১৪ দিনের জেল হেফাজতে সালাহউদ্দিন
ভারতের
মেঘালয়ের শিলং পুলিশের কাছে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণকারী বিএনপির যুগ্ম
মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। তাকে
১৪ দিন বিচারিক হেফাজতে রাখার নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিত্রে কারাগারে পাঠানো
হয়েছে। গত ১১ই মে গ্রেপ্তার হওয়ার পর এই প্রথম শিলংয়ের মুখ্য বিচারিক
হাকিমের আদালতে হাজির করা হলো সালাহউদ্দিনকে। সালাহউদ্দিনের পারিবারিক
সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সময় বেলা আড়াইটায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে
সালাহউদ্দিনকে শিলংয়ের আদালতে নেয়া হয়। ওই সময় তার পরনে ছিল সাদা
পায়জামা-পাঞ্জাবি। পাঞ্জাবির ওপরে একটি খাকি কালারের কটি। ছিল নিশ্ছিদ্র
নিরাপত্তাব্যবস্থা। আদালতে ওঠার দিনে সালাহউদ্দিনকে রিমান্ড চায়নি মেঘালয়
পুলিশ। এমনকি নিম্ন আদালতের বিচারক কে এম এল নংব্রির আদালতে এ মামলার
শুনানির সময় সরকারপক্ষের কোন পাবলিক প্রসিকিউটর উপস্থিত ছিলেন না। আদালত
সালাহউদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিতে পুলিশকে
নির্দেশ দেন। জানতে চাইলে শিলং পুলিশের এসপি (সিটি পুলিশ) বিবেক সিয়াম
বলেন, সালাহউদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আদালত তাকে ১৪ দিনের বিচারিক
হেফাজতে পাঠিয়েছেন। এ কারণে তাকে শিলং কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আজ বা কাল মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতের রায়ের
কপি সংগ্রহ করে জেলা জজ আদালতে জামিনের আবেদন জানানো হবে। এর আগে গত
মঙ্গলবার মেঘালয়ের নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব
হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল সায়েন্সেস (নেগ্রিমস) থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব
সালাহউদ্দিন আহমেদকে ছাড়পত্র দেয়ার পর থানাহাজতে নেয় শিলং পুলিশ। ১১ই মে
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবকে অনুপ্রবেশের দায়ে আটকের পর প্রথমবারের মতো তাকে
পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়। এর আগে পুলিশি পাহারায় তিনি শিলংয়ের মানসিক
হাসপাতাল, সিভিল হাসপাতাল ও নেগ্রিমসে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এদিকে বিনা
পাসপোর্টে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে শিলংয়ের পুলিশ সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে
‘ফরেনার্স অ্যাক্ট-৪৬’-এ মামলা করেছে। এর আগে নিখোঁজ হওয়ার দুই মাস পর ১১ই
মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের গলফ লিংক এলাকায় উদ্ধার হন
সালাহউদ্দিন। ওই এলাকার লোকজন মারফত সালাহউদ্দিন পুলিশকে খবর দেন। এরপর
পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে পাস্তুর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। এরপর শিলং সদর
পুলিশ থানা থেকে নেয়া হয় মানসিক হাসপাতাল মিমহানসে। একদিন পর মিমহানস থেকে
আবার তাকে পাঠানো হয় সিভিল হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের আন্ডার প্রিজনার সেলে
(ইউটিপি) তাকে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। সিভিল হাসপাতালে বিশেষায়িত
চিকিৎসাব্যবস্থা না থাকায় তাকে নেগ্রিমসে এক সপ্তাহ ধরে নিবিড় পরিচর্যা
কেন্দ্রে রাখা হয়। ওই হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চলছিল। গত ২০শে মে সিভিল
হাসপাতাল থেকে সালাহউদ্দিনকে স্থানান্তরিত করা হয় নেগ্রিমসে। নেগ্রিমস থেকে
পুলিশ হেফাজতে নেয়ার পর গতকাল তাকে আদালতে তোলা হয়। আদালতের নির্দেশের
ভিত্তিতে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সালাহউদ্দিনের পরিবারের এক
সদস্য জানালেন, আইনিভাবে মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ কারণে জামিন
চেয়ে দু-একদিনের মধ্যে তাকে জেলা জজ আদালতে হাজির করা হবে।
No comments