হ্যাজার্ড-কাণ্ড!
রূপকথাই বটে! কে ভাবতে পেরেছিল এত বড় বড় দলের ভিড়ে লিগ কাপের ফাইনাল খেলবে সোয়ানসি ও ব্র্যাডফোর্ড? সোয়ানসি কোচ মাইকেল লাউড্রপ তো বলেই দিয়েছেন ফাইনালটা হবে ‘ছোট রূপকথা ও বড় রূপকথার’ জন্ম দেওয়া দুই দলের লড়াই।
ব্র্যাডফোর্ড লিগ কাপ জিতলে তারাই হবে ইউরোপের ইতিহাসে প্রথম বড় কোনো শিরোপাজয়ী চতুর্থ বিভাগের দল। আর সোয়ানসি দাঁড়িয়ে আছে নিজেদের শত বছরের ইতিহাসে প্রথম শিরোপা জয় থেকে নিঃশ্বাস-দূরত্বে।স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চেলসিকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে অবশ্য এক পা আগেই দিয়ে রেখেছিল সোয়ানসি। নিজেদের ভাগ্য ফেরাতে পরশু চেলসিকে জিততে হতো তিন গোলের ব্যবধানে। সেটা তো করতেই দেয়নি সোয়ানসি, উল্টো গোলশূন্য রুখে দিয়েছে চেলসিকে। ম্যাচ শেষে এমন ব্যর্থতার সঙ্গে মিডফিল্ডার এডেন হ্যাজার্ড চেলসিকে ‘উপহার’ দিয়েছেন আরও বড় হতাশা। এক বলবয়কে লাথি মেরে দলের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করেছেন বেলজিয়ান ফুটবলার।
খেলা শেষ হতে বাকি তখন ১০ মিনিট। গোল শোধে চেলসি মরিয়া। বলবয় চার্লি মরগান বল দিতে কিছুটা কালক্ষেপণ করছিল। গোল না পাওয়ার হতাশা থেকেই হয়তো হঠাৎই মরগানকে লাথি মেরে বলটা কেড়ে নেন হ্যাজার্ড। তাৎক্ষণিক শাস্তি পেয়েছেন লাল কার্ড। কিন্তু হ্যাজার্ডকে নিয়ে এখন সমালোচনার ঝড় বইছে ইংল্যান্ডজুড়ে।
ম্যাচ শেষে অনুতপ্ত হ্যাজার্ড বলবয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। তবে আত্মপক্ষ সমর্থনও করেছেন, ‘ছেলেটা তার পুরো শরীর নিয়ে বলটা ঢেকে রেখেছিল। আমি শুধু বলে লাথি মারার চেষ্টা করছিলাম। আমি মনে করি, আমি বলেই লাথি মেরেছিলাম, ছেলেটিকে নয়। আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’
চেলসি কোচ রাফায়েল বেনিতেজ অবশ্য শিষ্যের পাশেই আছেন, ‘ছেলেটা ড্রেসিংরুমে এসেছিল। তারা দুজন কথা বলেছে। একে অন্যের কাছে ক্ষমাও চেয়েছে। তারা দুজনই ভুল স্বীকার করেছে। ছেলেটা সময় নষ্ট করছিল। আর হ্যাজার্ড চাইছিল দ্রুত বলটা ফেরত নিতে।’
ঘটনাটা অনেক দূরই গড়াতে পারত। পুলিশ বিষয়টা নিয়ে টানাহেঁচড়া করতে পারত। তবে সোয়ানসির এক মুখপাত্র বলেছেন, সরকারিভাবে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তবে হ্যাজার্ড-কাণ্ডে সবচেয়ে বেশি বিরক্ত বোধ হয় লাউড্রপ। দলের গৌরবময় একটা কীর্তির মহিমা যে খানিকটা ম্লান হয়ে গেছে এতে! সাবেক ডেনিশ তারকা শিষ্যদের প্রশংসায় আবার পঞ্চমুখ, ‘প্রথমবার কোনো ফাইনালে ওঠা আসলেই দুর্দান্ত। দুই ম্যাচ মিলিয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের হারানো অবিশ্বাস্যই। তা-ও আবার কোনো গোল হজম না করেই!’ এএফপি, ওয়েবসাইট।
No comments