ব্যবসায় রাজনীতি আনা উচিত নয়
ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে রাজনীতি আনা উচিত নয়। রাজনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য আলাদাভাবে রাখা দরকার। রাজনীতির ভূমিকা হবে ব্যবসা-বাণিজ্যকে সহায়তা করা। এ জন্য সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
গতকাল রোববার বেশ কয়েকজন বক্তা এসব কথা বলেন। বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা থেকে পুনরুদ্ধার নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে রাজনীতির প্রসঙ্গটি বারবার উঠে আসে। এ সময় আরও বলা হয়, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন করা না গেলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না। রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধার: এশীয় পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক দুই দিনের সম্মেলন গতকাল শেষ হয়েছে।
সম্মেলনে একটি অধিবেশনের বিষয় ছিল ‘এশীয় প্রবৃদ্ধি: বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জসমূহ’। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে রাজনীতি প্রভাব ফেলে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাজনৈতিক সক্ষমতা ও সুশাসন একটি বড় বিষয়। এই দুটি বিষয় ভালোভাবে মোকাবিলা করতে না পারলে অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। উচ্চতর প্রবৃদ্ধির জন্য অর্থনীতিকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত রাখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আলী তসলিম বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে রাজনীতি থাকা ঠিক নয়। আবার রাজনীতির মধ্যেও ব্যবসা-বাণিজ্য থাকা উচিত নয়। দুঃখজনকভাবে, এশিয়ার অনেক দেশেই এটা ঘটছে। বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক দেশে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। অর্থনীতি ও রাজনীতিকে আলাদা করে রাখা উচিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সক্ষমতা অনুযায়ী বাংলাদেশে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন না করার পেছনে অন্যতম কারণ হলো পর্যাপ্ত আইনি নিয়ন্ত্রণের ঘাটতি।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সাবেক মহাপরিচালক সুলতান হাফিজুর রহমানও মনে করেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সুসম্পর্ক বাড়াতে হবে। যেকোনো সমস্যা আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করেই সমাধান করা উচিত।
গতকাল সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনেও রাজনীতি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ‘বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার: সমসাময়িক বাস্তবতা’ শীর্ষক এই অধিবেশনে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘বিশ্ব আর্থিক সংকট দেখা দেওয়ার নেপথ্যে ছিল মুক্তবাজারের নামে যাবতীয় নিয়ন্ত্রণবিধি তুলে নেওয়া। সে সময় বলা হয়েছিল, সরকার মানেই সমস্যা। বাস্তবতা হলো, সরকার নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকা পালন করবে, আমরাও সেটা চাই।’
মাহ্ফুজ আনাম আরও বলেন, ‘আমরা চাই আইনগতভাবে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধি, বৈধ কার্যকর তদারকি সংস্থা, স্বাধীন বিচার বিভাগ, সক্রিয় সুশীল সমাজ। আমরা চাই যেন জবাবদিহিমূলক একটি ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠিত হয়। এ রকম সমাজ গঠন করা না গেলে উন্নয়ন টেকসই হবে না।’
সম্মেলনের শেষ অধিবেশনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনেও এশীয় দেশগুলোর টেকসই উন্নয়নে সুশাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারকে গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিনিয়োগ, আঞ্চলিক সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিবেশ রক্ষার চ্যালেঞ্জ, আর্থিক খাতে পারস্পরিক নিবিড় যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বিশ্ববাণিজ্য ও বাংলাদেশ: সম্মেলনে বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি ও এশিয়া ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা হয়। বিশ্বমন্দার কারণে এশীয় দেশগুলো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে বলে মনে করেন এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। এ চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম—রপ্তানির শ্লথ গতি, বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনা ও আয়বৈষম্য কমানো। এ ছাড়া উন্নত দেশগুলোর আরোপিত বাণিজ্য বিধিনিষেধও এশীয় দেশগুলোর অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, এশিয়ায় তিন ধরনের অর্থনীতির দেশ আছে। জাপান, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উজ্জ্বল অর্থনীতির দেশ রয়েছে। চীন ও ভারতের মতো উৎফুল্ল অর্থনীতির দেশও আছে। আবার বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো বিউগলের করুণ সুরের মতো অর্থনীতির দেশও আছে। বিশ্বমন্দার কারণে উজ্জ্বল ও উৎফুল্ল অর্থনীতির দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগের ওপর প্রভাব পড়েছে। এই ধরনের দেশ কীভাবে তাদের অর্থনীতি চাঙা করে, সেটাই দেখার বিষয়।
বিশ্বমন্দার সময় এশীয় দেশগুলো, বিশেষ করে ভারত ও চীন তুলনামূলক ভালো করেছে বলে মনে করেন দেবপ্রিয়। তাঁর মতে, মূলত ‘চীন্ডিয়া’ই (চীন ও ভারত) এশীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তি। আঞ্চলিক বাণিজ্য, বিশেষ করে বিমূঢ় দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার তাগিদ দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
হোসেন জিল্লুর রহমান মনে করেন, যেকোনো অর্থনীতি তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসা মানেই হলো ওই অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা রয়েছে। বিশ্বমন্দার পর এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতিও পুনরুদ্ধার হচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দিয়ে অ্যামচেম সভাপতি আফতাব-উল ইসলাম বলেন, নেপালের ৮০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ জ্বালানি ব্যবহার করে ঘাটতি মেটাতে পারে।
তৈরি পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন কারখানা ভবন পরিদর্শন করছেন বিদেশি ক্রেতারা। এখন অন্য তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশের কারখানা ভবনও তাদের পরিদর্শন করা উচিত। অন্যথায় বাংলাদেশের প্রতিযোগসক্ষমতা তুলনামূলক কমে যাবে। তিনি জানান, সারা বিশ্বের ৪৫ হাজার কোটি ডলারের তৈরি পোশাকের বাজার রয়েছে। এ বাজারে বাংলাদেশের অংশীদারত্ব ৫ শতাংশের কম। যেহেতু বাংলাদেশ তুলনামূলক কম দামে পণ্য রপ্তানি করে, তাই এ বাজারে অংশীদারি বাড়ানোর বিশাল সুযোগ রয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমদ বলেন, মন্দার পর বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতিতে বেশি স্থিতিশীলতা ছিল। আয় ও বাণিজ্যে এ অঞ্চলের অংশীদারি বাড়ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
গতকাল রোববার বেশ কয়েকজন বক্তা এসব কথা বলেন। বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা থেকে পুনরুদ্ধার নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে রাজনীতির প্রসঙ্গটি বারবার উঠে আসে। এ সময় আরও বলা হয়, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন করা না গেলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না। রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধার: এশীয় পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক দুই দিনের সম্মেলন গতকাল শেষ হয়েছে।
সম্মেলনে একটি অধিবেশনের বিষয় ছিল ‘এশীয় প্রবৃদ্ধি: বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জসমূহ’। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে রাজনীতি প্রভাব ফেলে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাজনৈতিক সক্ষমতা ও সুশাসন একটি বড় বিষয়। এই দুটি বিষয় ভালোভাবে মোকাবিলা করতে না পারলে অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। উচ্চতর প্রবৃদ্ধির জন্য অর্থনীতিকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত রাখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আলী তসলিম বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে রাজনীতি থাকা ঠিক নয়। আবার রাজনীতির মধ্যেও ব্যবসা-বাণিজ্য থাকা উচিত নয়। দুঃখজনকভাবে, এশিয়ার অনেক দেশেই এটা ঘটছে। বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক দেশে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। অর্থনীতি ও রাজনীতিকে আলাদা করে রাখা উচিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সক্ষমতা অনুযায়ী বাংলাদেশে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন না করার পেছনে অন্যতম কারণ হলো পর্যাপ্ত আইনি নিয়ন্ত্রণের ঘাটতি।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সাবেক মহাপরিচালক সুলতান হাফিজুর রহমানও মনে করেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সুসম্পর্ক বাড়াতে হবে। যেকোনো সমস্যা আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করেই সমাধান করা উচিত।
গতকাল সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনেও রাজনীতি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ‘বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার: সমসাময়িক বাস্তবতা’ শীর্ষক এই অধিবেশনে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘বিশ্ব আর্থিক সংকট দেখা দেওয়ার নেপথ্যে ছিল মুক্তবাজারের নামে যাবতীয় নিয়ন্ত্রণবিধি তুলে নেওয়া। সে সময় বলা হয়েছিল, সরকার মানেই সমস্যা। বাস্তবতা হলো, সরকার নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকা পালন করবে, আমরাও সেটা চাই।’
মাহ্ফুজ আনাম আরও বলেন, ‘আমরা চাই আইনগতভাবে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধি, বৈধ কার্যকর তদারকি সংস্থা, স্বাধীন বিচার বিভাগ, সক্রিয় সুশীল সমাজ। আমরা চাই যেন জবাবদিহিমূলক একটি ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠিত হয়। এ রকম সমাজ গঠন করা না গেলে উন্নয়ন টেকসই হবে না।’
সম্মেলনের শেষ অধিবেশনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনেও এশীয় দেশগুলোর টেকসই উন্নয়নে সুশাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারকে গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিনিয়োগ, আঞ্চলিক সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিবেশ রক্ষার চ্যালেঞ্জ, আর্থিক খাতে পারস্পরিক নিবিড় যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বিশ্ববাণিজ্য ও বাংলাদেশ: সম্মেলনে বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি ও এশিয়া ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা হয়। বিশ্বমন্দার কারণে এশীয় দেশগুলো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে বলে মনে করেন এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। এ চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম—রপ্তানির শ্লথ গতি, বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনা ও আয়বৈষম্য কমানো। এ ছাড়া উন্নত দেশগুলোর আরোপিত বাণিজ্য বিধিনিষেধও এশীয় দেশগুলোর অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, এশিয়ায় তিন ধরনের অর্থনীতির দেশ আছে। জাপান, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উজ্জ্বল অর্থনীতির দেশ রয়েছে। চীন ও ভারতের মতো উৎফুল্ল অর্থনীতির দেশও আছে। আবার বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো বিউগলের করুণ সুরের মতো অর্থনীতির দেশও আছে। বিশ্বমন্দার কারণে উজ্জ্বল ও উৎফুল্ল অর্থনীতির দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগের ওপর প্রভাব পড়েছে। এই ধরনের দেশ কীভাবে তাদের অর্থনীতি চাঙা করে, সেটাই দেখার বিষয়।
বিশ্বমন্দার সময় এশীয় দেশগুলো, বিশেষ করে ভারত ও চীন তুলনামূলক ভালো করেছে বলে মনে করেন দেবপ্রিয়। তাঁর মতে, মূলত ‘চীন্ডিয়া’ই (চীন ও ভারত) এশীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তি। আঞ্চলিক বাণিজ্য, বিশেষ করে বিমূঢ় দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার তাগিদ দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
হোসেন জিল্লুর রহমান মনে করেন, যেকোনো অর্থনীতি তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসা মানেই হলো ওই অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা রয়েছে। বিশ্বমন্দার পর এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতিও পুনরুদ্ধার হচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দিয়ে অ্যামচেম সভাপতি আফতাব-উল ইসলাম বলেন, নেপালের ৮০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ জ্বালানি ব্যবহার করে ঘাটতি মেটাতে পারে।
তৈরি পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন কারখানা ভবন পরিদর্শন করছেন বিদেশি ক্রেতারা। এখন অন্য তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশের কারখানা ভবনও তাদের পরিদর্শন করা উচিত। অন্যথায় বাংলাদেশের প্রতিযোগসক্ষমতা তুলনামূলক কমে যাবে। তিনি জানান, সারা বিশ্বের ৪৫ হাজার কোটি ডলারের তৈরি পোশাকের বাজার রয়েছে। এ বাজারে বাংলাদেশের অংশীদারত্ব ৫ শতাংশের কম। যেহেতু বাংলাদেশ তুলনামূলক কম দামে পণ্য রপ্তানি করে, তাই এ বাজারে অংশীদারি বাড়ানোর বিশাল সুযোগ রয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমদ বলেন, মন্দার পর বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতিতে বেশি স্থিতিশীলতা ছিল। আয় ও বাণিজ্যে এ অঞ্চলের অংশীদারি বাড়ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
No comments