স্মরণ- মোহাম্মদ আফজল by মোহাম্মদ আনোয়ারুল কাদির
মরহুম খান সাহেব মোহাম্মদ আফজল নওগাঁ জেলার বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক, সমাজসেবী ও প্রবীণ সরকারি অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। তার জন্ম ১৮৯৪ সালে নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার খট্টেশ্বর-রানীনগর গ্রামে। তার পিতা সরদার আমিরউদ্দীন আহমেদ কলকাতা থেকে প্রকাশিত বাসনা ও মোহাম্মদী পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। মোহাম্মদ আফজল ১৯১৪ সালে নওগাঁ কৃষ্ণধন হাইস্কুল এবং ১৯১৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে যথাক্রমে এনট্রান্স ও আইএ, উভয় পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯১৮ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানে ভারতের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ সহপাঠী ছিলেন। তখন তদানীন্তন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মিলিটারি কোরে সেনাবাহিনীতে প্রশিক্ষণ নেন এবং পরে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। ব্রিটিশ শাসনকালে মাগুরার ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালে মাগুরা কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি রানীনগর শেরেবাংলা কলেজ এবং ঐতিহ্যবাহী নওগাঁ প্যারিমোহন সাধারণ পাঠাগারের সভাপতি, নওগাঁ ডিগ্রি কলেজ ও বিএমসি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জড়িত ছিলেন। ১৯৩৪ সালে ‘খান সাহেব’ উপাধিপ্রাপ্ত হন এবং ১৯৫৩ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ২৭ অক্টোবর ইন্তেকাল করেন।
মোহাম্মদ আফজল ইসলামীনামা, আজমীর পথে, নওগাঁ মহকুমার ইতিহাস ও মহাস্থানগড়ের ইতিহাস বই লিখে গেছেন। সর্বশেষ বইটি মহকুমার সর্বপ্রথম লিখিত দলিল। তিনি পূর্ব পাকিস্তান লেখক সঙ্ঘ, পূর্ব পাকিস্তান গ্রন্থাগার সমিতি ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সদস্য ছিলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, মওলানা আকরম খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদ, মুসলিম ভারত সম্পাদক আফজালুল হক, অন্নদাশংকর রায় প্রমুখ সাহিত্যিকের সাহচর্যে এসেছিলেন। তিনি খাজা নাজিমুদ্দিন, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বগুড়ার মোহাম্মদ আলীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।
১৯১৮ ও ১৯২০ সালে ভয়াবহ বন্যায় বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে কলকাতায় ‘বেসরকারি বন্যা ত্রাণ কমিটি’ গঠিত হয়। তার নির্দেশে সুভাষচন্দ্র বসু (পরে নেতাজী) এবং মোহাম্মদ আফজল নওগাঁ মহকুমার বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেন।সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি নওগাঁয় ইউনাইটেড প্রেস অব পাকিস্তান (ইউপিপি) বার্তা সংস্থার সংবাদদাতা এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি নওগাঁ মহকুমা সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রে বিভিন্ন বিষয়ে ইংরেজি ও বাংলায় নিয়মিত লিখে বেশ সুনাম অর্জন করেন। তিনি মাহেনও, মোহাম্মদীসহ বিভিন্ন সাময়িকীতেও নিয়মিত লিখতেন। তিনি নওগাঁ থেকে প্রকাশিত নব দিগন্ত মাসিক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ছিলেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ লেফটেন্যান্ট আনোয়ারুল আজীমকে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ৫ মে নাটোরের উত্তরবঙ্গ চিনিকলে জেনারেল ম্যানেজার থাকাকালে মিল প্রাঙ্গণে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকসহ পাকসেনারা নির্মমভাবে হত্যা করে। কারো মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। পুত্রশোকে তিনি ও তার স্ত্রী বৃদ্ধ বয়সে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯৭৫ সালে উভয়ই ইন্তেকাল করেন।
মোহাম্মদ আফজল ইসলামীনামা, আজমীর পথে, নওগাঁ মহকুমার ইতিহাস ও মহাস্থানগড়ের ইতিহাস বই লিখে গেছেন। সর্বশেষ বইটি মহকুমার সর্বপ্রথম লিখিত দলিল। তিনি পূর্ব পাকিস্তান লেখক সঙ্ঘ, পূর্ব পাকিস্তান গ্রন্থাগার সমিতি ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সদস্য ছিলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, মওলানা আকরম খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদ, মুসলিম ভারত সম্পাদক আফজালুল হক, অন্নদাশংকর রায় প্রমুখ সাহিত্যিকের সাহচর্যে এসেছিলেন। তিনি খাজা নাজিমুদ্দিন, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বগুড়ার মোহাম্মদ আলীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।
১৯১৮ ও ১৯২০ সালে ভয়াবহ বন্যায় বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে কলকাতায় ‘বেসরকারি বন্যা ত্রাণ কমিটি’ গঠিত হয়। তার নির্দেশে সুভাষচন্দ্র বসু (পরে নেতাজী) এবং মোহাম্মদ আফজল নওগাঁ মহকুমার বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেন।সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি নওগাঁয় ইউনাইটেড প্রেস অব পাকিস্তান (ইউপিপি) বার্তা সংস্থার সংবাদদাতা এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি নওগাঁ মহকুমা সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রে বিভিন্ন বিষয়ে ইংরেজি ও বাংলায় নিয়মিত লিখে বেশ সুনাম অর্জন করেন। তিনি মাহেনও, মোহাম্মদীসহ বিভিন্ন সাময়িকীতেও নিয়মিত লিখতেন। তিনি নওগাঁ থেকে প্রকাশিত নব দিগন্ত মাসিক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ছিলেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ লেফটেন্যান্ট আনোয়ারুল আজীমকে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ৫ মে নাটোরের উত্তরবঙ্গ চিনিকলে জেনারেল ম্যানেজার থাকাকালে মিল প্রাঙ্গণে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকসহ পাকসেনারা নির্মমভাবে হত্যা করে। কারো মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। পুত্রশোকে তিনি ও তার স্ত্রী বৃদ্ধ বয়সে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯৭৫ সালে উভয়ই ইন্তেকাল করেন।
No comments