বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট: তিন ‘ম’তে মুখরক্ষা
আইসিসি’র র্যাঙ্কিংয়ে দু’দলের ব্যবধান খুব বেশি নয়। একেবারে পিঠাপিঠি। মাঠের লড়াইও যে এতটা সমানে সমান হবে কে ভেবেছিল। দুই দিনে দু’দলের দুই ইনিংস শেষ। কেউ কারও চেয়ে পিছিয়ে নেই, এগিয়েও নেই। দুই দিনে ৪৯৯ রান উঠেছে, পতন হয়েছে ২০ উইকেটের। পাঁচ দিনের খেলার দুই দিন অতিক্রান্ত। সমান তালের লড়াইয়ে আজ হতে পারে মোড় ঘোরানোর দিন। জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং বনাম বাংলাদেশের বোলিং। ব্যাটে-বলের আক্ষরিক লড়াই। এতে যারা দাপট দেখাতে পারবে জয়ও তাদের হবে। এখন পর্যন্ত যে অবস্থা তাতে হার মানতেই হবে এক দলকে। পালানোর পথ বোধহয় থাকবে না। তবুও শঙ্কা আর সংশয় স্বাগতিকদের ঘিরেই। ঘরের মাঠে খেলার বাড়তি চাপের সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করার অভিশাপ। প্রতিপক্ষের রানের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে ‘হাতে হারিকেন’ নিশ্চিত। মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টসে জেতা জিম্বাবুয়ের ২৪০ রানের জবাবে কাল বাংলাদেশ অলআউট হয় ২৫৪ রানে। শেষ বেলায় ২ ওভারে ৫ রান তোলে সফরকারীরা। অঙ্কের হিসাব প্রায় সমান হলেও বাস্তবতায় ফারাক অনেক। একই মাঠ একদিনের ব্যবধানে দেখালো স্পিন আর পেসের দাপট। প্রথম দিন বাংলাদেশের তিন স্পিনার নেন ৯ উইকেট, সাকিব একাই ৬টি। আর কাল জিম্বাবুয়ের পেসার পানিয়াঙ্গারা একাই পাঁচটি। স্পিনাররা দু’টি আর রান আউট তিনটি। জিম্বাবুয়ের ইনিংসে ফিফটি পেয়েছিলে মাত্র একজন। আর বাংলাদেশের ইনিংসে পেয়েছেন তিনজন। তিনজনের নামের আদ্যাক্ষর ‘ম’। এই তিন ‘ম’তেই মুমিনুল হক (৫৩), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (৬৩) আর মুশফিকুর রহীমের (৬৪) ফিফটিতে ভর করেই বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের ২৪০-কে টপকায়। ২৯ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ার পর মুমিনুল ও মাহমুদুল্লাহ দৃঢ়তার সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। কিন্তু এ জুটির বিচ্ছেদ ঘটে মুমিনুলের রানআউটে। তিনি ১১২ বলে করেছিলেন ৫৩ রান। খানিক পরে সাকিবও রানআউট হলে বিপাকে পড়ে স্বাগতিক দল। কিন্তু পঞ্চম উইকেটে দুই ভায়রা মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিক বড় সংগ্রহের আভাস দিচ্ছিলেন। কিন্তু সিকান্দার রাজার ঘূর্ণিতে লেগ বিফোর উইকেট হন ১৬০ বলে ৬৩ রান করা মাহমুদুল্লাহ। জুটিতে সংগ্রহ ছিল ৬৪ রান। মাহমুদুল্লাহ সংযমী খেললেও তেমনি দুটি ছক্কা হাঁকাতেও ভুল করেন নি। ২০৯ রানে যখন শুভাগত হোম বিদায় নেন তখনও ভাবা যায়নি সংগ্রহ এত হবে। ৩১ বলে ১৪ করেন নাসিরের বিকল্প ভাবা শুভাগত। মুশফিক ৬৪ রান করে ধারাবাহিকতার প্রমাণ দেন। ১২৬ বলের ইনিংসটি ছিল বেশ মাপা। ৪২ রানই ছিল তার বাউন্ডারি থেকে। ৪১ টেস্টে এটি তার ১৪তম অর্ধশতক। তিনজন ফিফটি করার পাশাপাশি একজন যদি তিন অঙ্কের ঘরে যেতে পারতেন তবে বাংলাদেশের সংগ্রহটা আরও বড় হতো। তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাল মোকাবিলা করতে হয়েছে আবহাওয়াকেও। সারা দিন আকাশ ছিল মেঘলা। আলোর স্বল্পতা আর স্যাঁতসেতে পিচে খেলাটা মোটেও সহজ নয়। আগের দিন জিম্বাবুয়ের ইনিংস গুটিয়ে দিয়েছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান। গতকাল আরেক বাঁ-হাতি পানিয়াঙ্গারা আগুন ঝরান গতিতে। পরশু মুশফিকদের ইনিংসে তিনিই প্রথম ভাঙন ধরান। দলীয় ১০ রানে থামিয়ে দেন বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবালকে। গতকালও দিনের শুরুতে পানিয়াঙ্গারায় আনন্দের উপলক্ষ মিলেছে জিম্বাবুয়ের। বাংলাদেশের যাওয়া দ্বিতীয় উইকেটটিও গেছে তার ঝুলিতেই। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের উইকেটটি নিয়েছেন তিনি। শেষের দিকে আরও দুই উইকেট নিয়ে নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারে পৌঁছেন তিনি।
‘আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল’
সাকিব আল হাসান বলেছিলেন ৪০০ রানের টার্গেটের কথা। বলেছিলেন, ব্যাট হাতে যত বেশিক্ষণ সম্ভব ক্রিজে টিকে থাকতে চায় বাংলাদেশ দল। কিন্তু মাঠের খেলায় দেখা গেল ভিন্নচিত্র। ক্রিজে খামখেয়ালিপনা আর তাড়াহুড়ো করে রান নিতে গিয়ে একের পর এক উইকেট বিসর্জন দিলেন বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। এক ইনিংসে তিন তিনটি রান আউট। ক্রিজে ব্যাট হাতে ধৈর্য দেখাচ্ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দলের দুই ওপেনারের দ্রুত বিদায়ে মুমিনুল হকের সঙ্গে দলের হাল ধরেন তিনি। ইনিংস মেরামতের পাশাপাশি তুলে নেন ২১ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে নবম ফিফটিও। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া রিয়াদ অবশ্য এক ইনিংসে তিন রান আউটের ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না। যদিও সাকিব আল হাসানের রান আউটটির পেছনে দোষ তারও। রান নিতে দৌড় শুরু করে পরে পিছুটান দেন রিয়াদ। এতে অপরাধবোধ দেখা গেল রিয়াদেরও। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘যদি আমার ব্যক্তিগত অভিমত বলেন, আমি বলবো রান আউটগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। এই লেভেলে যে ভুলগুলো করেছি, এর মধ্যে আমারও একটা ভুল কল ছিল। সামনে এগুলো শুধরে নেবো আমরা।’ রান আউটের জন্য হেলাফেলাটাই দায়ী। রিয়াদ বলেন, ‘কিছুটাতো অবশ্যই। যদি আমরা সতর্ক থাকতাম তবে এমন হতো না।’ প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ লিড পেয়েছে ১৪ রানের। এই সামান্য লিডটা দলের স্বস্তির না অনুশোচনার? রিয়াদ বলেন, ‘আমার মনে হয় না এমন লিড স্বস্তি দেয়ার মতো। পিচ খুব ভাল ছিল। ওরা খুব ভাল জায়গায় বোলিং করেছে। পিচে আহামরি টার্ন বা বাড়তি বাউন্সও পাচ্ছিলেন না বোলাররা। আমাদের উচিত ছিল একটু ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করার। আমরা যারা ফিফটি করে আউট হয়েছি, শট নির্বাচনে আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল। গতকাল দিনের শেষ দুই ওভার খেলে জিম্বাবুয়ে করে বিনা উইকেটে ৫ রান। ম্যাচের তৃতীয় দিন বাংলাদেশ দলের পরিকল্পনাটা কেমন থাকবে। রিয়াদ বলেন, ‘নির্ভর করছে উইকেট কেমন আচরণ করে তার উপর। পঞ্চম দিনে উইকেটে ফাটল ধরার সম্ভাবনা। যত কম রানে সম্ভব তাদের আউট করে দেয়ার চেষ্টা থাকবে। তা ১৫০ হতে পারে কিংবা ২৫০-ও হতে পারে।’
‘আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল’
সাকিব আল হাসান বলেছিলেন ৪০০ রানের টার্গেটের কথা। বলেছিলেন, ব্যাট হাতে যত বেশিক্ষণ সম্ভব ক্রিজে টিকে থাকতে চায় বাংলাদেশ দল। কিন্তু মাঠের খেলায় দেখা গেল ভিন্নচিত্র। ক্রিজে খামখেয়ালিপনা আর তাড়াহুড়ো করে রান নিতে গিয়ে একের পর এক উইকেট বিসর্জন দিলেন বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। এক ইনিংসে তিন তিনটি রান আউট। ক্রিজে ব্যাট হাতে ধৈর্য দেখাচ্ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দলের দুই ওপেনারের দ্রুত বিদায়ে মুমিনুল হকের সঙ্গে দলের হাল ধরেন তিনি। ইনিংস মেরামতের পাশাপাশি তুলে নেন ২১ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে নবম ফিফটিও। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া রিয়াদ অবশ্য এক ইনিংসে তিন রান আউটের ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না। যদিও সাকিব আল হাসানের রান আউটটির পেছনে দোষ তারও। রান নিতে দৌড় শুরু করে পরে পিছুটান দেন রিয়াদ। এতে অপরাধবোধ দেখা গেল রিয়াদেরও। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘যদি আমার ব্যক্তিগত অভিমত বলেন, আমি বলবো রান আউটগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। এই লেভেলে যে ভুলগুলো করেছি, এর মধ্যে আমারও একটা ভুল কল ছিল। সামনে এগুলো শুধরে নেবো আমরা।’ রান আউটের জন্য হেলাফেলাটাই দায়ী। রিয়াদ বলেন, ‘কিছুটাতো অবশ্যই। যদি আমরা সতর্ক থাকতাম তবে এমন হতো না।’ প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ লিড পেয়েছে ১৪ রানের। এই সামান্য লিডটা দলের স্বস্তির না অনুশোচনার? রিয়াদ বলেন, ‘আমার মনে হয় না এমন লিড স্বস্তি দেয়ার মতো। পিচ খুব ভাল ছিল। ওরা খুব ভাল জায়গায় বোলিং করেছে। পিচে আহামরি টার্ন বা বাড়তি বাউন্সও পাচ্ছিলেন না বোলাররা। আমাদের উচিত ছিল একটু ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করার। আমরা যারা ফিফটি করে আউট হয়েছি, শট নির্বাচনে আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল। গতকাল দিনের শেষ দুই ওভার খেলে জিম্বাবুয়ে করে বিনা উইকেটে ৫ রান। ম্যাচের তৃতীয় দিন বাংলাদেশ দলের পরিকল্পনাটা কেমন থাকবে। রিয়াদ বলেন, ‘নির্ভর করছে উইকেট কেমন আচরণ করে তার উপর। পঞ্চম দিনে উইকেটে ফাটল ধরার সম্ভাবনা। যত কম রানে সম্ভব তাদের আউট করে দেয়ার চেষ্টা থাকবে। তা ১৫০ হতে পারে কিংবা ২৫০-ও হতে পারে।’
No comments