুর কাজ আপনি অন্তত শুরু করে যাবেন। আপনি ইতিমধ্যে যমুনা সেতু ও গোমতী-মেঘনা সেতু পরিদর্শন করেছেন। সেখানকার ভুলত্রুটি লক্ষ্য করেছেন। সব পক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তাই সে আশা নিয়ে আপনার কাছে একটি বিষয় তুলে ধরব। আপনি হয়তো জানেন আমার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায়। ঢাকা থেকে আমার বাড়ি আসতে হলে পদ্মা পাড়ি দিয়ে আসতে হয়। কোটালীপাড়া থেকে ঢাকা যাওয়ার দুটি পথ আছে। একটি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া হয়ে ঢাকা। অন্যটি মাওয়া-কাওড়াকান্দি হয়ে ঢাকা। আজকাল এ দুটি পথই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়ই কুয়াশার জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। সে ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু নির্মাণ একান্ত জরুরি। এ কথা আপনিও বলেছেন। কোটালীপাড়ার অধিকাংশ মানুষ কাওড়াকান্দি-মাওয়া দিয়ে ঢাকা যাওয়া-আসা করে। ঢাকা থেকে মাওয়া এসে ফেরি বা লঞ্চে পদ্মা পাড়ি দিয়ে কাওড়াকান্দি থেকে ভাঙ্গা এসে দুটি পথে কোটালীপাড়ায় আসা যায়। একটি মুকসুদপুর হয়ে ভাটিয়াপাড়া দিয়ে গোপালগঞ্জ হয়ে কোটালীপাড়া। আবার ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাট হয়ে রাজৈর দিয়ে কোটালীপাড়ায় আসা যায়। রাজৈর-কোটালীপাড়া সড়ক সম্পর্কে আমি হাজারবার লিখেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। চারদলীয় জোটের যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেছিলেন, 'এটা শেখ হাসিনার এলাকা। শেখ হাসিনার আমলে অনেক কাজ হয়েছে। আমি তার এলাকার জন্য কিছু করব না।' এমনকি চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এ এলাকায় অনেক ঠিকাদার কাজ করেও পাওনা টাকা-পয়সা পাননি বলে শুনেছি। ফলে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এ এলাকায় কোনো সড়কেই তেমন সংস্কার কাজ হয়নি। রাজৈর-কোটালীপাড়া ২৮ কিলোমিটার সড়কটি দুর্গম থাকার কারণে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ সড়কের গাইন্দাশুর হয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ঘুরে কোটালীপাড়ায় আসা যায়। এই রাস্তাটি সরু থাকার কারণে মুকসুদপুর-ভাটিয়াপাড়া-গোপালগঞ্জ হয়ে আমাদের কোটালীপাড়ায় আসতে হয়। গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কটিও দুর্গম। এ সড়কটির উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে প্রায় দু'বছর আগে। এখন পর্যন্ত সড়কটির ২৫ শতাংশ কাজও সমাপ্ত হয়নি। এ হচ্ছে কোটালীপাড়ার অবস্থা। কোটালীপাড়া যেন একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। কোনো পথেই সহজভাবে কোটালীপাড়া যাওয়ার উপায় নেই।
অন্যদিকে কোটালীপাড়ার পূর্বে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা। কোটালীপাড়া থেকে পয়সার হাট হয়ে আগৈলঝাড়া-গৌরনদী দিয়ে বরিশাল যাওয়া যায়। আবার কোটালীপাড়া থেকে পয়সার হাট হয়ে আগৈলঝাড়া-গৌরনদী দিয়ে ঢাকা যাওয়া যায়। এই সড়কের পয়সার হাট খালের ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এ এলাকার জনগণের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। সড়কের অবস্থাও বেহাল। সড়কটির কাজ শেষ হলে এ জনপদের দরিদ্র জনগণ সহজেই স্বল্প সময়ের মধ্যে বরিশাল মেডিকেল কলেজে গিয়ে চিকিৎসাসেবা পেত। এদিকে কোটালীপাড়ার মাঝবাড়ি থেকে টুঙ্গিপাড়ার বালাডাঙ্গা পর্যন্ত সড়কটির উন্নয়ন কাজ হচ্ছে বলে শুনেছি। কিন্তু কাজ চলছে ঢিমেতালে। কাজ কবে শেষ হবে তা কেউ বলতে পারে না। অথচ সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছিলেন, টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত রেললাইন দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। যেখানে কোটালীপাড়া যাওয়ার সড়ক নেই সেখানে কী করে সাবেক মন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় রেললাইন দেওয়ার কথা বলেন? আমার কথা হচ্ছে, রাজৈর-কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ- কোটালীপাড়া, গৌরনদী-কোটালীপাড়া সড়ক ঠিক হলে এ এলাকার জনগণ সহজেই ঢাকা, খুলনা, বরিশাল যেতে পারবে। এ এলাকার জনগণ যাতায়াতের সুবিধা পেলে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে।
মাননীয় যোগাযোগমন্ত্রী আপনি দয়া করে একবার আমার এলাকায় আসুন। আমার এলাকার রাস্তাঘাটগুলো ঘুরে দেখে যান। আমি আপনাকে কোটালীপাড়ায় আসার জন্য অনুরোধ করছি। আপনি দেখবেন এই বিখ্যাত পরগনার কী অবস্থা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নিহার রায় বাংলাদেশের ইতিহাস বইয়ে লিখেছিলেন, কোটালীপাড়া ষষ্ঠ শতকে পশ্চিমের স্থলবন্দর ছিল। কোটালীপাড়া কবি সুকান্তের পৈতৃক নিবাস। কোটালীপাড়ায় জন্মেছিলেন কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক চপলা কান্ত ভট্টাচার্য। আর আমার কাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ও হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার সম্পাদক ড. ধীরেন সেন। এসব মহান ব্যক্তির স্মৃতিবিজড়িত এই কোটালীপাড়ার জনগণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে আছে। আপনি এ এলাকার জনগণের জন্য কিছু করুন।
নির্মল সেন :সাংবাদিক, কলাম লেখক, রাজনীতিক
nirmolsen1930@gmail.com
অন্যদিকে কোটালীপাড়ার পূর্বে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা। কোটালীপাড়া থেকে পয়সার হাট হয়ে আগৈলঝাড়া-গৌরনদী দিয়ে বরিশাল যাওয়া যায়। আবার কোটালীপাড়া থেকে পয়সার হাট হয়ে আগৈলঝাড়া-গৌরনদী দিয়ে ঢাকা যাওয়া যায়। এই সড়কের পয়সার হাট খালের ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এ এলাকার জনগণের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। সড়কের অবস্থাও বেহাল। সড়কটির কাজ শেষ হলে এ জনপদের দরিদ্র জনগণ সহজেই স্বল্প সময়ের মধ্যে বরিশাল মেডিকেল কলেজে গিয়ে চিকিৎসাসেবা পেত। এদিকে কোটালীপাড়ার মাঝবাড়ি থেকে টুঙ্গিপাড়ার বালাডাঙ্গা পর্যন্ত সড়কটির উন্নয়ন কাজ হচ্ছে বলে শুনেছি। কিন্তু কাজ চলছে ঢিমেতালে। কাজ কবে শেষ হবে তা কেউ বলতে পারে না। অথচ সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছিলেন, টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত রেললাইন দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। যেখানে কোটালীপাড়া যাওয়ার সড়ক নেই সেখানে কী করে সাবেক মন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় রেললাইন দেওয়ার কথা বলেন? আমার কথা হচ্ছে, রাজৈর-কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ- কোটালীপাড়া, গৌরনদী-কোটালীপাড়া সড়ক ঠিক হলে এ এলাকার জনগণ সহজেই ঢাকা, খুলনা, বরিশাল যেতে পারবে। এ এলাকার জনগণ যাতায়াতের সুবিধা পেলে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে।
মাননীয় যোগাযোগমন্ত্রী আপনি দয়া করে একবার আমার এলাকায় আসুন। আমার এলাকার রাস্তাঘাটগুলো ঘুরে দেখে যান। আমি আপনাকে কোটালীপাড়ায় আসার জন্য অনুরোধ করছি। আপনি দেখবেন এই বিখ্যাত পরগনার কী অবস্থা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নিহার রায় বাংলাদেশের ইতিহাস বইয়ে লিখেছিলেন, কোটালীপাড়া ষষ্ঠ শতকে পশ্চিমের স্থলবন্দর ছিল। কোটালীপাড়া কবি সুকান্তের পৈতৃক নিবাস। কোটালীপাড়ায় জন্মেছিলেন কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক চপলা কান্ত ভট্টাচার্য। আর আমার কাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ও হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার সম্পাদক ড. ধীরেন সেন। এসব মহান ব্যক্তির স্মৃতিবিজড়িত এই কোটালীপাড়ার জনগণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে আছে। আপনি এ এলাকার জনগণের জন্য কিছু করুন।
নির্মল সেন :সাংবাদিক, কলাম লেখক, রাজনীতিক
nirmolsen1930@gmail.com
No comments