এনআইএ তদন্তকারী দল ঢাকা আসতে পারে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমানে জঙ্গি ডেরায় বিস্ফোরণ ঘটনার তদন্তে নেমে জাতীয় ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি এনআইএ বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জামা’আতুল মুজাহিদীনের বিশাল কর্মকাণ্ডের হদিস পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে গিয়ে তারা তদন্ত করতে চাইছেন। আর এই উদ্দেশ্যে এনআইএ’র একটি প্রতিনিধি দল খুব শিগগিরই ঢাকা যেতে পারে বলে জানা গেছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র দিয়ে সংবাদ সংস্থার দেয়া খবরে বলা হয়েছে, বর্ধমান কাণ্ডের তদন্তে জেএমবি’র নাম উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের যোগাযোগেরও নানা তথ্য এই ঘটনায় ধৃত ১০ জনকে জেরা করে পাওয়া গেছে। তদন্তে আরও জানা গেছে, চার দফায় পশ্চিমবঙ্গের জেএমবি’র জঙ্গি ডেরাগুলো থেকে কমপক্ষে ১২০টি গ্রেনেড বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এনআইএ তদন্ত করতে গিয়ে নিশ্চিত হয়েছে যে, বিস্ফোরণে নিহতদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি’র জঙ্গি মডিউল তৈরির কাজে যুক্ত ছিল। আর সে জন্যই এনআইএ তদন্তকারীদের ঢাকা যাওয়ার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রে অবশ্য বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে তদন্তের ব্যাপারে সব তথ্যই বিনিময় করা হচ্ছে। তবুও এনআইএ ঢাকা গিয়ে তদন্ত করতে আগ্রহী। বিশেষ করে সম্প্রতি ঢাকার সেগুনবাগিচায় ধৃত জেএমবি’র দুই সদস্য আসিফ আদনান ও ফজলে ইলাহি তানজিলকে জেরা করে র্যাব যে সব তথ্য পেয়েছে তা-ও খতিয়ে দেখতে চাইছে এনআইএ’র গোয়েন্দারা। বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মাধ্যমে ভারত বর্ধমান বিস্ফোরণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য খুব শিগগিরই তুলে দেবে ঢাকাকে। সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দেশের গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর কর্তাদের নিয়ে বর্ধমানের বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করে এসেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তদন্তের প্রথম কয়েকদিনে পুলিশের গাফিলতিতে যে জেএমবি’র অনেক মাথা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে সে কথা জানিয়েছেন। মমতাও স্বীকার করেছেন, পুলিশের প্রাথমিক গাফিলতির কথা। এনআইএ গোয়েন্দাদের ধারণা, কাওসার সহ অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে বা নেপালে চলে গিয়েছেন। তদন্তকারীরা পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের অন্যত্র জঙ্গি জাল বিস্তারে ৪০ জন জেএমবি সদস্যকে চিহ্নিত করে তাদের খোঁজ চালাচ্ছেন। এদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা বর্ধমানের জঙ্গি ডেরায় হয়েছিল বলে যে খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে তাকে রাবিশ বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত বর্ধমান কাণ্ডে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা কেউই জেএমবি’র জ্যেষ্ঠ নেতা স্তরের নন। তাই তাদের পক্ষে চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল কারা তা জানা সম্ভব নয়।
No comments