ইহুদি বসতির পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন
পূর্ব জেরুজালেমে অধিকৃত ভূখণ্ডে আরও বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের এ পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এদিকে ফিলিস্তিনিরাও অধিকৃত ভূখণ্ডে বসতি স্থাপন বন্ধের উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। খবর এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্সের। বসতি স্থাপনের পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাদের প্রধান মিত্র মার্কিন প্রশাসনের টানাপোড়েন চলছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধের অন্যতম প্রধান ইস্যু অধিকৃত এলাকায় ইহুদি বসতি স্থাপন ও জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আরব-অধ্যুষিত পূর্ব জেরুজালেমে আরও এক হাজার বসতি স্থাপন পরিকল্পনার নির্দেশ দেওয়ার পর বুধবার রাতে বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক প্রধান জেফরি ফেল্টম্যান ইসরায়েলি পরিকল্পনার সমালোচনা করে বলেছেন, এ পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলের টেকসই শান্তির উদ্যোগকে ‘গুরুতর সংশয়ের’ মুখে ফেলতে পারে। ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও বসতি স্থাপন পরিকল্পনার সরাসরি সমালোচনা করেছে। ওয়াশিংটন বলেছে, ইসরায়েল যা করছে, তা ‘উসকানিমূলক ও গভীর উদ্বেগের’ বিষয়। অন্যতম মিত্র যুক্তরাজ্যও ইসরায়েলি পরিকল্পনাকে অবৈধ কার্যক্রম বলে আখ্যা দিয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি দূত রিয়াদ মনসুর বলেছেন,
ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং নতুন করে সহিংসতা শুরুর উসকানি হিসেবে কাজ করবে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি দূত রস প্রসোর অভিযোগ করেছেন, ফিলিস্তিনিরা অর্ধসত্য বিষয় তুলে ধরছে। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে একটি বার্তাই দিতে এসেছি। সেটা হলো ইসরায়েলিরা দখলদার নয়, আমরা অন্য কোথাও থেকে এসে বসতি স্থাপনকারীও নই।’ ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ পরিকল্পনার সমালোচনা করলেও ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব তোলা বা সমালোচনা করে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেয়নি পরিষদ। সম্প্রতি নতুন বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কঠোর সমালোচনা করেছেন। ওই কর্মকর্তা নেতানিয়াহুকে ‘মুরগির বিষ্ঠা’ ও কাপুরুষ আখ্যা দেন। তবে পরে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জশ আর্নেস্ট বলেন, এসব বক্তব্য ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের প্রতিফলন ঘটায় না’ এবং তাঁদের কথায় ‘প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গিরও প্রতিফলন ঘটে না’। এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিটি গাজায় সর্বশেষ সামরিক অভিযানের ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
No comments