লোকসানের ধামা by জামান সরদার
লাভের গুড় নাকি পিঁপড়ায় খায়। লোকসানের ধামা কে বহন করে, সেটা অবশ্য বাংলা প্রবাদে উল্লেখ নেই। লোকায়ত আপ্তবাক্য মেনেই বোধহয় রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং এর নাটকীয় পূর্বাপর নিয়ে এখন পর্যন্ত লাভের হিসাবই চলছে। কেউ কেউ বলছেন, গত কয়েক দিনের ঘটনায় বিরোধী দলের লাভের পাল্লাই সবচেয়ে ভারী।
কারণ, ক্ষমতাসীন দল এতদিন কথায় কথায় তাদের সরকারের আমলে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি ও পাচারের খোঁটা দিয়ে এসেছে। মামলা হয়েছে। সেখানে দেশি-বিদেশি সাক্ষীও জোগাড় হয়েছে। এখন বিরোধী দল পাল্টা জবাব দেওয়ার সুযোগ পেল।
দ্বিতীয় মতটি হচ্ছে, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকার দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স দেখিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেল। দেখিয়ে দিল যে তারা জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এতে করে সরকারের ইমেজ ভালো হবে। আর একই সঙ্গে ঝিকে মেরে বউকে শোধরানোরও সুযোগ মিলল। সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে নানা মন্ত্রণালয়ে যে দুর্নীতির মাত্রা বেড়ে যায়, রেলমন্ত্রীর পরিণতি তাতে রাশ টানতে সহায়তা করবে। মন্ত্রীর এপিএসদের দৌরাত্ম্যও কমবে আশা করা যায়। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে। তার মানে, লাভ আখেরে ক্ষমতাসীনদেরই।
আবার কেউ কেউ বলছেন, খোদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও এক অর্থে লাভবান হয়েছেন। আমাদের দেশে মন্ত্রীর স্বতঃপ্রণোদিত পদত্যাগের দৃষ্টান্ত নেই বললেই চলে। তিনি 'তদন্তের স্বার্থে' পদত্যাগ করে, এ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে নিজেই যেমনটি বলেছেন, রাজনীতিতে 'অনন্য দৃষ্টান্ত' স্থাপনের সুযোগ পেলেন।
লাভ নাকি রেলের কালো বিড়ালদেরও। একটি চক্র যুগ যুগ ধরে প্রাতিষ্ঠানিক লোকসানের কেচ্ছা শুনিয়ে ব্যক্তিগত লাভের পাহাড় গড়ে তুলছিলেন। নতুন মন্ত্রণালয় গঠন এবং ডাকসাইটে নেতা সেটার দায়িত্ব পাওয়ার পর সেই অচলায়তন নড়ে গিয়েছিল। তাদের লাভ-লোকসানের বাণিজ্য আপাতত কিছু দিনের জন্য নিশ্চিত।
সাদা চোখে দেখলে, লাভের এই হাটে লোকসান হলো রেলমন্ত্রীর এপিএস, পূর্বাঞ্চলীয় জিএম ও নিরাপত্তা কর্মকর্তার। আকর্ষণীয় পদের চাকরি এভাবে বেঘোরে চলে গেল! বস্তাভরা টাকার কথাও বলতে হবে। ফ্রিজ হওয়া অ্যাকাউন্টে আরও নিশ্চয়ই ছিল। রেল মন্ত্রণালয়ে সাড়ে সতের হাজার জনবল নিয়োগের কথা ছিল। তাতে আরও লাভের ইশারা ছিল। বাস্তবে তাদের অবস্থা কিন্তু সেই ঘোড়াচোরের মতো। হাটের বাটপার যার ঘোড়াটি ট্রায়াল দেওয়ার কথা বলে উধাও হয়েছিল। চোরের লাভ হয়েছিল বাটপারের জুতোজোড়া। এপিএস কিংবা জিএমের লাভ তার থেকে ঢের বেশি থাকবে সন্দেহ নেই।
লোকসান যদি কারও হয়ে থাকে, তারা সেসব হতভাগা, যারা একটি চাকরির আশায় লাখ লাখ টাকা পরের হাতে তুলে দিয়েছিল। এখন তো রেলের সব নিয়োগই স্থগিত। সাত ঘাটে পেঁৗছে যাওয়া টাকাও ফেরত আসার আশা কুহক মাত্র। রেল মন্ত্রণালয়ের গুড় কেনাবেচার হাট শেষে লোকসানের ধামা তাদের মাথাতেই থাকল।
মহামহিম তদন্ত কমিটি, বগল বাজানো বিরোধী দল, ভাবমূর্তি উন্নয়নে সচেষ্ট ক্ষমতাসীন দল, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার সুশীল সমাজ, লাভ-লোকসানের হিসেবে মগ্ন সংবাদমাধ্যম_ লোকসানের ধামা মাথায় নিয়ে ঘর্মাক্ত হতভাগাদের কথা কি একবার ভাববেন?
দ্বিতীয় মতটি হচ্ছে, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকার দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স দেখিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেল। দেখিয়ে দিল যে তারা জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এতে করে সরকারের ইমেজ ভালো হবে। আর একই সঙ্গে ঝিকে মেরে বউকে শোধরানোরও সুযোগ মিলল। সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে নানা মন্ত্রণালয়ে যে দুর্নীতির মাত্রা বেড়ে যায়, রেলমন্ত্রীর পরিণতি তাতে রাশ টানতে সহায়তা করবে। মন্ত্রীর এপিএসদের দৌরাত্ম্যও কমবে আশা করা যায়। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে। তার মানে, লাভ আখেরে ক্ষমতাসীনদেরই।
আবার কেউ কেউ বলছেন, খোদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও এক অর্থে লাভবান হয়েছেন। আমাদের দেশে মন্ত্রীর স্বতঃপ্রণোদিত পদত্যাগের দৃষ্টান্ত নেই বললেই চলে। তিনি 'তদন্তের স্বার্থে' পদত্যাগ করে, এ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে নিজেই যেমনটি বলেছেন, রাজনীতিতে 'অনন্য দৃষ্টান্ত' স্থাপনের সুযোগ পেলেন।
লাভ নাকি রেলের কালো বিড়ালদেরও। একটি চক্র যুগ যুগ ধরে প্রাতিষ্ঠানিক লোকসানের কেচ্ছা শুনিয়ে ব্যক্তিগত লাভের পাহাড় গড়ে তুলছিলেন। নতুন মন্ত্রণালয় গঠন এবং ডাকসাইটে নেতা সেটার দায়িত্ব পাওয়ার পর সেই অচলায়তন নড়ে গিয়েছিল। তাদের লাভ-লোকসানের বাণিজ্য আপাতত কিছু দিনের জন্য নিশ্চিত।
সাদা চোখে দেখলে, লাভের এই হাটে লোকসান হলো রেলমন্ত্রীর এপিএস, পূর্বাঞ্চলীয় জিএম ও নিরাপত্তা কর্মকর্তার। আকর্ষণীয় পদের চাকরি এভাবে বেঘোরে চলে গেল! বস্তাভরা টাকার কথাও বলতে হবে। ফ্রিজ হওয়া অ্যাকাউন্টে আরও নিশ্চয়ই ছিল। রেল মন্ত্রণালয়ে সাড়ে সতের হাজার জনবল নিয়োগের কথা ছিল। তাতে আরও লাভের ইশারা ছিল। বাস্তবে তাদের অবস্থা কিন্তু সেই ঘোড়াচোরের মতো। হাটের বাটপার যার ঘোড়াটি ট্রায়াল দেওয়ার কথা বলে উধাও হয়েছিল। চোরের লাভ হয়েছিল বাটপারের জুতোজোড়া। এপিএস কিংবা জিএমের লাভ তার থেকে ঢের বেশি থাকবে সন্দেহ নেই।
লোকসান যদি কারও হয়ে থাকে, তারা সেসব হতভাগা, যারা একটি চাকরির আশায় লাখ লাখ টাকা পরের হাতে তুলে দিয়েছিল। এখন তো রেলের সব নিয়োগই স্থগিত। সাত ঘাটে পেঁৗছে যাওয়া টাকাও ফেরত আসার আশা কুহক মাত্র। রেল মন্ত্রণালয়ের গুড় কেনাবেচার হাট শেষে লোকসানের ধামা তাদের মাথাতেই থাকল।
মহামহিম তদন্ত কমিটি, বগল বাজানো বিরোধী দল, ভাবমূর্তি উন্নয়নে সচেষ্ট ক্ষমতাসীন দল, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার সুশীল সমাজ, লাভ-লোকসানের হিসেবে মগ্ন সংবাদমাধ্যম_ লোকসানের ধামা মাথায় নিয়ে ঘর্মাক্ত হতভাগাদের কথা কি একবার ভাববেন?
No comments