বদলে গেছে দিন-রাত by সাব্বিন হাসান
প্রযুক্তি নিয়ে চলে নিত্যদিনের খেলা। ব্যস্ত জীবনের আজকের যে আধুনিক রূপ তা সম্ভব হয়েছে সময় সহায়ক প্রযুক্তি পণ্যগুলোর কারণে। ইন্সট্যান্ট মেসেজ, মোবাইল এসএমএস বা মাল্কিল্টমিডিয়া মেসেজ সার্ভিস সংক্ষেপে এমএমএস মানুষের জীবনকে কোথায় নিয়ে গেছে তা এক সময় বোধকরি অনুমান করাও ছিল কঠিন ভাবনা। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ডিজিটাল লাইফ আজ জীবনের অবিচ্ছেদ্য এক সঙ্গী। সময় পরির্বতনের এ খেলায় জীবন ছবিও বদলাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
মেইলের সাতরং
মোবাইলে ইন্টারনেট আজ বহমান তথ্যের জাদুর ঝুলি। কম্পিউটারের চারকোনা ফ্রেম থেকে বেরিয়ে সে আজ সেলফোনের পর্দায় আবাধে খেলা করে। সুযোগ পেলেই সে মেতে ওঠে আড্ডায়। তবে অনেকেই না জানার অজ্ঞতায় তার চিরসঙ্গী ইন্টারনেটসমৃদ্ধ ফোনটির সার্বিক ব্যবহার করতে পারেন না। খুঁটিনাটি কিছু তথ্য জানা থাকলে যে কেউ হয়ে উঠতে পারেন মোবাইলে ইন্টারনেট পরিচালনায় দক্ষ এক কারিগর।
মোবাইলে ইন্টারনেট আজ বহমান তথ্যের জাদুর ঝুলি। কম্পিউটারের চারকোনা ফ্রেম থেকে বেরিয়ে সে আজ সেলফোনের পর্দায় আবাধে খেলা করে। সুযোগ পেলেই সে মেতে ওঠে আড্ডায়। তবে অনেকেই না জানার অজ্ঞতায় তার চিরসঙ্গী ইন্টারনেটসমৃদ্ধ ফোনটির সার্বিক ব্যবহার করতে পারেন না। খুঁটিনাটি কিছু তথ্য জানা থাকলে যে কেউ হয়ে উঠতে পারেন মোবাইলে ইন্টারনেট পরিচালনায় দক্ষ এক কারিগর।
এসএমএস
একুশের তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তিনির্ভর। এ প্রজন্মের সবার কাছেই তাৎক্ষণিক মেসেজ অনেক বেশি জনপ্রিয়। ভবিষ্যতের চতুর্থ প্রজন্মকে ঘিরে যে আলোচনার সূত্রপাত তাতে সহজেই অনুমান করা যাচ্ছেল প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের দিন ফুরিয়ে আসছে। দেশের টিনএজারদের কাছে (১২ থেকে ১৭ বছর) ইন্সট্যান্ট মেসেজ এখন প্রধান আকর্ষণ। ই-মেইলের বৃদ্ধি হার দ্বিগুণ হলেও ইনস্ট্যান্ট মেসেজের বৃদ্ধি হচ্ছে তিনগুণ হারে। চতুর্থ প্রজন্মের জন্য জিপিআরএস প্রযুক্তির উৎকষরাউর কাছে সবকিছুই বিলীন হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একুশের প্রজন্ম আর ইন্সট্যান্ট মেসেজের তুফান দুয়ে মিলে তাই যুগলসন্দি।
সেলফোনে লালিত ভাষা ভিডিও শেয়ারিং (এমএমএস)
মোবাইলে তাৎক্ষণিক ছবি তুলে তা এমএমএস (মাল্কিল্টমিডিয়া মেসেজ) প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজেই পছন্দের মানুষের মোবাইলে পপৌঁছে দেওয়া যায়। তাছাড়া অনলাইন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভিডিও ফাইল শেয়ারিংয়ের (আদান-প্রদান) যে জোয়ার র্বতমানে লক্ষণীয় তা একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের কথাই বলে দেয়। পিয়ার-টু-পিয়ার শেয়ারিং আজ অনেক বেশি প্রয়োজনীয় ও প্রতিষ্ঠিত এক প্রাযুক্তিক মাধ্যম।
ব্লু-টুথ
রাস্তায় চলতে ফিরতেই চোখে পড়বে কানে কি যেন একটা জিনিস লাগানো আছে। অনেকে আবার ফোন হাতে না তুলেই ফিসফাস কথা বলছেন। প্রবীন প্রজন্মের কাছে এমন জিজ্ঞাসা হরহামেশাই আসে। আসলে তারহীন এ প্রযুক্তির নামই ব্লু-টুথ। হাল আমলে পণ্যটি তারুন্যের ত্রেক্রজ হয়ে উঠেছে। এমনকি এফএম রেডিও প্রযুক্তিও ব্লু-টুথের আওতায় চলে এসেছে।
ডিজিটাল তারুণ্যনির্ভর বিনোদনে দেশীয় অঙ্গনে একে একে প্রবেশ করেছে এমপিথ্রি (শুধু অডিও গানের জন্য), এমপিফোর (অডিও-ভিডিও গানের জন্য) ও সর্বশেষ এমপিফাইভ (অডিও-ভিডিও-ক্যামেরা ও ভিডিও রেকর্ডিং)। বৈশিষ্ঠ্যগত দিক থেকে পণ্য ৩টি একই রকম মনে হলেও এদের আচরণে আছে ভিন্নতা।
ডিজিটাল ক্যামেরা
ডিজিটাল ক্যামেরা মানেই হালফ্যাশনে তার নিত্যনতূন উপস্থিতি। র্বতমানে মোবাইল ফোনে ক্যামেরার সংযুক্তি ডিজিটাল ক্যামেরার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকের ধারণা। তবে প্রফেশনালদের কাছে চিরকালই স্থির ছবির জন্য ডিজিটাল ক্যামেরার আলাদা একটা কদর থাকবে।
ডিজিটাল ক্যামেরার মূল যাত্রাটি শুরু ১৯৯০ সালে থেকে। সে সময় ইমেজ সেন্সরকে কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি ধারণ করা হতো। সেক্ষেত্রে খুব বেশি স্থির ছবি সংগ্রহে রাখাও ছিল দুঃসাধ্য এক প্রত্যাশা। কিন্তু র্বতমান পরিস্থিতিটা পুরোই উল্টো। চলতি সময়ের ডিজিটাল ক্যামেরাগুলো এত বেশি ডিজিটাল ছবি ধারণ করতে সক্ষম যা তারুণ্য আর ফ্যাশনের সঙ্গে জুড়ে গেছে। ছবি শিল্পের অন্যতম কারিগর কার্ল ল্যাঙ্গের মতে, প্রতিটি ছবি পিক্সেল ওই ছবির সবচেয়ে ক্ষুদ্র অংশের পরিচায়ক। এখন শুধু ছবি তুললেই চলে না, চাই এর ডিজিটাল নানা রূপ। সেজন্য ডিজিটাল ক্যামেরার মেগাপিক্সেলের তুলনায় ছবির অভ্যন্তরীণ আবহই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ছবির শৈল্কিপ্পর রূপে মাততে সবাই ডিজিটাল ক্যামেরার মূর্ছনায় উঠুক মেতে।
মোবাইল ব্যাংকিং
অনলাইন ব্যাংকিং র্বতমানে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যাংকিং লেনদেন নামান্তর। ইতিমধ্যে দেশীয় পরিম-লেও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের চর্চা চলছে। এজন্য মোবাইলের ইন্টারনেট অপশনে গিয়ে নির্দিষ্ঠ ওয়েবসাইটটির ঠিকানা কিওয়ার্ড আকারে ইনপুট দিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যটি বাগিয়ে নেওয়া যায়। এখন দেশেই অনলাইন অ্যাকাউন্ট গ্রাহক হলে জিপিআরএস বা জিএসএম প্রযুক্তি সাপোর্ট করে এমন মোবাইল থেকে শুধু সাইটে প্রবেশ করে কিওয়ার্ড দিলেই মিলবে গ্রাহকের অ্যাকাউনাউটর যাবতীয় তথ্য। মোবাইলে ইন্টারনেটের কৌশল শিখে বনে যান সময়ের সবচেয়ে আধুনিকমনা ফ্যাশনেবল এক ব্যক্তি।
ভার্চুয়াল কনাউট্রাল
ভাচর্ুয়াল কনাউট্রালের ধারণা নতুন নয়। ইতিমধ্যে পিডিএ ডিভাইসে এ ধরনের হুইলের প্রচলন এসেছে। তারপরও খ্যাতনামা কিছু ডিজাইনার মনে করেন এখনো এ ধরনের ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণে নতুন সংস্করণের অনেক সুযোগ আছে। একাধিক বাটনের বেড়াজালে ব্যবহারকারীদের না জড়িয়ে স্ক্রিন টাচের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে সহজ সমাধান।
তারুন্যের ত্রেক্রজ আইপড
আজকাল দেশের আবহে প্রায়ই চোখ পড়ে অ্যাপল খ্যাত আইপড। যার ধারক ও বাহক তৃতীয় প্রজন্মের তারুন্যে। আইপডের আর্বিভাবে ডিজিটাল সঙ্গীত তার গণ্ডি ছড়িয়ে ফেলে। প্রতি মূহুতরাউর চলার পথে সবার সঙ্গী হয়ে ওঠে মিউজিক। কম্পিউটারের গণ্ডি ছেড়ে মিউজিক ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে বাতাসে। সঙ্গীত এখন আর কম্পিউটার আর সিডির ফ্রেমে বেঁধে থাকা কোনো স্থির মাধ্যম নয়। বরং অবিরাম, অবিরত, অন্তহীন সঙ্গীত মূর্ছনার একক পরিচায়ক হয়ে উঠেছে আইপড।
সেলফোন সংস্কৃতি সমাজের ফ্যাশন
মাত্র কিছুদিন আগেও ই-মেইল ছিল সভ্যতার সবচেয়ে দ্রুততম বার্তা। তারপর এসে হাজির সেলফোন মেসেজ। আবার ভয়েস এসএমএস নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোড়ন। ভয়েস মেসেজ জনপ্রিয় হওয়ার প্রথম কারণ ভয়েস মেসেজের খরচ কলের চেয়ে তুলনামূলক কম। দ্বিতীয়ত যে কোনো সময় কল রিসিভ করার চেয়ে ভয়েস মেসেজ সুবিধামতো সময়ে রিসিভ কর যায়। সার্বিক অর্থে প্রযুক্তি কোনো বিলাসিতা নয়, বরং ভালোভাবে বেঁচে থেকে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের আধুনিক পদ্ধতি। প্রতিনিয়তই দেশীয় প্রযুক্তি অঙ্গন সমৃদ্ধ হচ্ছে, প্রাযুক্তিক ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে সেকেলে বাংলাদেশের সমাজচিত্র আর ফ্যাশন অঙ্গন।
No comments