ধর্ম ভিন্ন, উদ্দেশ্য অভিন্ন by উম্মে মুসলিমা
লন্ডন টাইমস-এর ইহুদি সম্পাদক ডানিয়েল ফিঙ্কেলেস্টাইন বলেছেন, ‘ইসরায়েল লবি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ন্ত্রণ করে, সুতরাং ইহুদিরাই পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করে।’ এমন যে ইহুদি জাতি যারা শিক্ষায়, সম্পদে, জ্ঞানে, ধূর্ততায় বিশ্বসেরা, তাদের মধ্যেও গোঁড়ামি রয়েছে। বলা হয় যে জাতি যত শিক্ষিত, সে জাতি তত গোঁড়ামিমুক্ত বা আলোকিত। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত নোবেল বিজয়ীদের শতকরা ২২ ভাগই ইহুদি। কিন্তু অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি নৃশংস হতে তারা কসুর করে না। সবাই নয়, সব ধর্মের কট্টরেরাই নিষ্ঠুর। আর এ নিষ্ঠুরতার শিকার ধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে বেশির ভাগই নারী। গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের লক্ষ্য গর্ভবতী নারী। কারণ, ইসরায়েলের বিশ্বাস, এসব নারী আরও সন্ত্রাসী জন্ম দিতে যাচ্ছেন। অন্যদিকে মৌলবাদী ইহুদি পুরুষেরা তাঁদের স্ত্রীর গর্ভে যত বেশি সন্তান নেওয়া যায় নিতে থাকেন। তাঁদের ধারণা, ইহুদিদের জনবল বাড়লে তারা পৃথিবী শাসনে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারবে। তাই নারীরা যে শুধু যুদ্ধেরই বলি হচ্ছেন, তা-ই নয়, আপন ধর্মের বাতাবরণেও তাঁরা নিষ্পেষিত।
কট্টর ইহুদিদের দেখে এলাম কাছ থেকে। পুরুষদের কানের দুই পাশে কাঁধ অবধি ঝোলানো পেঁচিয়ে রাখা জন্মচুল। জন্মের পর থেকে কলিটুকু রেখে রেখে বড় করা হয়। বেশির ভাগের মাথায় হ্যাট, কালো পোশাক। স্বসম্প্রদায়ের মানুষ ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলে না। এমনভাবে পথ চলে, যেন তারা সব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্রজেশ্বর। যেন নোংরা পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে চলতে হচ্ছে তাদের। তাদের পরিচালিত দোকানে পণ্য কিনে টাকা বাড়িয়ে দিলে তারা হাতে নেয় না, টেবিলের ওপর রাখতে বলে। যদি হাতে অস্পৃশ্য ছোঁয়া লেগে যায়? সে দেশে পরিচিত-অপরিচিত বলে কথা নেই, চোখে চোখ পড়লেই সবাই মুচকি হেসে দেয়। কেউ হাসির জবাব হাসিতে না দিলে মনে মনে অভদ্র ভাবে। কট্টর ইহুদিদের নারী-পুরুষ কেউ এ আচরণ করেন না। তাদের নারীদের অবস্থা দেখে গোঁড়া মুসলিম নারীদের জন্য বেদনা কিছুটা লাঘব হলো। আমাদের নারীদের মাথা ঢাকতে বলা হয়, যাতে চুল না দেখা যায়। কিন্তু তাদের নারীদের বিয়ের দিন পুরো মাথা ন্যাড়া করে ফেলতে হয়। বিবাহিত জীবনে ঘনকৃষ্ণ কেশদামের আর স্ফুরণ ঘটতে দেওয়া হয় না। চুল দেখানো মানে নারীর অবমাননা। তবে কি তাঁরা নেড়াবেল হয়েই বাইরে যান? না। সামনাসামনি দেখলে জানা না থাকলে কেউ টের পাবেন না যে তাঁরা উইগ পরে আছেন। খোলা চুলের মাঝে নারীর মুখ আকর্ষণীয় দেখায় আর তাতে পুরুষ প্রলুব্ধ হন। ওটা করা যাবে না। কিন্তু উইগকে চুল বলেই বিভ্রম হয়। তাতে তাঁদের মুখ কম আকর্ষণীয় লাগে না। কিন্তু আসল চুল যে বের করে রাখেননি, তাতেই সান্ত্বনা খুঁজে নিচ্ছেন তাঁরা।
ছোটবেলায় আমার এক হিন্দু বন্ধুর বাড়ি যেতাম। তাদের দেয়ালে টাঙানো নিনচোর গোপালের ছবিসংবলিত ক্যালেন্ডারের পাশে ফ্রেমে বাঁধাই করা একটা নরকের ছবি, যেখানে একজন নারীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার দৃশ্য ছিল। তাঁর চুলগুলো বাঁকানো সাপ হয়ে কপালে-মুখে-বুকে ছড়িয়ে আছে। মাসিমা মানে আমার বন্ধুর মা বলতেন, ‘পৃথিবীতে যে মেয়ে মাথায় ঘোমটা না দিয়ে চলবে, নরকে গিয়ে তার চুল সাপ হয়ে তাকে কামড়াবে।’ কিন্তু পুড়িয়ে মারা হচ্ছে কেন? কারণ সে ছিল পাপী। রোমান ক্যাথলিক নারীরাও মাথা ঢেকে রাখেন। নানদের তো চুলের কণাটিও দেখা যায় না। মুসলিম দেশগুলোয় বিশেষ করে আরব দেশে হিজাব বাধ্যতামূলক। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেও নারীরা মাথা ঢেকে রাখছেন। এমনকি স্বকীয়তা বজায় রাখার জন্য মুসলমান অভিবাসী নারীরা যে দেশেই বসবাস করছেন, সেখানেও শিরবস্ত্র ব্যবহার করছেন। আফগানিস্তানে তালেবানরা বলেই দিয়েছে যে নারীর ভোটাধিকার ধর্মসম্মত নয়, নারীর শিক্ষার প্রয়োজন নেই, নারী গাড়ি চালাতে পারবেন না, নারী আপাদমস্তক আবরিত হয়ে থাকবেন। নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসী সংগঠন ‘বোকো হারাম’ নারীদের ইংরেজি শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য মেয়েদের স্কুল থেকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে বন্দী করে রেখেছে। মুসলিম-খ্রিষ্টান-ইহুদি-বৌদ্ধনির্বিশেষে তাদের সবার মাথা ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
ধর্মের আলোচনার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু নারী, তিনি যে ধর্মেরই হোন না কেন। যেন নারীকে দমিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই সব ধর্মের সৃষ্টি। অথচ ধর্ম পৃথিবীতে এসেছে আপামর মানুষের শান্তির জন্য। অথচ এ কথা কে না বোঝে যে ধর্ম এখনো গণতন্ত্রের হাতিয়ার। ভারতের মতো বিশাল গণতান্ত্রিক দেশে বিজেপির মতো কট্টর দল জয়ী হয়, ধর্মের কথা শুনিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানরা আবার আসি আসি করছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বা দেশের ভার নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার জন্য যেসব নেতা-নেত্রী দুনিয়া কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগই ধর্মের জিগির তোলেন। সারা বিশ্বে এ প্রবণতা লক্ষণীয়। প্রাচীনকালে ধর্মীয় নেতারা দেশ চালাতেন। এখন দেশনেতারা সবাই ধর্মান্ধ। মাঝে উত্তরাধিকার বা গোলমালে অনেক দেশে নারীপ্রধান সরকার এসে গেলেও অদূর ভবিষ্যতে এ সংখ্যা কমবে বৈ বাড়বে না। নারীর বাড়বাড়ন্ত মেনে নিতে মোল্লাতন্ত্র অপারগ। ওদিকে যে হারে মোল্লাতন্ত্রের ইচ্ছা প্রতিফলনে নারীরা মরিয়া হয়ে উঠছেন, তাতে নিজের পায়ে কুড়াল মারতে আর বাকি নেই। এসব নারী বুঝতে পারছেন না তাঁদের পুরুষতন্ত্র পাকাপোক্ত করার কাজে ব্যবহার করে তাঁদের অভাবনীয় শক্তিকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়াই পুরুষকুলের উদ্দেশ্য।
সব ধর্মের কট্টরেরা নিজেদের ধর্মকেই সেরা ধর্ম ভাবে। আর এই সেরা ভাবনাটাই সবচেয়ে ভয়াবহ। তাদের কাছে অন্য যেকোনো ধর্মের মানুষই অস্পৃশ্য। তাই ভূখণ্ডের দখল নিয়ে বাহ্যত দুই বা একাধিক দেশ/জাতি/গোষ্ঠীর মধ্যকার যে যুদ্ধ, তা মূলত দুটি ধর্মের/গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যকার যুদ্ধ, যেখানে ‘আমিই সেরা’—এ বোধটা আমৃত্যু একজন কট্টর যোদ্ধার অবলম্বন। আর যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন পুরুষ, নারীদের তাঁর অধীনে থাকতে হয়। না হলে নেতৃত্বদানের অপরাধে হয় নারীকে ডাইনি বা জোয়ান অব আর্কের মতো পুড়িয়ে মারা হয়। কিন্তু নারী-পুরুষ উভয়ই যদি হয় আশরাফুল মাখলুকাত, তাহলে একে অন্যের ওপর নেতাগিরি করাও তো ধর্মের বরখেলাপ, নাকি?
তাই দেখা যাচ্ছে, ধর্ম ভিন্ন ভিন্ন হলেও এক জায়গায় সব ধর্মের গোঁড়ারা একমত, তা হচ্ছে নারীর প্রতি বিধিনিষেধ আরোপ। ধর্ম ভিন্ন ভিন্ন হলেও সব ধর্মের অন্যতম লক্ষ্য যদি হয় এক, তাহলে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে নারীর যুদ্ধও হোক অভিন্ন।
উম্মে মুসলিমা: কথাসাহিত্যিক।
কট্টর ইহুদিদের দেখে এলাম কাছ থেকে। পুরুষদের কানের দুই পাশে কাঁধ অবধি ঝোলানো পেঁচিয়ে রাখা জন্মচুল। জন্মের পর থেকে কলিটুকু রেখে রেখে বড় করা হয়। বেশির ভাগের মাথায় হ্যাট, কালো পোশাক। স্বসম্প্রদায়ের মানুষ ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলে না। এমনভাবে পথ চলে, যেন তারা সব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্রজেশ্বর। যেন নোংরা পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে চলতে হচ্ছে তাদের। তাদের পরিচালিত দোকানে পণ্য কিনে টাকা বাড়িয়ে দিলে তারা হাতে নেয় না, টেবিলের ওপর রাখতে বলে। যদি হাতে অস্পৃশ্য ছোঁয়া লেগে যায়? সে দেশে পরিচিত-অপরিচিত বলে কথা নেই, চোখে চোখ পড়লেই সবাই মুচকি হেসে দেয়। কেউ হাসির জবাব হাসিতে না দিলে মনে মনে অভদ্র ভাবে। কট্টর ইহুদিদের নারী-পুরুষ কেউ এ আচরণ করেন না। তাদের নারীদের অবস্থা দেখে গোঁড়া মুসলিম নারীদের জন্য বেদনা কিছুটা লাঘব হলো। আমাদের নারীদের মাথা ঢাকতে বলা হয়, যাতে চুল না দেখা যায়। কিন্তু তাদের নারীদের বিয়ের দিন পুরো মাথা ন্যাড়া করে ফেলতে হয়। বিবাহিত জীবনে ঘনকৃষ্ণ কেশদামের আর স্ফুরণ ঘটতে দেওয়া হয় না। চুল দেখানো মানে নারীর অবমাননা। তবে কি তাঁরা নেড়াবেল হয়েই বাইরে যান? না। সামনাসামনি দেখলে জানা না থাকলে কেউ টের পাবেন না যে তাঁরা উইগ পরে আছেন। খোলা চুলের মাঝে নারীর মুখ আকর্ষণীয় দেখায় আর তাতে পুরুষ প্রলুব্ধ হন। ওটা করা যাবে না। কিন্তু উইগকে চুল বলেই বিভ্রম হয়। তাতে তাঁদের মুখ কম আকর্ষণীয় লাগে না। কিন্তু আসল চুল যে বের করে রাখেননি, তাতেই সান্ত্বনা খুঁজে নিচ্ছেন তাঁরা।
ছোটবেলায় আমার এক হিন্দু বন্ধুর বাড়ি যেতাম। তাদের দেয়ালে টাঙানো নিনচোর গোপালের ছবিসংবলিত ক্যালেন্ডারের পাশে ফ্রেমে বাঁধাই করা একটা নরকের ছবি, যেখানে একজন নারীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার দৃশ্য ছিল। তাঁর চুলগুলো বাঁকানো সাপ হয়ে কপালে-মুখে-বুকে ছড়িয়ে আছে। মাসিমা মানে আমার বন্ধুর মা বলতেন, ‘পৃথিবীতে যে মেয়ে মাথায় ঘোমটা না দিয়ে চলবে, নরকে গিয়ে তার চুল সাপ হয়ে তাকে কামড়াবে।’ কিন্তু পুড়িয়ে মারা হচ্ছে কেন? কারণ সে ছিল পাপী। রোমান ক্যাথলিক নারীরাও মাথা ঢেকে রাখেন। নানদের তো চুলের কণাটিও দেখা যায় না। মুসলিম দেশগুলোয় বিশেষ করে আরব দেশে হিজাব বাধ্যতামূলক। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেও নারীরা মাথা ঢেকে রাখছেন। এমনকি স্বকীয়তা বজায় রাখার জন্য মুসলমান অভিবাসী নারীরা যে দেশেই বসবাস করছেন, সেখানেও শিরবস্ত্র ব্যবহার করছেন। আফগানিস্তানে তালেবানরা বলেই দিয়েছে যে নারীর ভোটাধিকার ধর্মসম্মত নয়, নারীর শিক্ষার প্রয়োজন নেই, নারী গাড়ি চালাতে পারবেন না, নারী আপাদমস্তক আবরিত হয়ে থাকবেন। নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসী সংগঠন ‘বোকো হারাম’ নারীদের ইংরেজি শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য মেয়েদের স্কুল থেকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে বন্দী করে রেখেছে। মুসলিম-খ্রিষ্টান-ইহুদি-বৌদ্ধনির্বিশেষে তাদের সবার মাথা ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
ধর্মের আলোচনার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু নারী, তিনি যে ধর্মেরই হোন না কেন। যেন নারীকে দমিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই সব ধর্মের সৃষ্টি। অথচ ধর্ম পৃথিবীতে এসেছে আপামর মানুষের শান্তির জন্য। অথচ এ কথা কে না বোঝে যে ধর্ম এখনো গণতন্ত্রের হাতিয়ার। ভারতের মতো বিশাল গণতান্ত্রিক দেশে বিজেপির মতো কট্টর দল জয়ী হয়, ধর্মের কথা শুনিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানরা আবার আসি আসি করছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বা দেশের ভার নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার জন্য যেসব নেতা-নেত্রী দুনিয়া কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগই ধর্মের জিগির তোলেন। সারা বিশ্বে এ প্রবণতা লক্ষণীয়। প্রাচীনকালে ধর্মীয় নেতারা দেশ চালাতেন। এখন দেশনেতারা সবাই ধর্মান্ধ। মাঝে উত্তরাধিকার বা গোলমালে অনেক দেশে নারীপ্রধান সরকার এসে গেলেও অদূর ভবিষ্যতে এ সংখ্যা কমবে বৈ বাড়বে না। নারীর বাড়বাড়ন্ত মেনে নিতে মোল্লাতন্ত্র অপারগ। ওদিকে যে হারে মোল্লাতন্ত্রের ইচ্ছা প্রতিফলনে নারীরা মরিয়া হয়ে উঠছেন, তাতে নিজের পায়ে কুড়াল মারতে আর বাকি নেই। এসব নারী বুঝতে পারছেন না তাঁদের পুরুষতন্ত্র পাকাপোক্ত করার কাজে ব্যবহার করে তাঁদের অভাবনীয় শক্তিকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়াই পুরুষকুলের উদ্দেশ্য।
সব ধর্মের কট্টরেরা নিজেদের ধর্মকেই সেরা ধর্ম ভাবে। আর এই সেরা ভাবনাটাই সবচেয়ে ভয়াবহ। তাদের কাছে অন্য যেকোনো ধর্মের মানুষই অস্পৃশ্য। তাই ভূখণ্ডের দখল নিয়ে বাহ্যত দুই বা একাধিক দেশ/জাতি/গোষ্ঠীর মধ্যকার যে যুদ্ধ, তা মূলত দুটি ধর্মের/গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যকার যুদ্ধ, যেখানে ‘আমিই সেরা’—এ বোধটা আমৃত্যু একজন কট্টর যোদ্ধার অবলম্বন। আর যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন পুরুষ, নারীদের তাঁর অধীনে থাকতে হয়। না হলে নেতৃত্বদানের অপরাধে হয় নারীকে ডাইনি বা জোয়ান অব আর্কের মতো পুড়িয়ে মারা হয়। কিন্তু নারী-পুরুষ উভয়ই যদি হয় আশরাফুল মাখলুকাত, তাহলে একে অন্যের ওপর নেতাগিরি করাও তো ধর্মের বরখেলাপ, নাকি?
তাই দেখা যাচ্ছে, ধর্ম ভিন্ন ভিন্ন হলেও এক জায়গায় সব ধর্মের গোঁড়ারা একমত, তা হচ্ছে নারীর প্রতি বিধিনিষেধ আরোপ। ধর্ম ভিন্ন ভিন্ন হলেও সব ধর্মের অন্যতম লক্ষ্য যদি হয় এক, তাহলে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে নারীর যুদ্ধও হোক অভিন্ন।
উম্মে মুসলিমা: কথাসাহিত্যিক।
No comments