আরব লিগের ৫০ পর্যবেক্ষক সিরিয়ায়, সহিংসতা অব্যাহত
আরব লিগের ৫০ সদস্যদের একটি পর্যবেক্ষক দল গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে পৌঁছেছে। চলমান সহিংসতা বন্ধে আরব লিগের যে পরিকল্পনায় সিরিয়া সই করেছে, তা বাস্তবায়নে সরকারের আন্তরিকতা যাচাই করবেন পর্যবেক্ষকেরা। জাতিসংঘ জানিয়েছে, সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে গত মার্চে শুরু হওয়া বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে, পর্যবেক্ষক দলের আগমনের আগ মুহূর্তে
সরকারবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হোমসে গতকাল সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, মিসরের রাজধানী কায়রোর আরব লিগ সচিবালয় থেকে প্রথম দফায় ৫০ সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল ও ১০ জন কর্মকর্তা দামেস্কে পৌঁছান। পর্যবেক্ষকদের নয় সদস্যের একটি অগ্রবর্তী দল গত বৃহস্পতিবার সিরিয়ায় পৌঁছে।
সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া, বেসামরিক লোকের ওপর সহিংসতা বন্ধ করা এবং বন্দীদের মুক্তি দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে আরব লিগ। এ-সংক্রান্ত একটি আরব পরিকল্পনায় সইও করেছে সিরিয়া। পর্যবেক্ষক দলটি এখন সিরিয়া সরকারের আরব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি মূল্যায়ন করবে।
দামেস্ক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা পর্যবেক্ষক দলকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেবে। তবে দলটিকে আসাদ সরকারের দেওয়া নিরাপত্তার ওপর নির্ভর করতে হবে।
এদিকে আসাদবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংগঠন সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল (এসএনসি) পর্যবেক্ষকেরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
সিরিয়ায় আরব লিগের ২০০ পর্যবেক্ষক পর্যায়ক্রমে যাওয়ার কথা। তাঁরা সেখানে সরকার ও বিরোধী পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সিরিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়ালেম আশা করছেন, পর্যবেক্ষকেরা সরকারের দাবির প্রতি সমর্থন করবেন। সিরিয়া সরকার দাবি করে আসছে, সহিংসতার জন্য ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী’রা দায়ী। সরকার এসব সন্ত্রাসী দমনে অভিযান চালাচ্ছে।
মানবাধিকার কর্মীরা জানান, হোমসে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ ও গোলা নিক্ষেপে ৩০ জন নিহত হয়েছে। তবে সিরিয়ায় বিদেশি গণমাধ্যমের ওপর কাড়াকাড়ি থাকায় এ তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
বিরোধী একটি গোষ্ঠী জানিয়েছে, পর্যবেক্ষক দলের একটি অংশ আজ মঙ্গলবার হোমস শহরে গেছে। তবে সেখানে তাদেরকে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হয়েছে।
লন্ডনভিত্তিক সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, গতকাল সোমবার হোমসের বাবা আমর জেলায় সরকারবিরোধীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া হোমস শহরের মধ্যে এক নারীসহ আরও ১২ জন নিহত হয়। মানবাধিকার কর্মীরা জানান, গত কয়েক দিনে হোমসে মোটর শেল ও মেশিন গানের গুলিতে বেশ কিছু মানুষ নিহত হয়েছে।
এক বাসিন্দা টেলিফোনে বিবিসিকে জানান, হোমসের চারপাশে সরকারি বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। আরেক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, দুই পক্ষ থেকেই সহিংসতা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি গত কয়েক দিনে অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত সেনাদের নিয়ে যেতে দেখেছি।’
No comments