মিরপুরে অদ্ভুত সব রানআউট by তারেক মাহমুদ
তিনটি খামখেয়ালি রানআউট। তিনটি সুন্দর
সম্ভাবনার অপমৃত্যু। একটা ইনিংসকে শেষ করে দিতে এরপর আর কী লাগে! ২২৬ রানে ৮
উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তো মনে হচ্ছিল ২৪০ করেও লিড পেয়ে যাচ্ছে
জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ১৪ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশই। কিন্তু
সেটা যে রকম ক্রিকেট খেলে, তা মানা যায় না কোনোভাবেই।
রানআউট ১: টেন্ডাই চাতারার বলটা কাভারে ঠেলে দিয়েই রানের জন্য ছুটলেন মুমিনুল হক। রানটা হয়ে যাওয়ারই কথা। কিন্তু মুমিনুল ক্রিজের কাছে পৌঁছেও কী কারণে যেন ব্যাট মাটিতে ছোঁয়ালেন না। থার্ড আম্পায়ারের সাহায্য চাওয়ার পর দেখা গেল, তাঁর ব্যাট ক্রিজের ভেতর পৌঁছে গেলেও মাটিতে লাগেনি। সিকান্দার রাজার সরাসরি থ্রো ততক্ষণে ভেঙে দিয়েছে স্টাম্প। শেষ মুহূর্তে তাঁকে আলসেমিতে পেয়ে বসেছিল কি না সেটা মুমিনুলই ভালো বলতে পারবেন। বড় ইনিংসের আশা জাগিয়েও থেমে গেলেন ৫৩-তেই।
রানআউট ১: টেন্ডাই চাতারার বলটা কাভারে ঠেলে দিয়েই রানের জন্য ছুটলেন মুমিনুল হক। রানটা হয়ে যাওয়ারই কথা। কিন্তু মুমিনুল ক্রিজের কাছে পৌঁছেও কী কারণে যেন ব্যাট মাটিতে ছোঁয়ালেন না। থার্ড আম্পায়ারের সাহায্য চাওয়ার পর দেখা গেল, তাঁর ব্যাট ক্রিজের ভেতর পৌঁছে গেলেও মাটিতে লাগেনি। সিকান্দার রাজার সরাসরি থ্রো ততক্ষণে ভেঙে দিয়েছে স্টাম্প। শেষ মুহূর্তে তাঁকে আলসেমিতে পেয়ে বসেছিল কি না সেটা মুমিনুলই ভালো বলতে পারবেন। বড় ইনিংসের আশা জাগিয়েও থেমে গেলেন ৫৩-তেই।
>>খেলছিলেন দারুণ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইনিংসটা খুব বড় করতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। তবু অধিনায়কের ৬৪-ই হয়ে রইল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ রান l ছবি: শামসুল হক
রানআউট ২:
এবারও বোলার চাতারা, ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ। মিড অফে বল ঠেলে দিয়ে
রানের কল করেও পরে না করে দিয়েছেন নন-স্ট্রাইকে থাকা সাকিব আল হাসানকে।
কিন্তু ততক্ষণে সাকিব বেরিয়ে এসেছেন ক্রিজ থেকে। মাহমুদউল্লাহর ‘নো’ শুনে
ফিরে গেলেও হঠাৎ যেন থমকে গেলেন তিনি। পরে আবার দৌড় দিলেও ফিল্ডারের করা
থ্রোটাকে চাতারা ডাইভ দিয়ে স্টাম্পে লাগানো পর্যন্তও ক্রিজে পৌঁছাতে
পারলেন না সাকিব। ভুল ‘কলে’র দায় ম্যাচ শেষে স্বীকার করেছেন মাহমুদউল্লাহ।
কিন্তু হঠাৎ থমকে দাঁড়ানোর কী ব্যাখ্যা দেবেন সাকিব?
রানআউট ৩: ২২৬ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর জিম্বাবুয়ের ২৪০-এর আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কা তখন বাংলাদেশ শিবিরে। শাহাদাত হোসেনের খামখেয়ালিতে হওয়া আরেকটা রানআউট শঙ্কাটা বাড়িয়ে দিল। তিনাশে পানিয়াঙ্গারার বলটা শর্ট লেগে পাঠিয়ে রানের জন্য ক্রিজ ছাড়লেও ফিল্ডার ক্রেইগ আরভিন বলটা ধরে ফেলেন, আবার ক্রিজে ফেরার চেষ্টা করেন শাহাদাত। যে সময়টা পেয়েছিলেন তাতে খুব ভালোভাবেই ক্রিজে পৌঁছে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু একটু এগিয়ে ক্রিজের বাইরের দাগে ব্যাট ছুঁইয়েই দায়িত্ব শেষ করলেন তিনি। যেন জানেনই না রানআউটের নিয়মে দাগের ওপর ব্যাট থাকা মানে আউট। ব্যাট থাকতে হবে দাগের ভেতরে।
সাকিব করেছেন ৫, শাহাদাত কোনো রান না করেই আউট। মুমিনুলের মতো তাঁদের আউটে তাই সুন্দর কোনো সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটেনি। তবে উইকেটে থিতু হয়েও বড় ইনিংস খেলতে না পারার দায় মুমিনুলের সঙ্গে নিতে হবে মাহমুদউল্লাহ আর অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকেও।
পঞ্চম উইকেটে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়লেন মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক। কিন্তু সেটা ৬৪-তেই শেষ হয়ে যাবে কেন? মাঝে ছন্দ হারিয়ে ফেলা মাহমুদউল্লাহ নিজেকে ফিরে পেতে শুরু করেন গত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেই। কিন্তু ভালো ভিত গড়েও পারছেন না ইনিংসগুলোকে বড় করতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে পর পর দুই টেস্টের দুই ইনিংসে ফিফটির পর কালও ৬৩-তেই থেমে গেল ইনিংস। সিকান্দার রাজাকে সুইপ করতে গিয়ে প্যাডে বল লাগালেন। জোরালো আপিলের পরও আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় রিভিউ চাইল জিম্বাবুয়ে। মাহমুদউল্লাহর এলবিডব্লুর সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের মাটিতে টেস্টে প্রথম সাফল্য পেল রিভিউ পদ্ধতি।
৬৪ রানের ইনিংসে অধিনায়ক মুশফিকও সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন বড় কিছুর। কিন্তু ওই সম্ভাবনা পর্যন্তই। পানিয়াঙ্গারার অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যাওয়া শর্ট বলটা ছেড়ে দিলেই পারতেন। অথচ মুশফিক সেটাকেই টেনে এনে পুল করতে গেলেন! স্কয়ার লেগে ফিল্ডার আরভিনের ক্যাচটা নিতে কোনো সমস্যাই হলো না। পানিয়াঙ্গারার ৫ উইকেটের তৃতীয় শিকার মুশফিক, পরে তাইজুল ও আল আমিনকে আউট করে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস মুড়ে দিয়েছেন তিনিই।
জিম্বাবুয়ের ২৪০ রানে অলআউট হওয়ার একটা ব্যাখ্যা তবু খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল পরশু। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট স্বভাববিরুদ্ধ আচরণ করছে, উঁচু সিমের এসজি টেস্ট বলও হয়তো একটা কারণ ছিল। কিন্তু কাল তো বল সেভাবে ওঠেনি! পরশু সন্ধ্যায় বৃষ্টি হয়েছে, কালও দিনভর আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। কিন্তু কন্ডিশনের কোনো সুবিধা জিম্বাবুয়ের বোলাররা আদায় করতে পেরেছেন বলেও মনে হয়নি। বাংলাদেশ দলের বেশির ভাগ আউটই ছিল অতিথি দলকে দেওয়া ‘উপহার’। তাতে ৫ উইকেটে ১৮৯ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশ ২৫৪ রানে অলআউট দিন শেষ হওয়ার আগেই।
শেষ বিকেলে ২ ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ৫ রান জিম্বাবুয়ের। দ্বিতীয় দিনেই টেস্টের তৃতীয় ইনিংস শুরু হয়ে যাওয়ায় একটা ব্যাপার পরিষ্কার, বৃষ্টি বাধা না হলে ফলাফল দেখবে ঢাকা টেস্ট। তবে দ্বিতীয় দিনের ব্যাটিং-ব্যর্থতার কারণে এখন আর আশা নিয়ে বলা যাচ্ছে না, সেই ফলটা বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে হাসবে।
দ্বিতীয় দিন শেষে
জিম্বাবুয়ে: ২৪০ ও ৫/০
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৫৪
রানআউট ৩: ২২৬ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর জিম্বাবুয়ের ২৪০-এর আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কা তখন বাংলাদেশ শিবিরে। শাহাদাত হোসেনের খামখেয়ালিতে হওয়া আরেকটা রানআউট শঙ্কাটা বাড়িয়ে দিল। তিনাশে পানিয়াঙ্গারার বলটা শর্ট লেগে পাঠিয়ে রানের জন্য ক্রিজ ছাড়লেও ফিল্ডার ক্রেইগ আরভিন বলটা ধরে ফেলেন, আবার ক্রিজে ফেরার চেষ্টা করেন শাহাদাত। যে সময়টা পেয়েছিলেন তাতে খুব ভালোভাবেই ক্রিজে পৌঁছে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু একটু এগিয়ে ক্রিজের বাইরের দাগে ব্যাট ছুঁইয়েই দায়িত্ব শেষ করলেন তিনি। যেন জানেনই না রানআউটের নিয়মে দাগের ওপর ব্যাট থাকা মানে আউট। ব্যাট থাকতে হবে দাগের ভেতরে।
সাকিব করেছেন ৫, শাহাদাত কোনো রান না করেই আউট। মুমিনুলের মতো তাঁদের আউটে তাই সুন্দর কোনো সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটেনি। তবে উইকেটে থিতু হয়েও বড় ইনিংস খেলতে না পারার দায় মুমিনুলের সঙ্গে নিতে হবে মাহমুদউল্লাহ আর অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকেও।
পঞ্চম উইকেটে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়লেন মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক। কিন্তু সেটা ৬৪-তেই শেষ হয়ে যাবে কেন? মাঝে ছন্দ হারিয়ে ফেলা মাহমুদউল্লাহ নিজেকে ফিরে পেতে শুরু করেন গত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেই। কিন্তু ভালো ভিত গড়েও পারছেন না ইনিংসগুলোকে বড় করতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে পর পর দুই টেস্টের দুই ইনিংসে ফিফটির পর কালও ৬৩-তেই থেমে গেল ইনিংস। সিকান্দার রাজাকে সুইপ করতে গিয়ে প্যাডে বল লাগালেন। জোরালো আপিলের পরও আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় রিভিউ চাইল জিম্বাবুয়ে। মাহমুদউল্লাহর এলবিডব্লুর সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের মাটিতে টেস্টে প্রথম সাফল্য পেল রিভিউ পদ্ধতি।
৬৪ রানের ইনিংসে অধিনায়ক মুশফিকও সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন বড় কিছুর। কিন্তু ওই সম্ভাবনা পর্যন্তই। পানিয়াঙ্গারার অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যাওয়া শর্ট বলটা ছেড়ে দিলেই পারতেন। অথচ মুশফিক সেটাকেই টেনে এনে পুল করতে গেলেন! স্কয়ার লেগে ফিল্ডার আরভিনের ক্যাচটা নিতে কোনো সমস্যাই হলো না। পানিয়াঙ্গারার ৫ উইকেটের তৃতীয় শিকার মুশফিক, পরে তাইজুল ও আল আমিনকে আউট করে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস মুড়ে দিয়েছেন তিনিই।
জিম্বাবুয়ের ২৪০ রানে অলআউট হওয়ার একটা ব্যাখ্যা তবু খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল পরশু। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট স্বভাববিরুদ্ধ আচরণ করছে, উঁচু সিমের এসজি টেস্ট বলও হয়তো একটা কারণ ছিল। কিন্তু কাল তো বল সেভাবে ওঠেনি! পরশু সন্ধ্যায় বৃষ্টি হয়েছে, কালও দিনভর আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। কিন্তু কন্ডিশনের কোনো সুবিধা জিম্বাবুয়ের বোলাররা আদায় করতে পেরেছেন বলেও মনে হয়নি। বাংলাদেশ দলের বেশির ভাগ আউটই ছিল অতিথি দলকে দেওয়া ‘উপহার’। তাতে ৫ উইকেটে ১৮৯ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশ ২৫৪ রানে অলআউট দিন শেষ হওয়ার আগেই।
শেষ বিকেলে ২ ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ৫ রান জিম্বাবুয়ের। দ্বিতীয় দিনেই টেস্টের তৃতীয় ইনিংস শুরু হয়ে যাওয়ায় একটা ব্যাপার পরিষ্কার, বৃষ্টি বাধা না হলে ফলাফল দেখবে ঢাকা টেস্ট। তবে দ্বিতীয় দিনের ব্যাটিং-ব্যর্থতার কারণে এখন আর আশা নিয়ে বলা যাচ্ছে না, সেই ফলটা বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে হাসবে।
দ্বিতীয় দিন শেষে
জিম্বাবুয়ে: ২৪০ ও ৫/০
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৫৪
No comments