আলেম-ওলামার ব্যানারে এরা কারা?
আলেম-ওলামার সাইনবোর্ডে এরা কারা? চট্টগ্রামে বুধবার কওমী মাদ্রাসার শিৰক ও ছাত্রদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের পর এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একদিকে একের পর এক ইস্যু তৈরির মাধ্যমে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিরোধী দল বিএনপি।
অন্যদিকে বিএনপির সমমনা জামায়াতসহ আরও কয়েকটি নামমাত্র দলও আসত্মে আসত্মে মাঠ গরমের অপতৎপরতায় লিপ্ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হত্যার ঘটনা, পরবতর্ীতে পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টির মাধ্যমে সহিংসতা এবং চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ নামের কথিত একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে বুধবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে রণৰেত্র পরিস্থিতির সৃষ্টি করার নেপথ্যে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। এরা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে প্রণীত নীলনকশার মাধ্যমে এগুচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রসমূহের অভিমতও প্রায় একই।বিএনপি বহু আগে থেকেই সরকারের বিরম্নদ্ধে মাঠ গরম করার তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। দলীয় চেয়ারপার্সন এবং তার পুত্র তারেক জিয়া, দলীয় কার্যালয়ের সামনে বোমা বিস্ফোরণ এবং সর্বশেষ ঢাকা বিমানবন্দরের নাম থেকে জিয়ার নাম অপসারণ, ৫ম সংশোধনী বাতিলের ঘটনাসহ কতিপয় দাবিতে আন্দোলন জমানোর অপচেষ্টায় রত। বর্তমানে তাদের পাশাপাশি বিএনপি সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলকেও মাঠে নামার ইন্ধন যোগাচ্ছে। বুধবার চট্টগ্রামে কওমী মাদ্রাসা ছাত্রদের যে জঙ্গী তৎপরতা দেখা গেছে তার নেপথ্যে রয়েছে ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের নেতা মুফতি ইজহারম্নল ইসলাম চৌধুরী। গত ২২ ফেব্রম্নয়ারি সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে মুফতি ইজহার মহাজোট সরকার থেকে তার সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে ২৪ ফেব্রম্নয়ারি লালদীঘি ময়দানে সমাবেশ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করে। হেফাজতে ইসলাম নামের কথিত একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে আহূত এ সমাবেশ অনুষ্ঠানের পূর্ব কোন অনুমতি না থাকায় পুলিশ তাতে বাধা দিলে জঙ্গী কায়দায় মিছিলকারীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ইটপাটকেল নিৰেপ, পুলিশের গুলি ও টিয়ারশেল ঘটনায় নগরীর বালুছড়া ও হাটহাজারী পরিণত হয় রণৰেত্রে। এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির পৰ থেকে বিবৃতি প্রদানের পাশাপাশি প্রতিবাদ সভাও করা হয়েছে। এতে তারা কওমী মাদ্রাসা ছাত্র ও শিৰকদের ওপর পুলিশী নির্যাতনের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি ৫ম সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে এদেশ থেকে ইসলামকে মুছে ফেলার কাজ করে যাচ্ছে বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামে বুধবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ৩৯ কওমী সমর্থককে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সিএমপি ও জেলা পুলিশের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ নামক একটি সংগঠনের ব্যাপক সংঘর্ষের ২৪ ঘণ্টা পরও কোন মামলা হয়নি। পুলিশের ওপর হামলা, সড়ক অবরোধসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করার পরও বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরম্নদ্ধে কোন প্রকার পদৰেপ না নেয়ায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। সংঘর্ষের ঘটনার বিশৃঙ্খলাকারীদের ৩৯ সদস্যকে গ্রেফতার করা হলেও বৃহস্পতিবার সকালে সবাইকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। সংঘর্ষে ১০ পুলিশ আহত যেমন হয়েছে, তেমনি পুলিশের কাজে বাধা দেয়া হয়েছে। এছাড়া লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিৰেপ করে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্যের ওপর চড়াও হয়েছে। এরপরও এভাবে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়ার ঘটনা কেন ঘটল তার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। তবে একটি সূত্রে জানানো হয়েছে, হামলাকারীদের মাফ করে দেয়া হয়েছে। অন্য একটি সূত্রে বলা হয়েছে, এ ঘটনাকে পুঁজি করে পরিস্থিতি যেন অবনতি না ঘটে সে লৰ্যে পুলিশ এ ব্যবস্থা নিয়েছে।
No comments