‘গরিবের কথা ভাবার কেউ নাই’
কারওয়ান বাজার থেকে সবজি কিনে
মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের পাশের বাজারে বিক্রি করেন মোহাম্মদ পারভেজ।
প্রতিদিন সকালবেলা উঠে চলে যান বাজারে।
টানা দ্বিতীয়
দিনের মতো গতকাল বুধবারও ভ্যান খালি করে ফিরলেন। হরতাল, তাই বাজারে পণ্যের
সরবরাহ নেই। দৈনিক সবজি বেচে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা থাকে। কিন্তু দুই দিন কোনো
আয় হয়নি। স্ত্রী, দুই ছেলেমেয়ের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম পারভেজ বললেন,
‘জমা ভাইঙে খাইতেছি। হরতালে বড়লোকের কিচ্ছু হয় না, আমরা গরিবেরা মরি।’
হরতালের দিন রাজধানীর রিকশা-নিষিদ্ধ রাস্তাগুলোতে রিকশার অবাধ চলাচল। অনেকেই ভাবেন, এদিন রিকশাচালকদের আয় বেড়ে যায়। কিন্তু মানুষের চলাফেরা কমে যাওয়ায় বাস্তবে কমে যায় তাদের আয়, এমনটা জানান চালক আব্দুর রাজ্জাক। মোহাম্মদপুরের লোহারগেট বেড়িবাঁধের কাছে একটি রিকশার গ্যারেজে থাকেন তিনি। প্রতিদিন জমা আর খাবার খরচ মিলিয়ে ২০০ টাকা খরচ তাঁর। সাধারণত খরচ বাদ দিয়ে ৪০০ টাকা থাকে। কিন্তু হরতালের প্রথম দিন দৈনিক খরচের পর পকেটে থেকেছে মাত্র ২০০ টাকা।
কেন ডাকা হয়েছে তা না জানলেও হরতালে যে বড্ড ক্ষতি হয়, তা টের পান গৃহবধূ মোসাম্মৎ রিপা। তেজগাঁও উড়াল সেতুর নিচে ন্যায্যমূল্যের চাল-আটা বিক্রির ট্রাকের সামনে লাইনে দাঁঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তেজকুনিপাড়ার রাজা মিয়ার গলিতে থাকেন। স্বামী একটি ক্লিনিকের পাহারাদার। একটু আগে বাজারে গিয়ে দেখেছেন, প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে গেছে। সব হরতালেই এমন হয়। ক্ষুব্ধ রিপা বললেন, ‘হরতাল এক্কেবারে বন্ধ হয়্যা গেলে ভালো, আমরা বাঁচি।’
প্রতিদিন হাঁস-মুরগি কিনে ফেরি করে বিক্রি করেন তেজগাঁও রেল কলোনির আহমেদ আলী। কিন্তু হরতালের বাজারে মালামাল একেবারে কম। দাম বেড়ে যাওয়ায় দুই দিন ধরে মাল কিনতে পারেননি। স্ত্রী রেনু বেগমের পিঠার দোকানে বসে সাহায্য করছিলেন। দুই দিন ধরে বেকার আবার ‘গরমের ভাও পড়ায়’ পিঠার বিক্রিও গেছে কমে। ছয় ছেলেমেয়ে নিয়ে বড় বিপাকেই পড়েছেন এই দম্পতি। আহমেদের প্রশ্ন, ‘দ্যাশে দলাদলি বন্ধ হইব কবে?’।
ঢাকা শহরে হরতালে জনপরিবহন কিছুটা চালু থাকলেও দূরপাল্লার বাসগুলো একেবারে বন্ধ। মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে শত শত গাড়ি সার বেঁধে দাঁড়িয়ে। অলস ভঙ্গিতে এসব গাড়িতে সময় কাটাচ্ছেন বাসের কর্মীরা। গাড়ি বন্ধ, তাই আয়ও বন্ধ। গাড়ি চললে দৈনিক চার থেকে পাঁচ শ টাকা আয় করেন ঢাকা-ধোবাউড়া পথে চলা একটি বাসের হেলপার হযরত আলী। দুই দিন আয় বন্ধ। চলছে জমানো টাকা ভেঙে খাওয়া। বলছিলেন, ‘শুধু খাইতেই তিন শ ট্যাহা লাগে। কেমুন কইর্যা চলি কন?’
মহাখালীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বারান্দায় শুয়ে ছিলেন আমির হোসেন। কুমিল্লা শহরে একটি ব্যাংকের পাহারাদার তিনি। হঠৎ অসুখ বাড়ায় গত মঙ্গলবার হরতালের প্রথম দিনে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকা এসেছেন। চার হাজার টাকা এ জন্য গুনতে হয়েছে। এই বড় অসুখে পড়ে অন্যের কাছে চেয়েচিন্তে চিকিৎসা চলছে। বলছিলেন, ‘হরতাল না থাকলে বাসে আইতে পারতাম। অনেকগুলা ট্যাকা বাঁচত। গরিবের কথা ভাবার কেউ নাই এ দ্যাশে।’
হরতালের দিন রাজধানীর রিকশা-নিষিদ্ধ রাস্তাগুলোতে রিকশার অবাধ চলাচল। অনেকেই ভাবেন, এদিন রিকশাচালকদের আয় বেড়ে যায়। কিন্তু মানুষের চলাফেরা কমে যাওয়ায় বাস্তবে কমে যায় তাদের আয়, এমনটা জানান চালক আব্দুর রাজ্জাক। মোহাম্মদপুরের লোহারগেট বেড়িবাঁধের কাছে একটি রিকশার গ্যারেজে থাকেন তিনি। প্রতিদিন জমা আর খাবার খরচ মিলিয়ে ২০০ টাকা খরচ তাঁর। সাধারণত খরচ বাদ দিয়ে ৪০০ টাকা থাকে। কিন্তু হরতালের প্রথম দিন দৈনিক খরচের পর পকেটে থেকেছে মাত্র ২০০ টাকা।
কেন ডাকা হয়েছে তা না জানলেও হরতালে যে বড্ড ক্ষতি হয়, তা টের পান গৃহবধূ মোসাম্মৎ রিপা। তেজগাঁও উড়াল সেতুর নিচে ন্যায্যমূল্যের চাল-আটা বিক্রির ট্রাকের সামনে লাইনে দাঁঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তেজকুনিপাড়ার রাজা মিয়ার গলিতে থাকেন। স্বামী একটি ক্লিনিকের পাহারাদার। একটু আগে বাজারে গিয়ে দেখেছেন, প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে গেছে। সব হরতালেই এমন হয়। ক্ষুব্ধ রিপা বললেন, ‘হরতাল এক্কেবারে বন্ধ হয়্যা গেলে ভালো, আমরা বাঁচি।’
প্রতিদিন হাঁস-মুরগি কিনে ফেরি করে বিক্রি করেন তেজগাঁও রেল কলোনির আহমেদ আলী। কিন্তু হরতালের বাজারে মালামাল একেবারে কম। দাম বেড়ে যাওয়ায় দুই দিন ধরে মাল কিনতে পারেননি। স্ত্রী রেনু বেগমের পিঠার দোকানে বসে সাহায্য করছিলেন। দুই দিন ধরে বেকার আবার ‘গরমের ভাও পড়ায়’ পিঠার বিক্রিও গেছে কমে। ছয় ছেলেমেয়ে নিয়ে বড় বিপাকেই পড়েছেন এই দম্পতি। আহমেদের প্রশ্ন, ‘দ্যাশে দলাদলি বন্ধ হইব কবে?’।
ঢাকা শহরে হরতালে জনপরিবহন কিছুটা চালু থাকলেও দূরপাল্লার বাসগুলো একেবারে বন্ধ। মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে শত শত গাড়ি সার বেঁধে দাঁড়িয়ে। অলস ভঙ্গিতে এসব গাড়িতে সময় কাটাচ্ছেন বাসের কর্মীরা। গাড়ি বন্ধ, তাই আয়ও বন্ধ। গাড়ি চললে দৈনিক চার থেকে পাঁচ শ টাকা আয় করেন ঢাকা-ধোবাউড়া পথে চলা একটি বাসের হেলপার হযরত আলী। দুই দিন আয় বন্ধ। চলছে জমানো টাকা ভেঙে খাওয়া। বলছিলেন, ‘শুধু খাইতেই তিন শ ট্যাহা লাগে। কেমুন কইর্যা চলি কন?’
মহাখালীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বারান্দায় শুয়ে ছিলেন আমির হোসেন। কুমিল্লা শহরে একটি ব্যাংকের পাহারাদার তিনি। হঠৎ অসুখ বাড়ায় গত মঙ্গলবার হরতালের প্রথম দিনে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকা এসেছেন। চার হাজার টাকা এ জন্য গুনতে হয়েছে। এই বড় অসুখে পড়ে অন্যের কাছে চেয়েচিন্তে চিকিৎসা চলছে। বলছিলেন, ‘হরতাল না থাকলে বাসে আইতে পারতাম। অনেকগুলা ট্যাকা বাঁচত। গরিবের কথা ভাবার কেউ নাই এ দ্যাশে।’
No comments