৮ দেশে বাংলাদেশী ১৫ গডফাদার by নুরুজ্জামান লাবু
থাইল্যান্ড,
মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াসহ আটটি দেশে বসে মানব পাচার নিয়ন্ত্রণ করছে ১৫
গডফাদার। গডফাদাররা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। মানব পাচার করে অঢেল সম্পদ
গড়েছে তারা। থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় তাদের প্রত্যেকেরই বাড়ি-গাড়ি ও
ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। মানব পাচারের ১৫ গডফাদারকে চিহ্নিত করেছে পুলিশের
অপরাধ তদন্ত সংস্থা- সিআইডি। চিহ্নিত এসব গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইনগত
ব্যবস্থা নেয়ার কৌশল নির্ধারণ ও মানব পাচার বন্ধের জন্য আগামী ২ ও ৩রা জুন
ঢাকায় ৮ দেশের পুলিশ প্রতিনিধিদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে
প্রত্যেক দেশের মানব পাচারের গডফাদারদের তালিকা পর্যালোচনা ও তথ্য বিনিময়
করা হবে। সিআইডি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে মানব পাচার এখন ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে মানবপাচার করা হলেও ‘দেশেরই লাভ’ বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকতো। কিন্তু সম্প্রতি সাগরের মাঝখানে এবং থাইল্যান্ড ও মালোশিয়ার জঙ্গলে বিদেশ গমনেচ্ছুদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, গণকবরে বাংলাদেশীদের লাশ পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন এজেন্টদের গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মূল গডফাদারদের একটি তালিকা তৈরি করে সিআইডি। তালিকার তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যেক গডফাদারেরই থাইল্যান্ডে বাড়ি-গাড়ি রয়েছে। তাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে ৮-১০টি করে পাসপোর্ট। তারা একেক পাসপোর্টে একেক দেশে ঘুরে বেড়ায়। বিদেশে বিলাসী জীবন কাটায় এসব সিন্ডিকেটের গডফাদারেরা। ১৫টি সিন্ডিকেটের গ্যাং লিডারদের পরিচয়, বিদেশে অবস্থানের ঠিকানা ও তাদের সহযোগিতাকারীদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। সূত্র জানায়, প্রত্যেক গডফাদারেরই দেশীয় শতাধিক এজেন্ট রয়েছে। এসব এজেন্টের মাধ্যমেই অবৈধভাবে মানব পাচার করে তারা।
সূত্র জানায়, মানব পাচারের এসব গডফাদারদের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক ‘রাঘববোয়ালদের’ সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি এই চক্রে এমপি থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও জড়িত রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মির্জা আব্দুল্লাহেল বাকি বলেন, বিদেশে অবস্থানরত কয়েকটি সিন্ডিকেটের মূলহোতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, খুব শিগগির বাংলাদেশ থেকে মানব পাচার পুরোপুরি রোধ করা যাবে। এর সঙ্গে যত বড় রাঘববোয়লাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, মানব পাচারে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখানোর উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, মানব পাচারকারীরা যে ৮টি দেশে তাদের জাল বিস্তার করেছে তা হলো থাইল্যান্ড, মালোয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, কম্বোডিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন ও মিয়ানমার। এসব দেশের স্থানীয় গডফাদার ও এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বাংলাদেশী মানব পাচারকারী গডফাদারদের। সিআইডি সূত্র জানায়, এ কারণে এই আটটি দেশের পুলিশ প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে। যাতে প্রত্যেক দেশের মানব পাচারকারী গডফাদারদের তালিকা ও তথ্য পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়। মানব পাচার প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করেন এমন একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছে, বাংলাদেশে ইমিগ্রেশন পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য ও কক্সবাজারের স্থানীয় একজন এমপিও এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিষয়েও বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।
সিআইডি সূত্র জানায়, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ১৫ই মে পর্যন্ত সারা দেশে মানব পাচারের ঘটনায় ২৩৪টি মামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় ৬০০ জন ভিকটিম হয়েছেন। এর বাইরে ৪৯৬ জন ভিকটিমকে বিভিন্ন কৌশলে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব মামলায় ৯৮৫ জন মানব পাচারকারীকে আসামি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন ৩৪০ জন। বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারকৃত মানব পাচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, দেশে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই একজন এজেন্ট মাত্র। এরা কেউ মূলহোতা বা গডফাদার নয়। গডফাদারেরা সবাই বাইরে অবস্থান করছে। এজেন্টরা গডফাদারদের হয়ে কাজ করে থাকে। বিদেশে অবস্থান করায় গডফাদাররা সবাই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। এ কারণেই মানব পাচারকারীদের এসব গডফাদারদের ধরতেই ৮ দেশের পুলিশ প্রতিনিধি নিয়ে বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী গডফাদারদের মধ্যে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের শাজাহান, জহরবারুতে অবস্থানকারী সেলিম, শরীফ, পেনাংয়ে অবস্থানকারী জাফর, দক্ষিণ থাইল্যান্ডে অবস্থানকারী ওসমান, আনোয়ার, সায়্যাদুল হক, আজিমুল্লাহ, আমিন, হাশিম, আবদুল হাফিজ, হামিদ উল্লেখযোগ্য।
মানব পাচারকারী চক্রের ৬ সদস্য আটক: রাজধানীর মালিবাগ থেকে মানব পাচারকারী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩। তাদের কাছ থেকে ৪ জন ভিকটিম ও এক হাজার পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাব সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল মালিবাগ ডিআইটি রোডের মাহবুব ট্র্যাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস নামে একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে মানব পাচার এখন ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে মানবপাচার করা হলেও ‘দেশেরই লাভ’ বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকতো। কিন্তু সম্প্রতি সাগরের মাঝখানে এবং থাইল্যান্ড ও মালোশিয়ার জঙ্গলে বিদেশ গমনেচ্ছুদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, গণকবরে বাংলাদেশীদের লাশ পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন এজেন্টদের গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মূল গডফাদারদের একটি তালিকা তৈরি করে সিআইডি। তালিকার তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যেক গডফাদারেরই থাইল্যান্ডে বাড়ি-গাড়ি রয়েছে। তাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে ৮-১০টি করে পাসপোর্ট। তারা একেক পাসপোর্টে একেক দেশে ঘুরে বেড়ায়। বিদেশে বিলাসী জীবন কাটায় এসব সিন্ডিকেটের গডফাদারেরা। ১৫টি সিন্ডিকেটের গ্যাং লিডারদের পরিচয়, বিদেশে অবস্থানের ঠিকানা ও তাদের সহযোগিতাকারীদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। সূত্র জানায়, প্রত্যেক গডফাদারেরই দেশীয় শতাধিক এজেন্ট রয়েছে। এসব এজেন্টের মাধ্যমেই অবৈধভাবে মানব পাচার করে তারা।
সূত্র জানায়, মানব পাচারের এসব গডফাদারদের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক ‘রাঘববোয়ালদের’ সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি এই চক্রে এমপি থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও জড়িত রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মির্জা আব্দুল্লাহেল বাকি বলেন, বিদেশে অবস্থানরত কয়েকটি সিন্ডিকেটের মূলহোতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, খুব শিগগির বাংলাদেশ থেকে মানব পাচার পুরোপুরি রোধ করা যাবে। এর সঙ্গে যত বড় রাঘববোয়লাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, মানব পাচারে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখানোর উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, মানব পাচারকারীরা যে ৮টি দেশে তাদের জাল বিস্তার করেছে তা হলো থাইল্যান্ড, মালোয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, কম্বোডিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন ও মিয়ানমার। এসব দেশের স্থানীয় গডফাদার ও এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বাংলাদেশী মানব পাচারকারী গডফাদারদের। সিআইডি সূত্র জানায়, এ কারণে এই আটটি দেশের পুলিশ প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে। যাতে প্রত্যেক দেশের মানব পাচারকারী গডফাদারদের তালিকা ও তথ্য পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়। মানব পাচার প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করেন এমন একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছে, বাংলাদেশে ইমিগ্রেশন পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য ও কক্সবাজারের স্থানীয় একজন এমপিও এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিষয়েও বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।
সিআইডি সূত্র জানায়, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ১৫ই মে পর্যন্ত সারা দেশে মানব পাচারের ঘটনায় ২৩৪টি মামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় ৬০০ জন ভিকটিম হয়েছেন। এর বাইরে ৪৯৬ জন ভিকটিমকে বিভিন্ন কৌশলে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব মামলায় ৯৮৫ জন মানব পাচারকারীকে আসামি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন ৩৪০ জন। বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারকৃত মানব পাচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, দেশে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই একজন এজেন্ট মাত্র। এরা কেউ মূলহোতা বা গডফাদার নয়। গডফাদারেরা সবাই বাইরে অবস্থান করছে। এজেন্টরা গডফাদারদের হয়ে কাজ করে থাকে। বিদেশে অবস্থান করায় গডফাদাররা সবাই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। এ কারণেই মানব পাচারকারীদের এসব গডফাদারদের ধরতেই ৮ দেশের পুলিশ প্রতিনিধি নিয়ে বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী গডফাদারদের মধ্যে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের শাজাহান, জহরবারুতে অবস্থানকারী সেলিম, শরীফ, পেনাংয়ে অবস্থানকারী জাফর, দক্ষিণ থাইল্যান্ডে অবস্থানকারী ওসমান, আনোয়ার, সায়্যাদুল হক, আজিমুল্লাহ, আমিন, হাশিম, আবদুল হাফিজ, হামিদ উল্লেখযোগ্য।
মানব পাচারকারী চক্রের ৬ সদস্য আটক: রাজধানীর মালিবাগ থেকে মানব পাচারকারী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩। তাদের কাছ থেকে ৪ জন ভিকটিম ও এক হাজার পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাব সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল মালিবাগ ডিআইটি রোডের মাহবুব ট্র্যাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস নামে একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়।
No comments