শিশুতোষ পত্রিকার বর্ষপূর্তিতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা- সংস্কৃতি সংবাদ
শিশুর পরিপূর্ণ বৃদ্ধির জন্য চাই সুস্থ ও সুন্দর মনোজগত। এ লক্ষ্যে গত এক বছর ধরে প্রকাশিত হচ্ছে মাসিক শিশুতোষ পত্রিকা জল পড়ে পাতা নড়ে। এটি দেশের একমাত্র শিশুতোষ পত্রিকা, যা ব্রেইলেও ছাপা হয়।
পত্রিকাটির প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেঙ্গল শিল্পালয়ে শুরু হওয়া এ আয়োজনের শিরোনাম ইচ্ছে ডানা। স্বাভাবিক শিশুর পাশাপাশি দিনব্যাপী আয়োজনে যুক্ত করা হয়েছে দৃষ্টি, বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীসহ সব শিশুকে।প্রথম দিন সকালে বিশিষ্ট চিত্রকর, ভাস্কর, কণ্ঠশিল্পী ও থিয়েটার কর্মীদের তত্ত্বাবধানে বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুরা ছবি আঁকা ও নাটকের কর্মশালায় অংশ নেয়। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুরা ভাস্কর্য নির্মাণ ও সঙ্গীত বিষয়ক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে। শিশুদের জন্য আয়োজিত এই কর্মশালা চিত্রকর কনক চাঁপা চাকমা, ভাস্কর তেজস হালদার, নাট্যশিল্পী ড. খন্দকার তাজমি নুর ও আনিসুল হক বরুন এবং সঙ্গীত শিল্পী ঝুমা খন্দকার তত্ত্বাবধান করেন। অনুষ্ঠানে মিরপুরের ব্যাপ্টিস্ট মিশন স্কুল ও বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্র, খিলক্ষেতের জান-ই-আলম সরকারী স্কুল, ধানম-ির অরণী বিদ্যালয় ও মোহাম্মদপুরের কিশলয় স্কুলের প্রায় ১৫০ শিশু অংশগ্রহণ করে।
উৎসবের প্রথম দুদিন সকালে ছবি আঁকা ও গানের পাশাপাশি শিশুদের কবিতা আবৃত্তি শেখানো হবে। শেষ দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশুদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ছবি ও ভাস্কর্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। প্রদর্শনীতে লায়লা হাসান ও জল পড়ে পাতা নড়ের সম্পাদকম-লীর সভাপতি চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী উপস্থিত থাকবেন।
ছবিমেলায় দুই প্রদর্শনীর উদ্বোধন ॥ ইতোমধ্যেই রাজধানীর ছবিপ্রেমীদের নজর কেড়েছে আলোকচিত্রের আন্তর্জাতিক উৎসব ছবিমেলা। ভঙ্গুরতা প্রতিপাদ্য ধারণ করে ২৫ জানুয়ারি শুরু হওয়া এ উৎসবের আয়োজক দৃক। রিকশাশ্যানে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শীসহ ঢাকার সাতটি ভেন্যুতে চলছে দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রীদের ছবির প্রদর্শনী। উৎসবের পঞ্চম দিনে মঙ্গলবার বিকেলে চারুকলা সংলগ্ন ছবির হাটে শুরু হলো দু’টি প্রদর্শনী। এর একটি হলো ভারতের আলোকচিত্রী বিএস সিভারাজুর গান্ধী হওয়া শীর্ষক প্রদর্শনী। এতে উঠে এসেছে কর্ণাটকে গান্ধী সেজে ঘুরে বাড়ানো স্কুলশিক্ষক বাগেদাহোল্লির বাসাভরাজের জীবনচিত্র। গান্ধীর অহিংসার বাণী এই প্রচারক শরীরে রূপালি রং মেখে ধুতির সঙ্গে চশমা পরে ঘুরে বেড়ান গ্রামাঞ্চলে। মানবতা ও অহিংসার পথে অনুপ্রাণিত করেন শিশুদের। সেসব দৃশ্যই উঠে এসেছে ছবিতে। দেশের তরুণ সৃজনশীল আলোকচিত্রী সাইফুল হক অমির ছবিতে বর্ণিত হয়েছে রোহিঙ্গাদের জীবনের নানা বিষয়। প্রত্যাখ্যাত ও অস্বীকৃত শীর্ষক এ প্রদর্শনীর আলোকচিত্রে আছে বর্মার সংখ্যালঘু মুসলিম জাতিগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরের মানবেতর জীবনচিত্র। সঙ্গে আছে লন্ডনের ব্রাডফোর্ডে আশ্রয় নেয়া এই জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন ছবি। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে আয়োজিত প্রদর্শনী দুটি ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
আরণ্যকের উৎসবে মঞ্চায়িত ট্যাগোর ইন চায়না ॥ সদ্য স্বাধীন দেশে ১৯৭২ সালে গড়ে ওঠে নাট্যদল আরণ্যক। সময়ের বহমানতায় দলটি পেরিয়েছে প্রতিষ্ঠার চার দশক। এ সাফল্যের উদযাপনে ২৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে আরণ্যকের ৪০ বছরপূর্তি উৎসব। নতুন সাহসী পৃথিবীর জন্য সেøাগানে ছয়দিনের উৎসবের চতুর্থ দিন ছিল মঙ্গলবার। এদিন সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হয় হংকংয়ের নাট্যদলের নাটক ট্যাগোর ইন চায়না। এর আগে বিকেলে একাডেমীর সেমিনার কক্ষে জনগণের নাটক শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে মুখ্য আলোচক ছিলেন আরণ্যকের প্রধান সম্পাদক মামুনুর রশীদ। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। আজ বুধবার উৎসবের পঞ্চম দিন বিকেলে সেমিনার কক্ষে দুই বাংলার নাটকের সাঁকো শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এতে মুখ্য আলোচক থাকবেন বিভাস চক্রবর্তী। সভাপতিত্ব করবেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। আর সন্ধ্যায় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে সংক্রান্তি।
বুনোফুল ও মনোসরণি এ্যালবামের প্রকাশনা ॥ বেঙ্গল মিউজিক থেকে প্রকাশিত হলো কৃষ্ণকলির কণ্ঠে ধারণকৃত সাঁওতাল ও ঝুমুর গানের এ্যালবাম বুনোফুল। একইসঙ্গে এলো এ সময়ের গান নিয়ে ব্যান্ডসঙ্গীতের এ্যালবাম মনোসরণি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধানম-ির বেঙ্গল শিল্পালয়ে অনুষ্ঠিত হলো এ্যালবাম দুটির প্রকাশনা অনুষ্ঠান। বুনোফুলের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা মোল্লা সাগর। আর মনোসরণির মোড়ক উন্মোচন করেন শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী অমল আকাশ। মোড়ক উন্মোচনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কৃষ্ণকলি ও মনোসরণি দলের শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসবের দ্বিতীয় দিনের পরিবেশনা ॥ শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে চলছে তিন দিনব্যাপী উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব। কণ্ঠে রাগ-রাগিনীর সুরের সঙ্গে শাস্ত্রীয় আঙ্গিকের যন্ত্রসঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনা উৎসবকে দিয়েছে বর্ণিল মাত্রা। মঙ্গলবার ছিল উৎসবের দ্বিতীয় দিন। এদিন সন্ধ্যায় একাডেমীর সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে কণ্ঠসঙ্গীত, যন্ত্রসঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনা। কণ্ঠসঙ্গীতে ঠুমরি পরিবেশন করেন প্রিয়াংকা গোপ। এছাড়াও কণ্ঠসঙ্গীতে অংশ নেন মাহমুদুল হাসান, অনিল কুমার সাহা, জয়ন্তি লালা, ড. হারুনুর রশিদ, আমিন আক্তার সাদমানি ও শেখ জসিম। সেতার বাজিয়ে শোনান মোঃ কামাল জহীর শামীম ও সত্যজিৎ চক্রবর্তী। নূপুরের তালে ও মুদ্রার প্রকাশে ভরতনাট্যম পরিবেশন করেন কস্তুরী মুখার্জী। কত্থক নৃত্য উপস্থাপন করেন অনিমা দত্ত।
No comments