বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংকট উৎপাদন ও জনজীবনে আঘাত by ইফতেখার আহমেদ টিপু
মহাজোট সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেলেও একই সময়ে চাহিদা বেড়েছে স্পুটনিক গতিতে। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ঘাটতি বিদ্যমান সংকট আরো ঘনীভূত করে তুলছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি নিয়ে ত্রিশঙ্কু অবস্থায় পড়েছে সরকার।
কেতাবি হিসাবে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন গত তিন বছরে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়লেও চাহিদার তুলনায় তা যথেষ্ট নয়। সেচ মৌসুমে অন্তত এক হাজার মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। এই চাহিদা মেটাতে সরকারের পক্ষ থেকে কল-কারখানা এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। দৃশ্যত অনুরোধের সুরে বলা হলেও কার্যক্ষেত্রে সরকার বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিচ্ছে। কল-কারখানায় সন্ধ্যার পর উৎপাদন বন্ধ থাকলে ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে বলে পিডিবি সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা বোধগম্য কারণেই বৃদ্ধি পায়। বৈদ্যুতিক পাখা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা অন্য সময়ের চেয়ে এ সময় গড়ে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। দেশের খাদ্য উৎপাদন বোরো চাষের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। ফলে শিল্প ও কল-কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রেখে বোরো চাষের সেচসুবিধা অব্যাহত রাখাকে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে কল-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দেশের শিল্পোৎপাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পের জন্য তা হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাস সংকটও জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ ছয় ঘণ্টা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে পরিবহন সেক্টরের সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। গ্যাস ঘাটতির কারণে শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের পাশাপাশি পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। লোডশেডিংয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ সংকট বেড়েই চলেছে। ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার আওতাধীন এলাকায় পানির দৈনিক চাহিদা ২২৫ কোটি লিটার। ওয়াসার উৎপাদন ২০৫ থেকে ২১০ কোটি লিটার। সে হিসাবে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কোটি লিটার ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। রাজধানীতে গ্রীষ্মকালে পানির সংকট অন্তত এক যুগ ধরে নিয়তির লিখন হয়ে দেখা দিচ্ছে। সমস্যার সমাধানে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকলেও দুর্নীতির বরপুত্র ওয়াসার এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে সংকট থেকেই যাচ্ছে। স্মর্তব্য, ওয়াসার চারটি শোধনাগার ও ৬০৫টি পাম্প হাউস রয়েছে। লোডশেডিংয়ের সময় পানি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে ২৩২টি স্থায়ী জেনারেটর ছিল। গত বছর নতুনভাবে ২০০ জেনারেটর কেনা হয়। এর মধ্যে ১৩৫টি বিভিন্ন পাম্প হাউসে বসানো হয়। বর্তমানে ৩৬৭টি পাম্প হাউসে স্থায়ী জেনারেটরের পাশাপাশি আরো ৫২টি মোবাইল জেনারেটর থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী পানি উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিটি জেনারেটর চালাতে প্রতি ঘণ্টার জন্য ২০ থেকে ২২ লিটার ডিজেল বরাদ্দ থাকলেও পাম্প না চালিয়ে বেশির ভাগ ডিজেল আত্মসাৎ করা হচ্ছে। এ টাকা চলে যাচ্ছে দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে পরিচিত ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে। কোনো এলাকায় পানি সংকট দেখা দিলে এলাকাবাসী পাম্প হাউসে গেলে বলা হয়, ডিজেল না থাকায় পাম্প বন্ধ। লোডশেডিংয়ের সময় পাম্পগুলো প্রায়শ বন্ধ রাখা হলেও খাতা-কলমে চালু দেখানো হয়।
আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণের দায়িত্ব সরকারের হাতে। এটি সরকারের সেবা খাত হিসেবেও বিবেচিত। যে কারণে এ খাতে সরকার বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেয়। বর্তমান সরকারের তিন বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট বৃদ্ধি পেলেও আগে থেকে ঘাটতি থাকা এবং স্পুটনিক গতিতে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এর সুফল গ্রাহকদের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। নিজেদের সাফল্য দৃশ্যমান করতে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন বাড়াতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলে তা নিজেদের সুনামের প্রতিই সুবিচার করা হবে।
গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের দাবিতে ফুঁসে উঠছে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষ। সরকারের সুনামের জন্যও তা বিড়ম্বনা হয়ে দেখা দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার জন্যও শঙ্কা সৃষ্টি করছে পানি ও বিদ্যুৎ সংকট। সন্দেহ নেই, বিপুল বিদ্যুৎ ঘাটতি ঘাড়ে নিয়েই তিন বছর আগে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসে। গত তিন বছরে এ সমস্যার সমাধানে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপও ছিল প্রশংসার দাবিদার। তিন বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ বাড়লেও আগে থেকে চলে আসা বিপুল ঘাটতি এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে সে সুফল অনুভব করাও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গ্রীষ্মের দাবদাহে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র ও বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। সেচের কারণে সোয়া এক হাজার মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুতের চাহিদা সংকটকে ঘনীভূত করে তুলেছে। ওয়াসা লোডশেডিংয়ের সময় জেনারেটরের সাহায্যে পাম্প চালাতে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা খরচ করলেও সে অর্থের সবটাই প্রায় চুরি হচ্ছে। পাম্প হাউস চালু রাখতে যে জ্বালানি তেল বরাদ্দ করা হয়, তা পাম্প চালানোর বদলে কারো কারো পকেট স্ফীত করার জন্য পাচার করা হয়- এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। আমি বিশ্বাস করি, বোধগম্য কারণেই বিদ্যুৎ ও পানির চাহিদা মোকাবিলায় সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহের সুযোগ নেই। সমস্যার সমাধানের সঙ্গে সরকারের গ্রহণযোগ্যতার সম্পর্ক এমনভাবে জড়িত যে এ ক্ষেত্রে হেলাফেলার অর্থ আত্মহননের নামান্তর। তবে বিদ্যুৎ ও পানির ঘাটতি মোকাবিলায় ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মনে রাখতে হবে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনসহ নানামুখী পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে আঞ্চলিক গ্রিডলাইন স্থাপন এবং যৌথ প্রকল্পের কথাও ভাবা যেতে পারে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংকট মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে যেমন বিপর্যস্ত করছে, তেমনি উৎপাদনক্ষেত্রে ফেলছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। এ সমস্যার সমাধানে সরকারকে আরো সক্রিয় ও যত্নবান হতে হবে। নিজেদের সুনামের স্বার্থেই এ তিনটি ক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক নবরাজ, চেয়ারম্যান, ইফাদ গ্রুপ।
chairman@ifadgroup.
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের পাশাপাশি পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। লোডশেডিংয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ সংকট বেড়েই চলেছে। ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার আওতাধীন এলাকায় পানির দৈনিক চাহিদা ২২৫ কোটি লিটার। ওয়াসার উৎপাদন ২০৫ থেকে ২১০ কোটি লিটার। সে হিসাবে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কোটি লিটার ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। রাজধানীতে গ্রীষ্মকালে পানির সংকট অন্তত এক যুগ ধরে নিয়তির লিখন হয়ে দেখা দিচ্ছে। সমস্যার সমাধানে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকলেও দুর্নীতির বরপুত্র ওয়াসার এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে সংকট থেকেই যাচ্ছে। স্মর্তব্য, ওয়াসার চারটি শোধনাগার ও ৬০৫টি পাম্প হাউস রয়েছে। লোডশেডিংয়ের সময় পানি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে ২৩২টি স্থায়ী জেনারেটর ছিল। গত বছর নতুনভাবে ২০০ জেনারেটর কেনা হয়। এর মধ্যে ১৩৫টি বিভিন্ন পাম্প হাউসে বসানো হয়। বর্তমানে ৩৬৭টি পাম্প হাউসে স্থায়ী জেনারেটরের পাশাপাশি আরো ৫২টি মোবাইল জেনারেটর থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী পানি উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিটি জেনারেটর চালাতে প্রতি ঘণ্টার জন্য ২০ থেকে ২২ লিটার ডিজেল বরাদ্দ থাকলেও পাম্প না চালিয়ে বেশির ভাগ ডিজেল আত্মসাৎ করা হচ্ছে। এ টাকা চলে যাচ্ছে দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে পরিচিত ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে। কোনো এলাকায় পানি সংকট দেখা দিলে এলাকাবাসী পাম্প হাউসে গেলে বলা হয়, ডিজেল না থাকায় পাম্প বন্ধ। লোডশেডিংয়ের সময় পাম্পগুলো প্রায়শ বন্ধ রাখা হলেও খাতা-কলমে চালু দেখানো হয়।
আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণের দায়িত্ব সরকারের হাতে। এটি সরকারের সেবা খাত হিসেবেও বিবেচিত। যে কারণে এ খাতে সরকার বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেয়। বর্তমান সরকারের তিন বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট বৃদ্ধি পেলেও আগে থেকে ঘাটতি থাকা এবং স্পুটনিক গতিতে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এর সুফল গ্রাহকদের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। নিজেদের সাফল্য দৃশ্যমান করতে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন বাড়াতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলে তা নিজেদের সুনামের প্রতিই সুবিচার করা হবে।
গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের দাবিতে ফুঁসে উঠছে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষ। সরকারের সুনামের জন্যও তা বিড়ম্বনা হয়ে দেখা দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার জন্যও শঙ্কা সৃষ্টি করছে পানি ও বিদ্যুৎ সংকট। সন্দেহ নেই, বিপুল বিদ্যুৎ ঘাটতি ঘাড়ে নিয়েই তিন বছর আগে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসে। গত তিন বছরে এ সমস্যার সমাধানে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপও ছিল প্রশংসার দাবিদার। তিন বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ বাড়লেও আগে থেকে চলে আসা বিপুল ঘাটতি এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে সে সুফল অনুভব করাও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গ্রীষ্মের দাবদাহে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র ও বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। সেচের কারণে সোয়া এক হাজার মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুতের চাহিদা সংকটকে ঘনীভূত করে তুলেছে। ওয়াসা লোডশেডিংয়ের সময় জেনারেটরের সাহায্যে পাম্প চালাতে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা খরচ করলেও সে অর্থের সবটাই প্রায় চুরি হচ্ছে। পাম্প হাউস চালু রাখতে যে জ্বালানি তেল বরাদ্দ করা হয়, তা পাম্প চালানোর বদলে কারো কারো পকেট স্ফীত করার জন্য পাচার করা হয়- এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। আমি বিশ্বাস করি, বোধগম্য কারণেই বিদ্যুৎ ও পানির চাহিদা মোকাবিলায় সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহের সুযোগ নেই। সমস্যার সমাধানের সঙ্গে সরকারের গ্রহণযোগ্যতার সম্পর্ক এমনভাবে জড়িত যে এ ক্ষেত্রে হেলাফেলার অর্থ আত্মহননের নামান্তর। তবে বিদ্যুৎ ও পানির ঘাটতি মোকাবিলায় ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মনে রাখতে হবে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনসহ নানামুখী পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে আঞ্চলিক গ্রিডলাইন স্থাপন এবং যৌথ প্রকল্পের কথাও ভাবা যেতে পারে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংকট মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে যেমন বিপর্যস্ত করছে, তেমনি উৎপাদনক্ষেত্রে ফেলছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। এ সমস্যার সমাধানে সরকারকে আরো সক্রিয় ও যত্নবান হতে হবে। নিজেদের সুনামের স্বার্থেই এ তিনটি ক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক নবরাজ, চেয়ারম্যান, ইফাদ গ্রুপ।
chairman@ifadgroup.
No comments