পবিত্র আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিল ইসরায়েল
জেরুজালেমে পবিত্র আল-আকসা মসজিদ ও সংলগ্ন
চত্বর গতকাল বৃহস্পতিবার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে এ
পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন। একজন কট্টর ইহুদি
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল মসজিদটি বন্ধ করে দেয়।
এদিকে আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন
ফিলিস্তিনিরা। ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিম তীরে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস,
বিবিসি ও এএফপির।
আল-আকসাকে কেন্দ্র করে কিছুদিন ধরেই জেরুজালেমে উত্তেজনা চলছিল। সংঘর্ষের আশঙ্কার ধুয়া তুলে নির্দিষ্ট কিছু দিবসে মসজিদ এবং এর সংলগ্ন এলাকায় বিশেষত মুসলিম তরুণ ও অমুসলিম দর্শনার্থীদের প্রবেশে ক্রমেই আরও বেশি বাধা দেওয়া হচ্ছিল। সাম্প্রতিকতম উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে গতকাল মসজিদটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে বিপজ্জনক এই সিদ্ধান্তের জন্য ইসরায়েল সরকারকে দায়ী করেছে ফিলিস্তিন।
ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎস বলেছে, ২০০০ সালের পর এই প্রথম আল-আকসা এলাকা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিল ইসরায়েল। তবে আল-আকসা এবং মুসলমানদের অন্যান্য পবিত্র স্থানের তদারকির দায়িত্বে থাকা সংগঠন ইসলামিক ওয়াক্ফর কর্মকর্তা সামির আবু আল লেইল বলেন, ১৯৬৭ সালের পর এভাবে আর কখনোই এই প্রাঙ্গণ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
গতকাল আল-আকসা বন্ধ করে দেওয়ার আগের দিন গত বুধবার মার্কিন বংশোদ্ভূত কট্টর ইহুদি রাবি গিলিককে গুলি করে হত্যার চেষ্টায় জড়িত সন্দেহে মোয়াতাজ হেজাজি নামের এক ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি পুলিশ। পাল্টাপাল্টি এসব ঘটনায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। সেই সঙ্গে নতুন করে ফিলিস্তিনি আন্দোলন শুরুর আশঙ্কা জেগে উঠেছে।
মোয়াতাজকে হত্যার পর পূর্ব জেরুজালেমের আবু তর এলাকায় গতকাল ফিলিস্তিনি যুবকদের সঙ্গে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষ হয়। পরে এখানে মোতায়েন করা হয় পুলিশের বাড়তি সদস্য। নিহত হওয়ার আগে মোয়াতাজ আল-আকসা মসজিদে ইহুদিদের প্রার্থনার অধিকারের দাবি তোলায় কট্টরপন্থী ওই ইহুদি মানবাধিকারকর্মীকে হত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করে ইসরায়েল।
পবিত্র আল-আকসা বন্ধ করে দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনা বলেন, এই ভয়ংকর উসকানির মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণ ও তাঁদের পবিত্র স্থান এবং আরব তথা মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলকে জবাবদিহির সম্মুখীন করতে ও তার হামলা বন্ধে সব আইনগত পদক্ষেপ নেবে ফিলিস্তিন।
অবশ্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য মাহমুদ আব্বাসকেই পাল্টা দোষারোপ করেছেন। মসজিদটি বন্ধ ঘোষণার পরই জেরুজালেমে নিরাপত্তা জোরদারেরও নির্দেশ দেন নেতানিয়াহু।
আল-আকসা মসজিদের অবস্থান পূর্ব জেরুজালেমের আল-হারাম আল-শরিফ চত্বরে। এটি মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম ধর্মীয় স্থান। অন্যদিকে এ প্রাঙ্গণেই ইহুদিদের সবচেয়ে পবিত্র স্থান টেম্পল মাউন্টও অবস্থিত।
No comments