যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের আফগান যুদ্ধ শেষ
আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাজ্য (ইউকে) তাদের সর্বশেষ সেনা ঘাঁটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর মাধ্যমে আফগানিস্তানে যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবিরোধী যৌথ সামরিক অভিযানের অবসান হল। বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্য তাদের লেদারনেক সামরিক ঘাঁটির কর্তৃত্ব আফগান সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছে। ব্রিটিশ কমব্যাট ট্র–পসের শেষ দুটি ইউনিট নিজ নিজ দেশে ফিরছে। আন্তর্জাতিক জোট বাহিনীর সামরিক মিশন শেষ হলেও নিরাপত্তার কারণে সেনাদের ফেরত যাওয়ার সময় প্রকাশ করা হয়নি। আফগানিস্তান থেকে জঙ্গিদের দমনের জন্য ২০০১ সাল থেকে দেশটিতে সামরিক বাহিনী দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে যুক্তরাজ্য। ২০০৬ সাল থেকে আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে দেশটি। আফগানিস্তানে মোট ১ লাখ ৪০ হাজার ব্রিটিশ সেনা কাজ করেছে। জঙ্গিদের দমন করতে গিয়ে ৪৫৩ জন ব্রিটিশ সেনা প্রাণ দিয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী এই যুদ্ধে ব্রিটেনের মোট খরচ ১৯ বিলিয়ন পাউন্ড। শনিবার যুদ্ধ সমাপ্তির অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে ব্রিটিশদের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি ক্যাম্প বাস্টিয়নে ব্রিটিশ পতাকা নামিয়ে ফেলা হয়।
সেই সঙ্গে বাস্টিয়নে পাশেই যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্প লেদারনেকের নিয়ন্ত্রণও আফগানদের কাছে তুলে দেয়া হয়। দুটি ঘাঁটিই হেমল্যান্ড প্রদেশে অবস্থিত। এর মাধ্যমে সময়ের সবচেয়ে সংঘর্ষপূর্ণ অঞ্চল হেমল্যান্ড পুনরায় আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণে চলে এল। এ বিষয়ে ব্রিটিশ ডিফেন্স সেক্রেটারি মাইকেল ফ্যালন সাংবাদিকদের বলেন, ২০০১ সালে আফগানিস্তানে পৌঁছানোর পর ‘অনেক ভুল হয়েছে’। তবে এর মধ্যেও আমাদের প্রাপ্তিও অনেক। ফ্যালন বলেন, আফগানিস্তানকে সম্ভাব্য স্থিতিশীল ভবিষ্যতের ভালো সুযোগ দিয়ে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘোষণা গর্বের বিষয়। তিনি বলেন, শক্তিশালী আফগান বাহিনী গড়ে তোলার পেছনে আমাদের সেনারা কঠোর পরিশ্রম করেছে। তারা এমন একটি নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে যার মাধ্যমে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর হয়েছে। এদিকে আফগানিস্তানে একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ মেরিন ইউনিটও তাদের যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করেছে। ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ১৬০০ একরের ক্যাম্প লেদারনেক হস্তান্তরের মাধ্যমে তারা যুদ্ধ শেষ করে। উল্লেখ্য, আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ২ হাজার ৩৪৯ জন সেনা নিহত হয়।
No comments